দত্ত, হীরেন্দ্রনাথ: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
NasirkhanBot (আলোচনা | অবদান) অ (Added Ennglish article link) |
সম্পাদনা সারাংশ নেই |
||
(একই ব্যবহারকারী দ্বারা সম্পাদিত একটি মধ্যবর্তী সংশোধন দেখানো হচ্ছে না) | |||
১ নং লাইন: | ১ নং লাইন: | ||
[[Category:Banglapedia]] | [[Category:Banglapedia]] | ||
'''দত্ত | '''দত্ত, হীরেন্দ্রনাথ''' (১৮৬৮-১৯৪২) দার্শনিক ও রাজনীতিবিদ। ১৮৬৮ সালের ১৫ জানুয়ারি কলকাতার হাটখোলায় তাঁর জন্ম। হীরেন্দ্রনাথ একজন মেধাবী ছাত্র ছিলেন। তিনি মেট্রোপলিটন স্কুল থেকে এন্ট্রান্স (১৮৮৩) এবং [[প্রেসিডেন্সি কলেজ|প্রেসিডেন্সি কলেজ]] থেকে এফ.এ, অনার্সসহ বি.এ (১৮৮৮) ও ইংরেজি সাহিত্যে এমএ (১৮৮৯) পাস করেন। মেধার স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি ১৮৯৩ সালে [[প্রেমচাঁদ রায়চাঁদ বৃত্তি|প্রেমচাঁদ রায়চাঁদ বৃত্তি]] লাভ করেন। একই বছর তিনি বিএল এবং পরবর্তী বছর অ্যাটর্নিশিপ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। | ||
হীরেন্দ্রনাথ সমকালীন রাজনীতির সঙ্গে সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলেন। ১৮৯৪ থেকে ১৯২০ সাল পর্যন্ত তিনি কংগ্রেসের প্রায় সকল রাজনৈতিক আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেন। স্বদেশী আন্দোলনের অংশ হিসেবে তিনি বঙ্গলক্ষ্মী কটন মিল, ন্যাশনাল ব্যাংক এবং হিন্দুস্থান ইন্সুরেন্স প্রতিষ্ঠায় অংশ নেন। অরবিন্দ ঘোষের মামলা (১৯০৮) ও শামসুল আলম হত্যা মামলায় অ্যাটর্নি হিসেবে কাজ করে তিনি খ্যাতি অর্জন করেন। পরবর্তীকালে তিনি মদনমোহন মালব্যের সঙ্গে [[ | হীরেন্দ্রনাথ সমকালীন রাজনীতির সঙ্গে সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলেন। ১৮৯৪ থেকে ১৯২০ সাল পর্যন্ত তিনি কংগ্রেসের প্রায় সকল রাজনৈতিক আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেন। স্বদেশী আন্দোলনের অংশ হিসেবে তিনি বঙ্গলক্ষ্মী কটন মিল, ন্যাশনাল ব্যাংক এবং হিন্দুস্থান ইন্সুরেন্স প্রতিষ্ঠায় অংশ নেন। অরবিন্দ ঘোষের মামলা (১৯০৮) ও শামসুল আলম হত্যা মামলায় অ্যাটর্নি হিসেবে কাজ করে তিনি খ্যাতি অর্জন করেন। পরবর্তীকালে তিনি মদনমোহন মালব্যের সঙ্গে [[হিন্দু মহাসভা|হিন্দু মহাসভা]] গঠন করেন। | ||
হীরেন্দ্রনাথ বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন এবং বিভিন্ন সময়ে এর সম্পাদক, সহসভাপতি ও সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বেঙ্গল থিওসফিক্যাল সোসাইটিরও সম্পাদক ও সহসভাপতি ছিলেন। ১৯৪০ সালে তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে কমলা লেকচারার নিযুক্ত হন। | হীরেন্দ্রনাথ বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন এবং বিভিন্ন সময়ে এর সম্পাদক, সহসভাপতি ও সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বেঙ্গল থিওসফিক্যাল সোসাইটিরও সম্পাদক ও সহসভাপতি ছিলেন। ১৯৪০ সালে তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে কমলা লেকচারার নিযুক্ত হন। | ||
