জেট বায়ুপ্রবাহ: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

(Added Ennglish article link)
 
সম্পাদনা সারাংশ নেই
 
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
[[Category:Banglapedia]]
[[Category:Banglapedia]]
'''জেট বায়ুপ্রবাহ '''(Jet Stream)  সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে খাড়া উচ্চে বায়ুমন্ডলের ট্রপোপজ স্তরের কাছাকাছি (সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১০-১৫ কিমি উচ্চে) অঞ্চলের শক্তিশালী বায়ুপ্রবাহ। প্রধান প্রধান জেট বায়ুপ্রবাহের অবস্থান মধ্য ও উপক্রান্তীয় অঞ্চলের বায়ুমন্ডলে। পরিমিত তাপ সম্পন্ন জেট বায়ুপ্রবাহ পশ্চিম থেকে পূর্ব দিকে প্রবাহিত হয়। একটি তরঙ্গায়িত গতিপথে উত্তর দক্ষিণ দিক বরাবরও এ বায়ু প্রবাহিত হয়। এভাবে পৃথিবী জুড়ে এ বায়ু প্রবাহের অস্তিত্ব রয়েছে। শীত মৌসুমে মেরু অঞ্চলের জেট বায়ুপ্রবাহের প্রধান দুইটি শাখা  [[হিমালয় পর্বতমালা|হিমালয় পর্বতমালা]] দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়, একটি প্রবাহ হিমালয়ের উত্তরে এবং অন্যটি দক্ষিণ অঞ্চলে বিরাজমান থাকে। এ সকল জেট বায়ুপ্রবাহে বাতাসের গতি ঘণ্টায় ১৫০ থেকে ৩৫০ কিমি পর্যন্ত হতে পারে। মেরু অঞ্চলের জেট বায়ুপ্রবাহের দক্ষিণ অভিমুখী শাখাটি ভারতের উত্তর পশ্চিমাঞ্চলের বায়ুমন্ডলীয় অবনমন সৃষ্টি করে, ফলে সেখানে একটি উচ্চচাপ কেন্দ্রের সৃষ্টি হয়। শীত মৌসুমে এ উচ্চচাপ সৃষ্ট একটি শীতল বায়ুস্রোত বাংলাদেশে প্রবেশ করে। কখনও কখনও এ বায়ুপ্রবাহ বায়ুমন্ডলীয় দুর্যোগও বহন করে আনে। বাংলাদেশে শীত মৌসুমে বৃষ্টিপাতের জন্য এ বিশেষ বৈশিষ্ট্যের বায়ুপ্রবাহই দায়ী।
'''জেট বায়ুপ্রবাহ''' (Jet Stream)  সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে খাড়া উচ্চে বায়ুমন্ডলের ট্রপোপজ স্তরের কাছাকাছি (সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১০-১৫ কিমি উচ্চে) অঞ্চলের শক্তিশালী বায়ুপ্রবাহ। প্রধান প্রধান জেট বায়ুপ্রবাহের অবস্থান মধ্য ও উপক্রান্তীয় অঞ্চলের বায়ুমন্ডলে। পরিমিত তাপ সম্পন্ন জেট বায়ুপ্রবাহ পশ্চিম থেকে পূর্ব দিকে প্রবাহিত হয়। একটি তরঙ্গায়িত গতিপথে উত্তর দক্ষিণ দিক বরাবরও এ বায়ু প্রবাহিত হয়। এভাবে পৃথিবী জুড়ে এ বায়ু প্রবাহের অস্তিত্ব রয়েছে। শীত মৌসুমে মেরু অঞ্চলের জেট বায়ুপ্রবাহের প্রধান দুইটি শাখা  [[হিমালয় পর্বতমালা|হিমালয় পর্বতমালা]] দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়, একটি প্রবাহ হিমালয়ের উত্তরে এবং অন্যটি দক্ষিণ অঞ্চলে বিরাজমান থাকে। এ সকল জেট বায়ুপ্রবাহে বাতাসের গতি ঘণ্টায় ১৫০ থেকে ৩৫০ কিমি পর্যন্ত হতে পারে। মেরু অঞ্চলের জেট বায়ুপ্রবাহের দক্ষিণ অভিমুখী শাখাটি ভারতের উত্তর পশ্চিমাঞ্চলের বায়ুমন্ডলীয় অবনমন সৃষ্টি করে, ফলে সেখানে একটি উচ্চচাপ কেন্দ্রের সৃষ্টি হয়। শীত মৌসুমে এ উচ্চচাপ সৃষ্ট একটি শীতল বায়ুস্রোত বাংলাদেশে প্রবেশ করে। কখনও কখনও এ বায়ুপ্রবাহ বায়ুমন্ডলীয় দুর্যোগও বহন করে আনে। বাংলাদেশে শীত মৌসুমে বৃষ্টিপাতের জন্য এ বিশেষ বৈশিষ্ট্যের বায়ুপ্রবাহই দায়ী।


