জাতীয় সঙ্গীত: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
সম্পাদনা সারাংশ নেই |
সম্পাদনা সারাংশ নেই |
||
(একই ব্যবহারকারী দ্বারা সম্পাদিত একটি মধ্যবর্তী সংশোধন দেখানো হচ্ছে না) | |||
৪ নং লাইন: | ৪ নং লাইন: | ||
মুজিবনগরে বাংলাদেশের প্রবাসী সরকার এই গানকে বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত হিসেবে স্বীকৃতি দেয় এবং মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে গানটি [[স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র|স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র]] থেকে নিয়মিত পরিবেশিত হতো। স্বাধীনতার পর সাংবিধানিকভাবে (অনুচ্ছেদ ৪.১) ‘আমার সোনার বাংলা’ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত রূপে ঘোষিত হয়। গানের প্রথম ১০ ছত্র কণ্ঠসঙ্গীত এবং প্রথম ৪ ছত্র যন্ত্রসঙ্গীত হিসেবে পরিবেশনের বিধান রাখা হয়েছে। | মুজিবনগরে বাংলাদেশের প্রবাসী সরকার এই গানকে বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত হিসেবে স্বীকৃতি দেয় এবং মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে গানটি [[স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র|স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র]] থেকে নিয়মিত পরিবেশিত হতো। স্বাধীনতার পর সাংবিধানিকভাবে (অনুচ্ছেদ ৪.১) ‘আমার সোনার বাংলা’ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত রূপে ঘোষিত হয়। গানের প্রথম ১০ ছত্র কণ্ঠসঙ্গীত এবং প্রথম ৪ ছত্র যন্ত্রসঙ্গীত হিসেবে পরিবেশনের বিধান রাখা হয়েছে। | ||
বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত | '''''বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত''''' | ||
আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি। | আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি। | ||
২৬ নং লাইন: | ২৬ নং লাইন: | ||
মা, তোর বদনখানি মলিন হলে, ও মা, আমি নয়নজলে ভাসি \ | মা, তোর বদনখানি মলিন হলে, ও মা, আমি নয়নজলে ভাসি \ | ||
জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের আনুষ্ঠানিকতা | |||
'''''জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের আনুষ্ঠানিকতা''''' | |||
ক. স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস ও শহীদ দিবসের মতো বিশেষ দিনগুলিতে সম্পূর্ণ জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশিত হবে। | ক. স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস ও শহীদ দিবসের মতো বিশেষ দিনগুলিতে সম্পূর্ণ জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশিত হবে। | ||
৪০ নং লাইন: | ৪১ নং লাইন: | ||
চ. রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও কূটনৈতিক মিশন আয়োজিত অন্যান্য সকল উদ্বোধনী অনুষ্ঠান, বিশেষ অনুষ্ঠান ও জনসভায় অনুমোদিত বিধি অনুযায়ী জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশিত হবে। | চ. রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও কূটনৈতিক মিশন আয়োজিত অন্যান্য সকল উদ্বোধনী অনুষ্ঠান, বিশেষ অনুষ্ঠান ও জনসভায় অনুমোদিত বিধি অনুযায়ী জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশিত হবে। | ||
ছ. সাধারণ নাগরিক এবং ইউনিফর্ম পরিহিত ব্যক্তিগণ কর্তৃক জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের সময় সম্মান প্রদর্শনের অনুমোদিত বিধি রয়েছে এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও অন্য সকল প্রকাশ্য স্থানে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের নির্দিষ্ট নিয়ম রয়েছে। সামরিক বাহিনী কর্তৃক জাতীয় সঙ্গীত কণ্ঠে বা বাদ্যযন্ত্রে পরিবেশনের বিস্তারিত নিয়মকানুন রয়েছে। | ছ. সাধারণ নাগরিক এবং ইউনিফর্ম পরিহিত ব্যক্তিগণ কর্তৃক জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের সময় সম্মান প্রদর্শনের অনুমোদিত বিধি রয়েছে এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও অন্য সকল প্রকাশ্য স্থানে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের নির্দিষ্ট নিয়ম রয়েছে। সামরিক বাহিনী কর্তৃক জাতীয় সঙ্গীত কণ্ঠে বা বাদ্যযন্ত্রে পরিবেশনের বিস্তারিত নিয়মকানুন রয়েছে। [এ.কে.এম ফারুক] | ||
[এ.কে.এম ফারুক] | |||
[[en:National Anthem]] | [[en:National Anthem]] |
০৫:১৫, ১০ ডিসেম্বর ২০১৪ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ
