ফার্ন: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
NasirkhanBot (আলোচনা | অবদান) অ (Added Ennglish article link) |
সম্পাদনা সারাংশ নেই |
||
১ নং লাইন: | ১ নং লাইন: | ||
[[Category:বাংলাপিডিয়া]] | [[Category:বাংলাপিডিয়া]] | ||
'''ফার্ন''' কান্ডের তুলনায় আকারে কয়েকটি বড় পাতা ও পাতার কিনারায় বা তলায় স্পোরানজিয়া-বিশিষ্ট একদল pteridophyte উদ্ভিদ। অপেক্ষাকৃত আদিম এই উদ্ভিদবর্গের অন্যতম লক্ষণীয় বৈশিষ্ট্য হচ্ছে কুন্ডলিত মুকুল ও পত্রবিন্যাস। পৃথিবীতে ফার্ন প্রজাতির সংখ্যা প্রায় ১১০০০, অধিকাংশই আর্দ্র উষ্ণমন্ডলে বাস করে। এগুলি সোর্ড ফার্ন, লেডি ফার্ন, ট্রি ফার্ন ইত্যাদি নানা নামে পরিচিত। বাংলাদেশসহ বিভিন্ন অঞ্চলে কোন কোন ফার্নের কুন্ডলিত পাতা সবজি হিসেবে (ঢেঁকিশাক) ব্যবহূত হয়। ভারতে ফার্নের ৯০০ প্রজাতি আছে, বাংলাদেশে ২৫০, বেশির ভাগই দেখা যায় উত্তর-পূর্ব অঞ্চলের পাহাড়ি এলাকায়। লতানো ও পরাশ্রয়ী জাতের ফার্নও আছে। বর্ষাকালে Azolla, Salvinia, Ceratopteris গণের প্রচুর জলজ প্রজাতির ফার্ন দেখা যায়। সুন্দরবন ও উপকূলের অন্যান্য এলাকায় টাইগার ফার্ন (''Acrosticum aureum'') জন্মে। আবাসস্থলের পরিস্থিতি বদলের ফলে Cyathea, Ctenitis, ''Lygodium circinatum'' ও অন্যান্য কিছু ফার্ন প্রজাতি এখন বিপন্ন। | [[Image:Fern.jpg|thumb|400px|right|ফার্ন]] | ||
'''ফার্ন''' কান্ডের তুলনায় আকারে কয়েকটি বড় পাতা ও পাতার কিনারায় বা তলায় স্পোরানজিয়া-বিশিষ্ট একদল pteridophyte উদ্ভিদ। অপেক্ষাকৃত আদিম এই উদ্ভিদবর্গের অন্যতম লক্ষণীয় বৈশিষ্ট্য হচ্ছে কুন্ডলিত মুকুল ও পত্রবিন্যাস। পৃথিবীতে ফার্ন প্রজাতির সংখ্যা প্রায় ১১০০০, অধিকাংশই আর্দ্র উষ্ণমন্ডলে বাস করে। এগুলি সোর্ড ফার্ন, লেডি ফার্ন, ট্রি ফার্ন ইত্যাদি নানা নামে পরিচিত। বাংলাদেশসহ বিভিন্ন অঞ্চলে কোন কোন ফার্নের কুন্ডলিত পাতা সবজি হিসেবে (ঢেঁকিশাক) ব্যবহূত হয়। ভারতে ফার্নের ৯০০ প্রজাতি আছে, বাংলাদেশে ২৫০, বেশির ভাগই দেখা যায় উত্তর-পূর্ব অঞ্চলের পাহাড়ি এলাকায়। লতানো ও পরাশ্রয়ী জাতের ফার্নও আছে। বর্ষাকালে Azolla, Salvinia, Ceratopteris গণের প্রচুর জলজ প্রজাতির ফার্ন দেখা যায়। সুন্দরবন ও উপকূলের অন্যান্য এলাকায় টাইগার ফার্ন (''Acrosticum aureum'') জন্মে। আবাসস্থলের পরিস্থিতি বদলের ফলে ''Cyathea, Ctenitis'', ''Lygodium circinatum'' ও অন্যান্য কিছু ফার্ন প্রজাতি এখন বিপন্ন। | |||