শীত মৌসুম থেকে বসন্ত এবং গ্রীষ্মকালের দিকে কালাতিক্রমের সঙ্গে সঙ্গে দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়। ফলে পশ্চিমা মেরু জেট বায়ুপ্রবাহের দক্ষিণ শাখাটিকে ঠেলে হিমালয় পর্বতমালার উত্তর দিকে সরিয়ে নিয়ে যায় এবং এ অঞ্চলটি পূবালি ক্রান্তীয় জেট বায়ুপ্রবাহ দ্বারা প্রতিস্থাপিত হয়। পূবালি ক্রান্তীয় জেট বায়ুপ্রবাহ একটি মৌসুমি এবং আঞ্চলিক বায়ুপ্রবাহ যা কেবল গ্রীষ্মকালে ইন্দো-চীন উপদ্বীপ থেকে সৌদি আরবের সমুদ্র উপকূল পর্যন্ত বিস্তৃত অঞ্চল জুড়ে অবস্থান করে। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে এ বায়ুপ্রবাহ স্তরের উচ্চতা ১৫-১৮ কিমি। তবে ভারত উপমহাদেশেই জেট বায়ুপ্রবাহ সর্বাপেক্ষা শক্তিশালী যেখানে এর গতিবেগ ঘণ্টায় ১৫০-১৭৫ কিমি পর্যন্ত হয়ে থাকে।
শীত মৌসুম থেকে বসন্ত এবং গ্রীষ্মকালের দিকে কালাতিক্রমের সঙ্গে সঙ্গে দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়। ফলে পশ্চিমা মেরু জেট বায়ুপ্রবাহের দক্ষিণ শাখাটিকে ঠেলে হিমালয় পর্বতমালার উত্তর দিকে সরিয়ে নিয়ে যায় এবং এ অঞ্চলটি পূবালি ক্রান্তীয় জেট বায়ুপ্রবাহ দ্বারা প্রতিস্থাপিত হয়। পূবালি ক্রান্তীয় জেট বায়ুপ্রবাহ একটি মৌসুমি এবং আঞ্চলিক বায়ুপ্রবাহ যা কেবল গ্রীষ্মকালে ইন্দো-চীন উপদ্বীপ থেকে সৌদি আরবের সমুদ্র উপকূল পর্যন্ত বিস্তৃত অঞ্চল জুড়ে অবস্থান করে। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে এ বায়ুপ্রবাহ স্তরের উচ্চতা ১৫-১৮ কিমি। তবে ভারত উপমহাদেশেই জেট বায়ুপ্রবাহ সর্বাপেক্ষা শক্তিশালী যেখানে এর গতিবেগ ঘণ্টায় ১৫০-১৭৫ কিমি পর্যন্ত হয়ে থাকে।   [রফিক আহমেদ]
 
[রফিক আহমেদ]
 