জাতীয় সঙ্গীত ১৯০৬ সালে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কর্তৃক রচিত ‘আমার সোনার বাংলা’ শীর্ষক সঙ্গীতটি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত হিসেবে গৃহীত হয়। এই সঙ্গীত বিশ শতকের প্রথম দুই দশকে স্বদেশী আন্দোলনের সময় অত্যন্ত জনপ্রিয় ছিল। বঙ্গভঙ্গ (১৯০৫) বিরোধী রাজনীতিক, স্বদেশী কর্মী ও বিপ্লবীরা বাঙালি জনগণকে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করার মাধ্যম হিসেবে এ গান প্রচার করেন। কিন্তু বিশ শতকের বিশের দশকে আঞ্চলিক জাতীয়তাবাদ স্তিমিত হয়ে পড়লে এই গানের প্রচলন কমে যায়। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের প্রাক্কালে গানটির পুনরুজ্জীবন ঘটে। ১৯৭১ সালের ৩ জানুয়ারি ঢাকার পল্টন ময়দানে ছাত্রলীগ ও শ্রমিক লীগ আয়োজিত এক জনসভায় গানটি গীত হয়। ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক সাতই মার্চের ভাষণের প্রাক্কালে গানটি গাওয়া হয়েছিল। ২৩ মার্চ স্বাধীন বাংলা কেন্দ্রিয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের আনুষ্ঠানিক স্বাধীনতা প্যারেডেও গানটি গীত হয়।
মুজিবনগরে বাংলাদেশের প্রবাসী সরকার এই গানকে বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত হিসেবে স্বীকৃতি দেয় এবং মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে গানটি স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে নিয়মিত পরিবেশিত হতো। স্বাধীনতার পর সাংবিধানিকভাবে (অনুচ্ছেদ ৪.১) ‘আমার সোনার বাংলা’ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত রূপে ঘোষিত হয়। গানের প্রথম ১০ ছত্র কণ্ঠসঙ্গীত এবং প্রথম ৪ ছত্র যন্ত্রসঙ্গীত হিসেবে পরিবেশনের বিধান রাখা হয়েছে।
বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত
আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি।
চিরদিন তোমার আকাশ, তোমার বাতাস, আমার প্রাণে বাজায় বাঁশি \
ও মা, ফাগুনে তোর আমের বনে ঘ্রাণে পাগল করে,
মরি হায়, হায় রে -
ও মা, অঘ্রানে তোর ভরা ক্ষেতে আমি কী দেখেছি মধুর হাসি \
কী শোভা, কী ছায়া গো, কী স্নেহ, কী মায়া গো-
কী অাঁচল বিছায়েছ বটের মূলে, নদীর কূলে কূলে।
মা, তোর মুখের বাণী আমার কানে লাগে সুধার মতো,
মরি হায়, হায় রে-
মা, তোর বদনখানি মলিন হলে, ও মা, আমি নয়নজলে ভাসি \
জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের আনুষ্ঠানিকতা
ক. স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস ও শহীদ দিবসের মতো বিশেষ দিনগুলিতে সম্পূর্ণ জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশিত হবে।
খ. রাষ্ট্রপতি/প্রধানমন্ত্রী যেসব অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকেন সেসব অনুষ্ঠানে তাঁদের আগমনের ও প্রস্থানের সময় সম্পূর্ণ জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশিত হবে।
গ. রাষ্ট্রপতি/প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে টোস্ট করার সময় পূর্ণ জাতীয় সঙ্গীত এবং তাঁদের অনুপস্থিতিতে মাত্র প্রথম চার ছত্র পরিবেশিত হবে।
ঘ. কোন বিদেশি রাষ্ট্রপ্রধানের সম্মানে গার্ড অব অনার প্রদানকালে রাষ্ট্রপতিকে অভিবাদন প্রদানের সময় পূর্ণ জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশিত হবে। এ ধরনের অনুষ্ঠানে প্রথমে অতিথির দেশের জাতীয় সঙ্গীত এবং পরে বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশিত হবে। কিন্তু অতিথি সরকারপ্রধান হলে কেবল প্রথম চার ছত্র পরিবেশিত হবে।
ঙ. বাংলাদেশে বিদেশি দূতাবাসগুলির সরকারি অনুষ্ঠানে কেবল প্রথম চার ছত্র পরিবেশিত হবে। অনুষ্ঠানে প্রথমে বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত এবং পরে সংশ্লিষ্ট দেশের জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশিত হবে।
চ. রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও কূটনৈতিক মিশন আয়োজিত অন্যান্য সকল উদ্বোধনী অনুষ্ঠান, বিশেষ অনুষ্ঠান ও জনসভায় অনুমোদিত বিধি অনুযায়ী জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশিত হবে।
ছ. সাধারণ নাগরিক এবং ইউনিফর্ম পরিহিত ব্যক্তিগণ কর্তৃক জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের সময় সম্মান প্রদর্শনের অনুমোদিত বিধি রয়েছে এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও অন্য সকল প্রকাশ্য স্থানে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের নির্দিষ্ট নিয়ম রয়েছে। সামরিক বাহিনী কর্তৃক জাতীয় সঙ্গীত কণ্ঠে বা বাদ্যযন্ত্রে পরিবেশনের বিস্তারিত নিয়মকানুন রয়েছে। [এ.কে.এম ফারুক]