কবির, আলমগীর: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
NasirkhanBot (আলোচনা | অবদান) অ (Added Ennglish article link) |
সম্পাদনা সারাংশ নেই |
||
২ নং লাইন: | ২ নং লাইন: | ||
'''কবির, আলমগীর''' (১৯৩৮-১৯৮৯) চলচ্চিত্র নির্মাতা, পরিচালক। জন্ম ১৯৩৮ সালের ২৬ ডিসেম্বর রাঙ্গামাটি শহরে। তাঁর পিতার নাম আবু সাইয়েদ আহমেদ ও মাতার নাম আমিরুন্নেসা বেগম। পৈত্রিক নিবাস বরিশাল জেলার বানারীপাড়া। তাঁর লেখাপড়া শুরু হয় হুগলি কলেজিয়েট স্কুলে। ১৯৪৮ সালে তিনি [[ঢাকা কলেজিয়েট স্কুল|ঢাকা কলেজিয়েট স্কুল]] এ ভর্তি হন এবং এই স্কুল থেকে ১৯৫২ সালে ম্যাট্রিক পাস করেন। ১৯৫৪ সালে তিনি [[ঢাকা কলেজ|ঢাকা কলেজ]] থেকে আই.এসসি পাস করেন। ১৯৫৮ সালে [[ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়|ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়]] থেকে পদার্থবিদ্যা বিজ্ঞানে বিএসসি অনার্স পাশ করেন। অতঃপর তিনি লন্ডনে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং-এ ভর্তি হন। | '''কবির, আলমগীর''' (১৯৩৮-১৯৮৯) চলচ্চিত্র নির্মাতা, পরিচালক। জন্ম ১৯৩৮ সালের ২৬ ডিসেম্বর রাঙ্গামাটি শহরে। তাঁর পিতার নাম আবু সাইয়েদ আহমেদ ও মাতার নাম আমিরুন্নেসা বেগম। পৈত্রিক নিবাস বরিশাল জেলার বানারীপাড়া। তাঁর লেখাপড়া শুরু হয় হুগলি কলেজিয়েট স্কুলে। ১৯৪৮ সালে তিনি [[ঢাকা কলেজিয়েট স্কুল|ঢাকা কলেজিয়েট স্কুল]] এ ভর্তি হন এবং এই স্কুল থেকে ১৯৫২ সালে ম্যাট্রিক পাস করেন। ১৯৫৪ সালে তিনি [[ঢাকা কলেজ|ঢাকা কলেজ]] থেকে আই.এসসি পাস করেন। ১৯৫৮ সালে [[ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়|ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়]] থেকে পদার্থবিদ্যা বিজ্ঞানে বিএসসি অনার্স পাশ করেন। অতঃপর তিনি লন্ডনে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং-এ ভর্তি হন। | ||
[[Image:KabirAlamgir.jpg|thumb|400px|right|আলমগীর কবির]] | |||
একসময় প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার ইঙ্গমার বার্গম্যান নির্মিত সেভেন্থ সিল দেখে চলচ্চিত্র শিল্পের প্রতি তাঁর আগ্রহ সৃষ্টি হয়। বামপন্থী রাজনীতির প্রতি আকৃষ্ট হয়ে তিনি ব্রিটিশ কম্যুনিস্ট পার্টিতে যোগ দেন। এ সময় কম্যুনিস্ট পার্টির মুখপত্র ডেইলি ওয়ার্কার-এর রিপোর্টার হন। চলচ্চিত্র পরিচালনা ও ইতিহাস এবং নন্দনতত্ত্বের উপর কয়েকটি কোর্স তিনি সম্পন্ন করেন। তিনি লন্ডনে ইস্ট পাকিস্তান হাউস ও ইস্ট বেঙ্গল লিবারেশন ফ্রন্ট গড়ে তোলেন এবং ‘ক্যাম্পেন এগেইনস্ট রেসিয়াল ডিসক্রিমিনেশন’ আন্দোলনে যোগ দেন। ডেইলি ওয়ার্কার-এর রিপোর্টার থাকাকালে কিউবার প্রেসিডেন্ট ফিদেল ক্যাস্ট্রোর সাক্ষাৎকার নেন এবং গেরিলা যুদ্ধের নীতি ও কৌশল সম্পর্কে ধারণা লাভ করেন। পরে তিনি প্যালেস্টাইন ও আলজিরিয়ার মুক্তি সংগ্রামে অংশ নেন। একসময় ফরাসি সরকারের হাতে ধরা পড়ে তিনি আটমাস জেল খাটেন। ১৯৬৬ সালে তিনি দেশে ফিরে বাংলাদেশে বামপন্থী আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত হন। এক পর্যায়ে আইয়ুব সরকার তাঁকে গ্রেফতার করে জেলে রাখে। জেল থেকে বের হওয়ার পর এক বছর তিনি নজরবন্দি থাকেন। | একসময় প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার ইঙ্গমার বার্গম্যান নির্মিত সেভেন্থ সিল দেখে চলচ্চিত্র শিল্পের প্রতি তাঁর আগ্রহ সৃষ্টি হয়। বামপন্থী রাজনীতির প্রতি আকৃষ্ট হয়ে তিনি ব্রিটিশ কম্যুনিস্ট পার্টিতে যোগ দেন। এ সময় কম্যুনিস্ট পার্টির মুখপত্র ডেইলি ওয়ার্কার-এর রিপোর্টার হন। চলচ্চিত্র পরিচালনা ও ইতিহাস এবং নন্দনতত্ত্বের উপর কয়েকটি কোর্স তিনি সম্পন্ন করেন। তিনি লন্ডনে ইস্ট পাকিস্তান হাউস ও ইস্ট বেঙ্গল লিবারেশন ফ্রন্ট গড়ে তোলেন এবং ‘ক্যাম্পেন এগেইনস্ট রেসিয়াল ডিসক্রিমিনেশন’ আন্দোলনে যোগ দেন। ডেইলি ওয়ার্কার-এর রিপোর্টার থাকাকালে কিউবার প্রেসিডেন্ট ফিদেল ক্যাস্ট্রোর সাক্ষাৎকার নেন এবং গেরিলা যুদ্ধের নীতি ও কৌশল সম্পর্কে ধারণা লাভ করেন। পরে তিনি প্যালেস্টাইন ও আলজিরিয়ার মুক্তি সংগ্রামে অংশ নেন। একসময় ফরাসি সরকারের হাতে ধরা পড়ে তিনি আটমাস জেল খাটেন। ১৯৬৬ সালে তিনি দেশে ফিরে বাংলাদেশে বামপন্থী আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত হন। এক পর্যায়ে আইয়ুব সরকার তাঁকে গ্রেফতার করে জেলে রাখে। জেল থেকে বের হওয়ার পর এক বছর তিনি নজরবন্দি থাকেন। | ||
১৯৬৭ সালে আলমগীর কবির দৈনিক অবজারভার পত্রিকায় যোগ দেন, পরে সিনিয়র এডিটর হিসেবে সাপ্তাহিক হলিডে পত্রিকার সঙ্গে যুক্ত হন। এ সময় একজন চলচ্চিত্র সমালোচক হিসেবে নাম করেন। পরবর্তী সময়ে হলিডে ছেড়ে এক্সপ্রেস নামে একটি সাপ্তাহিকের সম্পাদক হিসেবে তিনি কাজ করেন। ১৯৬৯ সালে ঢাকা সিনেক্লাব প্রতিষ্ঠা করেন। [[মুক্তিযুদ্ধ|মুক্তিযুদ্ধ]] শুরু হলে তিনি স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে''' '''যোগ দেন এবং ইংরেজি বিভাগের প্রধান হিসেবে কাজ করেন। ‘আহমেদ চৌধুরী’ ছদ্মনামে তিনি ইংরেজি খবর ও কথিকা পাঠ করেন। প্রবাসী সরকারের প্রধান প্রতিবেদক হিসেবেও তিনি কাজ করেন, পাশাপাশি চলচ্চিত্র নির্মাণে আত্মনিয়োগ করেন। তিনি লিবারেশন ফাইটার্স নামে একটি প্রামাণ্য চিত্র