সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
NasirkhanBot (আলোচনা | অবদান) অ (Added Ennglish article link) |
সম্পাদনা সারাংশ নেই |
||
৪৪ নং লাইন: | ৪৪ নং লাইন: | ||
বিভিন্ন ধরনের নগদ অর্থ ও খাদ্য সহায়তা কর্মসূচির আওতায় ২০০৮-০৯ অর্থবছরে প্রায় ৮.৫ মিলিয়ন দরিদ্র পরিবার বা ৪২.৫ মিলিয়ন ব্যক্তি উপকৃত হয়েছিল। টেস্ট রিলিফ বা কাবিখার উপকারভোগীরা এর অন্তর্ভুক্ত নয়। সরকারি তথ্য অনুযায়ী এ দুই কর্মসূচির আওতায় ৯.৩ মিলিয়ন সুবিধাভোগী ছিল। পরিসংখ্যানে দেখা যায় যে, ২০০৮-০৯ অর্থবছরে ভিজিএফ-এ সবচেয়ে বেশি (শতকরা ২৮) উপকারভোগী ছিল। এর পরেই নগদ অর্থ সহায়তা ছিল শতকরা ৯.৯ ভাগ এবং ভিজিডি ছিল শতকরা ৩.৭ ভাগ। অন্যান্য কর্মসূচির উপকারভোগীর সংখ্যা ছিল শতকরা ১ ভাগেরও কম। | বিভিন্ন ধরনের নগদ অর্থ ও খাদ্য সহায়তা কর্মসূচির আওতায় ২০০৮-০৯ অর্থবছরে প্রায় ৮.৫ মিলিয়ন দরিদ্র পরিবার বা ৪২.৫ মিলিয়ন ব্যক্তি উপকৃত হয়েছিল। টেস্ট রিলিফ বা কাবিখার উপকারভোগীরা এর অন্তর্ভুক্ত নয়। সরকারি তথ্য অনুযায়ী এ দুই কর্মসূচির আওতায় ৯.৩ মিলিয়ন সুবিধাভোগী ছিল। পরিসংখ্যানে দেখা যায় যে, ২০০৮-০৯ অর্থবছরে ভিজিএফ-এ সবচেয়ে বেশি (শতকরা ২৮) উপকারভোগী ছিল। এর পরেই নগদ অর্থ সহায়তা ছিল শতকরা ৯.৯ ভাগ এবং ভিজিডি ছিল শতকরা ৩.৭ ভাগ। অন্যান্য কর্মসূচির উপকারভোগীর সংখ্যা ছিল শতকরা ১ ভাগেরও কম। | ||
মৌলিক চাহিদার ব্যয়ভিত্তিক দরিদ্র জনসংখ্যার মধ্যে শতকরা মাত্র ৪০ ভাগ জনগোষ্ঠী বিভিন্ন কর্মসূচির আওতাভুক্ত। | মৌলিক চাহিদার ব্যয়ভিত্তিক দরিদ্র জনসংখ্যার মধ্যে শতকরা মাত্র ৪০ ভাগ জনগোষ্ঠী বিভিন্ন কর্মসূচির আওতাভুক্ত। [এ.এম.এম শওকত আলী] | ||
[এ.এম.এম শওকত আলী] | |||
[[en:Social Safety Net]] | [[en:Social Safety Net]] |
১০:৪৫, ১৯ মার্চ ২০১৫ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ
সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী রাষ্ট্র কর্তৃক দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীকে আর্থিক বা অন্য কোন সহায়তা প্রদানের ব্যবস্থা। সম্পদের অপ্রতুলতার কারণে উন্নত দেশের তুলনায় অনুন্নত দেশে এ ধরনের ব্যবস্থা অপেক্ষাকৃত কম। সামান্য খাদ্য সহায়তা ছাড়া সত্তরের দশকে বাংলাদেশে এ ধরনের কোন ব্যবস্থা ছিল না। উন্নত দেশের অনুরূপ বেকার ভাতা প্রদানের কোন প্রথাই ছিল না। তবে বিগত প্রায় তিন দশকে বাংলাদেশে এ ব্যবস্থার মাত্রা, আকার ও ধরনের প্রসার ঘটেছে।
