জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

(Added Ennglish article link)
 
সম্পাদনা সারাংশ নেই
 
(একই ব্যবহারকারী দ্বারা সম্পাদিত একটি মধ্যবর্তী সংশোধন দেখানো হচ্ছে না)
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
[[Category:বাংলাপিডিয়া]]
[[Category:বাংলাপিডিয়া]]
'''জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়'''  একটি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়। ময়মনসিংহের ত্রিশালে বটতলা নামক স্থানে ৩৫ একর জমির উপর বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত। এই বটতলায় কবি তাঁর শৈশবের অনেকগুলি দিন কাটিয়েছেন। বৃহৎ ময়মনসিংহের বিদ্বৎসমাজ দীর্ঘদিন যাবৎ একটি সংস্কৃতি কেন্দ্রিক বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের দাবি জানিয়ে আসছিল। এরই প্রেক্ষিতে ২০০৪ সালে প্রকল্প হিসেবে সংস্কৃতি কেন্দ্রিক বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে এর যাত্রা শুরু হয়। কিন্তু ২০০৬ সালের জাতীয় সংসদে জারিকৃত ১৮ নং আইনের অধীনে এটি একটি সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করে এবং ২০০৭ সালের ১ জুন এর শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়।
'''জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়''' একটি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়। ময়মনসিংহের ত্রিশালে বটতলা নামক স্থানে ৩৫ একর জমির উপর বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত। এই বটতলায় কবি [[ইসলাম, কাজী নজরুল|কাজী নজরুল ইসলাম]] তাঁর শৈশবের অনেকগুলি দিন কাটিয়েছেন। বৃহৎ ময়মনসিংহের বিদ্বৎসমাজ দীর্ঘদিন যাবৎ একটি সংস্কৃতি কেন্দ্রিক বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের দাবি জানিয়ে আসছিল। এরই প্রেক্ষিতে ২০০৪ সালে প্রকল্প হিসেবে সংস্কৃতি কেন্দ্রিক বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে এর যাত্রা শুরু হয়। কিন্তু ২০০৬ সালের জাতীয় সংসদে জারিকৃত ১৮ নং আইনের অধীনে এটি একটি সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে রূপান্তরিত হয় এবং ২০০৭ সালের ১ জুন এর শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়।


বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে শুধু স্নাতক শিক্ষা কার্যক্রম চালু আছে। কলা, সামাজিক বিজ্ঞান, বিজ্ঞান ও প্রকৌশল এবং ব্যাবসায় প্রশাসন নামে ৪টি অনুষদ রয়েছে। এ ৪টি অনুষদের অধীনে ১২টি বিভাগ রয়েছে। বিভাগগুলি হলো: অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেম, ফাইন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং, হিউম্যান রিসোর্সেস ম্যানেজমেন্ট, কম্পিউটার সাইন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং, ইলেকট্রনিক অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং, অর্থনীতি, লোকপ্রশাসন, সঙ্গীত, চারুকলা, নাট্যকলা, বাংলা এবং ইংরেজি।
[[Image:JatiaKabi%20KaziNazrulIslamUniversity.jpg|thumb|right|400px|জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়, ত্রিশাল]]
বিশ্ববিদ্যালয়টিতে কলা, সামাজিক বিজ্ঞান, বিজ্ঞান ও প্রকৌশল, আইন এবং ব্যাবসায় প্রশাসন নামে ৫টি অনুষদ রয়েছে। এ ৫টি অনুষদের অধীনে ২৩টি বিভাগ রয়েছে। বিভাগগুলি হলো: কম্পিউটার সাইন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং, তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশল, পরিবেশ বিজ্ঞান ও প্রকৌশল, পরিসংখ্যান, অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেম, ফাইন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং, হিউম্যান রিসোর্সেস ম্যানেজমেন্ট, ব্যবস্থাপনা, অর্থনীতি, লোকপ্রশাসন ও সরকার পরিচালন বিদ্যা, ফকলোর, নৃবিজ্ঞান, পপুলেশন সাইন্স, স্থানীয় সরকার এবং নগর উন্নয়ন বিভাগ, সমাজবিজ্ঞান, বাংলা ভাষা ও সাহিত্য, ইংরেজি সাহিত্য, সংগীত, চারুকলা, থিয়েটার ও পারফরমেন্স স্টাডিজ, চলচ্চিত্র ও গণমাধ্যম অধ্যায়ন, দর্শন, এবং আইন ও বিচার বিভাগ।