নির্মাণ করেন। তিনি পাকিস্তানি বাহিনীর গণহত্যার উপর নির্মিত স্টপ জেনোসাইড-এর চিত্রনাট্যকার ও ধারাভাষ্যকার ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধ-উত্তর বাংলাদেশে তিনি বেশ কটি চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন। তাঁর নির্মিত পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র হলো ধীরে বহে মেঘনা (১৯৭৩), সূর্যকন্যা (১৯৭৬), সীমানা পেরিয়ে (১৯৭৭), রূপালী সৈকতে (১৯৭৯), মোহনা (১৯৮২), পরিণীতা (১৯৮৪) ও মহানায়ক (১৯৮৫)। তাঁর নির্মিত স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র হলো লবারেশন ফাইটার্স, প্রোগ্রাম ইন বাংলাদেশ, কালচার ইন বাংলাদেশ, সুফিয়া, অমূল্যধন, ভোর হলো দোর খোল,আমরা দুজন, এক সাগর রক্তের বিনিময়ে, মণিকাঞ্চন ও চোরাস্রোত। এছাড়া ফিল্ম ইন ইস্ট পাকিস্তান, ফিল্ম ইন বাংলাদেশ, সূর্যকন্যা, সীমানা পেরিয়ে, মোহনা ও সিনেমা ইন বাংলাদেশ তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থ। তিনি ১৯৭১ সালে চলচ্চিত্রের আদলে দুটি নাটক ধীরে বহে মেঘনা ও দিস ওয়াজ রেডিও বাংলাদেশ নির্মাণ করেন। আলমগীর কবির বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতি পুরস্কার, উত্তরণ-এর জহির রায়হান চলচ্চিত্র পুরস্কার ও সৈয়দ মোহাম্মদ পারভেজ পুরস্কার লাভ করেন। ১৯৮৯ সালের ২০ জানুয়ারি তাঁর মৃত্যু হয়। [আইউব হোসেন] | ১৯৬৭ সালে আলমগীর কবির দৈনিক অবজারভার পত্রিকায় যোগ দেন, পরে সিনিয়র এডিটর হিসেবে সাপ্তাহিক হলিডে পত্রিকার সঙ্গে যুক্ত হন। এ সময় একজন চলচ্চিত্র সমালোচক হিসেবে নাম করেন। পরবর্তী সময়ে হলিডে ছেড়ে এক্সপ্রেস নামে একটি সাপ্তাহিকের সম্পাদক হিসেবে তিনি কাজ করেন। ১৯৬৯ সালে ঢাকা সিনেক্লাব প্রতিষ্ঠা করেন। [[মুক্তিযুদ্ধ|মুক্তিযুদ্ধ]] শুরু হলে তিনি স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে''' '''যোগ দেন এবং ইংরেজি বিভাগের প্রধান হিসেবে কাজ করেন। ‘আহমেদ চৌধুরী’ ছদ্মনামে তিনি ইংরেজি খবর ও কথিকা পাঠ করেন। প্রবাসী সরকারের প্রধান প্রতিবেদক হিসেবেও তিনি কাজ করেন, পাশাপাশি চলচ্চিত্র নির্মাণে আত্মনিয়োগ করেন। তিনি লিবারেশন ফাইটার্স নামে একটি প্রামাণ্য চিত্র নির্মাণ করেন। তিনি পাকিস্তানি বাহিনীর গণহত্যার উপর নির্মিত স্টপ জেনোসাইড-এর চিত্রনাট্যকার ও ধারাভাষ্যকার ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধ-উত্তর বাংলাদেশে তিনি বেশ কটি চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন। তাঁর নির্মিত পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র হলো ধীরে বহে