টিয়া: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
সম্পাদনা সারাংশ নেই |
সম্পাদনা সারাংশ নেই |
||
২ নং লাইন: | ২ নং লাইন: | ||
'''টিয়া''' (Parrot)''' '''Psittaciformes বর্গের অতি পরিচিত পাখি। এদের বড় মাথা ও বাঁকানো হুকের মতো ঠোঁট বৈশিষ্ট্যময়। এদের লেজ লম্বা। এরা মানুষের স্বর অনুকরণ করায় সক্ষম এবং এদের মধ্যে প্যারাকিট, লাভবার্ড ও বাজারিগার ও সেসঙ্গে অপেক্ষাকৃত বড় আকারের ম্যাকাউ, আমাজান টিয়া, কাকাতুয়া ইত্যাদি পাখি রয়েছে। এদের জিহবা বেলুনাকার ও মাংসল। ফল ও বীজ খাওয়ার জন্য টিয়া ও এর স্বগোত্রীয়দের ঠোঁট মজবুত। বৃক্ষের শাখার ভিতর দিয়ে চলাচলের জন্য এরা কৌশলে এটিকে ব্যবহার করে। এদের পায়ের প্রথম ও চতুর্থ আঙুল পেছনমুখী। গাছে আরোহণের জন্য আঙুলের এক ধরনের অভিযোজন ঘটে থাকবে। এসব আঙুলের সাহায্যে এরা হাতের অনুরূপ খাদ্যবস্ত্তকে ধরে নিয়ে মুখে পুরতে পারে, যা অন্য কোনো প্রজাতির পাখিতে দেখা যায় না। | '''টিয়া''' (Parrot)''' '''Psittaciformes বর্গের অতি পরিচিত পাখি। এদের বড় মাথা ও বাঁকানো হুকের মতো ঠোঁট বৈশিষ্ট্যময়। এদের লেজ লম্বা। এরা মানুষের স্বর অনুকরণ করায় সক্ষম এবং এদের মধ্যে প্যারাকিট, লাভবার্ড ও বাজারিগার ও সেসঙ্গে অপেক্ষাকৃত বড় আকারের ম্যাকাউ, আমাজান টিয়া, কাকাতুয়া ইত্যাদি পাখি রয়েছে। এদের জিহবা বেলুনাকার ও মাংসল। ফল ও বীজ খাওয়ার জন্য টিয়া ও এর স্বগোত্রীয়দের ঠোঁট মজবুত। বৃক্ষের শাখার ভিতর দিয়ে চলাচলের জন্য এরা কৌশলে এটিকে ব্যবহার করে। এদের পায়ের প্রথম ও চতুর্থ আঙুল পেছনমুখী। গাছে আরোহণের জন্য আঙুলের এক ধরনের অভিযোজন ঘটে থাকবে। এসব আঙুলের সাহায্যে এরা হাতের অনুরূপ খাদ্যবস্ত্তকে ধরে নিয়ে মুখে পুরতে পারে, যা অন্য কোনো প্রজাতির পাখিতে দেখা যায় না। | ||
{| class="table table-bordered table-hover" | |||
[[Image:ParakeetVernal%20HangingParrot.jpg| বাসন্তী লটকন টিয়া]] || [[Image:ParakeetBlossom-headedParakeet.jpg| ফুলমাথা টিয়া]] | |- | ||
[[Image:ParakeetPlum-headedParakeet.jpg| লালমাথা টিয়া || [[Image:ParakeetAlexandrineParakeet.jpg|চন্দনা টিয়া | | [[Image:ParakeetVernal%20HangingParrot.jpg| বাসন্তী লটকন টিয়া]] || [[Image:ParakeetBlossom-headedParakeet.jpg| ফুলমাথা টিয়া]] | ||
Image:ParakeetGrey-headedParakeet.jpg|মেটেমাথা টিয়া]] ||Image:ParakeetRose-ringedParakeet.jpg|সবুজ টিয়া]] | |- | ||