'''ট্রি ফার্ন''' (Tree fern) | '''''ট্রি ফার্ন''''' (Tree fern) টেরিডোফাইটস (pteridophytes) হিসেবে চিহ্নিত অপুষ্পক, নালিকাধর (vascular) উদ্ভিদের একটি দল। ফার্ন ছাড়াও টেরিডোফাইটে আছে হর্সটেইল ও ক্লাব মস। ফার্ন ছোটখাটো ঔষধি কোমল উদ্ভিদ, সাধারণত ছায়ায় জন্মে। তবে গুল্ম ও বৃক্ষসদৃশ ফার্নও আছে। বড় বড় ফার্নকে ট্রি ফার্ন বলে। পৃথিবীতে প্রায় ১১,০০০ জীবন্ত ফার্ন প্রজাতির মধ্যে মাত্র ৩০০ প্রজাতির ট্রি ফার্ন আছে যেগুলি উষ্ণমন্ডল ও নাতিশীতোষ্ণ মন্ডলের উদ্ভিদ। এগুলি সাধারণত শীতল, যথেষ্ট আর্দ্র ও উচ্চভূমিতে জন্মে যেখানে এসব ফার্ন কুয়াশা, কুজ্ঝটিকা (mist) ও বৃষ্টিতে সিক্ত হতে পারে। এগুলির উচ্চতা প্রায় ১ মিটার থেকে ২০ মিটার। | ||
কান্ড সাধারণ গাছপালার কান্ড থেকে আলাদা। সাধারণ পাম গাছের মতো আগায় একগুচ্ছ পাতা, কিন্তু গুচ্ছের মধ্যবর্তী পাতাগুলি গুটানো যা ফার্নের একটি স্বকীয় বৈশিষ্ট্য। পরিণত পাতাগুলি প্রজননাঙ্গও, তাতে পৃষ্ঠের দিকে স্পোর গজায়। প্রায় ২০ কোটি বছর আগে ট্রি ফার্নের প্রাধান্য ছিল এবং এক সময় এগুলি উদ্ভিদ জগতের প্রধান প্রতিনিধি হয়ে ওঠে। অঙ্গার যুগের (carboniferous age) কয়লা স্তরগুলি মূলত এই জাতীয় গাছপালারই সৃষ্টি। | কান্ড সাধারণ গাছপালার কান্ড থেকে আলাদা। সাধারণ পাম গাছের মতো আগায় একগুচ্ছ পাতা, কিন্তু গুচ্ছের মধ্যবর্তী পাতাগুলি গুটানো যা ফার্নের একটি স্বকীয় বৈশিষ্ট্য। পরিণত পাতাগুলি প্রজননাঙ্গও, তাতে পৃষ্ঠের দিকে স্পোর গজায়। প্রায় ২০ কোটি বছর আগে ট্রি ফার্নের প্রাধান্য ছিল এবং এক সময় এগুলি উদ্ভিদ জগতের প্রধান প্রতিনিধি হয়ে ওঠে। অঙ্গার যুগের (carboniferous age) কয়লা স্তরগুলি মূলত এই জাতীয় গাছপালারই সৃষ্টি। | ||
বর্তমানের ট্রি ফার্ন Cebotium, Dicsonia, Cyathea ও Angiopteris গণভুক্ত। এগুলির মধ্যে বাংলাদেশের পূর্বাঞ্চলের পাহাড়ে জন্মে শুধুই Cyathea এর তিনটি প্রজাতি (C. gygantea, C. glauca, C. spinosa) এবং Angiopteris-এর একটি প্রজাতি (A. evecta)। এগুলির মধ্যে আবার C. spinosa ও C. gygantea বিপন্ন প্রজাতি হিসেবে বিবেচিত। [মুস্তাফা কামাল পাশা | বর্তমানের ট্রি ফার্ন Cebotium, Dicsonia, Cyathea ও Angiopteris গণভুক্ত। এগুলির মধ্যে বাংলাদেশের পূর্বাঞ্চলের পাহাড়ে জন্মে শুধুই Cyathea এর তিনটি প্রজাতি (''C. gygantea'', ''C. glauca'', ''C. spinosa'') এবং Angiopteris-এর একটি প্রজাতি (''A. evecta'')। এগুলির মধ্যে আবার ''C. spinosa'' ও ''C. gygantea'' বিপন্ন প্রজাতি হিসেবে বিবেচিত। [মুস্তাফা কামাল পাশা] | ||
[[ | ''আরও দেখুন'' [[অ্যাজোলা|অ্যাজোলা]]। | ||
[[en:Fern]] | [[en:Fern]] |
০৯:৫৪, ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ
