হোসেন, লে. কর্নেল আকবর: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

(Added Ennglish article link)
 
সম্পাদনা সারাংশ নেই
 
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
[[Category:বাংলাপিডিয়া]]
[[Category:বাংলাপিডিয়া]]
'''হোসেন, লে''''''. ''''''কর্নেল আকবর '''(১৯৪১-২০০৬)  সামরিক কর্মকর্তা, মুক্তিযোদ্ধা ও রাজনীতিক। আকবর হোসেন ১৯৪১ সালের ২ নভেমতর কুমিল্লা শহরের নানুয়া দিঘিরপাড়ে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা হোসেন আলী ছিলেন একজন আইনজীবী। আকবর হোসেন কুমিল্লা ঈশ্বর পাঠশালা থেকে ১৯৫৭ সালে ম্যাট্রিকুলেশন এবং ১৯৫৯ সালে ভিক্টোরিয়া কলেজ থেকে আই.এ পাস করেন। তিনি ১৯৬৫ সালে পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। ১৯৬৬ সালে কাকুল মিলিটারি একাডেমী থেকে শিক্ষা গ্রহণ শেষে তিনি ৩১-বালুচ রেজিমেন্টে যোগ দেন এবং ওই বছরই  ক্যাপ্টেন পদে নিয়োগ লাভ করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৬৯ সালে বি.এ পাস করেন।
'''হোসেন, লে. কর্নেল আকবর''' (১৯৪১-২০০৬)  সামরিক কর্মকর্তা, মুক্তিযোদ্ধা ও রাজনীতিক। আকবর হোসেন ১৯৪১ সালের ২ নভেমতর কুমিল্লা শহরের নানুয়া দিঘিরপাড়ে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা হোসেন আলী ছিলেন একজন আইনজীবী। আকবর হোসেন কুমিল্লা ঈশ্বর পাঠশালা থেকে ১৯৫৭ সালে ম্যাট্রিকুলেশন এবং ১৯৫৯ সালে ভিক্টোরিয়া কলেজ থেকে আই.এ পাস করেন। তিনি ১৯৬৫ সালে পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। ১৯৬৬ সালে কাকুল মিলিটারি একাডেমী থেকে শিক্ষা গ্রহণ শেষে তিনি ৩১-বালুচ রেজিমেন্টে যোগ দেন এবং ওই বছরই  ক্যাপ্টেন পদে নিয়োগ লাভ করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৬৯ সালে বি.এ পাস করেন।


আকবর হোসেন ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন। তিনি মার্চের পর মেজর খালেদ মোশাররফের নেতৃত্বে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। ১৯৭১ সালের ৭ জুলাই জেড ফোর্স গঠিত হলে তিনি ৩য় ইস্টবেঙ্গল রেজিমেন্টের ‘বি’ কোম্পানির অধিনায়ক হিসেবে ২নং সেক্টরসহ ছাতক, তুরা, বক্শিগঞ্জ, হাতিগাছা প্রভৃতি স্থানে যুদ্ধ পরিচালনা করেন। মুক্তিযুদ্ধে ছাতক অপারেশনে তাঁর বীরোচিত ভূমিকার জন্য বাংলাদেশ সরকার তাঁকে ‘বীর প্রতীক’ খেতাবে ভূষিত করে। ১৯৭৩ সালের ৩১ ডিসেমতর তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর লেফটেন্যান্ট কর্নেল হিসেবে স্বেচ্ছা অবসর গ্রহণ করেন।
আকবর হোসেন ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন। তিনি মার্চের পর মেজর খালেদ মোশাররফের নেতৃত্বে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। ১৯৭১ সালের ৭ জুলাই জেড ফোর্স গঠিত হলে তিনি ৩য় ইস্টবেঙ্গল রেজিমেন্টের ‘বি’ কোম্পানির অধিনায়ক হিসেবে ২নং সেক্টরসহ ছাতক, তুরা, বক্শিগঞ্জ, হাতিগাছা প্রভৃতি স্থানে যুদ্ধ পরিচালনা করেন। মুক্তিযুদ্ধে ছাতক অপারেশনে তাঁর বীরোচিত ভূমিকার জন্য বাংলাদেশ সরকার তাঁকে ‘বীর প্রতীক’ খেতাবে ভূষিত করে। ১৯৭৩ সালের ৩১ ডিসেমতর তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর লেফটেন্যান্ট কর্নেল হিসেবে স্বেচ্ছা অবসর গ্রহণ করেন।

