বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমী: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
NasirkhanBot (আলোচনা | অবদান) অ (Added Ennglish article link) |
সম্পাদনা সারাংশ নেই |
||
১ নং লাইন: | ১ নং লাইন: | ||
[[Category:বাংলাপিডিয়া]] | [[Category:বাংলাপিডিয়া]] | ||
'''বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমী''' পুলিশ অফিসারদের প্রশিক্ষণের লক্ষ্যে গঠিত একটি প্রতিষ্ঠান। এটি রাজশাহী শহর থেকে ২০ মাইল দূরে পদ্মা নদীর পূর্ব পাড়ে সারদায় অবস্থিত। ব্রিটিশ সরকার কর্তৃক একাডেমীটি প্রতিষ্ঠিত হয়। এক সময়ে এ স্থানটি ছিল ওলন্দাজদের বাণিজ্য বসতি এবং পরে রবার্ট ওয়াটসন অ্যান্ড কোম্পানির ব্যবসায়িক দপ্তর (১৮৩৫)। যাবতীয় স্থাপনা সহ ১৪২.৬৬ একর এলাকা বেষ্টিত এ সম্পত্তি ১৯১০ সালে ব্রিটিশ সরকার ২৫০০০ টাকায় ক্রয় করে। পুলিশ অফিসার্স প্রশিক্ষণ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে মেজর এইচ চামনীর ওপর একাডেমী স্থাপনের দায়িত্ব অর্পণ করা হয়। ১৯১২ সালের জুলাই মাসে একাডেমী প্রতিষ্ঠার কাজ শুরু হয়। | '''বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমী''' পুলিশ অফিসারদের প্রশিক্ষণের লক্ষ্যে গঠিত একটি প্রতিষ্ঠান। এটি রাজশাহী শহর থেকে ২০ মাইল দূরে পদ্মা নদীর পূর্ব পাড়ে সারদায় অবস্থিত। ব্রিটিশ সরকার কর্তৃক একাডেমীটি প্রতিষ্ঠিত হয়। এক সময়ে এ স্থানটি ছিল ওলন্দাজদের বাণিজ্য বসতি এবং পরে রবার্ট ওয়াটসন অ্যান্ড কোম্পানির ব্যবসায়িক দপ্তর (১৮৩৫)। যাবতীয় স্থাপনা সহ ১৪২.৬৬ একর এলাকা বেষ্টিত এ সম্পত্তি ১৯১০ সালে ব্রিটিশ সরকার ২৫০০০ টাকায় ক্রয় করে। পুলিশ অফিসার্স প্রশিক্ষণ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে মেজর এইচ চামনীর ওপর একাডেমী স্থাপনের দায়িত্ব অর্পণ করা হয়। ১৯১২ সালের জুলাই মাসে একাডেমী প্রতিষ্ঠার কাজ শুরু হয়। | ||
প্রতিষ্ঠার পর থেকেই এই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে অবিভক্ত বাংলার বিভিন্ন প্রদেশ সহ ভারত, ব্রিটেন এবং আসামের বিভিন্ন পদমর্যাদার পুলিশ অফিসারগণ প্রশিক্ষণ নিতে শুরু করেন। ভারত বিভক্তির পর এই একাডেমী ছিল পাকিস্তানের উভয় অংশের পুলিশ সার্ভিসে (পিএসপি) কর্মরত অফিসারদের প্রশিক্ষণের একমাত্র কেন্দ্রীয় প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর এই একাডেমী বাংলাদেশ পুলিশ বিভাগের সকল পদমর্যাদার অফিসারদের প্রশিক্ষণের একমাত্র প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়। | প্রতিষ্ঠার পর থেকেই এই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে অবিভক্ত বাংলার বিভিন্ন প্রদেশ সহ ভারত, ব্রিটেন এবং আসামের বিভিন্ন পদমর্যাদার পুলিশ অফিসারগণ প্রশিক্ষণ নিতে শুরু করেন। ভারত বিভক্তির পর এই একাডেমী ছিল পাকিস্তানের উভয় অংশের পুলিশ সার্ভিসে (পিএসপি) কর্মরত অফিসারদের প্রশিক্ষণের একমাত্র কেন্দ্রীয় প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর এই একাডেমী বাংলাদেশ পুলিশ বিভাগের সকল পদমর্যাদার অফিসারদের প্রশিক্ষণের একমাত্র প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়। | ||
