জনপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২ (সংশোধনী আইন, ২০০৯): সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

(Added Ennglish article link)
 
সম্পাদনা সারাংশ নেই
 
৩০ নং লাইন: ৩০ নং লাইন:
উপর্যুক্ত (গ) এবং (ঘ) এর ক্ষেত্রদ্বয় প্রযোজ্য হলে, কমিশন নির্ধারিত পদ্ধতিতে সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক দলকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দিতে বাধ্য। এ বিষয়ে কোনো সংক্ষুদ্ধ দল প্রদত্ত সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপীল দায়ের করার সুযোগ পাবে। উপরোক্ত বিধান ছাড়াও এ আইনে নিম্নোক্ত বিষয়াদি বিধিবদ্ধ রয়েছে, যেমন- ইলেকশন রোল অর্ডিন্যান্স ২০০৭-এর অধীনে তৈরী ভোটার তালিকার ভিত্তিতে নির্বাচন অনুষ্ঠান, কমিশন কর্তৃক নির্বাচন কেন্দ্রের তালিকা সংরক্ষণ, জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীদের অপরাপর অযোগ্যতা, প্রার্থীদের মনোনয়নপত্রের সঙ্গে কতিপয় তথ্য সম্বলিত কাগজপত্র ও একটি হলফনামা পেশ, কোনো কোনো ক্ষেত্রে ডাকযোগে ভোট প্রদান, কোনো প্রার্থী বা কোনো রাজনৈতিক দলের নির্বাচনী ব্যয়সীমা বর্ধিতকরণ, নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে একজন প্রার্থী বা রাজনৈতিক দলের নির্বাচনী ব্যয় বিবরণী দাখিল, ব্যয় বিবরণী দাখিলে ব্যর্থতার পরিনাম, এবং এই আদেশের কতিপয় বিষয়ে অপরাপর ছোটখাট সংশোধনী। [এ.এম.এম শওকত আলী]
উপর্যুক্ত (গ) এবং (ঘ) এর ক্ষেত্রদ্বয় প্রযোজ্য হলে, কমিশন নির্ধারিত পদ্ধতিতে সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক দলকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দিতে বাধ্য। এ বিষয়ে কোনো সংক্ষুদ্ধ দল প্রদত্ত সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপীল দায়ের করার সুযোগ পাবে। উপরোক্ত বিধান ছাড়াও এ আইনে নিম্নোক্ত বিষয়াদি বিধিবদ্ধ রয়েছে, যেমন- ইলেকশন রোল অর্ডিন্যান্স ২০০৭-এর অধীনে তৈরী ভোটার তালিকার ভিত্তিতে নির্বাচন অনুষ্ঠান, কমিশন কর্তৃক নির্বাচন কেন্দ্রের তালিকা সংরক্ষণ, জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীদের অপরাপর অযোগ্যতা, প্রার্থীদের মনোনয়নপত্রের সঙ্গে কতিপয় তথ্য সম্বলিত কাগজপত্র ও একটি হলফনামা পেশ, কোনো কোনো ক্ষেত্রে ডাকযোগে ভোট প্রদান, কোনো প্রার্থী বা কোনো রাজনৈতিক দলের নির্বাচনী ব্যয়সীমা বর্ধিতকরণ, নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে একজন প্রার্থী বা রাজনৈতিক দলের নির্বাচনী ব্যয় বিবরণী দাখিল, ব্যয় বিবরণী দাখিলে ব্যর্থতার পরিনাম, এবং এই আদেশের কতিপয় বিষয়ে অপরাপর ছোটখাট সংশোধনী। [এ.এম.এম শওকত আলী]


[[en:Representation of the People Order, ১৯৭২]]
[[en:Representation of the People Order, 1972]]

