লোকনাথ ব্রহ্মচারী: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
NasirkhanBot (আলোচনা | অবদান) অ (Added Ennglish article link) |
সম্পাদনা সারাংশ নেই |
||
২ নং লাইন: | ২ নং লাইন: | ||
'''লোকনাথ ব্রহ্মচারী''' (১৭৩০-১৮৯০) হিন্দু যোগী সন্ন্যাসী। পশ্চিমবঙ্গের বারাসত থেকে আগত এই সন্ন্যাসী বর্তমান নারায়ণগঞ্জ জেলার বারদী গ্রামে তাঁর আশ্রম প্রতিষ্ঠা করেন। | '''লোকনাথ ব্রহ্মচারী''' (১৭৩০-১৮৯০) হিন্দু যোগী সন্ন্যাসী। পশ্চিমবঙ্গের বারাসত থেকে আগত এই সন্ন্যাসী বর্তমান নারায়ণগঞ্জ জেলার বারদী গ্রামে তাঁর আশ্রম প্রতিষ্ঠা করেন। | ||
[[Image:LoknathBrahmachari.jpg|thumb|right|লোকনাথ ব্রহ্মচারী]] | |||
লোকনাথ ব্রহ্মচারী ১৭৩০ সালে পশ্চিমবঙ্গের ২৪ পরগণা জেলার বারাসত থানার অন্তর্গত কচুয়া (মতান্তরে চাকলা) গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। কথিত আছে, তিনি এগারো বছর বয়সে কালীঘাটের প্রখ্যাত যোগ-সাধক ভগবান গাঙ্গুলির নিকট দীক্ষা নিয়ে সন্ন্যাসব্রত গ্রহণ করেন। দীর্ঘ পঁচিশ বছর চারণ সন্ন্যাসী হিসেবে ব্রত পালন শেষে তিনি হিমালয় পর্বতে গিয়ে কঠোর যোগ-সাধনা দ্বারা সিদ্ধি লাভ করেন। এরপর সাধারণ্যে তাঁর যোগ মতবাদ প্রচারের লক্ষ্যে তিনি লোকালয়ে ফিরে আসেন। লোকনাথ ব্রহ্মচারী আফগানিস্তান, পারস্য, আরব, প্যালেস্টাইন, চীন ও তিববত পরিভ্রমণ করে ১৮৬৩ সালে সোনারগাঁয়ে পৌঁছেন এবং বারদী গ্রামে আশ্রম প্রতিষ্ঠা করেন। | লোকনাথ ব্রহ্মচারী ১৭৩০ সালে পশ্চিমবঙ্গের ২৪ পরগণা জেলার বারাসত থানার অন্তর্গত কচুয়া (মতান্তরে চাকলা) গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। কথিত আছে, তিনি এগারো বছর বয়সে কালীঘাটের প্রখ্যাত যোগ-সাধক ভগবান গাঙ্গুলির নিকট দীক্ষা নিয়ে সন্ন্যাসব্রত গ্রহণ করেন। দীর্ঘ পঁচিশ বছর চারণ সন্ন্যাসী হিসেবে ব্রত পালন শেষে তিনি হিমালয় পর্বতে গিয়ে কঠোর যোগ-সাধনা দ্বারা সিদ্ধি লাভ করেন। এরপর সাধারণ্যে তাঁর যোগ মতবাদ প্রচারের লক্ষ্যে তিনি লোকালয়ে ফিরে আসেন। লোকনাথ ব্রহ্মচারী আফগানিস্তান, পারস্য, আরব, প্যালেস্টাইন, চীন ও তিববত পরিভ্রমণ করে ১৮৬৩ সালে সোনারগাঁয়ে পৌঁছেন এবং বারদী গ্রামে আশ্রম প্রতিষ্ঠা করেন। | ||
লোকনাথ ব্রহ্মচারীর আধ্যাত্মিক দর্শন ও শিক্ষার প্রতিপাদ্য হচ্ছে: সর্বভূতে ব্রহ্ম বিরাজমান; আত্মা অজর, অমর, অবিনাশী; আত্মোপলব্ধি, ভক্তি ও একনিষ্ঠ যোগই সিদ্ধির (মুক্তির) পথ; কর্ম ও জীবের হিতসাধন। কর্মবাদই হলো তাঁর দর্শনের মৌলিক প্রতিপাদ্য এবং তাঁর মতে জীবের হিতসাধনই শ্রেষ্ঠ মানবধর্ম। | লোকনাথ ব্রহ্মচারীর আধ্যাত্মিক দর্শন ও শিক্ষার প্রতিপাদ্য হচ্ছে: সর্বভূতে ব্রহ্ম বিরাজমান; আত্মা অজর, অমর, অবিনাশী; আত্মোপলব্ধি, ভক্তি ও একনিষ্ঠ যোগই সিদ্ধির (মুক্তির) পথ; কর্ম ও জীবের হিতসাধন। কর্মবাদই হলো তাঁর দর্শনের মৌলিক প্রতিপাদ্য এবং তাঁর মতে জীবের হিতসাধনই শ্রেষ্ঠ মানবধর্ম। | ||
