ভালুকা উপজেলা: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

সম্পাদনা সারাংশ নেই
(হালনাগাদ)
 
২ নং লাইন: ২ নং লাইন:
'''ভালুকা উপজেলা''' ([[ময়মনসিংহ জেলা|ময়মনসিংহ জেলা]])  আয়তন: ৪৪৪.০৫ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৪°১৬´ থেকে ২৪°২৯´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯০°১৪´ থেকে ৯০°২৯´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে ফুলবাড়ীয়া এবং ত্রিশাল উপজেলা, দক্ষিণে শ্রীপুর (গাজীপুর) উপজেলা, পূর্বে গফরগাঁও উপজেলা, পশ্চিমে সখীপুর ও ঘাটাইল উপজেলা।
'''ভালুকা উপজেলা''' ([[ময়মনসিংহ জেলা|ময়মনসিংহ জেলা]])  আয়তন: ৪৪৪.০৫ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৪°১৬´ থেকে ২৪°২৯´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯০°১৪´ থেকে ৯০°২৯´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে ফুলবাড়ীয়া এবং ত্রিশাল উপজেলা, দক্ষিণে শ্রীপুর (গাজীপুর) উপজেলা, পূর্বে গফরগাঁও উপজেলা, পশ্চিমে সখীপুর ও ঘাটাইল উপজেলা।


''জনসংখ্যা'' ৩০৮৭৫৮; পুরুষ ১৫৮০০৩, মহিলা ১৫০৭৫৫। মুসলিম ২৯৪৩৬১, হিন্দু ১৩৪৯৯, বৌদ্ধ ৬৪৩, খ্রিস্টান ২২ এবং অন্যান্য ২৩৩। এ উপজেলায় গারো, রাজবংশী, মান্দাই প্রভৃতি আদিবাসী জনগোষ্ঠির বসবাস রয়েছে।
''জনসংখ্যা'' ৪৩০৩২০; পুরুষ ২১৭১৩৪, মহিলা ২১৩১৮৬। মুসলিম ৪১০৭৪৫, হিন্দু ১৭৩৮১, বৌদ্ধ ৩৫, খ্রিস্টান ১৪৭৩ এবং অন্যান্য ৬৮৬। এ উপজেলায় গারো, রাজবংশী, মান্দাই প্রভৃতি আদিবাসী জনগোষ্ঠির বসবাস রয়েছে।