০৬:৩১, ৩০ নভেম্বর ২০১৪ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ

জনপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২  জনপ্রতিনিধিত্ব আদেশ ১৯৭২ প্রথমে জারী করা হয় রাষ্ট্রপতির আইন প্রণয়ন ক্ষমতাবলে। জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচনের জন্যই এ আইনটি জারী করা হয়। ২০০৮ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে নির্বাচনী আইন সংস্কার সংক্রান্ত কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে ব্যাপক সংশোধনী আনা হয়। এ সকল সংস্কারমূলক আইনি কাঠামো সংশোধনী অধ্যাদেশ (জনপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশ ৪২, ২০০৮) একই বছরের আগস্ট মাসে গেজেটে প্রকাশিত হয়েছিল। ২০০৯ সালে সরকার জাতীয় সংসদে একটি বিল উত্থাপন করে এবং এটিই জনপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (সংশোধনী) আইন ২০০৯ (২০০৯ সালের ১৩নং আইন) হিসেবে সংসদে পাশ হয়।

সর্বমোট ৩০ ধারায় গঠিত এ আইনবলে ইতোপূর্বে তত্ত্বাবধায়ক সরকার কর্তৃক জারীকৃত তিনটি অধ্যাদেশ রহিত করা হয়। তবে অধ্যাদেশের আওতায় সকল কৃত কর্মকে সংরক্ষণ করা হয়। এই আইনে ইতোপূর্বে বিদ্যমান মোট পনেরটি ধারা সংশোধিত হয়। এ ছাড়া কিছু নতুন ধারাও আইনে সন্নিবেশিত হয় যার মধ্যে অধ্যায় ৬ (ক) ছিল সম্পূর্ণ নতুন। বলা বাহুল্য ইতোপূর্বে জারীকৃত অধ্যাদেশের কোনো মৌলিক পরিবর্তন সংশোধনী আইনে করা হয় নি।

প্রকৃতপক্ষে এ অধ্যায়টি ছিল সার্বিক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। এর মূল উদ্দেশ্য ছিল সকল রাজনৈতিক দলকে নির্দিষ্ট মানদন্ডের ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন কর্তৃক নিবন্ধিত করা। পূর্ববর্তী আইনে এ সংক্রান্ত নিবন্ধনের জন্য কোনো বাধ্যবাধকতা ছিল না। ফলে কোনো রাজনৈতিক দলই ইতোপূর্বে কমিশনের আওতায় নিবন্ধিত হয় নি।

উপর্যুক্ত সংশোধনীর পূর্বে রাজনৈতিক দলগঠনের জন্য উন্মুক্ত বাজার ধারণাভিত্তিক পরিবেশ ছিল। ফলে রাজনৈতিক দলের সংখ্যা ছিল ক্রমবর্ধমান। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশন রাজনৈতিক দলগঠনের সংস্কারমূলক উদ্যোগ গ্রহণ করে। এ প্রক্রিয়ায় কমিশন সকল রাজনৈতিক দল, নাগরিক সমাজ ও মিডিয়ার প্রতিনিধিদের সাথে ব্যাপক আলোচনা করে। এ আলোচনার ফলে রাজনৈতিক দলগঠনে নিবন্ধন সংক্রান্ত বিধিনিষেধ প্রণীত হয়। এ বিধিনিষেধের মধ্যে ছিল দল গঠনের জন্য নির্ধারিত কিছু শর্তের অধীনে নিবন্ধিত হওয়ার যোগ্যতা এবং শর্তপূরণে ব্যর্থ বা তা ভঙ্গ করলে পরবর্তী সময়ে নিবন্ধিত দলের নিবন্ধন বাতিলের বিধান। সংশোধনী আইনে এ সংক্রান্ত তিন ধরনের শর্তাবলি রয়েছে। প্রথম ধরনের শর্তাবলির আওতায় (ক) এ পর্যন্ত জাতীয় সংসদের যত নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে তাতে সংসদে ন্যূনতম একটি আসনে জয়ী হওয়ার প্রমাণ; অথবা (খ) ওই  নির্বাচনে যে সকল নির্বাচনী এলাকায় দলের প্রার্থীরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন তার জন্য ন্যূনতম পাঁচ শতাংশ ভোট প্রাপ্তির প্রমাণ; অথবা (গ) দলটির সাংগঠনিক কর্মসূচী কার্যকর করার জন্য যে নামেই অভিহিত হোক না কেন, তার একটি কেন্দ্রীয় কার্যালয় থাকবে যার মাধ্যমে বিভিন্ন প্রশাসনিক জেলার অন্তত একশত উপজেলা বা মেট্রোপলিটন থানার প্রতিটিতে ন্যূনতম দুইশত ভোটার সদস্য থাকবে।