<!-- imported from file: জেট বায়ুপ্রবাহ.html-->


[[en:Jet Stream]]
[[en:Jet Stream]]

০৭:১৫, ১৭ ডিসেম্বর ২০১৪ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ

জেট বায়ুপ্রবাহ (Jet Stream)  সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে খাড়া উচ্চে বায়ুমন্ডলের ট্রপোপজ স্তরের কাছাকাছি (সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১০-১৫ কিমি উচ্চে) অঞ্চলের শক্তিশালী বায়ুপ্রবাহ। প্রধান প্রধান জেট বায়ুপ্রবাহের অবস্থান মধ্য ও উপক্রান্তীয় অঞ্চলের বায়ুমন্ডলে। পরিমিত তাপ সম্পন্ন জেট বায়ুপ্রবাহ পশ্চিম থেকে পূর্ব দিকে প্রবাহিত হয়। একটি তরঙ্গায়িত গতিপথে উত্তর দক্ষিণ দিক বরাবরও এ বায়ু প্রবাহিত হয়। এভাবে পৃথিবী জুড়ে এ বায়ু প্রবাহের অস্তিত্ব রয়েছে। শীত মৌসুমে মেরু অঞ্চলের জেট বায়ুপ্রবাহের প্রধান দুইটি শাখা  হিমালয় পর্বতমালা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়, একটি প্রবাহ হিমালয়ের উত্তরে এবং অন্যটি দক্ষিণ অঞ্চলে বিরাজমান থাকে। এ সকল জেট বায়ুপ্রবাহে বাতাসের গতি ঘণ্টায় ১৫০ থেকে ৩৫০ কিমি পর্যন্ত হতে পারে। মেরু অঞ্চলের জেট বায়ুপ্রবাহের দক্ষিণ অভিমুখী শাখাটি ভারতের উত্তর পশ্চিমাঞ্চলের বায়ুমন্ডলীয় অবনমন সৃষ্টি করে, ফলে সেখানে একটি উচ্চচাপ কেন্দ্রের সৃষ্টি হয়। শীত মৌসুমে এ উচ্চচাপ সৃষ্ট একটি শীতল বায়ুস্রোত বাংলাদেশে প্রবেশ করে। কখনও কখনও এ বায়ুপ্রবাহ বায়ুমন্ডলীয় দুর্যোগও বহন করে আনে। বাংলাদেশে শীত মৌসুমে বৃষ্টিপাতের জন্য এ বিশেষ বৈশিষ্ট্যের বায়ুপ্রবাহই দায়ী।

শীত মৌসুম থেকে বসন্ত এবং গ্রীষ্মকালের দিকে কালাতিক্রমের সঙ্গে সঙ্গে দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়। ফলে পশ্চিমা মেরু জেট বায়ুপ্রবাহের দক্ষিণ শাখাটিকে ঠেলে হিমালয় পর্বতমালার উত্তর দিকে সরিয়ে নিয়ে যায় এবং এ অঞ্চলটি পূবালি ক্রান্তীয় জেট বায়ুপ্রবাহ দ্বারা প্রতিস্থাপিত হয়। পূবালি ক্রান্তীয় জেট বায়ুপ্রবাহ একটি মৌসুমি এবং আঞ্চলিক বায়ুপ্রবাহ যা কেবল গ্রীষ্মকালে ইন্দো-চীন উপদ্বীপ থেকে সৌদি আরবের সমুদ্র উপকূল পর্যন্ত বিস্তৃত অঞ্চল জুড়ে অবস্থান করে। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে এ বায়ুপ্রবাহ স্তরের উচ্চতা ১৫-১৮ কিমি। তবে ভারত উপমহাদেশেই জেট বায়ুপ্রবাহ সর্বাপেক্ষা শক্তিশালী যেখানে এর গতিবেগ ঘণ্টায় ১৫০-১৭৫ কিমি পর্যন্ত হয়ে থাকে। [রফিক আহমেদ]