নিয়মতান্ত্রিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর হন রাষ্ট্রপতি। বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী সংস্থা সিন্ডিকেট। সবধরণের স্ট্যাট্যুট প্রণয়ন ও সংশোধন কাজ হয় সিনেটে। সিনেট বার্ষিক বাজেট অনুমোদন, শিক্ষা কার্যক্রমের সার্বিক পর্যালোচনা এবং উপাচার্য নিয়োগ দানের জন্য প্যানেল নির্বাচন করেন। ভাইস-চ্যান্সেলরসহ মোট সিন্ডিকেট সদস্য ১২ জন। এছাড়া একাডেমিক কমিটি, অর্থ কমিটি এবং পরিকল্পনা ও উন্নয়ন কমিটি বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার সাথে যুক্ত। ছাত্রছাত্রীদের সুযোগসুবিধা দেখার জন্য রয়েছে স্টুডেন্টস ওয়েলফেয়ার সেন্টার।  
নিয়মতান্ত্রিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর হন রাষ্ট্রপতি। বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী সংস্থা সিন্ডিকেট। সবধরণের স্ট্যাট্যুট প্রণয়ন ও সংশোধন কাজ হয় সিনেটে। সিনেট বার্ষিক বাজেট অনুমোদন, শিক্ষা কার্যক্রমের সার্বিক পর্যালোচনা এবং উপাচার্য নিয়োগ দানের জন্য প্যানেল নির্বাচন করেন। ভাইস-চ্যান্সেলর সহ মোট সিন্ডিকেট সদস্য ১২ জন। এছাড়া একাডেমিক কমিটি, অর্থ কমিটি এবং পরিকল্পনা ও উন্নয়ন কমিটি বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার সাথে যুক্ত। ছাত্রছাত্রীদের সুযোগসুবিধা দেখার জন্য রয়েছে স্টুডেন্টস ওয়েলফেয়ার সেন্টার।


[[Image:JatiaKabi%20KaziNazrulIslamUniversity.jpg|thumb|right|জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়, ত্রিশাল]]
বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ছাত্র ও শিক্ষক যৌথ উদ্যোগে প্রকাশিত হয় বিজনেস এক্সসিলেন্স নামে একটি জার্নাল এবং স্বাধীনতা নামে একটি বার্ষিক পত্রিকা প্রকাশের অপেক্ষায় আছে। সংগীত বিভাগের ছাত্রছাত্রীদের দ্বারা পরিচালিত হয় নবনন্দন নামে একটি সংগীতগোষ্ঠী। সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে সমাজ উন্নয়নমূলক স্বেচ্ছাধর্মী সংগঠন ‘সাপোর্ট’।


বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের তত্ত্বাবধায়নে একটি জার্নাল প্রকাশের প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ছাত্র ও শিক্ষক যৌথ উদ্যোগে প্রকাশিত হয় বিজনেস এক্সসিলেন্স নামে একটি জার্নাল এবং স্বাধীনতা নামে একটি বার্ষিক পত্রিকা প্রকাশের অপেক্ষায় আছে। সঙ্গীত বিভাগের ছাত্রছাত্রীদের দ্বারা পরিচালিত হয় নবনন্দন নামে একটি সঙ্গীতগোষ্ঠী। সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে সমাজ উন্নয়নমূলক স্বেচ্ছাধর্মী সংগঠন ‘সাপোর্ট’।
বর্তমানে কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদের ৯২৩২ জন ছাত্রছাত্রী, ১৯৫ শিক্ষক এবং ১২০ জন কর্মকর্তা রয়েছেন। ছাত্রছাত্রীদের জন্য রয়েছে ৪টি আবাসিক হল, ছাত্রদের জন্য দুটি ও ছাত্রীদের জন্য দুটি। এগুলো হলো অগ্নিবীনা হল, দোলন চাঁপা হল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল। শিক্ষক কর্মকর্তাদের জন্য দুটি আবাসিক ভবন রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার ২৮,০০০টি বই এবং জার্নাল দ্বারা সমৃদ্ধ। কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারসহ প্রতিটি বিভাগ ইন্টারনেটের মাধ্যমে সংযুক্ত।  [মো. আশিক ইকবাল]
 
বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১৯৩৩ এবং শিক্ষকশিক্ষিকার সংখ্যা ৫৪। ছাত্রছাত্রীদের জন্য একটি করে ২টি আবাসিক হল রয়েছে- অগ্নিবীণা হল এবং দোলনচাঁপা হল। শিক্ষক এবং কর্মকর্তাদের থাকার জন্য রয়েছে দুটি আবাসিক ভবন। বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে একটি সমৃদ্ধ কেন্দীয় গ্রন্থাগার, যার বইয়ের সংখ্যা প্রায় ২৮ হাজার। কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারে ইন্টারনেট সুবিধা রয়েছে।  [মো আশিক ইকবাল]


[[en:Jatiya Kabi Kazi Nazrul Islam University]]
[[en:Jatiya Kabi Kazi Nazrul Islam University]]

