হক, মোহাম্মদ আবদুল: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

সম্পাদনা সারাংশ নেই
সম্পাদনা সারাংশ নেই
 
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
[[Category:বাংলাপিডিয়া]]
[[Category:বাংলাপিডিয়া]]
[[Image:HaqueMohammadAbdul1.jpg|thumb|300px|মোহাম্মদ আবদুল হক]]
[[Image:HaqueMohammadAbdul1.jpg|thumb|200px|মোহাম্মদ আবদুল হক]]
'''হক, মোহাম্মদ আবদুল '''(১৯১৮-১৯৯৬)  আমলা, রাজনীতিক ও লেখক। ১৯১৮ সালের ১ জানুয়ারি সিলেট জেলার জকিগঞ্জ থানার কামালপুর গ্রামে তাঁর জন্ম। ১৯৪২ সালে তিনি সিলেট মুরারিচাঁদ কলেজ থেকে ইংরেজিতে অনার্সসহ বি.এ ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৪৩ সালে আবদুল হক আসাম পাবলিক সার্ভিস কমিশনের প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে পুলিশের ডেপুটি সুপারিন্টেন্ডেন্ট পদে নিয়োগ লাভ করেন। দেশ বিভাগের (১৯৪৭) পর তিনি পাকিস্তান পুলিশ সার্ভিসে যোগ দেন এবং পুলিশ প্রধান হিসেবে নোয়াখালী, রংপুর, ময়মনসিংহ ও ঢাকা জেলায় কৃতিত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৬০ সালে তিনি পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক পদে উন্নীত হন। ১৯৬৫ থেকে ১৯৬৯ সাল পর্যন্ত তিনি সড়ক পরিবহণ সংস্থার চেয়ারম্যান ছিলেন। চাকরি জীবনে নিষ্ঠা ও সততার স্বীকৃতিস্বরূপ আবদুল হক প্রেসিডেন্ট পুলিশ পদক (১৯৫৯) এবং তমগা-ই-পাকিস্তান (১৯৬৩) ও সিতারা-ই-খিদমত (১৯৬৯) খেতাবে ভূষিত হন।
'''হক, মোহাম্মদ আবদুল '''(১৯১৮-১৯৯৬)  আমলা, রাজনীতিক ও লেখক। ১৯১৮ সালের ১ জানুয়ারি সিলেট জেলার জকিগঞ্জ থানার কামালপুর গ্রামে তাঁর জন্ম। ১৯৪২ সালে তিনি সিলেট মুরারিচাঁদ কলেজ থেকে ইংরেজিতে অনার্সসহ বি.এ ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৪৩ সালে আবদুল হক আসাম পাবলিক সার্ভিস কমিশনের প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে পুলিশের ডেপুটি সুপারিন্টেন্ডেন্ট পদে নিয়োগ লাভ করেন। দেশ বিভাগের (১৯৪৭) পর তিনি পাকিস্তান পুলিশ সার্ভিসে যোগ দেন এবং পুলিশ প্রধান হিসেবে নোয়াখালী, রংপুর, ময়মনসিংহ ও ঢাকা জেলায় কৃতিত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৬০ সালে তিনি পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক পদে উন্নীত হন। ১৯৬৫ থেকে ১৯৬৯ সাল পর্যন্ত তিনি সড়ক পরিবহণ সংস্থার চেয়ারম্যান ছিলেন। চাকরি জীবনে নিষ্ঠা ও সততার স্বীকৃতিস্বরূপ আবদুল হক প্রেসিডেন্ট পুলিশ পদক (১৯৫৯) এবং তমগা-ই-পাকিস্তান (১৯৬৩) ও সিতারা-ই-খিদমত (১৯৬৯) খেতাবে ভূষিত হন।


