আনিসুজ্জামান: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

("right|thumbnail|200px|Anisuzzaman '''আনিসুজ্জামান''' (১৯৩৭-২০২০) বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, লেখক ও জাতীয় অধ্যাপক, বাংলাদেশের বাতিঘর হিসেবে খ্যাত, আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন প-িত অধ্যাপক আনিসু..." দিয়ে পাতা তৈরি)
 
সম্পাদনা সারাংশ নেই
 
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
[[Image:Anisuzzaman.jpg|right|thumbnail|200px|Anisuzzaman]]
[[Image:Anisuzzaman.jpg|right|thumbnail|200px|আনিসুজ্জামান]]
'''আনিসুজ্জামান''' (১৯৩৭-২০২০)  বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, লেখক ও জাতীয় অধ্যাপক, বাংলাদেশের বাতিঘর হিসেবে খ্যাত, আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন প-িত অধ্যাপক আনিসুজ্জামান ১৯৩৭ সালের ১৮ই ফেব্রুয়ারি পশ্চিমবঙ্গের ২৪ পরগণার বশিরহাটে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম এটিএম মোয়াজ্জেম। তিনি ছিলেন পেশায় হোমিও চিকিৎসক। মা সৈয়দা খাতুন গৃহিনী হলেও লেখালেখির অভ্যাস ছিল। কলকাতার পার্ক সার্কাস হাইস্কুলে আনিসুজ্জামানের শিক্ষাজীবন শুরু হয়। সপ্তম শ্রেণিতে উঠলে তাঁর পরিবার দেশ-বিভাগের সঙ্গে সঙ্গে পূর্ব পাকিস্তানের খুলনায় চলে আসেন। খুলনা জেলা স্কুল থেকে তিনি অষ্টম শ্রেণি পাস করেন। তখন তাঁর পরিবার ঢাকায় চলে আসেন। আনিসুজ্জামান নবাবপুর প্রিয়নাথ স্কুল থেকে ম্যাট্রিক, জগন্নাথ কলেজ থেকে ১৯৫৩ সালে ইন্টারমিডিয়েট, ১৯৫৬ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় অনার্স এবং পরবর্তী বছর প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হয়ে এম.এ পাশ করেন। ১৯৫৯ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রভাষক হিসেবে যোগদান করেন। ১৯৬২ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ‘ইংরেজ আমলের বাংলা সাহিত্যে বাঙালি মুসলমানের চিন্তাধারা: ১৭৫৭-১৮৫৮’ বিষয়ে পিএইচ.ডি ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৬৫ সালে শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ে পোস্ট-ডক্টরাল গবেষণা করেন। তাঁর গবেষণার বিষয় ছিল ‘উনিশ শতকে বাংলার সাংস্কৃতিক ইতিহাস: ইয়ং বেঙ্গল ও সমকাল’। ১৯৬৯ সালে তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে রীডার (সহযোগী অধ্যাপক) পদে যোগদান করেন। স্বাধীনতার অনেক বছর পর তিনি ১৯৮৫ সালে পুনরায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদান করেন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি কতিপয় সহকর্মীর সঙ্গে এপ্রিলে ভারতে চলে যান। কলকাতায় তিনি সক্রিয়ভাবে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে কাজ করেন এবং তাঁর নেতৃত্বে গড়ে ওঠে ‘বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি’। তিনি এই প্রতিষ্ঠানের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। বাংলাদেশে গণহত্যার খবরে পশ্চিম বাংলার শিক্ষক মহলে গভীর উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা সৃষ্টি হয় এবং ৩রা এপ্রিল কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর সত্যেন্দ্রনাথ সেনের নেতৃত্বে গঠিত হয় ‘কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ শিক্ষক সহায়ক সমিতি’। সেখানে আনিসুজ্জামান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।  
