করিম, আবদুল: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
NasirkhanBot (আলোচনা | অবদান) অ (Added Ennglish article link) |
সম্পাদনা সারাংশ নেই |
||
১ নং লাইন: | ১ নং লাইন: | ||
[[Category:বাংলাপিডিয়া]] | [[Category:বাংলাপিডিয়া]] | ||
'''করিম, আব্দুল''' (১৯২২-১৯৭৩) | '''করিম, আব্দুল''' (১৯২২-১৯৭৩) শিক্ষাবিদ ও বিজ্ঞানী। আব্দুল করিমের জন্ম ১৯২২ সালে কুমিল্লা জেলায়। হোমনা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে তিনি ১৯৩৯ সালে ম্যাট্রিক এবং [[ঢাকা কলেজ|ঢাকা কলেজ]] থেকে ১৯৪২ সালে আই.এসসি পাস করেন। তিনি [[ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়|ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়]] থেকে [[রসায়ন|রসায়ন]] শাস্ত্রে ১৯৪৫ সালে বি.এসসি (সম্মান) এবং ১৯৪৬ সালে এম.এসসি ডিগ্রি অর্জন করেন। | ||
[[Image:KarimAdbul.jpg|thumb|400px|right|আব্দুল করিম]] | [[Image:KarimAdbul.jpg|thumb|400px|right|আব্দুল করিম]] | ||
আব্দুল করিম ১৯৪৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন শাস্ত্রের একজন প্রভাষক হিসেবে তাঁর কর্মজীবন শুরু করেন। ১৯৪৯ সালে তিনি অ্যাডিলেইড বিশ্ববিদ্যালয়ে মৃত্তিকা বিজ্ঞান শাস্ত্রে অধ্যয়নের জন্য ইউনেস্কো ফেলোশিপের আমন্ত্রণ লাভ করেন এবং এ বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই ১৯৫১ সালে মৃত্তিকা বিজ্ঞানে পিএইচ.ডি ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৫১ সালে দেশে প্রত্যাবর্তন করে আব্দুল করিম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নব প্রতিষ্ঠিত মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে যোগদান করেন। এ পেশায় কর্মরত থাকাকালীন তিনি দেশের মৃত্তিকা সম্পদের বিভিন্ন আঙ্গিক নিয়ে গবেষণাকর্ম পরিচালনা করেন এবং গবেষণালব্ধ ফলাফল দেশিয় ও আন্তর্জাতিক গবেষণা জার্নালে প্রকাশ করেন। ১৯৫৭ সালে তিনি রিডার পদে উন্নীত হন এবং ১৯৬৩ সালে মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধানের পদ অলঙ্কৃত করেন। পরবর্তী সময়ে তিনি ময়মনসিংহে অবস্থিত [[বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়|বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়]]-এর কৃষি রসায়ন বিভাগে প্রতিষ্ঠাতা প্রধান হিসেবে যোগদান করেন। শিক্ষকতার পাশাপাশি তিনি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদের ডীন এবং সিন্ডিকেট সদস্য হিসেবে দীর্ঘ সময় দায়িত্ব পালন করেছেন। | |||
আব্দুল করিমের গবেষণা কর্মকান্ড মৃত্তিকা রসায়ন, পেডোলজি, কৃষি রসায়ন প্রভৃতি ক্ষেত্রে বিস্তৃত ছিল। একজন খ্যাতনামা মৃত্তিকা বিজ্ঞানী হিসেবে মৃত্তিকা গবেষণার পথ পরিক্রমায় আব্দুল করিম সিলেট বালি (Sylhet sand) থেকে উন্নতমানের কাচ তৈরীর পদ্ধতি নির্ণয়ে সফল হন। বাংলাদেশের গ্রামীণ এলাকায় [[জৈবগ্যাস|জৈবগ্যাস]] উৎপাদনের প্রযুক্তি উন্নয়নের ক্ষেত্রে আবদুল করিম ছিলেন পথিকৃৎ। চালের তুষ থেকে ভোজ্য তেল উৎপাদনের ওপরও তিনি গবেষণাকর্ম পরিচালনা করেন। তিনি মাটির মুক্ত আয়রন অক্সাইড নির্ণয়ে নতুন একটি পদ্ধতি উদ্ভাবন করেন। আন্তর্জাতিক মৃত্তিকা বিজ্ঞান কংগ্রেসে তিনি বিশ্ব মৃত্তিকার একটি নতুন শ্রেণিবিন্যাস উপস্থাপন করে প্রশংসিত হন। | আব্দুল করিমের গবেষণা কর্মকান্ড মৃত্তিকা রসায়ন, পেডোলজি, কৃষি রসায়ন প্রভৃতি ক্ষেত্রে বিস্তৃত ছিল। একজন খ্যাতনামা মৃত্তিকা বিজ্ঞানী হিসেবে মৃত্তিকা গবেষণার পথ পরিক্রমায় আব্দুল করিম সিলেট বালি (Sylhet sand) থেকে উন্নতমানের কাচ তৈরীর পদ্ধতি নির্ণয়ে সফল হন। বাংলাদেশের গ্রামীণ এলাকায় [[জৈবগ্যাস|জৈবগ্যাস]] উৎপাদনের প্রযুক্তি উন্নয়নের ক্ষেত্রে আবদুল করিম ছিলেন পথিকৃৎ। চালের তুষ থেকে ভোজ্য তেল উৎপাদনের ওপরও তিনি গবেষণাকর্ম পরিচালনা করেন। তিনি মাটির মুক্ত আয়রন অক্সাইড নির্ণয়ে নতুন একটি পদ্ধতি উদ্ভাবন করেন। আন্তর্জাতিক মৃত্তিকা বিজ্ঞান কংগ্রেসে তিনি বিশ্ব মৃত্তিকার একটি নতুন শ্রেণিবিন্যাস উপস্থাপন করে প্রশংসিত হন। | ||
