কোতোয়াল: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
NasirkhanBot (আলোচনা | অবদান) অ (Added Ennglish article link) |
সম্পাদনা সারাংশ নেই |
||
১ নং লাইন: | ১ নং লাইন: | ||
[[Category:বাংলাপিডিয়া]] | [[Category:বাংলাপিডিয়া]] | ||
'''কোতোয়াল''' তুর্ক-আফগান ও মুগল আমলে নগরের পুলিশব্যবস্থা ও পরিবেশ নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে নিয়োজিত কর্মকর্তা। কোতোয়াল ([[কোট|কোট]] = দুর্গ, পাল = রক্ষক) ছিলেন নগর পুলিশপ্রধান। তাঁর প্রধান দায়িত্ব ছিল শান্তি ও সামাজিক শৃঙ্খলা বজায় রাখা এবং নগরের পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখা। আবুল ফজলের [[আইন-ই-আকবরী|আইন]][[আইন-ই-আকবরী|-ই]][[আইন-ই-আকবরী|-আকবরী]]তে নগর কোতোয়ালের ক্ষমতা ও দায়িত্বের বিস্তারিত বর্ণনা দেওয়া হয়েছে। আইন-ই-আকবরী ও ভারতীয় বা বিদেশি অন্যান্য সমসাময়িক বিবরণ অনুযায়ী নগর কোতোয়ালের দায়িত্বের পরিধি ছিল ব্যাপক। তার দায়িত্বের অন্তর্ভুক্ত ছিল প্রহরা ও পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে নগরবাসীদের নিরাপত্তা বিধান, রাতে সান্ধ্য আইন আরোপ, নগরের বাড়িঘর ও সড়কের তথ্য সংরক্ষণ, সময়ে সময়ে বাড়ির বাসিন্দাদের সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ, নগরবাসীর আয়-ব্যয়ের তদারকি, রাষ্ট্রের সন্দেহভাজন উচ্চপদস্থ কর্মচারীদের কার্যকলাপের ওপর নজর রাখা, ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা, জনগণের নৈতিকতার ওপর নজরদারি, বাজার ও দ্রব্যমূল্য পর্যবেক্ষণ, পশু জবাই ও শবদাহের শ্মশান নিয়ন্ত্রণ ইত্যাদি। কোতোয়াল শাহী সনদের মাধ্যমে নিযুক্ত হওয়ায় তিনি তার দায়িত্ব পালনে স্বাধীনতা ও মর্যাদার অধিকারী ছিলেন। ১৭৬০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত [[ঢাকা|ঢাকা]] নগরীর কোতোয়াল সগৌরবে তাঁর দায়িত্ব পালন করেন। তখন থেকে [[নায়েব নাজিম|নায়েব নাজিম]] পদটি ক্ষমতা ও দায়িত্বের দিক থেকে গুরুত্ব হারাতে শুরু করে। ১৭৯৩ সালে নায়েব নাজিমের নিজামত সংক্রান্ত দায়িত্বের আনুষ্ঠানিক অবসান ঘটে এবং এর সঙ্গে সঙ্গে কোতোয়াল পদেরও বিলুপ্তি ঘটে। তবে ১৮৪৩ সালে নামমাত্র নায়েব নাজিমের পদের চূড়ান্ত বিলুপ্তি পর্যন্ত প্রতীক স্বরূপ কোতোয়াল পদটি টিকে ছিল। | '''কোতোয়াল''' তুর্ক-আফগান ও মুগল আমলে নগরের পুলিশব্যবস্থা ও পরিবেশ নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে নিয়োজিত কর্মকর্তা। কোতোয়াল ([[কোট|কোট]] = দুর্গ, পাল = রক্ষক) ছিলেন নগর পুলিশপ্রধান। তাঁর প্রধান দায়িত্ব ছিল শান্তি ও সামাজিক শৃঙ্খলা বজায় রাখা এবং নগরের পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখা। আবুল ফজলের [[আইন-ই-আকবরী|আইন]][[আইন-ই-আকবরী|-ই]][[আইন-ই-আকবরী|-আকবরী]]তে নগর কোতোয়ালের ক্ষমতা ও দায়িত্বের বিস্তারিত বর্ণনা দেওয়া হয়েছে। আইন-ই-আকবরী ও ভারতীয় বা বিদেশি অন্যান্য সমসাময়িক বিবরণ অনুযায়ী নগর কোতোয়ালের দায়িত্বের পরিধি ছিল ব্যাপক। তার দায়িত্বের অন্তর্ভুক্ত ছিল প্রহরা ও পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে নগরবাসীদের নিরাপত্তা বিধান, রাতে সান্ধ্য আইন আরোপ, নগরের বাড়িঘর ও