'''আনিসুজ্জামান''' (১৯৩৭-২০২০)  বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, লেখক ও জাতীয় অধ্যাপক, বাংলাদেশের বাতিঘর হিসেবে খ্যাত, আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন প-িত অধ্যাপক আনিসুজ্জামান ১৯৩৭ সালের ১৮ই ফেব্রুয়ারি পশ্চিমবঙ্গের ২৪ পরগণার বশিরহাটে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম এটিএম মোয়াজ্জেম। তিনি ছিলেন পেশায় হোমিও চিকিৎসক। মা সৈয়দা খাতুন গৃহিনী হলেও লেখালেখির অভ্যাস ছিল। কলকাতার পার্ক সার্কাস হাইস্কুলে আনিসুজ্জামানের শিক্ষাজীবন শুরু হয়। সপ্তম শ্রেণিতে উঠলে তাঁর পরিবার দেশ-বিভাগের সঙ্গে সঙ্গে পূর্ব পাকিস্তানের খুলনায় চলে আসেন। খুলনা জেলা স্কুল থেকে তিনি অষ্টম শ্রেণি পাস করেন। তখন তাঁর পরিবার ঢাকায় চলে আসেন। আনিসুজ্জামান নবাবপুর প্রিয়নাথ স্কুল থেকে ম্যাট্রিক, জগন্নাথ কলেজ থেকে ১৯৫৩ সালে ইন্টারমিডিয়েট, ১৯৫৬ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় অনার্স এবং পরবর্তী বছর প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হয়ে এম.এ পাশ করেন। ১৯৫৯ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রভাষক হিসেবে যোগদান করেন। ১৯৬২ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ‘ইংরেজ আমলের বাংলা সাহিত্যে বাঙালি মুসলমানের চিন্তাধারা: ১৭৫৭-১৮৫৮’ বিষয়ে পিএইচ.ডি ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৬৫ সালে শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ে পোস্ট-ডক্টরাল গবেষণা করেন। তাঁর গবেষণার বিষয় ছিল ‘উনিশ শতকে বাংলার সাংস্কৃতিক ইতিহাস: ইয়ং বেঙ্গল ও সমকাল’। ১৯৬৯ সালে তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে রীডার (সহযোগী অধ্যাপক) পদে যোগদান করেন। স্বাধীনতার অনেক বছর পর তিনি ১৯৮৫ সালে পুনরায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদান করেন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি কতিপয় সহকর্মীর সঙ্গে এপ্রিলে ভারতে চলে যান। কলকাতায় তিনি সক্রিয়ভাবে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে কাজ করেন এবং তাঁর নেতৃত্বে গড়ে ওঠে ‘বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি’। তিনি এই প্রতিষ্ঠানের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। বাংলাদেশে গণহত্যার খবরে পশ্চিম বাংলার শিক্ষক মহলে গভীর উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা সৃষ্টি হয় এবং ৩রা এপ্রিল কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর সত্যেন্দ্রনাথ সেনের নেতৃত্বে গঠিত হয় ‘কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ শিক্ষক সহায়ক সমিতি’। সেখানে আনিসুজ্জামান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।  



