নওগাঁ জেলা: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

সম্পাদনা সারাংশ নেই
 
(হালনাগাদ)
 
(একজন ব্যবহারকারী দ্বারা সম্পাদিত একটি মধ্যবর্তী সংশোধন দেখানো হচ্ছে না)
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
[[Category:Banglapedia]]
[[Category:Banglapedia]]
'''নওগাঁ জেলা''' (রাজশাহী বিভাগ)  আয়তন: ৩৪৩৫.৬৭ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৪°৩২´ থেকে ২৫°১৩´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৮°২৩´ থেকে ৮৯°১০´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, দক্ষিণে নাটোর ও রাজশাহী জেলা, পূর্বে জয়পুরহাট ও বগুড়া জেলা, পশ্চিমে নবাবগঞ্জ জেলা।
'''নওগাঁ জেলা''' (রাজশাহী বিভাগ)  আয়তন: ৩৪৩৫.৬৫ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৪°৩২´ থেকে ২৫°১৩´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৮°২৩´ থেকে ৮৯°১০´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, দক্ষিণে নাটোর ও রাজশাহী জেলা, পূর্বে জয়পুরহাট ও বগুড়া জেলা, পশ্চিমে নবাবগঞ্জ জেলা।


''জনসংখ্যা'' ২৩৯১৩৫৫; পুরুষ ১২২৮২৫৩, মহিলা ১১৬৩১০২। মুসলিম ২০৬২৬১৬, হিন্দু ২৫৬৫৯৬, বৌদ্ধ ১৪৩১৩, খ্রিস্টান ৩৩৬ এবং অন্যান্য ৫৭৪৯৪। এ জেলায় সাঁওতাল, ওরাওঁ, মুন্ডা প্রভৃতি আদিবাসী জনগোষ্ঠীর বসবাস রয়েছে।
''জনসংখ্যা'' ২৬০০১৫৭; পুরুষ ১৩০০২২৭, মহিলা ১২৯৯৯৩০। মুসলিম ২২৫০৪২৭, হিন্দু ২৮৭৯১৯, বৌদ্ধ ১০২, খ্রিস্টান ১৮৫৯০ এবং অন্যান্য ৪৩১১৯। এ জেলায় সাঁওতাল, ওরাওঁ, মুন্ডা প্রভৃতি আদিবাসী জনগোষ্ঠীর বসবাস রয়েছে।


''জলাশয়'' প্রধান নদী: আত্রাই, পুনর্ভবা, ছোট যমুনা, নাগর, শিব; চলন বিল উল্লেখযোগ্য।  
''জলাশয়'' প্রধান নদী: আত্রাই, পুনর্ভবা, ছোট যমুনা, নাগর, শিব; চলন বিল উল্লেখযোগ্য।  


''প্রশাসন'' রাজশাহী জেলার অধীনে নওগাঁ মহকুমা গঠিত হয় ১৮৭৭ সালে এবং মহকুমাকে জেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮৪ সালে। পৌরসভা গঠিত হয় ১৯৬৩ সালে। জেলার এগারোটি উপজেলার মধ্যে নিয়ামতপুর সর্ববৃহৎ (৪৪৯.১০ বর্গ কিমি) এবং সবচেয়ে ছোট উপজেলা বদলগাছী (২১৩.৯৮ বর্গ কিমি)।
''প্রশাসন'' রাজশাহী জেলার অধীনে নওগাঁ মহকুমা গঠিত হয় ১৮৭৭ সালে এবং মহকুমাকে জেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮৪ সালে। পৌরসভা গঠিত হয় ১৯৬৩ সালে। জেলার এগারোটি উপজেলার মধ্যে নিয়ামতপুর সর্ববৃহৎ (৪৪৯.০৯ বর্গ কিমি) এবং সবচেয়ে ছোট উপজেলা বদলগাছী (২১৩.৯৭ বর্গ কিমি)।


{| class="table table-bordered table-hover"
{| class="table table-bordered table-hover"
|-
|-
! colspan= "10" | জেলা
| colspan= "10" | জেলা
|-
|-
| rowspan= "2" | আয়তন(বর্গ কিমি)  || rowspan= "2" | উপজেলা  || rowspan= "2" | পৌরসভা  || rowspan= "2" | ইউনিয়ন  || rowspan= "2" | মৌজা  || rowspan= "2" | গ্রাম  || colspan= "2" | জনসংখ্যা || rowspan= "2" | ঘনত্ব(প্রতি বর্গ কিমি)  || rowspan= "2" | শিক্ষার হার (%)
| rowspan= "2" | আয়তন (বর্গ কিমি)  || rowspan= "2" | উপজেলা  || rowspan= "2" | পৌরসভা  || rowspan= "2" | ইউনিয়ন  || rowspan= "2" | মৌজা  || rowspan= "2" | গ্রাম  || colspan= "2" | জনসংখ্যা || rowspan= "2" | ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি)  || rowspan= "2" | শিক্ষার হার (%)
|-
|-
| শহর  || গ্রাম  
| শহর  || গ্রাম  
|-
|-
| ৩৪৩৫.৬৭  || ১১ || ২  || ৯৯ || ২৫৬৫  || ২৭৯৯  || ২২২৫৭৬  || ২১৬৮৭৭৯  || ৬৯৬  || ৪৪.
| ৩৪৩৫.৬৫ || ১১ || || ৯৯ || ২৪৯৭ || ২৭৮০ || ২৭৫৫৬৭ || ২৩২৪৫৯০ || ৭৫৭ || ৪৮.
 