মেঘনা (১৯৭৩), সূর্যকন্যা (১৯৭৬), সীমানা পেরিয়ে (১৯৭৭), রূপালী সৈকতে (১৯৭৯), মোহনা (১৯৮২), পরিণীতা (১৯৮৪) ও মহানায়ক (১৯৮৫)। তাঁর নির্মিত স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র হলো লবারেশন ফাইটার্স, প্রোগ্রাম ইন বাংলাদেশ, কালচার ইন বাংলাদেশ, সুফিয়া, অমূল্যধন, ভোর হলো দোর খোল,আমরা দুজন, এক সাগর রক্তের বিনিময়ে, মণিকাঞ্চন ও চোরাস্রোত। এছাড়া ফিল্ম ইন ইস্ট পাকিস্তান, ফিল্ম ইন বাংলাদেশ, সূর্যকন্যা, সীমানা পেরিয়ে, মোহনা ও সিনেমা ইন বাংলাদেশ তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থ। তিনি ১৯৭১ সালে চলচ্চিত্রের আদলে দুটি নাটক ধীরে বহে মেঘনা ও দিস ওয়াজ রেডিও বাংলাদেশ নির্মাণ করেন। আলমগীর কবির বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতি পুরস্কার, উত্তরণ-এর জহির রায়হান চলচ্চিত্র পুরস্কার ও সৈয়দ মোহাম্মদ পারভেজ পুরস্কার লাভ করেন। ১৯৮৯ সালের ২০ জানুয়ারি তাঁর মৃত্যু হয়। [আইউব হোসেন] | ||
[[en:Kabir, Alamgir]] | [[en:Kabir, Alamgir]] |
০৫:২১, ২৭ জুলাই ২০১৪ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ
কবির, আলমগীর (১৯৩৮-১৯৮৯) চলচ্চিত্র নির্মাতা, পরিচালক। জন্ম ১৯৩৮ সালের ২৬ ডিসেম্বর রাঙ্গামাটি শহরে। তাঁর পিতার নাম আবু সাইয়েদ আহমেদ ও মাতার নাম আমিরুন্নেসা বেগম। পৈত্রিক নিবাস বরিশাল জেলার বানারীপাড়া। তাঁর লেখাপড়া শুরু হয় হুগলি কলেজিয়েট স্কুলে। ১৯৪৮ সালে তিনি ঢাকা কলেজিয়েট স্কুল এ ভর্তি হন এবং এই স্কুল থেকে ১৯৫২ সালে ম্যাট্রিক পাস করেন। ১৯৫৪ সালে তিনি ঢাকা কলেজ থেকে আই.এসসি পাস করেন। ১৯৫৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পদার্থবিদ্যা বিজ্ঞানে বিএসসি অনার্স পাশ করেন। অতঃপর তিনি লন্ডনে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং-এ ভর্তি হন।
একসময় প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার ইঙ্গমার বার্গম্যান নির্মিত সেভেন্থ সিল দেখে চলচ্চিত্র শিল্পের প্রতি তাঁর আগ্রহ সৃষ্টি হয়। বামপন্থী রাজনীতির প্রতি আকৃষ্ট হয়ে তিনি ব্রিটিশ কম্যুনিস্ট পার্টিতে যোগ দেন। এ সময় কম্যুনিস্ট পার্টির মুখপত্র ডেইলি ওয়ার্কার-এর রিপোর্টার হন। চলচ্চিত্র পরিচালনা ও ইতিহাস এবং নন্দনতত্ত্বের উপর কয়েকটি কোর্স তিনি সম্পন্ন করেন। তিনি লন্ডনে ইস্ট পাকিস্তান হাউস ও ইস্ট বেঙ্গল লিবারেশন ফ্রন্ট গড়ে তোলেন এবং ‘ক্যাম্পেন এগেইনস্ট রেসিয়াল ডিসক্রিমিনেশন’ আন্দোলনে যোগ দেন। ডেইলি ওয়ার্কার-এর রিপোর্টার থাকাকালে কিউবার প্রেসিডেন্ট ফিদেল ক্যাস্ট্রোর সাক্ষাৎকার নেন