''জলাশয়'' সুতিয়া, লালটি, বাজুয়া, মিয়াবুয়া, বানার ও সালদা নদী এবং হরলা বিল উল্লেখযোগ্য।
''জলাশয়'' সুতিয়া, লালটি, বাজুয়া, মিয়াবুয়া, বানার ও সালদা নদী এবং হরলা বিল উল্লেখযোগ্য।
১৬ নং লাইন: ১৬ নং লাইন:
| শহর  || গ্রাম || শহর  || গ্রাম
| শহর  || গ্রাম || শহর  || গ্রাম
|-
|-
| ১ || ১১ || ৮৭ || ১১০ || ৩০৮০০৭  || ১৭৭৯৫১  || ৬৯৫  || ৪৯.৮ || ৪০.
| ১ || ১১ || ৮৭ || ১১০ || ৬১৫৮৮ || ৩৬৮৭৩২ || ৯৬৯ || ৪৯.৮ (২০০১) || ৪৬.
|}
|}
{| class="table table-bordered table-hover"
{| class="table table-bordered table-hover"
২৪ নং লাইন: ২৪ নং লাইন:
| আয়তন (বর্গ কিমি)  || ওয়ার্ড  ||  || লোকসংখ্যা  || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি)  || শিক্ষার হার (%)
| আয়তন (বর্গ কিমি)  || ওয়ার্ড  ||  || লোকসংখ্যা  || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি)  || শিক্ষার হার (%)
|-
|-
| ৫.১০ || ৯ || ১৩  || ১২৬৭৬  || ২৪৮৫ || ৬৫.৮
| ৫.১০ (২০০১) || ৯ || ১৮ || ৩৮৭৭৪ || ২৪৮৫ (২০০১) || ৭৩.৮
|}
|}
{| class="table table-bordered table-hover"
{| class="table table-bordered table-hover"
৩২ নং লাইন: ৩২ নং লাইন:
| আয়তন (বর্গ কিমি)  || মৌজা  || লোকসংখ্যা  || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি)  || শিক্ষার হার (%)
| আয়তন (বর্গ কিমি)  || মৌজা  || লোকসংখ্যা  || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি)  || শিক্ষার হার (%)
|-
|-
| ২৪.৯৩ || ৩ || ১৮১৩১  || ৭২৭ || ৩৮.
| ২৪.৯৩ (২০০১) || ৩ || ২২৮১৪ || ৭২৭ (২০০১) || ৪৭.
|}
|}
{| class="table table-bordered table-hover"
{| class="table table-bordered table-hover"
৪২ নং লাইন: ৪২ নং লাইন:
| পুরুষ  || মহিলা
| পুরুষ  || মহিলা
|-  
|-  
| উথুরা ৯৪ || ১০৭০৩ || ১২৪৪০  || ১২৩০৫  || ৩৩.০৮
| উথুরা ৯৪ || ১০৭০৩ || ১৩৮৮৮ || ১৪২৯০ || ৩৮.
|-
|-
| কাচিনা ৬০ || ১৩৯২৮ || ১৮৬০৮  || ১৮৩৯৩  || ৪০.৮৩
| কাচিনা ৬০ || ১৩৯২৮ || ১৯৯৪১ || ২১২৬৭ || ৪১.
|-
|-
| ডাকাতিয়া ৩৪ || ১৫৯০৩ || ১৮৪৮৩  || ১৮২১৮  || ৩০.৪৫
| ডাকাতিয়া ৩৪ || ১৫৯০৩ || ১৯৮০৮ || ২১৬৬৬ || ৩৪.
|-
|-
| ধীতপুর ৪৩ || ৫৭৪৩ || ১০৩৭৮  || ৯৭০৫  || ৪৭.১৬
| ধীতপুর ৪৩ || ৫৭৪৩ || ১০৭৬৭ || ১১২৪২ || ৪৭.
|-
|-
| বিরুনীয়া ২৫ || ৬৭৩৮ || ১১২৭৭  || ১০৬১৬  || ৩৭.৭৪
| বিরুনীয়া ২৫ || ৬৭৩৮ || ১১৮৩৫ || ১১৮৮৮ || ৪০.
|-
|-
| ভরাডোবা ১৭ || ৫৮৮৪  || ৯৮৮৮  || ৯২৩৮  || ৫১.২৩
| ভরাডোবা ১৭ || ৫৭০২ || ১৩০৭২ || ১২৭৪০ || ৫১.
|-
|-
| ভালুকা ১৪ || ৭৯০২  || ১০৫৭২  || ৯৮৭৩  || ৪৬.৯০
| ভালুকা ১৪ || ৬০৯৮ || ৯৮১৯ || ৯৫৭১ || ৫২.
|-
|-
| মল্লিকবাড়ী ৬৯ || ১১১৭৩  || ১৭৩১২  || ১৬৪৩২  || ৩৮.০৫
| মল্লিকবাড়ী ৬৯ || ১০৮৮৭ || ২১৩০৬ || ২১১৪০ || ৪৫.
|-
|-
| মেদুয়ারী ৭৭ || ৮৪১২ || ১১০৪২  || ১০৬৫২  || ৩৯.০৩
| মেদুয়ারী ৭৭ || ৮৪১২ || ১২০৬৬ || ১২৩১১ || ৪২.
|-
|-
| রাজৈ ৮৬ || ৮১৬৬ || ১২৪৩১  || ১১৯৭৬  || ৪৪.৫৭
| রাজই ৮৬ || ৮১৬৬ || ১১৭৯৯ || ১২৫২৫ || ৪৬.
|-
|-
| হরিরবাড়ী ৫১ || ১৪৮৮২ || ১৮৮৯২  || ১৭৩৫১  || ৪০.২০
| হরিরবাড়ী ৫১ || ১৪৮৮২ || ৫২৫৯৪ || ৪৬০১১ || ৫৭.
|}
|}
''সূত্র'' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।
''সূত্র'' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।