৬ নং লাইন: | ৬ নং লাইন: | ||
বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমীর ভৌত কাঠামো সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনার ভিত্তিতে গড়ে উঠেছে। ২০০০ আসন বিশিষ্ট কুঠিবাড়ি আকৃতির কাঠামোয় এটি প্রতিষ্ঠিত। এখানে রয়েছে অধ্যক্ষের বাংলো এবং এসপি, অতিরিক্ত এসপি, এএসপি, নতুন প্রশিক্ষণার্থী, মহিলা অফিসার, ইন্সপেক্টর, সাব-ইন্সপেক্টর, সার্জেন্ট, প্রধান কনস্টেবল, কনস্টেবল এবং ভৃত্যদের জন্য আবাসিক ব্যবস্থা। | বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমীর ভৌত কাঠামো সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনার ভিত্তিতে গড়ে উঠেছে। ২০০০ আসন বিশিষ্ট কুঠিবাড়ি আকৃতির কাঠামোয় এটি প্রতিষ্ঠিত। এখানে রয়েছে অধ্যক্ষের বাংলো এবং এসপি, অতিরিক্ত এসপি, এএসপি, নতুন প্রশিক্ষণার্থী, মহিলা অফিসার, ইন্সপেক্টর, সাব-ইন্সপেক্টর, সার্জেন্ট, প্রধান কনস্টেবল, কনস্টেবল এবং ভৃত্যদের জন্য আবাসিক ব্যবস্থা। | ||
''প্রধান লক্ষ্য'' এ একাডেমী গড়ে তোলার প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে পুলিশ সার্ভিসে প্রবেশনার্থীদের সুঠাম দেহ ও দৃঢ় মনোবল গঠনে প্রশিক্ষণ দান করা যাতে তারা সকল ধরনের বাধা অতিক্রম করে দক্ষতার সাথে পুলিশি দায়িত্ব পালনে সক্ষম হয়। দায়িত্ব পালনকালে পুলিশ অফিসারদের শৃঙ্খলা, আত্ম-নির্ভরশীলতা, সৌজন্যবোধ, স্পষ্টবাদিতা, দায়িত্বশীলতা অক্ষুন্ন রাখার লক্ষ্যে প্রশিক্ষণ দান এ একাডেমীর প্রধান কাজ। মূলত একাডেমীটি গড়ে তোলা হয় পুলিশ সার্ভিসে যোগদানকারী নতুন পুলিশ অফিসারদের প্রশিক্ষণের লক্ষ্যে। এই একাডেমী কর্তৃক দেয়া প্রশিক্ষণে পুলিশ অফিসারদের চারিত্রিক এবং মানসিক উন্নয়নের লক্ষ্যে মানসিক এবং শারীরিক উভয় ধরনের নির্দেশনা দেয়া হয়। এছাড়া তাদের শারীরিক দক্ষতা বৃদ্ধির সাথে সাথে মানসিক শৃঙ্খলা এবং আত্ম-নির্ভরশীলতা বৃদ্ধির মাধ্যমে প্রাত্যহিক দায়িত্বপালনে তারা যে হুমকির সম্মুখীন হয় তা মোকাবেলায় তাদের মধ্যে স্থৈর্য আনয়নে এই প্রশিক্ষণ ভূমিকা রাখে। | |||