|[[Image:ParakeetPlum-headedParakeet.jpg| লালমাথা টিয়া || [[Image:ParakeetAlexandrineParakeet.jpg|চন্দনা টিয়া | |||
|- | |||
| Image:ParakeetGrey-headedParakeet.jpg|মেটেমাথা টিয়া]] ||Image:ParakeetRose-ringedParakeet.jpg|সবুজ টিয়া]] | |||
|} | |||
অধিকাংশ প্রজাতির টিয়া গাছে গর্ত খুঁড়ে বাসা বানায়। ছোট আকারের পাখির প্রজাতিতে ১৬-১৯ এবং বড় প্রজাতিতে প্রায় ৩০ দিন ডিমে তা’ দেওয়া হয়। তা’ দেওয়ার পর ডিম ফুটে যে বাচ্চা বের হয় তা সচরাচর অন্ধ থাকে। বাসায় বাচ্চারা দুই থেকে তিন মাস পিতামাতার যত্নে কাটায় এবং এসময় বাচ্চাদের ওগরানো খাবার খাওয়ানো হয়। দীর্ঘদিন পিতামাতার যত্নে থাকার সঙ্গে এদের মগজের আকার বড় হওয়ার বিষয়টি সম্পর্কিত হতে পারে। বড় মগজ টিয়ার সহজে জটিল কৌশল শেখা ও শব্দধারণ করার ক্ষমতার সঙ্গে সম্পর্কিত। | অধিকাংশ প্রজাতির টিয়া গাছে গর্ত খুঁড়ে বাসা বানায়। ছোট আকারের পাখির প্রজাতিতে ১৬-১৯ এবং বড় প্রজাতিতে প্রায় ৩০ দিন ডিমে তা’ দেওয়া হয়। তা’ দেওয়ার পর ডিম ফুটে যে বাচ্চা বের হয় তা সচরাচর অন্ধ থাকে। বাসায় বাচ্চারা দুই থেকে তিন মাস পিতামাতার যত্নে কাটায় এবং এসময় বাচ্চাদের ওগরানো খাবার খাওয়ানো হয়। দীর্ঘদিন পিতামাতার যত্নে থাকার সঙ্গে এদের মগজের আকার বড় হওয়ার বিষয়টি সম্পর্কিত হতে পারে। বড় মগজ টিয়ার সহজে জটিল কৌশল শেখা ও শব্দধারণ করার ক্ষমতার সঙ্গে সম্পর্কিত। |
১০:০৪, ২১ ডিসেম্বর ২০১৪ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ
টিয়া (Parrot) Psittaciformes বর্গের অতি পরিচিত পাখি। এদের বড় মাথা ও বাঁকানো হুকের মতো ঠোঁট বৈশিষ্ট্যময়। এদের লেজ লম্বা। এরা মানুষের স্বর অনুকরণ করায় সক্ষম এবং এদের মধ্যে প্যারাকিট, লাভবার্ড ও বাজারিগার ও সেসঙ্গে অপেক্ষাকৃত বড় আকারের ম্যাকাউ, আমাজান টিয়া, কাকাতুয়া ইত্যাদি পাখি রয়েছে। এদের জিহবা বেলুনাকার ও মাংসল। ফল ও বীজ খাওয়ার জন্য টিয়া ও এর স্বগোত্রীয়দের ঠোঁট মজবুত। বৃক্ষের শাখার ভিতর দিয়ে চলাচলের জন্য এরা কৌশলে এটিকে ব্যবহার করে। এদের পায়ের প্রথম ও চতুর্থ আঙুল পেছনমুখী। গাছে আরোহণের জন্য আঙুলের এক ধরনের অভিযোজন ঘটে থাকবে। এসব আঙুলের সাহায্যে এরা হাতের অনুরূপ খাদ্যবস্ত্তকে ধরে নিয়ে মুখে পুরতে পারে, যা অন্য কোনো প্রজাতির পাখিতে দেখা যায় না।