|}
|}
{| class="table table-bordered table-hover"
{| class="table table-bordered table-hover"
|-  
|-  
| জেলার অন্যান্য তথ্য
| colspan= "10" | জেলার অন্যান্য তথ্য
 
|-  
|-  
| উপজেলা নাম  || আয়তন(বর্গ কিমি)  || পৌরসভা  || ইউনিয়ন  || মৌজা  || গ্রাম  || জনসংখ্যা || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি)  || শিক্ষার হার (%)
| উপজেলা নাম  || আয়তন(বর্গ কিমি)  || পৌরসভা  || ইউনিয়ন  || মৌজা  || গ্রাম  || জনসংখ্যা || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি)  || শিক্ষার হার (%)
|-
|-
| আত্রাই || ২৮৪.৪১  || - || ৮ || ১৫৫  || ২০১  || ১৭৯৭৯৯  || ৬৩২  || ৪১.
| আত্রাই || ২৮৪.৪০ || - || ৮ || ১৪৫ || ২০০ || ১৯৩২৫৬ || ৬৭৯ || ৪৫.
 
|-
|-
| ধামইরহাট || ৩০০.৮০  || || ৮ || ২১২  || ২৬০  || ১৬৯৬৯৩  || ৫৬৪  || ৪৭.
| ধামইরহাট || ৩০০.৭৯ || || ৮ || ২০৫ || ২৪৩ || ১৮৪৭৭৮ || ৬১৪ || ৫০.
 
|-
|-
| নিয়ামতপুর || ৪৪৯.১০  || - || ৮ || ৩১৭  || ৩৪১  || ২২৬৬১৪  || ৫০৫  || ৪১.
| নিয়ামতপুর || ৪৪৯.০৯ || - || ৮ || ৩২১ || ৩৪৪ || ২৪৮৩৫১ || ৫৫৩ || ৪৪.
 
|-
|-
| পত্নীতলা || ৩৮২.৩৯  || ১ || ১১ || ২৯৭  || ২৯২  || ২০৯৪৪০  || ১০৮  || ৪৯.
| পত্নীতলা || ৩৮২.৩৮ || ১ || ১১ || ২৮৬ || ২৯৮ || ২৩১৯০০ || ৬০৬ || ৫২.
 
|-
|-
| পোরশা || ২৫২.৮৩ || - || ৬ || ১৫৫ || ২৫৩  || ১২১৮০৯  || ৪৮২  || ৩৫.
| পোরশা || ২৫২.৮৩ || - || ৬ || ১৫৫ || ২৪৬ || ১৩২০৯৫ || ৫২২ || ৪২.
 
|-
|-
| বদলগাছি  || ২১৩.৯৮  || - || ৮ || ২৪৭  || ২৩৭  || ১৮৬০৫৮  || ১০৭  || ৪৫.
| বদলগাছী || ২১৩.৯৭ || - || ৮ || ২৪৬ || ২৩৮ || ২০১৩৪২ || ৯৪১ || ৪৯.
 
|-
|-
| মহাদেবপুর || ৩৯৭.৬৭  || - || ১০ || ৩০৭  || ৩০২  || ২৬৫৭৬৩  || ৬৬৮  || ৪৫.
| মহাদেবপুর || ৩৯৭.৬৬ || - || ১০ || ৩০৬ || ৩০১ || ২৯২৮৫৯ || ৭৩৬ || ৪৯.
 
|-
|-
| মান্দা || ৩৭৫.৯৪  || - || ১৪ || ২৯৯ || ২৯১  || ৩৫২৫৬০  || ৯৩৮  || ৪০.
| মান্দা || ৩৭৫.৯৩ || - || ১৪ || ২৯৯ || ২৯৩ || ৩৬৩৮৫৮ || ৯৬৮ || ৪৬.
 
|-
|-
| নওগাঁ সদর || ২৭৫.৭৩  || ১ || ১২ || ২৩৭  || ২১৫  || ৩৫৪৫৭০  || ১২৮৬  || ৪৮.
| নওগাঁ সদর || ২৭৫.৭২ || ১ || ১২ || ২০৫ || ২১১ || ৪০৫১৪৮ || ১৪৬৯ || ৫৩.
 