একাডেমীতে যোগদানকারী নতুন অফিসারদের সাধারণ প্রশিক্ষণ দানের সাথে সাথে রিফ্রেশার্স কোর্সের মাধ্যমে বিভিন্ন পদমর্যাদার অফিসারদের প্রশিক্ষণ দান করা হয়। রিফ্রেশার্স কোর্সে পুলিশ সার্ভিসের ভবিষ্যত নেতৃত্ব গড়ে তোলার উদ্দেশ্যে উচ্চতর প্রশিক্ষণ দানের ব্যবস্থা রয়েছে এবং সমন্বিত কোর্সের মাধ্যমে অফিসারদের বিভিন্ন কমান্ডের দায়িত্ব পালনে দক্ষ করে তোলা হয়। এই কোর্সের মূল লক্ষ্য হলো অফিসারদের উর্ধ্বতন দায়িত্ব পালনে সক্ষম করে তোলা, তাদের পেশাগত জ্ঞান ও দক্ষতা বৃদ্ধি করা, তাদের দৃষ্টিভঙ্গি সদূরপ্রসারী করে তোলা এবং যে জনগোষ্ঠীর নিরাপত্তা এবং সেবায় তারা কাজ করছেন তাদের সমস্যাবলি আরো বেশি করে উপলব্ধি করতে সহায়তা করা। | একাডেমীতে যোগদানকারী নতুন অফিসারদের সাধারণ প্রশিক্ষণ দানের সাথে সাথে রিফ্রেশার্স কোর্সের মাধ্যমে বিভিন্ন পদমর্যাদার অফিসারদের প্রশিক্ষণ দান করা হয়। রিফ্রেশার্স কোর্সে পুলিশ সার্ভিসের ভবিষ্যত নেতৃত্ব গড়ে তোলার উদ্দেশ্যে উচ্চতর প্রশিক্ষণ দানের ব্যবস্থা রয়েছে এবং সমন্বিত কোর্সের মাধ্যমে অফিসারদের বিভিন্ন কমান্ডের দায়িত্ব পালনে দক্ষ করে তোলা হয়। এই কোর্সের মূল লক্ষ্য হলো অফিসারদের উর্ধ্বতন দায়িত্ব পালনে সক্ষম করে তোলা, তাদের পেশাগত জ্ঞান ও দক্ষতা বৃদ্ধি করা, তাদের দৃষ্টিভঙ্গি সদূরপ্রসারী করে তোলা এবং যে জনগোষ্ঠীর নিরাপত্তা এবং সেবায় তারা কাজ করছেন তাদের সমস্যাবলি আরো বেশি করে উপলব্ধি করতে সহায়তা করা। | ||
৩০ নং লাইন: | ৩০ নং লাইন: | ||
[মোঃ এনামুল কবির] | [মোঃ এনামুল কবির] | ||
[[en:Bangladesh Police Academy]] | [[en:Bangladesh Police Academy]] |
০৭:১৮, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ
বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমী পুলিশ অফিসারদের প্রশিক্ষণের লক্ষ্যে গঠিত একটি প্রতিষ্ঠান। এটি রাজশাহী শহর থেকে ২০ মাইল দূরে পদ্মা নদীর পূর্ব পাড়ে সারদায় অবস্থিত। ব্রিটিশ সরকার কর্তৃক একাডেমীটি প্রতিষ্ঠিত হয়। এক সময়ে এ স্থানটি ছিল ওলন্দাজদের বাণিজ্য বসতি এবং পরে রবার্ট ওয়াটসন অ্যান্ড কোম্পানির ব্যবসায়িক দপ্তর (১৮৩৫)। যাবতীয় স্থাপনা সহ ১৪২.৬৬ একর এলাকা বেষ্টিত এ সম্পত্তি ১৯১০ সালে ব্রিটিশ সরকার ২৫০০০ টাকায় ক্রয় করে। পুলিশ অফিসার্স প্রশিক্ষণ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে মেজর এইচ চামনীর ওপর একাডেমী স্থাপনের দায়িত্ব অর্পণ করা হয়। ১৯১২ সালের জুলাই মাসে একাডেমী প্রতিষ্ঠার কাজ শুরু হয়।
প্রতিষ্ঠার পর থেকেই এই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে অবিভক্ত বাংলার বিভিন্ন প্রদেশ সহ ভারত, ব্রিটেন এবং আসামের বিভিন্ন পদমর্যাদার পুলিশ অফিসারগণ প্রশিক্ষণ নিতে শুরু করেন। ভারত বিভক্তির পর এই একাডেমী ছিল পাকিস্তানের উভয় অংশের পুলিশ সার্ভিসে (পিএসপি) কর্মরত অফিসারদের প্রশিক্ষণের একমাত্র কেন্দ্রীয় প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর এই একাডেমী বাংলাদেশ পুলিশ বিভাগের সকল পদমর্যাদার অফিসারদের প্রশিক্ষণের একমাত্র প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়।
বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমীর ভৌত কাঠামো সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনার ভিত্তিতে গড়ে উঠেছে। ২০০০ আসন বিশিষ্ট কুঠিবাড়ি আকৃতির কাঠামোয় এটি প্রতিষ্ঠিত। এখানে রয়েছে অধ্যক্ষের বাংলো এবং এসপি, অতিরিক্ত এসপি, এএসপি, নতুন প্রশিক্ষণার্থী, মহিলা অফিসার, ইন্সপেক্টর, সাব-ইন্সপেক্টর, সার্জেন্ট, প্রধান কনস্টেবল, কনস্টেবল এবং ভৃত্যদের জন্য আবাসিক ব্যবস্থা।
প্রধান লক্ষ্য এ একাডেমী গড়ে তোলার প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে পুলিশ সার্ভিসে প্রবেশনার্থীদের সুঠাম দেহ ও দৃঢ় মনোবল গঠনে প্রশিক্ষণ দান করা যাতে তারা সকল ধরনের বাধা অতিক্রম করে দক্ষতার সাথে পুলিশি দায়িত্ব পালনে সক্ষম হয়। দায়িত্ব পালনকালে পুলিশ অফিসারদের শৃঙ্খলা, আত্ম-নির্ভরশীলতা, সৌজন্যবোধ, স্পষ্টবাদিতা, দায়িত্বশীলতা অক্ষুন্ন রাখার লক্ষ্যে প্রশিক্ষণ দান এ একাডেমীর প্রধান কাজ। মূলত একাডেমীটি গড়ে তোলা হয় পুলিশ সার্ভিসে যোগদানকারী নতুন পুলিশ অফিসারদের প্রশিক্ষণের লক্ষ্যে। এই একাডেমী কর্তৃক দেয়া প্রশিক্ষণে পুলিশ অফিসারদের চারিত্রিক এবং মানসিক উন্নয়নের লক্ষ্যে মানসিক এবং শারীরিক উভয় ধরনের নির্দেশনা দেয়া হয়। এছাড়া তাদের শারীরিক দক্ষতা বৃদ্ধির সাথে সাথে মানসিক শৃঙ্খলা এবং আত্ম-নির্ভরশীলতা বৃদ্ধির মাধ্যমে প্রাত্যহিক দায়িত্বপালনে তারা যে হুমকির সম্মুখীন হয় তা মোকাবেলায় তাদের মধ্যে স্থৈর্য আনয়নে এই প্রশিক্ষণ ভূমিকা রাখে।
একাডেমীতে যোগদানকারী নতুন অফিসারদের সাধারণ প্রশিক্ষণ দানের সাথে সাথে রিফ্রেশার্স কোর্সের মাধ্যমে বিভিন্ন পদমর্যাদার অফিসারদের প্রশিক্ষণ দান করা হয়। রিফ্রেশার্স কোর্সে পুলিশ সার্ভিসের ভবিষ্যত নেতৃত্ব গড়ে তোলার উদ্দেশ্যে উচ্চতর প্রশিক্ষণ দানের ব্যবস্থা রয়েছে এবং সমন্বিত কোর্সের মাধ্যমে অফিসারদের বিভিন্ন কমান্ডের দায়িত্ব পালনে দক্ষ করে তোলা হয়। এই কোর্সের মূল লক্ষ্য হলো অফিসারদের উর্ধ্বতন দায়িত্ব পালনে সক্ষম করে তোলা, তাদের পেশাগত জ্ঞান ও দক্ষতা বৃদ্ধি করা, তাদের দৃষ্টিভঙ্গি সদূরপ্রসারী করে তোলা এবং যে জনগোষ্ঠীর নিরাপত্তা এবং সেবায় তারা কাজ করছেন তাদের সমস্যাবলি আরো বেশি করে উপলব্ধি করতে সহায়তা করা।
একাডেমী মূলত নিম্নলিখিত তিন ধরনের কোর্সে অংশগ্রহণের সুযোগ প্রদান করে থাকে:
মৌলিক কোর্স
(এসপি, সার্জেন্ট, সাব-ইন্সপেক্টর, কনস্টেবলদের জন্য)
রিফ্রেশার্স কোর্স
(ইন্সপেক্টর, সাব-ইন্সপেক্টর, সার্জেন্ট, প্রধান কনস্টেবলদের জন্য)
বিশেষ কোর্স
(ইন্সপেক্টর, প্রধান কনস্টেবল, কনস্টেবল এবং অন্যান্য বিভাগের সদস্যদের জন্য)
ডিএডি, এনএসআইদের জন্য বিশেষ কোর্স
বনরক্ষীদের জন্য বিশেষ কোর্স।
[মোঃ এনামুল কবির]