[[Image:BhaulukaUpazila.jpg|thumb|right|400px]]
[[Image:BhaulukaUpazila.jpg|thumb|right|400px]]
''প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ'' বিরুনিয়ায় নীলকুঠির ভগ্নাবশেষ, নিশাইগঞ্জের মসজিদ, ভালুকা বাজারের ক্ষীরু নদীর তীরের মসজিদ।
''প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ'' বিরুনিয়ায় নীলকুঠির ভগ্নাবশেষ, নিশাইগঞ্জের মসজিদ, ভালুকা বাজারের ক্ষীরু নদীর তীরের মসজিদ।


''ঐতিহাসিক ঘটনাবলি''  পাল ও সেন শাসনামলে ময়মনসিংহ ও ভালুকা অঞ্চল সামন্ত শাসকের অধীন ছিল। চতুর্দশ শতকে আলাউদ্দিন হোসেন শাহের আমলে এ অঞ্চল মুসলিম শাসনাধীনে আসে। ইংরেজ আমলে ময়মনসিংহ অঞ্চলকে কয়েকটি মহকুমায় ভাগ করা হয়। ময়মনসিংহ সদর মহকুমার অন্তর্ভুক্ত হয় ভালুকা থানা এবং পরবর্তীতে এটি উপজেলায় উন্নীত হয়।  মুক্তিযুদ্ধের সময় ১১ নং সেক্টরের সাব সেক্টর কমান্ডার আফসার উদ্দিন আহমদ মুক্তিযোদ্ধাদের ট্রেনিং দিয়ে অস্ত্র সংগ্রহ করে পাকবাহিনীর মোকাবিলা করেন। পাকসেনারা ভালুকার মল্লিকবাড়ী, আশকা, তামাট ও ভালুকায় ক্যাম্প স্থাপন করে অসংখ্য নিরীহ মানুষকে নির্যাতন ও হত্যা করে। মুক্তিযুদ্ধে পাকবাহিনী এ উপজেলায় ব্যাপক গণহত্যা, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট চালায়।
''ঐতিহাসিক ঘটনা'' পাল ও সেন শাসনামলে ময়মনসিংহ ও ভালুকা অঞ্চল সামন্ত শাসকের অধীন ছিল। চতুর্দশ শতকে আলাউদ্দিন হোসেন শাহের আমলে এ অঞ্চল মুসলিম শাসনাধীনে আসে। ইংরেজ আমলে ময়মনসিংহ অঞ্চলকে কয়েকটি মহকুমায় ভাগ করা হয়। ময়মনসিংহ সদর মহকুমার অন্তর্ভুক্ত হয় ভালুকা থানা এবং পরবর্তীতে এটি উপজেলায় উন্নীত হয়।


''মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন'' স্মৃতিস্তম্ভ ১ (ভালুকা বাসস্ট্যান্ড)।
''মুক্তিযুদ্ধ'' মুক্তিযুদ্ধের সময় ১১ নং সেক্টরের সাব সেক্টর কমান্ডার আফসার উদ্দিন আহমদ মুক্তিযোদ্ধাদের ট্রেনিং দিয়ে অস্ত্র সংগ্রহ করে পাকবাহিনীর মোকাবিলা করেন। পাকসেনারা ভালুকার মল্লিকবাড়ী, আশকা, তামাট ও ভালুকায় ক্যাম্প স্থাপন করে অসংখ্য নিরীহ মানুষকে নির্যাতন ও হত্যা করে। মুক্তিযুদ্ধে পাকবাহিনী এ উপজেলায় ব্যাপক গণহত্যা, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট চালায়। মুক্তিযুদ্ধে ভালুকার আফসার বাহিনীর সদস্যরা শতাধিক যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে। এসবের মধ্যে ভাওয়ালিয়াবাজু, সিডস্টোর, চানপুর, মামারিশপুর, ভালুকা থানা, মল্লিকবাড়ি, চান্দেরাটি ও পারাগাঁও-এ সংঘটিত যুদ্ধসমূহ উল্লেখযোগ্য। ভালুকা বাসস্ট্যান্ডে ১টি স্মৃতিস্তম্ভ স্থাপিত হয়েছে।


''ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান''  মসজিদ ৬৩৯, মন্দির ২৮, গির্জা ৪। উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান: উথুরা জামে মসজিদ, মল্লিকবাড়ী জামে মসজিদ, নিশাইগঞ্জ জামে মসজিদ, ভালুকা বাজার জামে মসজিদ, হবিরবাড়ী মন্দির।
''বিস্তারিত দেখুন'' ভালুকা উপজেলা, ''বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ'', বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ৭।


''শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান'' গড় হার ৪১.১০%; পুরুষ ৪৪.০%, মহিলা ৩৮.%। কলেজ ৫, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৪২, প্রাথমিক বিদ্যালয় ১২৭, কমিউনিটি স্কুল ২৪, স্যাটেলাইট স্কুল ৭, কারিগরি স্কুল ১, মাদ্রাসা ৩৮। ভালুকা ডিগ্রি কলেজ (১৯৭২), বাটাজোড় কলেজ (১৯৭৭), উথুরা কলেজ (১৯৯০), ভরাডোবা হাইস্কুল (১৯৪৮), ভালুকা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৫০), কৈয়াদী উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৬০), হবিরবাড়ী সোনারবাংলা উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৭২), ভালুকা সরকারি বালিকা বিদ্যালয় (১৯৮৫),  রামপুর সিনিয়র মাদ্রাসা (১৯৫০), গোয়ারী সিনিয়র মাদ্রাসা (১৯৪৮)।
''ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান''  মসজিদ ৬৩৯, মন্দির ২৮, গির্জা ৪। উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান: উথুরা জামে মসজিদ, মল্লিকবাড়ী জামে মসজিদ, নিশাইগঞ্জ জামে মসজিদ, ভালুকা বাজার জামে মসজিদ, হবিরবাড়ী মন্দির।
 
''শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান'' গড় হার ৪৯.%; পুরুষ ৫২.০%, মহিলা ৪৬.%। কলেজ ৫, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৪২, প্রাথমিক বিদ্যালয় ১২৭, কমিউনিটি স্কুল ২৪, স্যাটেলাইট স্কুল ৭, কারিগরি স্কুল ১, মাদ্রাসা ৩৮। ভালুকা ডিগ্রি কলেজ (১৯৭২), বাটাজোড় কলেজ (১৯৭৭), উথুরা কলেজ (১৯৯০), ভরাডোবা হাইস্কুল (১৯৪৮), ভালুকা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৫০), কৈয়াদী উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৬০), হবিরবাড়ী সোনারবাংলা উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৭২), ভালুকা সরকারি বালিকা বিদ্যালয় (১৯৮৫),  রামপুর সিনিয়র মাদ্রাসা (১৯৫০), গোয়ারী সিনিয়র মাদ্রাসা (১৯৪৮)।


''পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী'' দৈনিক: জাগ্রত বাংলা; মাসিক: মানবতা, আলোর ছায়া (অনিয়মিত)।
''পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী'' দৈনিক: জাগ্রত বাংলা; মাসিক: মানবতা, আলোর ছায়া (অনিয়মিত)।
৯৫ নং লাইন: ৯৭ নং লাইন:
''মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার'' মৎস্য ২৫, হাঁস-মুরগির ৩৫, হ্যাচারি ২।
''মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার'' মৎস্য ২৫, হাঁস-মুরগির ৩৫, হ্যাচারি ২।


''যোগাযোগ বিশেষত্ব'' পাকারাস্তা ১২২ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ২৭৫ কিমি, কাঁচারাস্তা ৯০০ কিমি; নৌপথ ১৬ নটিক্যাল মাইল।
''যোগাযোগ বিশেষত্ব'' পাকারাস্তা ১২৪ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ১৯ কিমি, কাঁচারাস্তা ৭২৯ কিমি।


''বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন'' পাল্কি, গরুর গাড়ি ।
''বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন'' পাল্কি, গরুর গাড়ি ।
১০৭ নং লাইন: ১০৯ নং লাইন:
''প্রধান রপ্তানিদ্রব্য''  কলা, কাঁঠাল, পেয়ারা, আখ, শাকসবজি, সুতা, ডিম, মুরগি।
''প্রধান রপ্তানিদ্রব্য''  কলা, কাঁঠাল, পেয়ারা, আখ, শাকসবজি, সুতা, ডিম, মুরগি।


''বিদ্যুৎ ব্যবহার'' এ উপজেলার সবক’টি ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ১৪.২৪% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে ।
''বিদ্যুৎ ব্যবহার'' এ উপজেলার সবক’টি ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ৫৩.% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে ।  