১৫:৩৫, ১ অক্টোবর ২০২৩ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ

আনিসুজ্জামান

আনিসুজ্জামান (১৯৩৭-২০২০) বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, লেখক ও জাতীয় অধ্যাপক, বাংলাদেশের বাতিঘর হিসেবে খ্যাত, আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন প-িত অধ্যাপক আনিসুজ্জামান ১৯৩৭ সালের ১৮ই ফেব্রুয়ারি পশ্চিমবঙ্গের ২৪ পরগণার বশিরহাটে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম এটিএম মোয়াজ্জেম। তিনি ছিলেন পেশায় হোমিও চিকিৎসক। মা সৈয়দা খাতুন গৃহিনী হলেও লেখালেখির অভ্যাস ছিল। কলকাতার পার্ক সার্কাস হাইস্কুলে আনিসুজ্জামানের শিক্ষাজীবন শুরু হয়। সপ্তম শ্রেণিতে উঠলে তাঁর পরিবার দেশ-বিভাগের সঙ্গে সঙ্গে পূর্ব পাকিস্তানের খুলনায় চলে আসেন। খুলনা জেলা স্কুল থেকে তিনি অষ্টম শ্রেণি পাস করেন। তখন তাঁর পরিবার ঢাকায় চলে আসেন। আনিসুজ্জামান নবাবপুর প্রিয়নাথ স্কুল থেকে ম্যাট্রিক, জগন্নাথ কলেজ থেকে ১৯৫৩ সালে ইন্টারমিডিয়েট, ১৯৫৬ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় অনার্স এবং পরবর্তী বছর প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হয়ে এম.এ পাশ করেন। ১৯৫৯ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রভাষক হিসেবে যোগদান করেন। ১৯৬২ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ‘ইংরেজ আমলের বাংলা সাহিত্যে বাঙালি মুসলমানের চিন্তাধারা: ১৭৫৭-১৮৫৮’ বিষয়ে পিএইচ.ডি ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৬৫ সালে শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ে পোস্ট-ডক্টরাল গবেষণা করেন। তাঁর গবেষণার বিষয় ছিল ‘উনিশ শতকে বাংলার সাংস্কৃতিক ইতিহাস: ইয়ং বেঙ্গল ও সমকাল’। ১৯৬৯ সালে তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে রীডার (সহযোগী অধ্যাপক) পদে যোগদান করেন। স্বাধীনতার অনেক বছর পর তিনি ১৯৮৫ সালে পুনরায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদান করেন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি কতিপয় সহকর্মীর সঙ্গে এপ্রিলে ভারতে চলে যান। কলকাতায় তিনি সক্রিয়ভাবে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে কাজ করেন এবং তাঁর নেতৃত্বে গড়ে ওঠে ‘বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি’। তিনি এই প্রতিষ্ঠানের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। বাংলাদেশে গণহত্যার খবরে পশ্চিম বাংলার শিক্ষক মহলে গভীর উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা সৃষ্টি হয় এবং ৩রা এপ্রিল কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর সত্যেন্দ্রনাথ সেনের নেতৃত্বে গঠিত হয় ‘কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ শিক্ষক সহায়ক সমিতি’। সেখানে আনিসুজ্জামান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।

তিনি বাংলাদেশের বৈষম্যপীড়িত বিভিন্নমুখী শিক্ষা ব্যবস্থার কঠোর সমালোচক ছিলেন। এই শিক্ষা ব্যবস্থা বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের নানা ধারায় বিভক্ত করে। একটি জাতি হিসেবে গড়ে ওঠার পথে এরূপ শিক্ষাব্যবস্থা সবচেয়ে বড় বাঁধা বলে তিনি মনে করতেন। তাঁর উল্লেখযোগ্য গবেষণা গ্রন্থগুলো হচ্ছে: ‘মুসলিম মানস ও বাংলা সাহিত্য’ (১৯৬৪), ‘মুসলিম বাংলার সাময়িকপত্র’ (১৯৬৯), ‘Factory Correspondence and other Bengali Documents in the India Official Library and Records’ (1981), ‘স্বরূপের সন্ধানে’ (১৯৭৬), ‘আঠারো শতকের বাংলা চিঠি’ (১৯৮৩), ‘রবীন্দ্রনাথ’ (১৯৬৮), ‘‘Cultural Pluralism’ (1991), ‘Creativity, Reality and Identity’ (1991), ‘Identity, Religion and Recent History’ (1995), ‘কাল নিরবধি’ (২০০৩) এবং আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ ‘বিপুলা পৃথিবী’ (২০১৫) ইত্যাদি।

ড. আনিসুজ্জামান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে ইমেরিটাস অধ্যাপক ছিলেন। তিনি ভাষা আন্দোলন (১৯৫২), ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান (১৯৬৯) ও ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। যুদ্ধকালীন গঠিত অস্থায়ী বাংলাদেশ সরকারের পরিকল্পনা কমিশনের তিনি সদস্য ছিলেন। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর তিনি ১৯৭২ সালের ২৬শে জুলাই গঠিত ড. কুদরাত-এ-খুদা শিক্ষা কমিশনের সদস্য ছিলেন।