চাকরি থেকে অবসর গ্রহণের পর আবদুল হক সমাজসেবামূলক কাজে আত্মনিয়োগ করেন। তিনি স্বীয় উদ্যোগে ঢাকায় আরোগ্য নিকেতন নামে একটি হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় হাসপাতালটি মুক্তিযোদ্ধাদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল ও চিকিৎসাকেন্দ্রে পরিণত হয়েছিল। সত্তরের দশকে আবদুল হক রাজনীতিতে যোগ দেন। ১৯৭৯ সালে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে তিনি জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৮৫-৮৬ সালে তিনি এরশাদ সরকারের ভূমি প্রশাসন ও ভূমি সংস্কার মন্ত্রী ছিলেন। তাঁর উদ্যোগে দেশে বহুসংখ্যক শিক্ষা ও সমাজকল্যাণমূলক প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠে। সমাজসেবা ও জনহিতকর কাজের জন্য তাঁকে শেরে বাংলা পদক ও ভাসানী পদকে ভূষিত করা হয়। তাঁর রচিত উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ রাহুগ্রস্ত বাংলাদেশ, দেশটা কি রসাতলে যাবে, সৃষ্টির সেরা শত মানব, দারিদ্র্য বিমোচন এবং Yahya’s Master Plan।  
চাকরি থেকে অবসর গ্রহণের পর আবদুল হক সমাজসেবামূলক কাজে আত্মনিয়োগ করেন। তিনি স্বীয় উদ্যোগে ঢাকায় আরোগ্য নিকেতন নামে একটি হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় হাসপাতালটি মুক্তিযোদ্ধাদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল ও চিকিৎসাকেন্দ্রে পরিণত হয়েছিল। সত্তরের দশকে আবদুল হক রাজনীতিতে যোগ দেন। ১৯৭৯ সালে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে তিনি জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৮৫-৮৬ সালে তিনি এরশাদ সরকারের ভূমি প্রশাসন ও ভূমি সংস্কার মন্ত্রী ছিলেন। তাঁর উদ্যোগে দেশে বহুসংখ্যক শিক্ষা ও সমাজকল্যাণমূলক প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠে। সমাজসেবা ও জনহিতকর কাজের জন্য তাঁকে শেরে বাংলা পদক ও ভাসানী পদকে ভূষিত করা হয়। তাঁর রচিত উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ রাহুগ্রস্ত বাংলাদেশ, দেশটা কি রসাতলে যাবে, সৃষ্টির সেরা শত মানব, দারিদ্র্য বিমোচন এবং Yahya’s Master Plan।  
১৯৯৬ সালের ৬ এপ্রিল তিনি ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন।  [শাহীদা আখতার]
১৯৯৬ সালের ৬ এপ্রিল তিনি ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন।  [শাহীদা আখতার]


[[en:Haque, Mohammad Abdul]]
[[en:Haque, Mohammad Abdul]]

০৮:৫৫, ২৫ মার্চ ২০১৫ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ

মোহাম্মদ আবদুল হক

হক, মোহাম্মদ আবদুল (১৯১৮-১৯৯৬)  আমলা, রাজনীতিক ও লেখক। ১৯১৮ সালের ১ জানুয়ারি সিলেট জেলার জকিগঞ্জ থানার কামালপুর গ্রামে তাঁর জন্ম। ১৯৪২ সালে তিনি সিলেট মুরারিচাঁদ কলেজ থেকে ইংরেজিতে অনার্সসহ বি.এ ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৪৩ সালে আবদুল হক আসাম পাবলিক সার্ভিস কমিশনের প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে পুলিশের ডেপুটি সুপারিন্টেন্ডেন্ট পদে নিয়োগ লাভ করেন। দেশ বিভাগের (১৯৪৭) পর তিনি পাকিস্তান পুলিশ সার্ভিসে যোগ দেন এবং পুলিশ প্রধান হিসেবে নোয়াখালী, রংপুর, ময়মনসিংহ ও ঢাকা জেলায় কৃতিত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৬০ সালে তিনি পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক পদে উন্নীত হন। ১৯৬৫ থেকে ১৯৬৯ সাল পর্যন্ত তিনি সড়ক পরিবহণ সংস্থার চেয়ারম্যান ছিলেন। চাকরি জীবনে নিষ্ঠা ও সততার স্বীকৃতিস্বরূপ আবদুল হক প্রেসিডেন্ট পুলিশ পদক (১৯৫৯) এবং তমগা-ই-পাকিস্তান (১৯৬৩) ও সিতারা-ই-খিদমত (১৯৬৯) খেতাবে ভূষিত হন।

চাকরি থেকে অবসর গ্রহণের পর আবদুল হক সমাজসেবামূলক কাজে আত্মনিয়োগ করেন। তিনি স্বীয় উদ্যোগে ঢাকায় আরোগ্য নিকেতন নামে একটি হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় হাসপাতালটি মুক্তিযোদ্ধাদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল ও চিকিৎসাকেন্দ্রে পরিণত হয়েছিল। সত্তরের দশকে আবদুল হক রাজনীতিতে যোগ দেন। ১৯৭৯ সালে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে তিনি জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৮৫-৮৬ সালে তিনি এরশাদ সরকারের ভূমি প্রশাসন ও ভূমি সংস্কার মন্ত্রী ছিলেন। তাঁর উদ্যোগে দেশে বহুসংখ্যক শিক্ষা ও সমাজকল্যাণমূলক প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠে। সমাজসেবা ও জনহিতকর কাজের জন্য তাঁকে শেরে বাংলা পদক ও ভাসানী পদকে ভূষিত করা হয়। তাঁর রচিত উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ রাহুগ্রস্ত বাংলাদেশ, দেশটা কি রসাতলে যাবে, সৃষ্টির সেরা শত মানব, দারিদ্র্য বিমোচন এবং Yahya’s Master Plan।

১৯৯৬ সালের ৬ এপ্রিল তিনি ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন।  [শাহীদা আখতার]