''পানীয়জলের উৎস'' নলকূপ ৮৮.৬৬%, ট্যাপ .৫৭%, পুকুর ০.৬৯% এবং অন্যান্য ১০.০৮%।
''পানীয়জলের উৎস'' নলকূপ ৯১.%, ট্যাপ .% এবং অন্যান্য .%।


''স্যানিটেশন ব্যবস্থা'' এ উপজেলার ২৭.৭৪% (গ্রামে ২৭.১৩% এবং শহরে ৩৩.৩৯%) পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৩৭.৪৩% (গ্রামে ৩৬.৫৪% এবং শহরে ৪৫.৫৯%) পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ৩৪.৮৩% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।
''স্যানিটেশন ব্যবস্থা'' এ উপজেলার ৬৬.% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ২৬.% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। .% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।


''স্বাস্থ্যকেন্দ্র''  উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, হাসপাতাল ২, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র ৬, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ৪, কমিউনিটি ক্লিনিক ৪।
''স্বাস্থ্যকেন্দ্র''  উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, হাসপাতাল ২, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র ৬, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ৪, কমিউনিটি ক্লিনিক ৪।
১১৭ নং লাইন: ১১৯ নং লাইন:
''এনজিও''  কারিতাস, ব্র্যাক, আশা, প্রশিকা, কেয়ার, সোসিও-ইকোনমিক এসোসিয়েশন (সিডা), এইচডিপি।  [এ.কে.এম আমানউল্লাহ বাদল]
''এনজিও''  কারিতাস, ব্র্যাক, আশা, প্রশিকা, কেয়ার, সোসিও-ইকোনমিক এসোসিয়েশন (সিডা), এইচডিপি।  [এ.কে.এম আমানউল্লাহ বাদল]


'''তথ্যসূত্র'''  আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; ভালুকা উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।
'''তথ্যসূত্র'''  আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; ভালুকা উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।


[[en:Bhaluka Upazila]]
[[en:Bhaluka Upazila]]

১৬:২০, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ

ভালুকা উপজেলা (ময়মনসিংহ জেলা)  আয়তন: ৪৪৪.০৫ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৪°১৬´ থেকে ২৪°২৯´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯০°১৪´ থেকে ৯০°২৯´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে ফুলবাড়ীয়া এবং ত্রিশাল উপজেলা, দক্ষিণে শ্রীপুর (গাজীপুর) উপজেলা, পূর্বে গফরগাঁও উপজেলা, পশ্চিমে সখীপুর ও ঘাটাইল উপজেলা।

জনসংখ্যা ৪৩০৩২০; পুরুষ ২১৭১৩৪, মহিলা ২১৩১৮৬। মুসলিম ৪১০৭৪৫, হিন্দু ১৭৩৮১, বৌদ্ধ ৩৫, খ্রিস্টান ১৪৭৩ এবং অন্যান্য ৬৮৬। এ উপজেলায় গারো, রাজবংশী, মান্দাই প্রভৃতি আদিবাসী জনগোষ্ঠির বসবাস রয়েছে।

জলাশয় সুতিয়া, লালটি, বাজুয়া, মিয়াবুয়া, বানার ও সালদা নদী এবং হরলা বিল উল্লেখযোগ্য।

প্রশাসন ভালুকা থানা গঠিত হয় ১৯১৭ সালে এবং থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮৩ সালে।

উপজেলা
পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব(প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
শহর গ্রাম শহর গ্রাম
১১ ৮৭ ১১০ ৬১৫৮৮ ৩৬৮৭৩২ ৯৬৯ ৪৯.৮ (২০০১) ৪৬.৬
পৌরসভা
আয়তন (বর্গ কিমি) ওয়ার্ড লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
৫.১০ (২০০১) ১৮ ৩৮৭৭৪ ২৪৮৫ (২০০১) ৭৩.৮
উপজেলা শহর
আয়তন (বর্গ কিমি) মৌজা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
২৪.৯৩ (২০০১) ২২৮১৪ ৭২৭ (২০০১) ৪৭.৮
ইউনিয়ন
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড আয়তন (একর) লোকসংখ্যা শিক্ষার হার (%)
পুরুষ মহিলা
উথুরা ৯৪ ১০৭০৩ ১৩৮৮৮ ১৪২৯০ ৩৮.৩
কাচিনা ৬০ ১৩৯২৮ ১৯৯৪১ ২১২৬৭ ৪১.০
ডাকাতিয়া ৩৪ ১৫৯০৩ ১৯৮০৮ ২১৬৬৬ ৩৪.২
ধীতপুর ৪৩ ৫৭৪৩ ১০৭৬৭ ১১২৪২ ৪৭.৩
বিরুনীয়া ২৫ ৬৭৩৮ ১১৮৩৫ ১১৮৮৮ ৪০.১
ভরাডোবা ১৭ ৫৭০২ ১৩০৭২ ১২৭৪০ ৫১.০
ভালুকা ১৪ ৬০৯৮ ৯৮১৯ ৯৫৭১ ৫২.৮
মল্লিকবাড়ী ৬৯ ১০৮৮৭ ২১৩০৬ ২১১৪০ ৪৫.৩
মেদুয়ারী ৭৭ ৮৪১২ ১২০৬৬ ১২৩১১ ৪২.৯
রাজই ৮৬ ৮১৬৬ ১১৭৯৯ ১২৫২৫ ৪৬.৮
হরিরবাড়ী ৫১ ১৪৮৮২ ৫২৫৯৪ ৪৬০১১ ৫৭.১

সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।

প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ বিরুনিয়ায় নীলকুঠির ভগ্নাবশেষ, নিশাইগঞ্জের মসজিদ, ভালুকা বাজারের ক্ষীরু নদীর তীরের মসজিদ।

ঐতিহাসিক ঘটনা পাল ও সেন শাসনামলে ময়মনসিংহ ও ভালুকা অঞ্চল সামন্ত শাসকের অধীন ছিল। চতুর্দশ শতকে আলাউদ্দিন হোসেন শাহের আমলে এ অঞ্চল মুসলিম শাসনাধীনে আসে। ইংরেজ আমলে ময়মনসিংহ অঞ্চলকে কয়েকটি মহকুমায় ভাগ করা হয়। ময়মনসিংহ সদর মহকুমার অন্তর্ভুক্ত হয় ভালুকা থানা এবং পরবর্তীতে এটি উপজেলায় উন্নীত হয়।

মুক্তিযুদ্ধ মুক্তিযুদ্ধের সময় ১১ নং সেক্টরের সাব সেক্টর কমান্ডার আফসার উদ্দিন আহমদ মুক্তিযোদ্ধাদের ট্রেনিং দিয়ে অস্ত্র সংগ্রহ করে পাকবাহিনীর মোকাবিলা করেন। পাকসেনারা ভালুকার মল্লিকবাড়ী, আশকা, তামাট ও ভালুকায় ক্যাম্প স্থাপন করে অসংখ্য নিরীহ মানুষকে নির্যাতন ও হত্যা করে। মুক্তিযুদ্ধে পাকবাহিনী এ উপজেলায় ব্যাপক গণহত্যা, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট চালায়। মুক্তিযুদ্ধে ভালুকার আফসার বাহিনীর সদস্যরা শতাধিক যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে। এসবের মধ্যে ভাওয়ালিয়াবাজু, সিডস্টোর, চানপুর, মামারিশপুর, ভালুকা থানা, মল্লিকবাড়ি, চান্দেরাটি ও পারাগাঁও-এ সংঘটিত যুদ্ধসমূহ উল্লেখযোগ্য। ভালুকা বাসস্ট্যান্ডে ১টি স্মৃতিস্তম্ভ স্থাপিত হয়েছে।

বিস্তারিত দেখুন ভালুকা উপজেলা, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ৭।

ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদ ৬৩৯, মন্দির ২৮, গির্জা ৪। উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান: উথুরা জামে মসজিদ, মল্লিকবাড়ী জামে মসজিদ, নিশাইগঞ্জ জামে মসজিদ, ভালুকা বাজার জামে মসজিদ, হবিরবাড়ী মন্দির।

শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৪৯.১%; পুরুষ ৫২.০%, মহিলা ৪৬.২%। কলেজ ৫, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৪২, প্রাথমিক বিদ্যালয় ১২৭, কমিউনিটি স্কুল ২৪, স্যাটেলাইট স্কুল ৭, কারিগরি স্কুল ১, মাদ্রাসা ৩৮। ভালুকা ডিগ্রি কলেজ (১৯৭২), বাটাজোড় কলেজ (১৯৭৭), উথুরা কলেজ (১৯৯০), ভরাডোবা হাইস্কুল (১৯৪৮), ভালুকা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৫০), কৈয়াদী উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৬০), হবিরবাড়ী সোনারবাংলা উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৭২), ভালুকা সরকারি বালিকা বিদ্যালয় (১৯৮৫),  রামপুর সিনিয়র মাদ্রাসা (১৯৫০), গোয়ারী সিনিয়র মাদ্রাসা (১৯৪৮)।

পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী দৈনিক: জাগ্রত বাংলা; মাসিক: মানবতা, আলোর ছায়া (অনিয়মিত)।

সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান ক্লাব ৯০, লাইব্রেরি ৬, সিনেমা হল ২, মহিলা সংগঠন ১৫।

বিশেষ আকর্ষণ  উথুরা ইউনিয়নের হাতিবেড় গ্রামের কুমির উৎপাদন কেন্দ্র, পাড়াগাঁও গ্রামে আরবীয় খেজুর চাষের খামার, হবিরবাড়ী ইউনিয়নে খরগোশ উৎপাদন কেন্দ্র এবং তেপান্তর ও প্যারাডাইস পয়েন্ট।

জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৬৯.৭২%, অকৃষি শ্রমিক ৩.১৪%, শিল্প ০.৫৪%, ব্যবসা ৯.৪৮%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ২.৬১%, চাকরি ৫.৯১%, নির্মাণ ১.০৪%, ধর্মীয় সেবা ০.১৭%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ৫.৯৯% এবং অন্যান্য ১.৪০%।

কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৭১.৬৯%, ভূমিহীন ২৮.৩১%। শহরে ৫৯.৫৯% এবং গ্রামে ৭৩.০১% পরিবারের কৃষিজমি রয়েছে।

প্রধান কৃষি ফসল ধান, পাট, গম, আখ, আলু, ডাল, সরিষা, শাকসবজি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি তিল, অড়হর, ফুটি।

প্রধান ফল-ফলাদি আম, কাঁঠাল, কলা, পেয়ারা, লিচু, আনারস, কুল, আমড়া, জাম, জলপাই, পেঁপে, আতা, নারিকেল।

মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার মৎস্য ২৫, হাঁস-মুরগির ৩৫, হ্যাচারি ২।

যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ১২৪ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ১৯ কিমি, কাঁচারাস্তা ৭২৯ কিমি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পাল্কি, গরুর গাড়ি ।

শিল্প ও কলকারখানা রাইসমিল, টেক্সটাইল মিল, স্পিনিং মিল, মৎস্যখাদ্য তৈরির কারখানা, সিরামিক ইন্ডাস্ট্রিজ, ওয়েল্ডিং কারখানা।

কুটিরশিল্প স্বর্ণশিল্প, লৌহশিল্প, দারুশিল্প, বাঁশের কাজ, বেতের কাজ।

হাটবাজার ও মেলা হাটবাজার ৫০, মেলা ৪। মল্লিকবাড়ী বাজার, ভালুকা বাজার, সীডস্টোর বাজার, বাটাজোড় বাজার, কাচিনা বাজার, উথুরা বাজার, বিরুনীয়া বাজার ও চামাদী বাজার এবং চৈত্র-সংক্রান্তি ও বৈশাখী মেলা উল্লেখযোগ্য।

প্রধান রপ্তানিদ্রব্য  কলা, কাঁঠাল, পেয়ারা, আখ, শাকসবজি, সুতা, ডিম, মুরগি।

বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ৫৩.৮% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে ।

পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৯১.৮%, ট্যাপ ৩.১% এবং অন্যান্য ৫.১%।

স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ৬৬.৭% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ২৬.১% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ৭.২% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।

স্বাস্থ্যকেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, হাসপাতাল ২, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র ৬, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ৪, কমিউনিটি ক্লিনিক ৪।

এনজিও কারিতাস, ব্র্যাক, আশা, প্রশিকা, কেয়ার, সোসিও-ইকোনমিক এসোসিয়েশন (সিডা), এইচডিপি। [এ.কে.এম আমানউল্লাহ বাদল]

তথ্যসূত্র  আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; ভালুকা উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।