লোকনাথ ব্রহ্মচারী ১৮৯০ সালে বারদীতে তাঁর আশ্রমে দেহত্যাগ করেন। তাঁর দেহাবশেষ এখানেই সংরক্ষিত হয়। তাঁর আশ্রম বরাবরই ছিল ধনী দরিদ্র নির্বিশেষে সর্বস্তরের মানুষের মিলনক্ষেত্র। বর্তমানে এটি ভক্তজনের তীর্থক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। প্রতি বছর দেশবিদেশ থেকে অসংখ্য লোক ব্রহ্মচারীর প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে আশ্রম পরিদর্শন করেন। বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় ও পশ্চিমবঙ্গে ব্রহ্মচারীর আদর্শ ও বাণী প্রচারের জন্য তাঁর নামে বহুসংখ্যক আশ্রম পরিচালিত হচ্ছে। [মুয়ায্যম হুসায়ন খান] | লোকনাথ ব্রহ্মচারী ১৮৯০ সালে বারদীতে তাঁর আশ্রমে দেহত্যাগ করেন। তাঁর দেহাবশেষ এখানেই সংরক্ষিত হয়। তাঁর আশ্রম বরাবরই ছিল ধনী দরিদ্র নির্বিশেষে সর্বস্তরের মানুষের মিলনক্ষেত্র। বর্তমানে এটি ভক্তজনের তীর্থক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। প্রতি বছর দেশবিদেশ থেকে অসংখ্য লোক ব্রহ্মচারীর প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে আশ্রম পরিদর্শন করেন। বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় ও পশ্চিমবঙ্গে ব্রহ্মচারীর আদর্শ ও বাণী প্রচারের জন্য তাঁর নামে বহুসংখ্যক আশ্রম পরিচালিত হচ্ছে। [মুয়ায্যম হুসায়ন খান] |
০৪:১২, ১২ মার্চ ২০১৫ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ
লোকনাথ ব্রহ্মচারী (১৭৩০-১৮৯০) হিন্দু যোগী সন্ন্যাসী। পশ্চিমবঙ্গের বারাসত থেকে আগত এই সন্ন্যাসী বর্তমান নারায়ণগঞ্জ জেলার বারদী গ্রামে তাঁর আশ্রম প্রতিষ্ঠা করেন।
লোকনাথ ব্রহ্মচারী ১৭৩০ সালে পশ্চিমবঙ্গের ২৪ পরগণা জেলার বারাসত থানার অন্তর্গত কচুয়া (মতান্তরে চাকলা) গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। কথিত আছে, তিনি এগারো বছর বয়সে কালীঘাটের প্রখ্যাত যোগ-সাধক ভগবান গাঙ্গুলির নিকট দীক্ষা নিয়ে সন্ন্যাসব্রত গ্রহণ করেন। দীর্ঘ পঁচিশ বছর চারণ সন্ন্যাসী হিসেবে ব্রত পালন শেষে তিনি হিমালয় পর্বতে গিয়ে কঠোর যোগ-সাধনা দ্বারা সিদ্ধি লাভ করেন। এরপর সাধারণ্যে তাঁর যোগ মতবাদ প্রচারের লক্ষ্যে তিনি লোকালয়ে ফিরে আসেন। লোকনাথ ব্রহ্মচারী আফগানিস্তান, পারস্য, আরব, প্যালেস্টাইন, চীন ও তিববত পরিভ্রমণ করে ১৮৬৩ সালে সোনারগাঁয়ে পৌঁছেন এবং বারদী গ্রামে আশ্রম প্রতিষ্ঠা করেন।
লোকনাথ ব্রহ্মচারীর আধ্যাত্মিক দর্শন ও শিক্ষার প্রতিপাদ্য হচ্ছে: সর্বভূতে ব্রহ্ম বিরাজমান; আত্মা অজর, অমর, অবিনাশী; আত্মোপলব্ধি, ভক্তি ও একনিষ্ঠ যোগই সিদ্ধির (মুক্তির) পথ; কর্ম ও জীবের হিতসাধন। কর্মবাদই হলো তাঁর দর্শনের মৌলিক প্রতিপাদ্য এবং তাঁর মতে জীবের হিতসাধনই শ্রেষ্ঠ মানবধর্ম।
লোকনাথ ব্রহ্মচারী ১৮৯০ সালে বারদীতে তাঁর আশ্রমে দেহত্যাগ করেন। তাঁর দেহাবশেষ এখানেই সংরক্ষিত হয়। তাঁর আশ্রম বরাবরই ছিল ধনী দরিদ্র নির্বিশেষে সর্বস্তরের মানুষের মিলনক্ষেত্র। বর্তমানে এটি ভক্তজনের তীর্থক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। প্রতি বছর দেশবিদেশ থেকে অসংখ্য লোক ব্রহ্মচারীর প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে আশ্রম পরিদর্শন করেন। বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় ও পশ্চিমবঙ্গে ব্রহ্মচারীর আদর্শ ও বাণী প্রচারের জন্য তাঁর নামে বহুসংখ্যক আশ্রম পরিচালিত হচ্ছে। [মুয়ায্যম হুসায়ন খান]