দারিদ্র্য বিমোচন কৌশলপত্র (পিআরএসপি) ১৮টি সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি চিহ্নিত করেছে। এসব কর্মসূচি নগদ অর্থ সহায়তা বা অন্য কোন সহায়তার সাথে যুক্ত। এ কর্মসূচিগুলি হলো:
বয়স্ক ভাতা সরকারি তথ্য অনুযায়ী মোট জনসংখ্যার শতকরা সাতভাগ লোক বয়স্ক হিসেবে চিহ্নিত। এর শতকরা বিশভাগ লোক এ বেষ্টনীর আওতাভুক্তদ্ধ।
বিধবা ও দুঃস্থ মহিলা ভাতা মোট সাত লক্ষ উপকারভোগী এর আওতাভূক্ত।
দৈহিক অক্ষমতাসম্পন্ন দুঃস্থ ভাতা এ বেষ্টনীর আকার সীমিত। প্রায় দুই লক্ষ লোক এর উপকারভোগী।
দরিদ্র মাতাদের ভাতা অন্যান্য বেষ্টনীর মতো এ বেষ্টনীর পরিধি সীমিত হওয়া সত্ত্বেও এ কর্মসূচিটি পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়িত হচ্ছে। ২০০৭-০৮ অর্থবছরে চালু করা এ বেষ্টনীর আওতায় মোট তিন হাজার ইউনিয়ন রয়েছে। এতে ইউনিয়ন প্রতি উপকারভোগী হবে ১৫ জন।
যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ভাতা মুক্তিযুদ্ধে আহত ব্যক্তিদের এ ভাতা প্রদান করা হয়। প্রায় দশ হাজার উপকারভোগী এ বেষ্টনীর আওতাভুক্ত।
অনাথ আশ্রম কর্মসূচি এ কর্মসূচি দুটি ধারায় কাজ করছে। প্রথমটি হলো সরকার কর্তৃক পরিচালিত শিশু পরিবার আশ্রম এবং দ্বিতীয়টি বেসরকারি অনাথ আশ্রম। প্রথমটির আওতায় প্রায় দশ হাজার অনাথ শিশু সুবিধা ভোগ করে। দ্বিতীয়টির সুবিধাভোগীদের সংখ্যা প্রায় ৪৫,০০০।
জ্বালানি তেলের ভর্তুকি ডিজেলের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রান্তিক চাষীদের জন্য ভর্তুকি দিয়ে সেচ কাজ পরিচালনার নিমিত্তে এ সুবিধা দেওয়া হয়। ২০০৭-০৮ অর্থবছরে সর্বমোট ভর্তুকি বরাদ্দ ছিল ৭৫০ কোটি টাকা।
প্রাথমিক স্কুলের ছাত্রদের ভাতা এ কর্মসূচির আওতায় সারাদেশে প্রায় ৫৫ লক্ষ ছাত্রকে সাহায্য দেওয়া হবে। ২০০৭-০৮ অর্থবছরে এর জন্য বরাদ্দ ছিল ৫০০ কোটি টাকা।
ঝরেপড়া ছাত্রভাতা স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে এমন ছাত্রদের প্রদেয় ভাতায় প্রাথমিক স্কুলের প্রায় পাঁচ লক্ষ ছাত্র আওতাভুক্ত হয়েছে। ২০০৭-০৮ অর্থবছরে এর জন্য ৫৮৯ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়।
ছাত্রীভাতা এ কর্মসূচির আওতায় ত্রিশ লক্ষ সুবিধাভোগী রয়েছে। ২০০৭-০৮ অর্থবছরে এর জন্য বরাদ্দ ছিল ২৩২৪ কোটি টাকা।
প্রতিবন্ধী ছাত্রভাতা সব পর্যায়ের প্রতিবন্ধী ছাত্রছাত্রী এ কর্মসূচির আওতাভুক্ত। ভাতার পরিমাণ পর্যায়ভিত্তিক কমবেশি। ২০০৭-০৮ অর্থবছরে এর জন্য বরাদ্দ ছিল পাঁচ কোটি টাকা।
পোশাক শিল্প শ্রমিকদের প্রশিক্ষণ ও সহায়তা তহবিল এ কর্মসূচিটি ২০০৭-০৮ অর্থবছরে চালু করা হয়। বরাদ্দ ছিল বিশ কোটি টাকা।