এবং গেরিলা যুদ্ধের নীতি ও কৌশল সম্পর্কে ধারণা লাভ করেন। পরে তিনি প্যালেস্টাইন ও আলজিরিয়ার মুক্তি সংগ্রামে অংশ নেন। একসময় ফরাসি সরকারের হাতে ধরা পড়ে তিনি আটমাস জেল খাটেন। ১৯৬৬ সালে তিনি দেশে ফিরে বাংলাদেশে বামপন্থী আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত হন। এক পর্যায়ে আইয়ুব সরকার তাঁকে গ্রেফতার করে জেলে রাখে। জেল থেকে বের হওয়ার পর এক বছর তিনি নজরবন্দি থাকেন।
১৯৬৭ সালে আলমগীর কবির দৈনিক অবজারভার পত্রিকায় যোগ দেন, পরে সিনিয়র এডিটর হিসেবে সাপ্তাহিক হলিডে পত্রিকার সঙ্গে যুক্ত হন। এ সময় একজন চলচ্চিত্র সমালোচক হিসেবে নাম করেন। পরবর্তী সময়ে হলিডে ছেড়ে এক্সপ্রেস নামে একটি সাপ্তাহিকের সম্পাদক হিসেবে তিনি কাজ করেন। ১৯৬৯ সালে ঢাকা সিনেক্লাব প্রতিষ্ঠা করেন। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে যোগ দেন এবং ইংরেজি বিভাগের প্রধান হিসেবে কাজ করেন। ‘আহমেদ চৌধুরী’ ছদ্মনামে তিনি ইংরেজি খবর ও কথিকা পাঠ করেন। প্রবাসী সরকারের প্রধান প্রতিবেদক হিসেবেও তিনি কাজ করেন, পাশাপাশি চলচ্চিত্র নির্মাণে আত্মনিয়োগ করেন। তিনি লিবারেশন ফাইটার্স নামে একটি প্রামাণ্য চিত্র নির্মাণ করেন। তিনি পাকিস্তানি বাহিনীর গণহত্যার উপর নির্মিত স্টপ জেনোসাইড-এর চিত্রনাট্যকার ও ধারাভাষ্যকার ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধ-উত্তর বাংলাদেশে তিনি বেশ কটি চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন। তাঁর নির্মিত পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র হলো ধীরে বহে মেঘনা (১৯৭৩), সূর্যকন্যা (১৯৭৬), সীমানা পেরিয়ে (১৯৭৭), রূপালী সৈকতে (১৯৭৯), মোহনা (১৯৮২), পরিণীতা (১৯৮৪) ও মহানায়ক (১৯৮৫)। তাঁর নির্মিত স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র হলো লবারেশন ফাইটার্স, প্রোগ্রাম ইন বাংলাদেশ, কালচার ইন বাংলাদেশ, সুফিয়া, অমূল্যধন, ভোর হলো দোর খোল,আমরা দুজন, এক সাগর রক্তের বিনিময়ে, মণিকাঞ্চন ও চোরাস্রোত। এছাড়া ফিল্ম ইন ইস্ট পাকিস্তান, ফিল্ম ইন বাংলাদেশ, সূর্যকন্যা, সীমানা পেরিয়ে, মোহনা ও সিনেমা ইন বাংলাদেশ তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থ। তিনি ১৯৭১ সালে চলচ্চিত্রের আদলে দুটি নাটক ধীরে বহে মেঘনা ও দিস ওয়াজ রেডিও বাংলাদেশ নির্মাণ করেন। আলমগীর কবির বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতি পুরস্কার, উত্তরণ-এর জহির রায়হান চলচ্চিত্র পুরস্কার ও সৈয়দ মোহাম্মদ পারভেজ পুরস্কার লাভ করেন। ১৯৮৯ সালের ২০ জানুয়ারি তাঁর মৃত্যু হয়। [আইউব হোসেন]