প্রত্যক্ষ সংগ্রাম দিবস: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
NasirkhanBot (আলোচনা | অবদান) অ (Added Ennglish article link) |
সম্পাদনা সারাংশ নেই |
||
৪ নং লাইন: | ৪ নং লাইন: | ||
এ প্রস্তাব গ্রহণ করার পর অচিরেই লীগ ওয়ার্কিং কমিটি একই বছর ১৬ আগস্টকে ‘প্রত্যক্ষ সংগ্রাম দিবস’ ঘোষণা করে এক প্রস্তাব গ্রহণ করে এবং ঐ দিন ভারতের সকল প্রদেশে সব রকম ব্যবসায়িক কার্যকলাপ বন্ধ রাখা ও সর্বাত্মক [[হরতাল|হরতাল]] পালনের জন্য লীগ নেতৃবৃন্দ ও মুসলিম জনসাধারণের প্রতি এক নির্দেশ জারি করা হয়। বাংলায় পুনর্গঠিত মুসলিম লীগের নেতা এবং প্রদেশের প্রধানমন্ত্রী [[সোহ্রাওয়ার্দী, হোসেন শহীদ|হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী]] অনুভব করেন যে, বাংলায় প্রত্যক্ষ সংগ্রাম দিবসটি রীতিমতো জঙ্গি মেজাজে পালিত হওয়া উচিত। ওই দিবস উপলক্ষে দিবসটিকে সফল করে তুলতে তাঁর ব্যাপক প্রস্ত্ততির ফলে এক সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সংঘটিত হয়, যা সম্ভবত তিনি কখনও চান নি। পরিস্থিতি তাঁর নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায় এবং নিষ্ঠুর সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় প্রচুর প্রাণহানি ঘটে। এ দাঙ্গার সময় কলকাতার একটা বিরাট অংশ জুড়ে কয়েকদিন ধরে আগুন জ্বলতে থাকে। কলকাতার এই দাঙ্গা অচিরেই অন্যান্য অঞ্চলে, বিশেষ করে, বিহার ও নোয়াখালী জেলায় ছড়িয়ে পড়ে। কলকাতার দাঙ্গা উভয় পক্ষের জন্যই ছিল কমবেশি সমান ক্ষতিকর। তবে অন্যত্র এটি একতরফা ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়। বিহারে প্রায় একপেশেভাবে মুসলমান ও নোয়াখালীতে হিন্দুরা প্রাণ হারায়। তবে সামগ্রিকভাবে এ কলকাতা দাঙ্গায় প্রাণহানি মুসলমানদের মধ্যে অনেক বেশি হয়। প্রত্যক্ষ সংগ্রাম দিবস প্রত্যক্ষ ফলাফল প্রদান করে। ঐ দিনই ভারতের নিয়তি নির্ধারিত হয় এবং ঐ দিনই যুক্তবাংলার নিরবচ্ছিন্ন অস্তিত্বের বিষয়টি চিরকালের মতো নির্ধারিত হয়ে যায়। বাংলা বিভাগ অনিবার্য হয়ে পড়ে। [সিরাজুল ইসলাম] | এ প্রস্তাব গ্রহণ করার পর অচিরেই লীগ ওয়ার্কিং কমিটি একই বছর ১৬ আগস্টকে ‘প্রত্যক্ষ সংগ্রাম দিবস’ ঘোষণা করে এক প্রস্তাব গ্রহণ করে এবং ঐ দিন ভারতের সকল প্রদেশে সব রকম ব্যবসায়িক কার্যকলাপ বন্ধ রাখা ও সর্বাত্মক [[হরতাল|হরতাল]] পালনের জন্য লীগ নেতৃবৃন্দ ও মুসলিম জনসাধারণের প্রতি এক নির্দেশ জারি করা হয়। বাংলায় পুনর্গঠিত মুসলিম লীগের নেতা এবং প্রদেশের প্রধানমন্ত্রী [[সোহ্রাওয়ার্দী, হোসেন শহীদ|হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী]] অনুভব করেন যে, বাংলায় প্রত্যক্ষ সংগ্রাম দিবসটি রীতিমতো জঙ্গি মেজাজে পালিত হওয়া উচিত। ওই দিবস উপলক্ষে দিবসটিকে সফল করে তুলতে তাঁর ব্যাপক প্রস্ত্ততির ফলে এক সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সংঘটিত হয়, যা সম্ভবত তিনি কখনও চান নি। পরিস্থিতি তাঁর নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায় এবং নিষ্ঠুর সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় প্রচুর প্রাণহানি ঘটে। এ দাঙ্গার সময় কলকাতার একটা বিরাট অংশ জুড়ে কয়েকদিন ধরে আগুন জ্বলতে থাকে। কলকাতার এই দাঙ্গা অচিরেই অন্যান্য অঞ্চলে, বিশেষ করে, বিহার ও নোয়াখালী জেলায় ছড়িয়ে পড়ে। কলকাতার দাঙ্গা উভয় পক্ষের জন্যই ছিল কমবেশি সমান ক্ষতিকর। তবে