১৯৭৪-৭৫ সালে কমনওয়েলথ অ্যাকাডেমি স্টাফ ফেলো হিসেবে তিনি লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব ওরিয়েন্টাল অ্যান্ড আফ্রিকান স্টাডিজে গবেষণা করেন। ১৯৭৮ থেকে ১৯৮৩ সাল পর্যন্ত তিনি জাতিসংঘ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা প্রকল্পে অংশ নেন। ২০১৮ সালের ১৯শে জুন বাংলাদেশ সরকার তাঁকে জাতীয় অধ্যাপক হিসেবে নিয়োগ দেয়। তিনি মওলানা আবুল কালাম আজাদ ইনস্টিটিউট অফ এশিয়ান স্টাডিজ (কলকাতা), প্যারিস বিশ্ববিদ্যালয় এবং নর্থ ক্যারোলিনা স্টেট ইউনিভার্সিটিতে ভিজিটিং ফেলো ছিলেন। এছাড়াও তিনি নজরুল ইনস্টিটিউট ও বাংলা একাডেমির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।

১৯৬৪ সালে প্রকাশিত হয় তাঁর পিএইচডি থিসিসভিত্তিক গ্রন্থ ‘মুসলিম-মানস ও বাংলা সাহিত্য’। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের চিন্তা-আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করে ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের যে সংবিধান প্রণীত হয়, তার বাংলা ভাষ্য রচনার মূল দায়িত্ব পালন করেন আনিসুজ্জামান। ২০০৩ সালে প্রকাশিত হয় তাঁর স্মৃতিকথা ‘কাল নিরবধি’।

অধ্যাপক আনিসুজ্জামান চিন্তায় ও কর্মে ছিলেন ধর্মনিরপেক্ষ। আজীবন তিনি রাষ্ট্রীয় জীবনে ধর্মের ভূমিকা প্রত্যাখান করেছেন এবং এ ধরনের সকল অপতৎপরতার সক্রিয় বিরোধিতা করেছেন। স্বাধীনতাত্তোর প্রথম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার বাংলা ভাষ্য রচনার দায়িত্ব দেয়া হয় আনিসুজ্জামানকে। বাংলাদেশের প্রথম বাজেটের খসড়া ইংরেজিতে করা হয়েছিল। অধ্যাপক আনিসুজ্জামান অর্থমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদের আগ্রহে বাংলাদেশের প্রথম বাজেটের বাংলা ভাষ্য প্রণয়ন করেন।

তিনি যেমন মানবতাবাদের কথা বলেছেন, তেমনি সাংস্কৃতিক বহুত্ববাদী সমাজ নির্মাণের কথাও সমগুরুত্ব সহকারে বলেছেন। তিনি নারী স্বাধীনতার একজন সক্রিয় সমর্থক ছিলেন। অবসর নেওয়ার পর প্রথমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সংখ্যাতিরিক্ত অধ্যাপক, এরপর, ইমেরিটাস অধ্যাপক হন, যা পূর্বে উল্লেখ করা হয়েছে।

আনিসুজ্জামান তাঁর কর্মের স্বীকৃতিস্বরূপ বহু সরকারি ও বেসরকারি পুরস্কারে ভূষিত হন। ১৯৮৫ সালে তিনি শিক্ষায় অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার প্রদত্ত দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার ‘একুশে পদক’ লাভ করেন। ২০১৪ সালে শিক্ষা ও সাহিত্যে অবদানের জন্যে ভারত সরকার প্রদত্ত তৃতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার ‘পদ্মভূষণ’ প্রাপ্ত হন। ২০১৫ সালে সাহিত্যে অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার প্রদত্ত সর্বোচ্চ বেসামরিক ‘স্বাধীনতা পুরস্কার’ লাভ করেন।

২০২০ সালের ১৪ই মে আনিসুজ্জামান করোনায় আক্রান্ত হয়ে ৮৪ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন। [সাব্বীর আহমেদ]

তথ্যসূত্র আনিসুজ্জামান, বিপুলা পৃথিবী, (প্রথমা প্রকাশন ২০১৫); জালাল ফিরোজ, সংবিধান ও আনিসুজ্জামান, (বাংলা একাডেমি ২০২১)।