|-
|-
| রানীনগর || ২৫৮.৩৩  || - || ৮ || ১৮৮  || ১৭৩  || ১৮১১৯৬  || ৭০১  || ৪৭.
| রানীনগর || ২৫৮.৩২ || - || ৮ || ১৮৭ || ১৭৪ || ১৮৪৭৭৮ || ৭১৫ || ৪৬.
 
|-
|-
| সাপাহার || ২৪৪.৪৯  || - || ৬ || ১৫১  || ২৩৪  || ১৪৩৮৫৩  || ৫৮৮  || ৪০.
| সাপাহার || ২৪৪.৪৮ || - || ৬ || ১৪২ || ২৩২ || ১৬১৭৯২ || ৬৬২ || ৪২.
|}
|}
''সূত্র'' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।
''সূত্র'' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।
 
''মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাবলি'' ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় নওগাঁ ছিল ইপিআর ৭ নম্বর উইংএর হেডকোয়ার্টার। এপ্রিল মাসে পাকবাহিনী নিয়ামতপুর উপজেলার ভাবিচা ও নিয়ামতপুর গ্রামে অতর্কিতে আক্রমণ করে বেশসংখ্যক নিরীহ গ্রামবাসিকে হত্যা করে এবং ঘরবাড়ি লুটপাটসহ অগ্নিসংযোগ করে। মুক্তিযুদ্ধের সময় এ উপজেলার দেওয়ান আজিজার রহমান ও এমএনএ ছালেক চৌধুরীসহ মোট ১১ জন মুক্তিযোদ্ধা নিয়ামতপুর থানা আক্রমণ করলে ৬ জন রাজাকার অস্ত্রসহ আত্মসমর্পন করে। ২৪ এপ্রিল পাকবাহিনী রানীনগর উপজেলার আতাইকুলা গ্রামে ৭৮ জন নিরীহ লোককে হত্যা করে। আগস্ট মাসে মান্দা উপজেলার ভারশো ইউনিয়নের পাকুরিয়া গ্রামে পাকবাহিনী ১২৮ জন নিরীহ গ্রামবাসিকে নৃশংসভাবে হত্যা করে এবং লাশগুলি মাটি চাপা দেয়। সাপাহার উপজেলায় ১৪ আগস্ট মুক্তিযোদ্ধারা হাপানিয়া সড়কে ডিনামাইটের আঘাতে পাকবাহিনীর ১টি জীপসহ ৫ জন পাকসেনাকে হত্যা করে। এতে বিক্ষুব্ধ পাকবাহিনী হাপানিয়া ও এর আশেপাশের গ্রামবাসিদের নির্বিচারে হত্যা করে। ১৯ সেপ্টেম্বর বান্দাইখাড়া গ্রামে পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের লড়াই হয়। এতে বেশসংখ্যক মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। ১৫ অক্টোবর বদলগাছী থানার কোলা ভান্ডারে মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে পাকবাহিনীর লড়াইয়ে অসংখ্য পাকসেনা নিহত হয়। এ লড়াইয়ে ২ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। এ উপজেলার মোহনপুর গ্রামে ১১ জন লোককে নির্মমভাবে হত্যা করে। পোরশা উপজেলার নিতপুরে বালিয়াচান্দা ব্রিজের নিচে এবং শিশা নামক বাজারের পূর্বদিকে ও গাংগুরিয়া কলেজের দক্ষিণ পার্শ্বে গণহত্যা সংঘটিত হয়। কোলা, ভান্ডারপুর, মিঠাপুর, বালুভরা এলাকায় পাকবাহিনী অনেক ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগসহ বহুলোককে হত্যা করে। নওগাঁ সদর উপজেলার পাহাড়পুর গ্রামে একটি গণহত্যা সংঘটিত হয়। ধামইরহাট উপজেলার কুলফতপুর গ্রামে পাকবাহিনী আগুন লাগিয়ে ১৪ জন নিরীহ লোককে হত্যা করে। এ উপজেলার মাহীসন্তোষ নামক স্থানে এক লড়াইয়ে ২৫ জন পাকসেনা নিহত হয় এবং ২ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। পিড়লডাঙ্গা, গাংড়া, কুলফতপুর ও রাঙ্গামাটিতে মুক্তিবাহিনী ও পাকবাহিনীর সম্মুখ লড়াইয়ে উভয়পক্ষের অনেক লোক হতাহত হয়। এছাড়াও আগ্রাদ্বিগুন এলাকায় ১ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন।


[[Image:NaogaonDistrict.jpg]]
[[Image:NaogaonDistrict.jpg|thumb|400px|right]]


''মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন'' গণকবর ১৯; বধ্যভূমি ; স্বাধীনতা ভাস্কর্য ৩, স্মৃতিস্তম্ভ ১।
''মুক্তিযুদ্ধ'' ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় নওগাঁ ছিল ইপিআর ৭ নম্বর উইংএর হেডকোয়ার্টার। এপ্রিল মাসে পাকবাহিনী নিয়ামতপুর উপজেলার ভাবিচা ও নিয়ামতপুর গ্রামে অতর্কিতে আক্রমণ করে বেশসংখ্যক নিরীহ গ্রামবাসিকে হত্যা করে এবং ঘরবাড়ি লুটপাটসহ অগ্নিসংযোগ করে। ২৪ এপ্রিল পাকবাহিনী আতাইকুলা গ্রামে ৭৮ জন নিরীহ লোককে হত্যা করে। আগস্ট মাসে উপজেলার ভারশো ইউনিয়নের পাকুরিয়া গ্রামে পাকবাহিনী ১২৮ জন নিরীহ গ্রামবাসিকে নৃশংসভাবে হত্যা করে এবং লাশগুলি মাটি চাপা দেয়। ১৪ আগস্ট মুক্তিযোদ্ধারা হাপানিয়া সড়কে ডিনামাইট দিয়ে পাকসেনাদের একটি গাড়ি উড়িয়ে দেয় এবং এতে ৫ জন পাকসেনা নিহত হয়। ১৯ সেপ্টেম্বর বান্দাইখাড়া গ্রামে পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের লড়াই হয়। এতে বেশসংখ্যক মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। নিতপুরে বালিয়াচান্দা ব্রিজের নিচে এবং শিশা নামক বাজারের পূর্বদিকে ও গাংগুরিয়া কলেজের দক্ষিণ পার্শ্বে গণহত্যা সংঘটিত হয়। কোলা, ভাণ্ডারপুর, মিঠাপুর, বালুভরা এলাকায় পাকবাহিনী অনেক ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগসহ বহুলোককে হত্যা করে। মোহনপুর গ্রামে ১১ জন লোককে নির্মমভাবে হত্যা করে। ১৫ অক্টোবর বদলগাছী থানার কোলা ভান্ডারে মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে পাকবাহিনীর লড়াইয়ে অসংখ্য পাকসেনা নিহত হয়। এ লড়াইয়ে ২ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। পাহাড়পুর গ্রামে একটি গণহত্যা সংঘটিত হয়। পাকবাহিনী ধামইরহাট উপজেলার কুলফতপুর গ্রামে আগুন লাগিয়ে ১৪ জন নিরীহ লোককে হত্যা করে। মাহীসন্তোষ নামক স্থানে এক লড়াইয়ে ২৫ জন পাকসেনা নিহত হয় এবং ২ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন । এছাড়া আগ্রাদ্বিগুন এলাকায় ১ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন জেলায় ১৯টি গণকবর ও ৭টি বধ্যভূমি রয়েছে; ৩টি ভাস্কর্য ও ১টি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মিত হয়েছে।


''শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান''  গড় হার ৪৪.%; পুরুষ ৪৯.%, মহিলা ৩৯.%। কলেজ ৪৫, কারিগরি কলেজ ১০, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৫৮৪, প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৩৪২, কমিউনিটি বিদ্যালয় ২২, কেজি স্কুল ২৩, মাদ্রাসা ২৪৪। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: ধামইরহাট এম এম ডিগ্রি কলেজ (১৯৭০), মান্দা মোমিন শাহানা ডিগ্রি কলেজ (১৯৭০), নিয়ামতপুর ডিগ্রি কলেজ (১৯৮০), নওগাঁ সরকারি কলেজ (১৯৬২), মহাদেবপুর সরকারি কলেজ (১৯৬৭), মোল্লা আজাদ মেমোরিয়াল কলেজ (১৯৬৮), নওগাঁ সরকারি বি এস সি মহিলা কলেজ (১৯৭২), শের-ই-বাংলা মহাবিদ্যালয় (১৯৭২), বদলগাছী সরকারি কলেজ (১৯৭২), সাপাহার সরকারি কলেজ (১৯৭৩), দুবলহাটি রাজা হরণাথ উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৬৪), নগর কসুম্বা বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৮২), নওগাঁ কে ডি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৮৪), মৈনম বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়  (১৮৯৫), ভীমপুর বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় (১৯০১), ধামইরহাট সফিয়া পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় (১৯০৪), নওগাঁ পি এম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় (১৯০৯), মান্দা এস সি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১০), কামতা এস এন উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৩), রাতোয়াল আর এন উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৩), হামিদপুর জিগাতলা উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৩), চাকলা বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৪), চক আতিথা উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৪), বালুভরা আর বি উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৪), নওগাঁ জিলা স্কুল (১৯১৭), কীর্ত্তিপুর বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় (১৯২১), মহাদেবপুর সর্বমঙ্গলা উচ্চ বিদ্যালয় (১৯২১), কাঁটাবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয় (১৯২৪), জন্তিগ্রাম টি এ উচ্চ বিদ্যালয় (১৯২৬), নওগাঁ সেন্ট্রাল গার্লস হাইস্কুল (১৯২৬), পোরশা উচ্চ মাদ্রাসা কাম উচ্চ বিদ্যালয় (১৯২৭), খোট্টাপাড়া এম এল উচ্চ বিদ্যালয় (১৯২৯), নামাজগড় গাউসুল আযম কামিল মাদ্রাসা (১৯৫১), নওগাঁ ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসা (১৯৬২), নজিপুর সিদ্দিকীয়া ফাজিল মাদ্রাসা (১৯৬৯), ধামইরহাট সিদ্দিকীয়া ফাজিল মাদ্রাসা (১৯৭৪)।
''শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান'' গড় হার ৪৮.%; পুরুষ ৫১.%, মহিলা ৪৫.%। কলেজ ৪৫, কারিগরি কলেজ ১০, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৫৮৪, প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৩৪২, কমিউনিটি বিদ্যালয় ২২, কেজি স্কুল ২৩, মাদ্রাসা ২৪৪। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: ধামইরহাট এম এম ডিগ্রি কলেজ (১৯৭০), মান্দা মোমিন শাহানা ডিগ্রি কলেজ (১৯৭০), নিয়ামতপুর ডিগ্রি কলেজ (১৯৮০), নওগাঁ সরকারি কলেজ (১৯৬২), মহাদেবপুর সরকারি কলেজ (১৯৬৭), মোল্লা আজাদ মেমোরিয়াল কলেজ (১৯৬৮), নওগাঁ সরকারি বি এস সি মহিলা কলেজ (১৯৭২), শের-ই-বাংলা মহাবিদ্যালয় (১৯৭২), বদলগাছী সরকারি কলেজ (১৯৭২), সাপাহার সরকারি কলেজ (১৯৭৩), দুবলহাটি রাজা হরণাথ উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৬৪), নগর কসুম্বা বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৮২), নওগাঁ কে ডি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৮৪), মৈনম বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়  (১৮৯৫), ভীমপুর বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় (১৯০১), ধামইরহাট সফিয়া পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় (১৯০৪), নওগাঁ পি এম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় (১৯০৯), মান্দা এস সি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১০), কামতা এস এন উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৩), রাতোয়াল আর এন উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৩), হামিদপুর জিগাতলা উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৩), চাকলা বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৪), চক আতিথা উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৪), বালুভরা আর বি উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৪), নওগাঁ জিলা স্কুল (১৯১৭), কীর্ত্তিপুর বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় (১৯২১), মহাদেবপুর সর্বমঙ্গলা উচ্চ বিদ্যালয় (১৯২১), কাঁটাবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয় (১৯২৪), জন্তিগ্রাম টি এ উচ্চ বিদ্যালয় (১৯২৬), নওগাঁ সেন্ট্রাল গার্লস হাইস্কুল (১৯২৬), পোরশা উচ্চ মাদ্রাসা কাম উচ্চ বিদ্যালয় (১৯২৭), খোট্টাপাড়া এম এল উচ্চ বিদ্যালয় (১৯২৯), নামাজগড় গাউসুল আযম কামিল মাদ্রাসা (১৯৫১), নওগাঁ ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসা (১৯৬২), নজিপুর সিদ্দিকীয়া ফাজিল মাদ্রাসা (১৯৬৯), ধামইরহাট সিদ্দিকীয়া ফাজিল মাদ্রাসা (১৯৭৪)।


''জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস'' কৃষি ৭৪.২৯%, অকৃষি শ্রমিক ২.৪৫%, শিল্প ১.০৩%, ব্যবসা ৯.৮৯%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ২.৭৪%, চাকরি ৪.০৫%, নির্মাণ ০.৭০%, ধর্মীয় সেবা ০.১২%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.২১% এবং অন্যান্য ৪.৫২%।
''জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস'' কৃষি ৭৪.২৯%, অকৃষি শ্রমিক ২.৪৫%, শিল্প ১.০৩%, ব্যবসা ৯.৮৯%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ২.৭৪%, চাকরি ৪.০৫%, নির্মাণ ০.৭০%, ধর্মীয় সেবা ০.১২%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.২১% এবং অন্যান্য ৪.৫২%।
৭৪ নং লাইন: ৫৮ নং লাইন:
''পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী''  দৈনিক: জয়বাংলা, ইশতেহার'', ''আলোকবার্তা; সাপ্তাহিক: বঙ্গবাণী, বরেন্দ্র বার্তা, নববার্তা, বাংলার কথা, দেশের বাণী, বাঁকাচাঁদ, নবযুগ, এই সময়; পাক্ষিক: সূর্যমুখী; মাসিক: নবদিগন্ত। এছাড়াও প্রতি বছর ২৫ বৈশাখ রবীন্দ্রনাথের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে নওগাঁর জেলা প্রশাসন একটি বার্ষিকী প্রকাশ করে থাকেন।  
''পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী''  দৈনিক: জয়বাংলা, ইশতেহার'', ''আলোকবার্তা; সাপ্তাহিক: বঙ্গবাণী, বরেন্দ্র বার্তা, নববার্তা, বাংলার কথা, দেশের বাণী, বাঁকাচাঁদ, নবযুগ, এই সময়; পাক্ষিক: সূর্যমুখী; মাসিক: নবদিগন্ত। এছাড়াও প্রতি বছর ২৫ বৈশাখ রবীন্দ্রনাথের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে নওগাঁর জেলা প্রশাসন একটি বার্ষিকী প্রকাশ করে থাকেন।  