অন্যত্র এটি একতরফা ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়। বিহারে প্রায় একপেশেভাবে মুসলমান ও নোয়াখালীতে হিন্দুরা প্রাণ হারায়। তবে সামগ্রিকভাবে এ কলকাতা দাঙ্গায় প্রাণহানি মুসলমানদের মধ্যে অনেক বেশি হয়। প্রত্যক্ষ সংগ্রাম দিবস প্রত্যক্ষ ফলাফল প্রদান করে। ঐ দিনই ভারতের নিয়তি নির্ধারিত হয় এবং ঐ দিনই যুক্তবাংলার নিরবচ্ছিন্ন অস্তিত্বের বিষয়টি চিরকালের মতো নির্ধারিত হয়ে যায়। বাংলা বিভাগ অনিবার্য হয়ে পড়ে। [সিরাজুল ইসলাম] | ||
''আরও দেখুন'' কলকাতা | ''আরও দেখুন'' [[কলকাতা দাঙ্গা, ১৯৪৬|কলকাতা দাঙ্গা, ১৯৪৬]]। | ||
[[en:Direct Action Day]] | [[en:Direct Action Day]] |
১০:১৬, ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ
প্রত্যক্ষ সংগ্রাম দিবস ১৯৪৬ সালের ১৬ আগস্ট ব্রিটিশ শাসন ও অনুমিত বর্ণহিন্দুর আধিপত্য থেকে মুক্তির লক্ষ্যে মুসলিম লীগ আহুত হরতাল। প্রত্যক্ষ সংগ্রাম দিবসের পটভূমি হলো, মুসলিম লীগ কেবিনেট মিশন পরিকল্পনা গ্রহণ করলেও কংগ্রেস তা প্রত্যাখ্যান করে। এর ফলে মুসলিম লীগ রাজনৈতিকভাবে বেকায়দায় পড়ে। একগুঁয়ে কংগ্রেসকে পরিকল্পনার ব্যাপারে সম্মত করাতে কেবিনেট মিশনের ব্যর্থতাকে মুসলিম লীগ ব্রিটিশের বিশ্বাসঘাতকতা বলে অভিহিত করে। আর এই একই কারণে লীগ নেতা মোহম্মদ আলী জিন্নাহ নিয়মতান্ত্রিক পদ্ধতিকে বিদায় জানিয়ে পাকিস্তান অর্জনের জন্য ‘প্রত্যক্ষ সংগ্রাম কার্যসূচি’র ডাক দেন। ১৯৪৬ সালের ২৭-২৯ জুলাই মুসলিম লীগের এক কাউন্সিল সভায় এ মর্মে এক প্রস্তাব গৃহীত হয়।
এ প্রস্তাব গ্রহণ করার পর অচিরেই লীগ ওয়ার্কিং কমিটি একই বছর ১৬ আগস্টকে ‘প্রত্যক্ষ সংগ্রাম দিবস’ ঘোষণা করে এক প্রস্তাব গ্রহণ করে এবং ঐ দিন ভারতের সকল প্রদেশে সব রকম ব্যবসায়িক কার্যকলাপ বন্ধ রাখা ও সর্বাত্মক হরতাল পালনের জন্য লীগ নেতৃবৃন্দ ও মুসলিম জনসাধারণের প্রতি এক নির্দেশ জারি করা হয়। বাংলায় পুনর্গঠিত মুসলিম লীগের নেতা এবং প্রদেশের প্রধানমন্ত্রী হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী অনুভব করেন যে, বাংলায় প্রত্যক্ষ সংগ্রাম দিবসটি রীতিমতো জঙ্গি মেজাজে পালিত হওয়া উচিত। ওই দিবস উপলক্ষে দিবসটিকে সফল করে তুলতে তাঁর ব্যাপক প্রস্ত্ততির ফলে এক সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সংঘটিত হয়, যা সম্ভবত তিনি কখনও চান নি। পরিস্থিতি তাঁর নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায় এবং নিষ্ঠুর সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় প্রচুর প্রাণহানি ঘটে। এ দাঙ্গার সময় কলকাতার একটা বিরাট অংশ জুড়ে কয়েকদিন ধরে আগুন জ্বলতে থাকে। কলকাতার এই দাঙ্গা অচিরেই অন্যান্য অঞ্চলে, বিশেষ করে, বিহার ও নোয়াখালী জেলায় ছড়িয়ে পড়ে। কলকাতার দাঙ্গা উভয় পক্ষের জন্যই ছিল কমবেশি সমান ক্ষতিকর। তবে অন্যত্র এটি একতরফা ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়। বিহারে প্রায় একপেশেভাবে মুসলমান ও নোয়াখালীতে হিন্দুরা প্রাণ হারায়। তবে সামগ্রিকভাবে এ কলকাতা দাঙ্গায় প্রাণহানি মুসলমানদের মধ্যে অনেক বেশি হয়। প্রত্যক্ষ সংগ্রাম দিবস প্রত্যক্ষ ফলাফল প্রদান করে। ঐ দিনই ভারতের নিয়তি নির্ধারিত হয় এবং ঐ দিনই যুক্তবাংলার নিরবচ্ছিন্ন অস্তিত্বের বিষয়টি চিরকালের মতো নির্ধারিত হয়ে যায়। বাংলা বিভাগ অনিবার্য হয়ে পড়ে। [সিরাজুল ইসলাম]
আরও দেখুন কলকাতা দাঙ্গা, ১৯৪৬।