ফার্ন কান্ডের তুলনায় আকারে কয়েকটি বড় পাতা ও পাতার কিনারায় বা তলায় স্পোরানজিয়া-বিশিষ্ট একদল pteridophyte উদ্ভিদ। অপেক্ষাকৃত আদিম এই উদ্ভিদবর্গের অন্যতম লক্ষণীয় বৈশিষ্ট্য হচ্ছে কুন্ডলিত মুকুল ও পত্রবিন্যাস। পৃথিবীতে ফার্ন প্রজাতির সংখ্যা প্রায় ১১০০০, অধিকাংশই আর্দ্র উষ্ণমন্ডলে বাস করে। এগুলি সোর্ড ফার্ন, লেডি ফার্ন, ট্রি ফার্ন ইত্যাদি নানা নামে পরিচিত। বাংলাদেশসহ বিভিন্ন অঞ্চলে কোন কোন ফার্নের কুন্ডলিত পাতা সবজি হিসেবে (ঢেঁকিশাক) ব্যবহূত হয়। ভারতে ফার্নের ৯০০ প্রজাতি আছে, বাংলাদেশে ২৫০, বেশির ভাগই দেখা যায় উত্তর-পূর্ব অঞ্চলের পাহাড়ি এলাকায়। লতানো ও পরাশ্রয়ী জাতের ফার্নও আছে। বর্ষাকালে Azolla, Salvinia, Ceratopteris গণের প্রচুর জলজ প্রজাতির ফার্ন দেখা যায়। সুন্দরবন ও উপকূলের অন্যান্য এলাকায় টাইগার ফার্ন (Acrosticum aureum) জন্মে। আবাসস্থলের পরিস্থিতি বদলের ফলে Cyathea, Ctenitis, Lygodium circinatum ও অন্যান্য কিছু ফার্ন প্রজাতি এখন বিপন্ন।
ট্রি ফার্ন (Tree fern) টেরিডোফাইটস (pteridophytes) হিসেবে চিহ্নিত অপুষ্পক, নালিকাধর (vascular) উদ্ভিদের একটি দল। ফার্ন ছাড়াও টেরিডোফাইটে আছে হর্সটেইল ও ক্লাব মস। ফার্ন ছোটখাটো ঔষধি কোমল উদ্ভিদ, সাধারণত ছায়ায় জন্মে। তবে গুল্ম ও বৃক্ষসদৃশ ফার্নও আছে। বড় বড় ফার্নকে ট্রি ফার্ন বলে। পৃথিবীতে প্রায় ১১,০০০ জীবন্ত ফার্ন প্রজাতির মধ্যে মাত্র ৩০০ প্রজাতির ট্রি ফার্ন আছে যেগুলি উষ্ণমন্ডল ও নাতিশীতোষ্ণ মন্ডলের উদ্ভিদ। এগুলি সাধারণত শীতল, যথেষ্ট আর্দ্র ও উচ্চভূমিতে জন্মে যেখানে এসব ফার্ন কুয়াশা, কুজ্ঝটিকা (mist) ও বৃষ্টিতে সিক্ত হতে পারে। এগুলির উচ্চতা প্রায় ১ মিটার থেকে ২০ মিটার।
কান্ড সাধারণ গাছপালার কান্ড থেকে আলাদা। সাধারণ পাম গাছের মতো আগায় একগুচ্ছ পাতা, কিন্তু গুচ্ছের মধ্যবর্তী পাতাগুলি গুটানো যা ফার্নের একটি স্বকীয় বৈশিষ্ট্য। পরিণত পাতাগুলি প্রজননাঙ্গও, তাতে পৃষ্ঠের দিকে স্পোর গজায়। প্রায় ২০ কোটি বছর আগে ট্রি ফার্নের প্রাধান্য ছিল এবং এক সময় এগুলি উদ্ভিদ জগতের প্রধান প্রতিনিধি হয়ে ওঠে। অঙ্গার যুগের (carboniferous age) কয়লা স্তরগুলি মূলত এই জাতীয় গাছপালারই সৃষ্টি।
বর্তমানের ট্রি ফার্ন Cebotium, Dicsonia, Cyathea ও Angiopteris গণভুক্ত। এগুলির মধ্যে বাংলাদেশের পূর্বাঞ্চলের পাহাড়ে জন্মে শুধুই Cyathea এর তিনটি প্রজাতি (C. gygantea, C. glauca, C. spinosa) এবং Angiopteris-এর একটি প্রজাতি (A. evecta)। এগুলির মধ্যে আবার C. spinosa ও C. gygantea বিপন্ন প্রজাতি হিসেবে বিবেচিত। [মুস্তাফা কামাল পাশা]
আরও দেখুন অ্যাজোলা।