নিবন্ধনের দ্বিতীয় অংশটি হলো রাজনৈতিক দলের গঠনতন্ত্রে কয়েকটি শর্ত সন্নিবেশিত করার বাধ্যবাধকতা। এর মধ্যে রয়েছে (ক) কেন্দ্রীয় কমিটিসহ সকল পর্যায়ের কমিটির সদস্যদের নির্বাচনের মাধ্যমে নিয়োগ করতে হবে; (খ) এ ধরনের নির্বাচিত সকল পর্যায়ের কমিটিতে ২০১০ সালের মধ্যে ন্যূনতম শতকরা ৩৩ ভাগ মহিলা সদস্যভুক্তি নিশ্চিত করতে হবে; (গ) শিক্ষাগত, আর্থিক, বাণিজ্যিক বা শিল্প সংক্রান্ত সংস্থায় যথাক্রমে শিক্ষক ও ছাত্র, কর্মচারী ও শ্রমিকদের নিয়ে গঠিত সমিতি বা প্রতিষ্ঠানের সাথে কোনো রাজনৈতিক দলের সম্পর্ক থাকবে না। তবে রাজনৈতিক দলগুলো এ সকল ক্ষেত্রে প্রচলিত আইন সাপেক্ষে এবং গণতান্ত্রিক, রাজনৈতিক বা নাগরিক অধিকার রক্ষার্থে এসব সংগঠন ও এদের সদস্যদের দলভুক্ত করতে পারবে; (ঘ) ওয়ার্ড, ইউনিয়ন, থানা, উপজেলা অথবা জেলা কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে এসব পর্যায়ে কমিটির প্রস্ত্ততকৃত প্যানেলের সুপারিশ বিবেচনা করে নিজস্ব কেন্দ্রীয় সংসদীয় বোর্ড নির্বাচনী এলাকার প্রার্থী মনোনয়ন নিশ্চিত করবে।

নিবন্ধন সংক্রান্ত অযোগ্যতার বিষয়সমূহও আইনে নির্ধারিত হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে, (ক) দলের গঠনতন্ত্রের উদ্দেশ্যাবলি বাংলাদেশ সংবিধানের জাতীয় উদ্দেশ্যাবলির সাথে সংঘাতপূর্ণ হবে না; (খ) দলীয় গঠনতন্ত্রে ধর্ম, জাতি, গোত্র, ভাষা অথবা লিঙ্গ বিষয়ক কোনো অসমতা দৃশ্যমান হবে না; (গ) কোনো রাজনৈতিক দল অন্য কোনো নিবন্ধিত দলের নাম ব্যবহার করতে পারবে না; (ঘ) সরকার কর্তৃক নিষিদ্ধ ঘোষিত কোনো দলকে নিবন্ধিত করা যাবে না।

নিবন্ধনের বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলে গণ্য হবে। নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলো নিম্নোক্ত সুবিধাদি পাওয়ার যোগ্য হবে:

* অন্যূন পাঁচ লক্ষ টাকা ব্যক্তিগত পর্যায়ের এবং কোম্পানির ক্ষেত্রে ২৫ লক্ষ টাকা চাঁদা গ্রহণ;

* বরাদ্দকৃত দলীয় প্রতীক সংরক্ষণের অধিকার;

* বিদ্যমান আইন ও বিধি অনুযায়ী বরাদ্দকৃত প্রতীক দল কর্তৃক মনোনীত সকল প্রার্থী ব্যবহার করতে পারবে, এবং অন্যকোন প্রতীক গ্রহণে ইচ্ছা প্রকাশ না করলে প্রতীকটি প্রার্থীর জন্য সংরক্ষিত থাকবে;