১৫:৪৮, ১৬ অক্টোবর ২০২৩ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় একটি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়। ময়মনসিংহের ত্রিশালে বটতলা নামক স্থানে ৩৫ একর জমির উপর বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত। এই বটতলায় কবি কাজী নজরুল ইসলাম তাঁর শৈশবের অনেকগুলি দিন কাটিয়েছেন। বৃহৎ ময়মনসিংহের বিদ্বৎসমাজ দীর্ঘদিন যাবৎ একটি সংস্কৃতি কেন্দ্রিক বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের দাবি জানিয়ে আসছিল। এরই প্রেক্ষিতে ২০০৪ সালে প্রকল্প হিসেবে সংস্কৃতি কেন্দ্রিক বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে এর যাত্রা শুরু হয়। কিন্তু ২০০৬ সালের জাতীয় সংসদে জারিকৃত ১৮ নং আইনের অধীনে এটি একটি সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে রূপান্তরিত হয় এবং ২০০৭ সালের ১ জুন এর শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়।

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়, ত্রিশাল

বিশ্ববিদ্যালয়টিতে কলা, সামাজিক বিজ্ঞান, বিজ্ঞান ও প্রকৌশল, আইন এবং ব্যাবসায় প্রশাসন নামে ৫টি অনুষদ রয়েছে। এ ৫টি অনুষদের অধীনে ২৩টি বিভাগ রয়েছে। বিভাগগুলি হলো: কম্পিউটার সাইন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং, তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশল, পরিবেশ বিজ্ঞান ও প্রকৌশল, পরিসংখ্যান, অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেম, ফাইন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং, হিউম্যান রিসোর্সেস ম্যানেজমেন্ট, ব্যবস্থাপনা, অর্থনীতি, লোকপ্রশাসন ও সরকার পরিচালন বিদ্যা, ফকলোর, নৃবিজ্ঞান, পপুলেশন সাইন্স, স্থানীয় সরকার এবং নগর উন্নয়ন বিভাগ, সমাজবিজ্ঞান, বাংলা ভাষা ও সাহিত্য, ইংরেজি সাহিত্য, সংগীত, চারুকলা, থিয়েটার ও পারফরমেন্স স্টাডিজ, চলচ্চিত্র ও গণমাধ্যম অধ্যায়ন, দর্শন, এবং আইন ও বিচার বিভাগ।

নিয়মতান্ত্রিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর হন রাষ্ট্রপতি। বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী সংস্থা সিন্ডিকেট। সবধরণের স্ট্যাট্যুট প্রণয়ন ও সংশোধন কাজ হয় সিনেটে। সিনেট বার্ষিক বাজেট অনুমোদন, শিক্ষা কার্যক্রমের সার্বিক পর্যালোচনা এবং উপাচার্য নিয়োগ দানের জন্য প্যানেল নির্বাচন করেন। ভাইস-চ্যান্সেলর সহ মোট সিন্ডিকেট সদস্য ১২ জন। এছাড়া একাডেমিক কমিটি, অর্থ কমিটি এবং পরিকল্পনা ও উন্নয়ন কমিটি বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার সাথে যুক্ত। ছাত্রছাত্রীদের সুযোগসুবিধা দেখার জন্য রয়েছে স্টুডেন্টস ওয়েলফেয়ার সেন্টার।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ছাত্র ও শিক্ষক যৌথ উদ্যোগে প্রকাশিত হয় বিজনেস এক্সসিলেন্স নামে একটি জার্নাল এবং স্বাধীনতা নামে একটি বার্ষিক পত্রিকা প্রকাশের অপেক্ষায় আছে। সংগীত বিভাগের ছাত্রছাত্রীদের দ্বারা পরিচালিত হয় নবনন্দন নামে একটি সংগীতগোষ্ঠী। সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে সমাজ উন্নয়নমূলক স্বেচ্ছাধর্মী সংগঠন ‘সাপোর্ট’।

বর্তমানে কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদের ৯২৩২ জন ছাত্রছাত্রী, ১৯৫ শিক্ষক এবং ১২০ জন কর্মকর্তা রয়েছেন। ছাত্রছাত্রীদের জন্য রয়েছে ৪টি আবাসিক হল, ছাত্রদের জন্য দুটি ও ছাত্রীদের জন্য দুটি। এগুলো হলো অগ্নিবীনা হল, দোলন চাঁপা হল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল। শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের জন্য দুটি আবাসিক ভবন রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার ২৮,০০০টি বই এবং জার্নাল দ্বারা সমৃদ্ধ। কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারসহ প্রতিটি বিভাগ ইন্টারনেটের মাধ্যমে সংযুক্ত। [মো. আশিক ইকবাল]