''লোকসংস্কৃতি'' সঙ্গীত: পল্লীগীতি, মুর্শিদী, ভাটিয়ালী, ভাওয়াইয়া ও মেয়েলী গান উল্লেখযোগ্য। উৎসব: বাংলা নববর্ষ, চড়কপূজা, নবান্ন, হালখাতা, বেরাভাসন, পহেলা বৈশাখ উল্লেখযোগ্য। খেলাধূলা: হা-ডু-ডু, নৌকাবাইচ, দাড়িয়াবান্ধা, লাঠিখেলা উল্লেখযোগ্য।  
''লোকসংস্কৃতি'' সঙ্গীত: পল্লীগীতি, মুর্শিদী, ভাটিয়ালী, ভাওয়াইয়া ও মেয়েলী গান উল্লেখযোগ্য। উৎসব: বাংলা নববর্ষ, চড়কপূজা, নবান্ন, হালখাতা, বেরাভাসন, পহেলা বৈশাখ উল্লেখযোগ্য। খেলাধূলা: হা-ডু-ডু, নৌকাবাইচ, দাড়িয়াবান্ধা, লাঠিখেলা উল্লেখযোগ্য।  


''দর্শনীয় স্থান'' পাহাড়পুর, জগদ্দল বিহার, হলুদ বিহার, আলতা দীঘি, দিবর দীঘি, মহাদেবপুর রাজবাড়ি, কাশিমপুর রাজবাড়ী, বলিহার রাজবাড়ী, কুসুম্বা মসজিদ, পতিসর ও পত্নীতলা থানার পাইকবান্দা শালবন উল্লেখযোগ্য।  [মো. রেজাউল করিম]
''দর্শনীয় স্থান'' পাহাড়পুর, জগদ্দল বিহার, হলুদ বিহার, আলতা দীঘি, দিবর দীঘি, মহাদেবপুর রাজবাড়ি, কাশিমপুর রাজবাড়ী, বলিহার রাজবাড়ী, কুসুম্বা মসজিদ, পতিসর ও পত্নীতলা থানার পাইকবান্দা শালবন উল্লেখযোগ্য।  [মো. রেজাউল করিম]


''আরও দেখুন'' সংশ্লিষ্ট উপজেলা।
''আরও দেখুন'' সংশ্লিষ্ট উপজেলা।


'''তথ্যসূত্র'''   আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; নওগাঁ জেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭, নওগাঁ জেলার উপজেলাসমূহের সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।
'''তথ্যসূত্র''' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; নওগাঁ জেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭, নওগাঁ জেলার উপজেলাসমূহের সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।




[[en:Naogaon District]]
[[en:Naogaon District]]

১৬:২৬, ২৯ মে ২০২৩ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ

নওগাঁ জেলা (রাজশাহী বিভাগ)  আয়তন: ৩৪৩৫.৬৫ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৪°৩২´ থেকে ২৫°১৩´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৮°২৩´ থেকে ৮৯°১০´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, দক্ষিণে নাটোর ও রাজশাহী জেলা, পূর্বে জয়পুরহাট ও বগুড়া জেলা, পশ্চিমে নবাবগঞ্জ জেলা।

জনসংখ্যা ২৬০০১৫৭; পুরুষ ১৩০০২২৭, মহিলা ১২৯৯৯৩০। মুসলিম ২২৫০৪২৭, হিন্দু ২৮৭৯১৯, বৌদ্ধ ১০২, খ্রিস্টান ১৮৫৯০ এবং অন্যান্য ৪৩১১৯। এ জেলায় সাঁওতাল, ওরাওঁ, মুন্ডা প্রভৃতি আদিবাসী জনগোষ্ঠীর বসবাস রয়েছে।

জলাশয় প্রধান নদী: আত্রাই, পুনর্ভবা, ছোট যমুনা, নাগর, শিব; চলন বিল উল্লেখযোগ্য।

প্রশাসন রাজশাহী জেলার অধীনে নওগাঁ মহকুমা গঠিত হয় ১৮৭৭ সালে এবং মহকুমাকে জেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮৪ সালে। পৌরসভা গঠিত হয় ১৯৬৩ সালে। জেলার এগারোটি উপজেলার মধ্যে নিয়ামতপুর সর্ববৃহৎ (৪৪৯.০৯ বর্গ কিমি) এবং সবচেয়ে ছোট উপজেলা বদলগাছী (২১৩.৯৭ বর্গ কিমি)।