হীরেন্দ্রনাথ পন্থা ও ব্রহ্মবিদ্যা নামে দর্শন সম্পর্কিত দুটি পত্রিকা সম্পাদনা করেন। ধর্ম, [[ | হীরেন্দ্রনাথ পন্থা ও ব্রহ্মবিদ্যা নামে দর্শন সম্পর্কিত দুটি পত্রিকা সম্পাদনা করেন। ধর্ম, [[দর্শন|দর্শন]] ও রাজনীতি সম্পর্কে তাঁর বেশ কয়েকটি গ্রন্থ আছে; সেগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হলো: ''গীতায় ঈশ্বরবাদ'' (১৯০৫), ''উপনিষদে ব্রহ্মতত্ত্ব'' (১৯১১),'' ''নারীর নির্বাচন অধিকার'', ''অবতারতত্ত্ব'', ''বেদান্ত পরিচয়'' (১৯২৪), ''কর্মবাদ ও জন্মান্তরবাদ'' (১৯২৫), ''বুদ্ধদেবের নাস্তিকতা'' (১৯৩৬), ''যাজ্ঞবল্ক্যের অদ্বৈতবাদ'' (১৯৩৬),''প্রেমধর্ম'' (১৯৩৮), ''রাসলীলা'', ''উপনিষদে জড় ও জীবতত্ত্ব'' (১৯৫২) ইত্যাদি। তিনি সংস্কৃত মেঘদূত কাব্য এবং কয়েকটি ইংরেজি গ্রন্থের বঙ্গানুবাদ করেন। পান্ডিত্যের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘জগত্তারিণী স্বর্ণপদক’ (১৯৪০), বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদের ‘রামপ্রাণ স্বর্ণপদক’ এবং কাশী থেকে ‘বেদান্তরত্ন’ উপাধি লাভ করেন। ১৯৪২ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর তাঁর মৃত্যু হয়। [বদিউজ্জামান] | ||
[[en:Dutta, Hirendranath]] | [[en:Dutta, Hirendranath]] |
০৫:০৫, ৭ জানুয়ারি ২০১৫ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ
দত্ত, হীরেন্দ্রনাথ (১৮৬৮-১৯৪২) দার্শনিক ও রাজনীতিবিদ। ১৮৬৮ সালের ১৫ জানুয়ারি কলকাতার হাটখোলায় তাঁর জন্ম। হীরেন্দ্রনাথ একজন মেধাবী ছাত্র ছিলেন। তিনি মেট্রোপলিটন স্কুল থেকে এন্ট্রান্স (১৮৮৩) এবং প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে এফ.এ, অনার্সসহ বি.এ (১৮৮৮) ও ইংরেজি সাহিত্যে এমএ (১৮৮৯) পাস করেন। মেধার স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি ১৮৯৩ সালে প্রেমচাঁদ রায়চাঁদ বৃত্তি লাভ করেন। একই বছর তিনি বিএল এবং পরবর্তী বছর অ্যাটর্নিশিপ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন।
হীরেন্দ্রনাথ সমকালীন রাজনীতির সঙ্গে সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলেন। ১৮৯৪ থেকে ১৯২০ সাল পর্যন্ত তিনি কংগ্রেসের প্রায় সকল রাজনৈতিক আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেন। স্বদেশী আন্দোলনের অংশ হিসেবে তিনি বঙ্গলক্ষ্মী কটন মিল, ন্যাশনাল ব্যাংক এবং হিন্দুস্থান ইন্সুরেন্স প্রতিষ্ঠায় অংশ নেন। অরবিন্দ ঘোষের মামলা (১৯০৮) ও শামসুল আলম হত্যা মামলায় অ্যাটর্নি হিসেবে কাজ করে তিনি খ্যাতি অর্জন করেন। পরবর্তীকালে তিনি মদনমোহন মালব্যের সঙ্গে হিন্দু মহাসভা গঠন করেন।
হীরেন্দ্রনাথ বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন এবং বিভিন্ন সময়ে এর সম্পাদক, সহসভাপতি ও সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বেঙ্গল থিওসফিক্যাল সোসাইটিরও সম্পাদক ও সহসভাপতি ছিলেন। ১৯৪০ সালে তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে কমলা লেকচারার নিযুক্ত হন।
হীরেন্দ্রনাথ পন্থা ও ব্রহ্মবিদ্যা নামে দর্শন সম্পর্কিত দুটি পত্রিকা সম্পাদনা করেন। ধর্ম, দর্শন ও রাজনীতি সম্পর্কে তাঁর বেশ কয়েকটি গ্রন্থ আছে; সেগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হলো: গীতায় ঈশ্বরবাদ (১৯০৫), উপনিষদে ব্রহ্মতত্ত্ব (১৯১১), নারীর নির্বাচন অধিকার, অবতারতত্ত্ব, বেদান্ত পরিচয় (১৯২৪), কর্মবাদ ও জন্মান্তরবাদ (১৯২৫), বুদ্ধদেবের নাস্তিকতা (১৯৩৬), যাজ্ঞবল্ক্যের অদ্বৈতবাদ (১৯৩৬),প্রেমধর্ম (১৯৩৮), রাসলীলা, উপনিষদে জড় ও জীবতত্ত্ব (১৯৫২) ইত্যাদি। তিনি সংস্কৃত মেঘদূত কাব্য এবং কয়েকটি ইংরেজি গ্রন্থের বঙ্গানুবাদ করেন। পান্ডিত্যের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘জগত্তারিণী স্বর্ণপদক’ (১৯৪০), বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদের ‘রামপ্রাণ স্বর্ণপদক’ এবং কাশী থেকে ‘বেদান্তরত্ন’ উপাধি লাভ করেন। ১৯৪২ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর তাঁর মৃত্যু হয়। [বদিউজ্জামান]