* কম্প্যাক্ট ডিস্ক (সিডি) বা ডিজিটাল ভারস্যাটাইল ডিস্ক (ডিভিডি) অথবা অন্যকোন ইলেকট্রনিক প্রযুক্তিতে ধারণকৃত নির্বাচনী ভোটার তালিকা পাওয়ার অধিকার প্রতি প্রার্থীর জন্য সংরক্ষণ করা হবে;

* সংসদীয় নির্বাচনের সময় কমিশন কর্তৃক নির্ধারিত নীতি ও নির্দেশিকা অনুযায়ী রাষ্ট্রীয় মিডিয়া মাধ্যম ব্যবহারে প্রত্যেক প্রার্থীর অধিকার থাকবে।

অপর কোনো দেশ বা বৈদেশিক সাহায্যপুষ্ট কোনো বেসরকারি প্রতিষ্ঠান অথবা বাংলাদেশের নাগরিক নয় এমন ব্যক্তি থেকে কোনো রাজনৈতিক দল কোনো উপঢৌকন, চাঁদা বা অনুদান বা অর্থ গ্রহণ করবে না।

প্রদত্ত নিবন্ধন নির্দিষ্ট কয়েকটি কারণে বাতিলযোগ্য হবে (ক) যদি কোনো নামে অভিহিত রাজনৈতিক দল ওই  দলকে বিলোপ করে এ সংক্রান্ত লিখিত সিদ্ধান্তের কার্যবিবরণী সংযুক্তি হিসেবে দলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের স্বাক্ষরসহ কমিশনে পেশ করে। এ ক্ষেত্রে সমপর্যায়ের কোনো নেতার স্বাক্ষরও গ্রহণযোগ্য, (খ) যদি সরকার সংশ্লিষ্ট দলকে নিষিদ্ধ মর্মে ঘোষণা প্রদান করে, (গ) যদি কয়েক বছর পর্যন্ত দলটি নির্দিষ্ট আইন ও বিধি অনুযায়ী তথ্য প্রদানে ব্যর্থ হয়, (ঘ) পর পর দুই নির্বাচনে যদি কোনো দল অংশগ্রহণে ব্যর্থ হয়।

উপর্যুক্ত (গ) এবং (ঘ) এর ক্ষেত্রদ্বয় প্রযোজ্য হলে, কমিশন নির্ধারিত পদ্ধতিতে সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক দলকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দিতে বাধ্য। এ বিষয়ে কোনো সংক্ষুদ্ধ দল প্রদত্ত সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপীল দায়ের করার সুযোগ পাবে। উপরোক্ত বিধান ছাড়াও এ আইনে নিম্নোক্ত বিষয়াদি বিধিবদ্ধ রয়েছে, যেমন- ইলেকশন রোল অর্ডিন্যান্স ২০০৭-এর অধীনে তৈরী ভোটার তালিকার ভিত্তিতে নির্বাচন অনুষ্ঠান, কমিশন কর্তৃক নির্বাচন কেন্দ্রের তালিকা সংরক্ষণ, জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীদের অপরাপর অযোগ্যতা, প্রার্থীদের মনোনয়নপত্রের সঙ্গে কতিপয় তথ্য সম্বলিত কাগজপত্র ও একটি হলফনামা পেশ, কোনো কোনো ক্ষেত্রে ডাকযোগে ভোট প্রদান, কোনো প্রার্থী বা কোনো রাজনৈতিক দলের নির্বাচনী ব্যয়সীমা বর্ধিতকরণ, নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে একজন প্রার্থী বা রাজনৈতিক দলের নির্বাচনী ব্যয় বিবরণী দাখিল, ব্যয় বিবরণী দাখিলে ব্যর্থতার পরিনাম, এবং এই আদেশের কতিপয় বিষয়ে অপরাপর ছোটখাট সংশোধনী। [এ.এম.এম শওকত আলী]