১১ নং লাইন: | ১০ নং লাইন: | ||
কৃষি ও মৃত্তিকা বিজ্ঞানে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ আব্দুল করিমকে ১৯৮০ সালে রাষ্ট্রপতি স্বর্ণপদক (মরণোত্তর) প্রদান করা হয়। নিবেদিত প্রাণ এ মৃত্তিকা বিজ্ঞানী ১৯৭৩ সালের ২২ ডিসেম্বর শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। [তানজিনা খান মুন্নী] | কৃষি ও মৃত্তিকা বিজ্ঞানে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ আব্দুল করিমকে ১৯৮০ সালে রাষ্ট্রপতি স্বর্ণপদক (মরণোত্তর) প্রদান করা হয়। নিবেদিত প্রাণ এ মৃত্তিকা বিজ্ঞানী ১৯৭৩ সালের ২২ ডিসেম্বর শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। [তানজিনা খান মুন্নী] | ||
[[en:Karim, | [[en:Karim, Abdul1]] |
০৬:২১, ৩ আগস্ট ২০১৪ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ
করিম, আব্দুল (১৯২২-১৯৭৩) শিক্ষাবিদ ও বিজ্ঞানী। আব্দুল করিমের জন্ম ১৯২২ সালে কুমিল্লা জেলায়। হোমনা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে তিনি ১৯৩৯ সালে ম্যাট্রিক এবং ঢাকা কলেজ থেকে ১৯৪২ সালে আই.এসসি পাস করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রসায়ন শাস্ত্রে ১৯৪৫ সালে বি.এসসি (সম্মান) এবং ১৯৪৬ সালে এম.এসসি ডিগ্রি অর্জন করেন।
আব্দুল করিম ১৯৪৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন শাস্ত্রের একজন প্রভাষক হিসেবে তাঁর কর্মজীবন শুরু করেন। ১৯৪৯ সালে তিনি অ্যাডিলেইড বিশ্ববিদ্যালয়ে মৃত্তিকা বিজ্ঞান শাস্ত্রে অধ্যয়নের জন্য ইউনেস্কো ফেলোশিপের আমন্ত্রণ লাভ করেন এবং এ বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই ১৯৫১ সালে মৃত্তিকা বিজ্ঞানে পিএইচ.ডি ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৫১ সালে দেশে প্রত্যাবর্তন করে আব্দুল করিম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নব প্রতিষ্ঠিত মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে যোগদান করেন। এ পেশায় কর্মরত থাকাকালীন তিনি দেশের মৃত্তিকা সম্পদের বিভিন্ন আঙ্গিক নিয়ে গবেষণাকর্ম পরিচালনা করেন এবং গবেষণালব্ধ ফলাফল দেশিয় ও আন্তর্জাতিক গবেষণা জার্নালে প্রকাশ করেন। ১৯৫৭ সালে তিনি রিডার পদে উন্নীত হন এবং ১৯৬৩ সালে মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধানের পদ অলঙ্কৃত করেন। পরবর্তী সময়ে তিনি ময়মনসিংহে অবস্থিত বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়-এর কৃষি রসায়ন বিভাগে প্রতিষ্ঠাতা প্রধান হিসেবে যোগদান করেন। শিক্ষকতার পাশাপাশি তিনি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদের ডীন এবং সিন্ডিকেট সদস্য হিসেবে দীর্ঘ সময় দায়িত্ব পালন করেছেন।
আব্দুল করিমের গবেষণা কর্মকান্ড মৃত্তিকা রসায়ন, পেডোলজি, কৃষি রসায়ন প্রভৃতি ক্ষেত্রে বিস্তৃত ছিল। একজন খ্যাতনামা মৃত্তিকা বিজ্ঞানী হিসেবে মৃত্তিকা গবেষণার পথ পরিক্রমায় আব্দুল করিম সিলেট বালি (Sylhet sand) থেকে উন্নতমানের কাচ তৈরীর পদ্ধতি নির্ণয়ে সফল হন। বাংলাদেশের গ্রামীণ এলাকায় জৈবগ্যাস উৎপাদনের প্রযুক্তি উন্নয়নের ক্ষেত্রে আবদুল করিম ছিলেন পথিকৃৎ। চালের তুষ থেকে ভোজ্য তেল উৎপাদনের ওপরও তিনি গবেষণাকর্ম পরিচালনা করেন। তিনি মাটির মুক্ত আয়রন অক্সাইড নির্ণয়ে নতুন একটি পদ্ধতি উদ্ভাবন করেন। আন্তর্জাতিক মৃত্তিকা বিজ্ঞান কংগ্রেসে তিনি বিশ্ব মৃত্তিকার একটি নতুন শ্রেণিবিন্যাস উপস্থাপন করে প্রশংসিত হন।
কৃষি ও মৃত্তিকা বিজ্ঞানে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ আব্দুল করিমকে ১৯৮০ সালে রাষ্ট্রপতি স্বর্ণপদক (মরণোত্তর) প্রদান করা হয়। নিবেদিত প্রাণ এ মৃত্তিকা বিজ্ঞানী ১৯৭৩ সালের ২২ ডিসেম্বর শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। [তানজিনা খান মুন্নী]