সড়কের তথ্য সংরক্ষণ, সময়ে সময়ে বাড়ির বাসিন্দাদের সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ, নগরবাসীর আয়-ব্যয়ের তদারকি, রাষ্ট্রের সন্দেহভাজন উচ্চপদস্থ কর্মচারীদের কার্যকলাপের ওপর নজর রাখা, ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা, জনগণের নৈতিকতার ওপর নজরদারি, বাজার ও দ্রব্যমূল্য পর্যবেক্ষণ, পশু জবাই ও শবদাহের শ্মশান নিয়ন্ত্রণ ইত্যাদি। কোতোয়াল শাহী সনদের মাধ্যমে নিযুক্ত হওয়ায় তিনি তার দায়িত্ব পালনে স্বাধীনতা ও মর্যাদার অধিকারী ছিলেন। ১৭৬০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত [[ঢাকা|ঢাকা]] নগরীর কোতোয়াল সগৌরবে তাঁর দায়িত্ব পালন করেন। তখন থেকে [[নায়েব নাজিম|নায়েব নাজিম]] পদটি ক্ষমতা ও দায়িত্বের দিক থেকে গুরুত্ব হারাতে শুরু করে। ১৭৯৩ সালে নায়েব নাজিমের নিজামত সংক্রান্ত দায়িত্বের আনুষ্ঠানিক অবসান ঘটে এবং এর সঙ্গে সঙ্গে কোতোয়াল পদেরও বিলুপ্তি ঘটে। তবে ১৮৪৩ সালে নামমাত্র নায়েব নাজিমের পদের চূড়ান্ত বিলুপ্তি পর্যন্ত প্রতীক স্বরূপ কোতোয়াল পদটি টিকে ছিল। [সিরাজুল ইসলাম] | ||
[সিরাজুল ইসলাম] | |||
[[en:Kotwal]] | [[en:Kotwal]] |
০৫:১৭, ৯ সেপ্টেম্বর ২০১৪ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ
কোতোয়াল তুর্ক-আফগান ও মুগল আমলে নগরের পুলিশব্যবস্থা ও পরিবেশ নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে নিয়োজিত কর্মকর্তা। কোতোয়াল (কোট = দুর্গ, পাল = রক্ষক) ছিলেন নগর পুলিশপ্রধান। তাঁর প্রধান দায়িত্ব ছিল শান্তি ও সামাজিক শৃঙ্খলা বজায় রাখা এবং নগরের পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখা। আবুল ফজলের আইন-ই-আকবরীতে নগর কোতোয়ালের ক্ষমতা ও দায়িত্বের বিস্তারিত বর্ণনা দেওয়া হয়েছে। আইন-ই-আকবরী ও ভারতীয় বা বিদেশি অন্যান্য সমসাময়িক বিবরণ অনুযায়ী নগর কোতোয়ালের দায়িত্বের পরিধি ছিল ব্যাপক। তার দায়িত্বের অন্তর্ভুক্ত ছিল প্রহরা ও পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে নগরবাসীদের নিরাপত্তা বিধান, রাতে সান্ধ্য আইন আরোপ, নগরের বাড়িঘর ও সড়কের তথ্য সংরক্ষণ, সময়ে সময়ে বাড়ির বাসিন্দাদের সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ, নগরবাসীর আয়-ব্যয়ের তদারকি, রাষ্ট্রের সন্দেহভাজন উচ্চপদস্থ কর্মচারীদের কার্যকলাপের ওপর নজর রাখা, ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা, জনগণের নৈতিকতার ওপর নজরদারি, বাজার ও দ্রব্যমূল্য পর্যবেক্ষণ, পশু জবাই ও শবদাহের শ্মশান নিয়ন্ত্রণ ইত্যাদি। কোতোয়াল শাহী সনদের মাধ্যমে নিযুক্ত হওয়ায় তিনি তার দায়িত্ব পালনে স্বাধীনতা ও মর্যাদার অধিকারী ছিলেন। ১৭৬০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত ঢাকা নগরীর কোতোয়াল সগৌরবে তাঁর দায়িত্ব পালন করেন। তখন থেকে নায়েব নাজিম পদটি ক্ষমতা ও দায়িত্বের দিক থেকে গুরুত্ব হারাতে শুরু করে। ১৭৯৩ সালে নায়েব নাজিমের নিজামত সংক্রান্ত দায়িত্বের আনুষ্ঠানিক অবসান ঘটে এবং এর সঙ্গে সঙ্গে কোতোয়াল পদেরও বিলুপ্তি ঘটে। তবে ১৮৪৩ সালে নামমাত্র নায়েব নাজিমের পদের চূড়ান্ত বিলুপ্তি পর্যন্ত প্রতীক স্বরূপ কোতোয়াল পদটি টিকে ছিল। [সিরাজুল ইসলাম]