তটরেখা: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
NasirkhanBot (আলোচনা | অবদান) অ (Added Ennglish article link) |
সম্পাদনা সারাংশ নেই |
||
(একই ব্যবহারকারী দ্বারা সম্পাদিত একটি মধ্যবর্তী সংশোধন দেখানো হচ্ছে না) | |||
১ নং লাইন: | ১ নং লাইন: | ||
[[Category:Banglapedia]] | [[Category:Banglapedia]] | ||
[[Image:Shoreline.jpg|thumb|400px|তটরেখা | [[Image:Shoreline.jpg|thumb|400px|তটরেখা, কক্সবাজার]] | ||
'''তটরেখা''' (Shoreline) সাগর ও ভূভাগের মধ্যে সংযোগ স্থাপনকারী রেখা। সাগরে নিমজ্জমান মহীসোপান (continental shelf) থেকে ভূভাগের দিকে বিস্তৃত একটি প্রশস্ত তটরেখা সুস্পষ্টরূপে উপকূলভাগের সীমা রচনা করে থাকে। তবে তটরেখা কখনও স্থির থাকে না, এর অবস্থান প্রতিনিয়তই পরিবর্তিত হয়। জোয়ারভাটার আগমন ও প্রস্থানের সঙ্গে সঙ্গে তটরেখাও ওঠানামা করে। আবার সমুদ্রপৃষ্ঠের পরিবর্তন ঘটলে তটরেখারও ব্যাপক পরিবর্তন ঘটে। | '''তটরেখা''' (Shoreline) সাগর ও ভূভাগের মধ্যে সংযোগ স্থাপনকারী রেখা। সাগরে নিমজ্জমান মহীসোপান (continental shelf) থেকে ভূভাগের দিকে বিস্তৃত একটি প্রশস্ত তটরেখা সুস্পষ্টরূপে উপকূলভাগের সীমা রচনা করে থাকে। তবে তটরেখা কখনও স্থির থাকে না, এর অবস্থান প্রতিনিয়তই পরিবর্তিত হয়। জোয়ারভাটার আগমন ও প্রস্থানের সঙ্গে সঙ্গে তটরেখাও ওঠানামা করে। আবার সমুদ্রপৃষ্ঠের পরিবর্তন ঘটলে তটরেখারও ব্যাপক পরিবর্তন ঘটে। | ||
বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলীয় তটরেখা অনিয়মিত এবং ভূভাগের অবনমন দ্বারা গঠিত। ভূত্বকের কোনো একটি বৃহৎ এলাকা যখন ধীরে ধীরে অবনমিত হতে থাকে কিংবা একটি দীর্ঘ সময়কালের প্রতিষ্ঠিত মহাদেশীয় অংশ পুরোপুরি নিমজ্জিত হয়ে পড়ে, তখন সমুদ্র ভূভাগের প্রান্তভাগে বিস্তৃতি লাভ করে এবং নদী উপত্যকা বরাবর প্রবেশ করে। এ অবস্থায় তটরেখা অনিয়মিতরূপ লাভ করে এবং এর আকৃতি প্লাবিতভূমির বৈশিষ্ট্যের ওপর নির্ভর করে গঠিত হয়। বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চল নিচুভূমি এবং নরম শিলা দ্বারা গঠিত। উপত্যকাটি প্রশস্ত ও অগভীর এবং সর্পিলাকৃতি ধরনের। দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের তটরেখা সুষমভাবে ঢালু হয়ে সাগরে গিয়ে মিশেছে এবং এ ঢাল সাগরের জলরাশির তলদেশ দিয়ে মহীসোপানের একেবারে প্রান্তভাগ পর্যন্ত গিয়েছে। [মোঃ সাজ্জাদ হোসেন] | বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলীয় তটরেখা অনিয়মিত এবং ভূভাগের অবনমন দ্বারা গঠিত। ভূত্বকের কোনো একটি বৃহৎ এলাকা যখন ধীরে ধীরে অবনমিত হতে থাকে কিংবা একটি দীর্ঘ সময়কালের প্রতিষ্ঠিত মহাদেশীয় অংশ পুরোপুরি নিমজ্জিত হয়ে পড়ে, তখন সমুদ্র ভূভাগের প্রান্তভাগে বিস্তৃতি লাভ করে এবং নদী উপত্যকা বরাবর প্রবেশ করে। এ অবস্থায় তটরেখা অনিয়মিতরূপ লাভ করে এবং এর আকৃতি প্লাবিতভূমির বৈশিষ্ট্যের ওপর নির্ভর করে গঠিত হয়। বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চল নিচুভূমি এবং নরম শিলা দ্বারা গঠিত। উপত্যকাটি প্রশস্ত ও অগভীর এবং সর্পিলাকৃতি ধরনের। দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের তটরেখা সুষমভাবে ঢালু হয়ে সাগরে গিয়ে মিশেছে এবং এ ঢাল সাগরের জলরাশির তলদেশ দিয়ে মহীসোপানের একেবারে প্রান্তভাগ পর্যন্ত গিয়েছে। [মোঃ সাজ্জাদ হোসেন] | ||
উপকূলীয় রেখা ''(Coastline) | ''উপকূলীয় রেখা'' (Coastline) স্থলভাগ ও সমুদ্র কিংবা সাগরের সংযোগ-স্থলকে উপকূলীয় রেখা বলা হয়। ঢেউ-এর উঠানামার স্থানকে উপকূলীয় রেখা বলা যায় না। স্থলভাগ ও জলভাগের বিচ্ছিন্নকারী সুস্পষ্টভাবে চিহ্নিত রেখাকেই উপকূলয় রেখা বলে। | ||