জেলা
আয়তন (বর্গ কিমি) উপজেলা পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
শহর গ্রাম
৩৪৩৫.৬৫ ১১ ৯৯ ২৪৯৭ ২৭৮০ ২৭৫৫৬৭ ২৩২৪৫৯০ ৭৫৭ ৪৮.২
জেলার অন্যান্য তথ্য
উপজেলা নাম আয়তন(বর্গ কিমি) পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
আত্রাই ২৮৪.৪০ - ১৪৫ ২০০ ১৯৩২৫৬ ৬৭৯ ৪৫.৪
ধামইরহাট ৩০০.৭৯ ২০৫ ২৪৩ ১৮৪৭৭৮ ৬১৪ ৫০.১
নিয়ামতপুর ৪৪৯.০৯ - ৩২১ ৩৪৪ ২৪৮৩৫১ ৫৫৩ ৪৪.৭
পত্নীতলা ৩৮২.৩৮ ১১ ২৮৬ ২৯৮ ২৩১৯০০ ৬০৬ ৫২.৫
পোরশা ২৫২.৮৩ - ১৫৫ ২৪৬ ১৩২০৯৫ ৫২২ ৪২.৫
বদলগাছী ২১৩.৯৭ - ২৪৬ ২৩৮ ২০১৩৪২ ৯৪১ ৪৯.৫
মহাদেবপুর ৩৯৭.৬৬ - ১০ ৩০৬ ৩০১ ২৯২৮৫৯ ৭৩৬ ৪৯.৮
মান্দা ৩৭৫.৯৩ - ১৪ ২৯৯ ২৯৩ ৩৬৩৮৫৮ ৯৬৮ ৪৬.৩
নওগাঁ সদর ২৭৫.৭২ ১২ ২০৫ ২১১ ৪০৫১৪৮ ১৪৬৯ ৫৩.৫
রানীনগর ২৫৮.৩২ - ১৮৭ ১৭৪ ১৮৪৭৭৮ ৭১৫ ৪৬.০
সাপাহার ২৪৪.৪৮ - ১৪২ ২৩২ ১৬১৭৯২ ৬৬২ ৪২.২

সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।

মুক্তিযুদ্ধ ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় নওগাঁ ছিল ইপিআর ৭ নম্বর উইংএর হেডকোয়ার্টার। এপ্রিল মাসে পাকবাহিনী নিয়ামতপুর উপজেলার ভাবিচা ও নিয়ামতপুর গ্রামে অতর্কিতে আক্রমণ করে বেশসংখ্যক নিরীহ গ্রামবাসিকে হত্যা করে এবং ঘরবাড়ি লুটপাটসহ অগ্নিসংযোগ করে। ২৪ এপ্রিল পাকবাহিনী আতাইকুলা গ্রামে ৭৮ জন নিরীহ লোককে হত্যা করে। আগস্ট মাসে উপজেলার ভারশো ইউনিয়নের পাকুরিয়া গ্রামে পাকবাহিনী ১২৮ জন নিরীহ গ্রামবাসিকে নৃশংসভাবে হত্যা করে এবং লাশগুলি মাটি চাপা দেয়। ১৪ আগস্ট মুক্তিযোদ্ধারা হাপানিয়া সড়কে ডিনামাইট দিয়ে পাকসেনাদের একটি গাড়ি উড়িয়ে দেয় এবং এতে ৫ জন পাকসেনা নিহত হয়। ১৯ সেপ্টেম্বর বান্দাইখাড়া গ্রামে পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের লড়াই হয়। এতে বেশসংখ্যক মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। নিতপুরে বালিয়াচান্দা ব্রিজের নিচে এবং শিশা নামক বাজারের পূর্বদিকে ও গাংগুরিয়া কলেজের দক্ষিণ পার্শ্বে গণহত্যা সংঘটিত হয়। কোলা, ভাণ্ডারপুর, মিঠাপুর, বালুভরা এলাকায় পাকবাহিনী অনেক ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগসহ বহুলোককে হত্যা করে। মোহনপুর গ্রামে ১১ জন লোককে নির্মমভাবে হত্যা করে। ১৫ অক্টোবর বদলগাছী থানার কোলা ভান্ডারে মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে পাকবাহিনীর লড়াইয়ে অসংখ্য পাকসেনা নিহত হয়। এ লড়াইয়ে ২ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। পাহাড়পুর গ্রামে একটি গণহত্যা সংঘটিত হয়। পাকবাহিনী ধামইরহাট উপজেলার কুলফতপুর গ্রামে আগুন লাগিয়ে ১৪ জন নিরীহ লোককে হত্যা করে। মাহীসন্তোষ নামক স্থানে এক লড়াইয়ে ২৫ জন পাকসেনা নিহত হয় এবং ২ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন । এছাড়া আগ্রাদ্বিগুন এলাকায় ১ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন জেলায় ১৯টি গণকবর ও ৭টি বধ্যভূমি রয়েছে; ৩টি ভাস্কর্য ও ১টি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মিত হয়েছে।

শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৪৮.২%; পুরুষ ৫১.৩%, মহিলা ৪৫.২%। কলেজ ৪৫, কারিগরি কলেজ ১০, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৫৮৪, প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৩৪২, কমিউনিটি বিদ্যালয় ২২, কেজি স্কুল ২৩, মাদ্রাসা ২৪৪। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: ধামইরহাট এম এম ডিগ্রি কলেজ (১৯৭০), মান্দা মোমিন শাহানা ডিগ্রি কলেজ (১৯৭০), নিয়ামতপুর ডিগ্রি কলেজ (১৯৮০), নওগাঁ সরকারি কলেজ (১৯৬২), মহাদেবপুর সরকারি কলেজ (১৯৬৭), মোল্লা আজাদ মেমোরিয়াল কলেজ (১৯৬৮), নওগাঁ সরকারি বি এস সি মহিলা কলেজ (১৯৭২), শের-ই-বাংলা মহাবিদ্যালয় (১৯৭২), বদলগাছী সরকারি কলেজ (১৯৭২), সাপাহার সরকারি কলেজ (১৯৭৩), দুবলহাটি রাজা হরণাথ উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৬৪), নগর কসুম্বা বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৮২), নওগাঁ কে ডি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৮৪), মৈনম বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়  (১৮৯৫), ভীমপুর বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় (১৯০১), ধামইরহাট সফিয়া পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় (১৯০৪), নওগাঁ পি এম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় (১৯০৯), মান্দা এস সি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১০), কামতা এস এন উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৩), রাতোয়াল আর এন উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৩), হামিদপুর জিগাতলা উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৩), চাকলা বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৪), চক আতিথা উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৪), বালুভরা আর বি উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৪), নওগাঁ জিলা স্কুল (১৯১৭), কীর্ত্তিপুর বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় (১৯২১), মহাদেবপুর সর্বমঙ্গলা উচ্চ বিদ্যালয় (১৯২১), কাঁটাবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয় (১৯২৪), জন্তিগ্রাম টি এ উচ্চ বিদ্যালয় (১৯২৬), নওগাঁ সেন্ট্রাল গার্লস হাইস্কুল (১৯২৬), পোরশা উচ্চ মাদ্রাসা কাম উচ্চ বিদ্যালয় (১৯২৭), খোট্টাপাড়া এম এল উচ্চ বিদ্যালয় (১৯২৯), নামাজগড় গাউসুল আযম কামিল মাদ্রাসা (১৯৫১), নওগাঁ ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসা (১৯৬২), নজিপুর সিদ্দিকীয়া ফাজিল মাদ্রাসা (১৯৬৯), ধামইরহাট সিদ্দিকীয়া ফাজিল মাদ্রাসা (১৯৭৪)।

জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৭৪.২৯%, অকৃষি শ্রমিক ২.৪৫%, শিল্প ১.০৩%, ব্যবসা ৯.৮৯%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ২.৭৪%, চাকরি ৪.০৫%, নির্মাণ ০.৭০%, ধর্মীয় সেবা ০.১২%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.২১% এবং অন্যান্য ৪.৫২%।

পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী  দৈনিক: জয়বাংলা, ইশতেহার, আলোকবার্তা; সাপ্তাহিক: বঙ্গবাণী, বরেন্দ্র বার্তা, নববার্তা, বাংলার কথা, দেশের বাণী, বাঁকাচাঁদ, নবযুগ, এই সময়; পাক্ষিক: সূর্যমুখী; মাসিক: নবদিগন্ত। এছাড়াও প্রতি বছর ২৫ বৈশাখ রবীন্দ্রনাথের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে নওগাঁর জেলা প্রশাসন একটি বার্ষিকী প্রকাশ করে থাকেন।

লোকসংস্কৃতি সঙ্গীত: পল্লীগীতি, মুর্শিদী, ভাটিয়ালী, ভাওয়াইয়া ও মেয়েলী গান উল্লেখযোগ্য। উৎসব: বাংলা নববর্ষ, চড়কপূজা, নবান্ন, হালখাতা, বেরাভাসন, পহেলা বৈশাখ উল্লেখযোগ্য। খেলাধূলা: হা-ডু-ডু, নৌকাবাইচ, দাড়িয়াবান্ধা, লাঠিখেলা উল্লেখযোগ্য।

দর্শনীয় স্থান পাহাড়পুর, জগদ্দল বিহার, হলুদ বিহার, আলতা দীঘি, দিবর দীঘি, মহাদেবপুর রাজবাড়ি, কাশিমপুর রাজবাড়ী, বলিহার রাজবাড়ী, কুসুম্বা মসজিদ, পতিসর ও পত্নীতলা থানার পাইকবান্দা শালবন উল্লেখযোগ্য।  [মো. রেজাউল করিম]

আরও দেখুন সংশ্লিষ্ট উপজেলা।

তথ্যসূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; নওগাঁ জেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭, নওগাঁ জেলার উপজেলাসমূহের সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।