অধিকাংশ প্রজাতির টিয়া গাছে গর্ত খুঁড়ে বাসা বানায়। ছোট আকারের পাখির প্রজাতিতে ১৬-১৯ এবং বড় প্রজাতিতে প্রায় ৩০ দিন ডিমে তা’ দেওয়া হয়। তা’ দেওয়ার পর ডিম ফুটে যে বাচ্চা বের হয় তা সচরাচর অন্ধ থাকে। বাসায় বাচ্চারা দুই থেকে তিন মাস পিতামাতার যত্নে কাটায় এবং এসময় বাচ্চাদের ওগরানো খাবার খাওয়ানো হয়। দীর্ঘদিন পিতামাতার যত্নে থাকার সঙ্গে এদের মগজের আকার বড় হওয়ার বিষয়টি সম্পর্কিত হতে পারে। বড় মগজ টিয়ার সহজে জটিল কৌশল শেখা ও শব্দধারণ করার ক্ষমতার সঙ্গে সম্পর্কিত।
অনেক টিয়া ৫০ বছরেরও বেশি বাঁচে। মানুষ প্রথম যেসব টিয়ার সঙ্গে পরিচিত হয়েছিল সেগুলি ছিল ভারতীয় টিয়া। প্রায় ৩২৮ খ্রিস্টপূর্বে অ্যারিস্টটলের ছাত্র আলেকজান্ডার শিক্ষকের কাছে জীবিত টিয়া এনেছিলেন। আফ্রিকার গ্রে (gray) টিয়া কথা বলায় সবচেয়ে চৌকস, আমাজনের টিয়াও কথা বলে ভালো, যদিও এদের স্বর খুবই কর্কশ। টিয়ারা প্রাচীনকাল থেকেই পরিচিত। খাঁচায় পোষমানা পাখি হিসেবে এরা সবসময়ই জনপ্রিয়। কারণ এরা মানুষকে বিনোদন দান করে, বেশ বুদ্ধিমান এবং ঠোঁট ও পায়ের সাহায্যে নানা ধরনের খেলা দেখায়। মাঝে মাঝে ফল ও শস্য ক্ষেতে ঝাঁক বেঁধে আসে। ফলে শস্য ও ফল উৎপাদনের ক্ষেত্রে মারাত্মক হুমকির সৃষ্টি হয়। অন্যদিকে, এরা বহু আগাছার বীজ ধ্বংস করে। খাঁচায় পোষার জন্য টিয়া রপ্তানি একটি লাভজনক বাণিজ্য।
উষ্ণমন্ডলীয় ও অর্ধ-উষ্ণমন্ডলীয় অঞ্চলসমূহে প্রায় ৩৫০টি প্রজাতির অধিকাংশ টিয়া বাস করে, কয়েকটি আছে ভারত ও মধ্য আফ্রিকায়। বাংলাদেশে ছয় প্রজাতির মধ্যে চন্দনা অতি বিপন্ন।
সারণি বাংলাদেশের টিয়া (Aves: Psittaciformes, Psittacidae)।
বৈজ্ঞানিক নাম | ইংরেজি নাম | স্থানীয় নাম | বিস্তৃতি |
Loriculus vernalis | Vernal HangingParrot [Indian Lorikeet ] | লটকন/লেজকাটা টিয়া | দেশের উত্তর ও দক্ষিণ-পূর্বের বনাঞ্চল, দারুবন |
Psittacula alexandri | Red-breasted Parakeet | তোতা | উত্তর ও দক্ষিণ-পূর্বের মিশ্র চিরহরিৎ বন, মধুপুরের পত্রঝরা বনাঞ্চল |
Psittacula eupatria | Alexandrine Parakeet [Large Indian Parakeet] | চন্দনা/বড় টিয়া | মিশ্র চিরহরিৎ বন |
Psittacula finschii | Grey-headed Parakeet [Eastern Slatyheaded Parakeet] | কালোমাথা টিয়া | উত্তর-পূর্ব অঞ্চল |
Psittacula krameri | Roseringed Parakeet | টিয়া | সর্বত্র পাওয়া যায় |
Psittacula roseata | Blossom-headed Parakeet [Eastern Blossom– headed Parakeet] | লালমাথা টিয়া/হীরামন | উত্তর-পশ্চিম, উত্তর-পূর্ব, মধ্য অঞ্চলীয় বনাঞ্চল |
বি.দ্র. তৃতীয় বন্ধনীর মধ্যে প্রাক্তন নাম দেওয়া হয়েছে।
[মোঃ আনোয়ারুল ইসলাম ও শরীফ খান]