সৈকত | সৈকত (Beach) সমুদ্র, সাগর কিংবা হ্রদের তটরেখা (Shoreline) বরাবর সৈকত দেখা যায়। এটি একটি ভূ-তাত্ত্বিক প্রাকৃতিক ভূমি। সৈকত প্রধানত হালকা বাধনমুক্ত শিলা ও বালু দ্বারা গঠিত হয়ে থাকে। অনেক সময় জৈবিক পদার্থও সৈকত গঠনে সাহায্য করে। সমুদ্র, সাগর কিংবা হ্রদে সৃষ্ট ঢেউ এই সৈকতেই আনাগোনা করে থাকে। সব সময় সৈকতে ঢেউ আছড়ে পরার কারণে সৈকতে ঢেউ-এর ক্ষয়কাজ ও সঞ্চয়কাজের বিভিন্ন রূপ দেখা যায়। জোয়াড়-ভাটার কারণে সৈকতের পরিধিও কমবেশি হয়ে থাকে। পর্যটকদের কাছে সমুদ্র সৈকতই হচ্ছে প্রধান আকর্ষণ। বাংলাদেশের কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের দৈর্ঘ্য হচ্ছে ১২০ কিমি। এটি পৃথিবীর দীর্ঘতম প্রাকৃতিক সৈকত হিসেবে চিহ্নিত। [মেসবাহ-উস-সালেহীন] | ||
[[en:Shoreline]] | [[en:Shoreline]] |
০৪:৪৫, ৩০ ডিসেম্বর ২০১৪ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ
তটরেখা (Shoreline) সাগর ও ভূভাগের মধ্যে সংযোগ স্থাপনকারী রেখা। সাগরে নিমজ্জমান মহীসোপান (continental shelf) থেকে ভূভাগের দিকে বিস্তৃত একটি প্রশস্ত তটরেখা সুস্পষ্টরূপে উপকূলভাগের সীমা রচনা করে থাকে। তবে তটরেখা কখনও স্থির থাকে না, এর অবস্থান প্রতিনিয়তই পরিবর্তিত হয়। জোয়ারভাটার আগমন ও প্রস্থানের সঙ্গে সঙ্গে তটরেখাও ওঠানামা করে। আবার সমুদ্রপৃষ্ঠের পরিবর্তন ঘটলে তটরেখারও ব্যাপক পরিবর্তন ঘটে।
বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলীয় তটরেখা অনিয়মিত এবং ভূভাগের অবনমন দ্বারা গঠিত। ভূত্বকের কোনো একটি বৃহৎ এলাকা যখন ধীরে ধীরে অবনমিত হতে থাকে কিংবা একটি দীর্ঘ সময়কালের প্রতিষ্ঠিত মহাদেশীয় অংশ পুরোপুরি নিমজ্জিত হয়ে পড়ে, তখন সমুদ্র ভূভাগের প্রান্তভাগে বিস্তৃতি লাভ করে এবং নদী উপত্যকা বরাবর প্রবেশ করে। এ অবস্থায় তটরেখা অনিয়মিতরূপ লাভ করে এবং এর আকৃতি প্লাবিতভূমির বৈশিষ্ট্যের ওপর নির্ভর করে গঠিত হয়। বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চল নিচুভূমি এবং নরম শিলা দ্বারা গঠিত। উপত্যকাটি প্রশস্ত ও অগভীর এবং সর্পিলাকৃতি ধরনের। দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের তটরেখা সুষমভাবে ঢালু হয়ে সাগরে গিয়ে মিশেছে এবং এ ঢাল সাগরের জলরাশির তলদেশ দিয়ে মহীসোপানের একেবারে প্রান্তভাগ পর্যন্ত গিয়েছে। [মোঃ সাজ্জাদ হোসেন]
উপকূলীয় রেখা (Coastline) স্থলভাগ ও সমুদ্র কিংবা সাগরের সংযোগ-স্থলকে উপকূলীয় রেখা বলা হয়। ঢেউ-এর উঠানামার স্থানকে উপকূলীয় রেখা বলা যায় না। স্থলভাগ ও জলভাগের বিচ্ছিন্নকারী সুস্পষ্টভাবে চিহ্নিত রেখাকেই উপকূলয় রেখা বলে।
সৈকত (Beach) সমুদ্র, সাগর কিংবা হ্রদের তটরেখা (Shoreline) বরাবর সৈকত দেখা যায়। এটি একটি ভূ-তাত্ত্বিক প্রাকৃতিক ভূমি। সৈকত প্রধানত হালকা বাধনমুক্ত শিলা ও বালু দ্বারা গঠিত হয়ে থাকে। অনেক সময় জৈবিক পদার্থও সৈকত গঠনে সাহায্য করে। সমুদ্র, সাগর কিংবা হ্রদে সৃষ্ট ঢেউ এই সৈকতেই আনাগোনা করে থাকে। সব সময় সৈকতে ঢেউ আছড়ে পরার কারণে সৈকতে ঢেউ-এর ক্ষয়কাজ ও সঞ্চয়কাজের বিভিন্ন রূপ দেখা যায়। জোয়াড়-ভাটার কারণে সৈকতের পরিধিও কমবেশি হয়ে থাকে। পর্যটকদের কাছে সমুদ্র সৈকতই হচ্ছে প্রধান আকর্ষণ। বাংলাদেশের কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের দৈর্ঘ্য হচ্ছে ১২০ কিমি। এটি পৃথিবীর দীর্ঘতম প্রাকৃতিক সৈকত হিসেবে চিহ্নিত। [মেসবাহ-উস-সালেহীন]