১২:১২, ২৪ মার্চ ২০১৫ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ

হোসেন, লে. কর্নেল আকবর (১৯৪১-২০০৬)  সামরিক কর্মকর্তা, মুক্তিযোদ্ধা ও রাজনীতিক। আকবর হোসেন ১৯৪১ সালের ২ নভেমতর কুমিল্লা শহরের নানুয়া দিঘিরপাড়ে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা হোসেন আলী ছিলেন একজন আইনজীবী। আকবর হোসেন কুমিল্লা ঈশ্বর পাঠশালা থেকে ১৯৫৭ সালে ম্যাট্রিকুলেশন এবং ১৯৫৯ সালে ভিক্টোরিয়া কলেজ থেকে আই.এ পাস করেন। তিনি ১৯৬৫ সালে পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। ১৯৬৬ সালে কাকুল মিলিটারি একাডেমী থেকে শিক্ষা গ্রহণ শেষে তিনি ৩১-বালুচ রেজিমেন্টে যোগ দেন এবং ওই বছরই  ক্যাপ্টেন পদে নিয়োগ লাভ করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৬৯ সালে বি.এ পাস করেন।

আকবর হোসেন ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন। তিনি মার্চের পর মেজর খালেদ মোশাররফের নেতৃত্বে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। ১৯৭১ সালের ৭ জুলাই জেড ফোর্স গঠিত হলে তিনি ৩য় ইস্টবেঙ্গল রেজিমেন্টের ‘বি’ কোম্পানির অধিনায়ক হিসেবে ২নং সেক্টরসহ ছাতক, তুরা, বক্শিগঞ্জ, হাতিগাছা প্রভৃতি স্থানে যুদ্ধ পরিচালনা করেন। মুক্তিযুদ্ধে ছাতক অপারেশনে তাঁর বীরোচিত ভূমিকার জন্য বাংলাদেশ সরকার তাঁকে ‘বীর প্রতীক’ খেতাবে ভূষিত করে। ১৯৭৩ সালের ৩১ ডিসেমতর তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর লেফটেন্যান্ট কর্নেল হিসেবে স্বেচ্ছা অবসর গ্রহণ করেন।

আকবর হোসেন ১৯৭৪ সালের ১ জানুয়ারি ইউনাইটেড পিপলস পার্টি (ইউপিপি) গঠন করে দলের ভাইস প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ১৯৭৭ সালে প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান কর্তৃক জাতীয়তাবাদী ফ্রন্ট গঠিত হলে তিনি তাঁর দল নিয়ে এ ফ্রন্টে যোগ দেন। তিনি বিএনপি’র কেন্দ্রীয় কমিটিতে পর্যায়ক্রমে স্পেশাল সেক্রেটারি, যুগ্ম সম্পাদক এবং ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি কুমিল্লা জেলা বিএনপি’র আহবায়ক ছিলেন। ১৯৭৮ সালে তিনি জিয়াউর রহমানের মন্ত্রিসভায় পেট্রোলিয়াম ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব লাভ করেন। তিনি দ্বিতীয় থেকে অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পাঁচ মেয়াদে সংসদ-সদস্য নির্বাচিত হন।

আকবর হোসেন ১৯৭৮ সালে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের সদস্য ছিলেন। এ সময় জাপানের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে বাংলাদেশ জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হয়। তিন বিঘা করিডোর, ফারাক্কা ও চাকমা সমস্যা সমাধানের নিমিত্তে গঠিত কমিটির তিনি সদস্য ছিলেন। তিনি ১৯৯৩ সালের অক্টোবরে বন ও পরিবেশ মন্ত্রী এবং ২০০১ সালের ১০ অক্টোবর নৌ-পরিবহণ মন্ত্রীর দায়িত্ব লাভ করেন। তিনি মুক্তিযোদ্ধা সংসদের প্রধান উপদেষ্টা ছিলেন।

আকবর হোসেন ১৯৯৩ সালের অক্টোবরে নেদারল্যান্ডে উপকূলবর্তী অঞ্চল বিষয়ক সম্মেলন, ১৯৯৫ সালের সেপ্টেমতরে জেনেভায় বর্জ্য পদার্থ শীর্ষক আন্তর্জাতিক সম্মেলন এবং ১৯৯৫ সালের নভেমতরে ব্যাংককে অনুষ্ঠিত এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশসমূহের পরিবেশ উন্নয়ন বিষয়ক সম্মেলনে যোগদান করেন এবং এ সংস্থার ভাইস চেয়ারম্যান নিযুক্ত হন।

২০০৬ সালের ২৫ জুন ঢাকায় তাঁর মৃত্যু হয়।  [মো. আলী আকবর]