সাময়িক বেকারত্ব দূরীকরণ কর্মসূচি এ কর্মসূচির আওতায় ২০০৭-০৮ অর্থবছরে ৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ ছিল। দেশের উত্তরাঞ্চলের পাঁচটি জেলায় এ ধরনের বেকারত্ব প্রকট। বেকার ব্যক্তিদের সহায়তার জন্য এ কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছিল। সাময়িক এ বেকারত্ব সমস্যাটি ‘মঙ্গা’ বলে পরিচিত।
হতদরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য কর্মস্থান কর্মসূচি ২০০৭-০৮ অর্থবছরে একমাসের জন্য এ কর্মসূচিটি চালু হয়। মোট বরাদ্দ ছিল একশত কোটি টাকা। ওই বছরেই এ কর্মসূচিকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেয়া হয়। মোট বরাদ্দ ছিল ২০০০ কোটি টাকা। কর্মসূচিটির প্রথম পর্যায় বাস্তবায়িত হয়েছে এবং তা স্থায়ী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
প্রাকৃতিক দুর্যোগজনিত ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তহবিল কর্মসূচি এ কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য ২০০৭-০৮ অর্থবছরে একশত কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়। উদ্দেশ্য ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা যাতে কর্মহীনতা ও মজুরি হ্রাসজনিত বিপদ মোকাবেলা করতে সক্ষম হয়।
গ্রামীণ মাতৃকেন্দ্র (আরএমপি) কর্মসূচি এ কর্মসূচির আওতায় গ্রামীণ দুঃস্থ মা’দের সুদমুক্ত ক্ষুদ্রঋণ প্রদান করা হয়। ৩১৮টি উপজেলায় সুবিধাভোগীর সংখ্যা ১২,৯৬৫। সুবিধাভোগীদের প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরিচর্যা, জন্মনিয়ন্ত্রণ ও অনানুষ্ঠানিক শিক্ষার জন্য প্রশিক্ষণও দেওয়া হয়।
মাতৃস্বাস্থ্য ভাউচার কর্মসূচি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় এ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। এর আওতায় গ্রামীণ দরিদ্র ও গর্ভবতী মহিলাদের নগদ অর্থ সহায়তা দেওয়া হয়। ২০০৭-০৮ অর্থবছরে এর জন্য বরাদ্দ ছিল ১২৬ কোটি টাকা।
কমিউনিটি পুষ্টি কর্মসূচি এ কর্মসূচির উদ্দেশ্য হলো গ্রামের দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে পুষ্টিহীনতা থেকে রক্ষা করা। ২০০৭-০৮ অর্থবছরে এর জন্য বরাদ্দ ছিল ১৫৮ কোটি টাকা। মোট ৩৪টি জেলার ১০৫টি উপজেলায় এ কর্মসূচি বাস্তবায়িত হচ্ছে।
খাদ্য সহায়তা কর্মসূচি প্রধানত দুই ধরনের (১) সনাতনী টেস্ট রিলিফ এবং (২) কাজের বিনিময়ে খাদ্য (কাবিখা)। কাবিখা কর্মসূচির মধ্যে দুই প্রকার কার্যক্রম রয়েছে। একটি হলো ভালনারেবল গ্রুপ ফিডিং (ভিজিএফ)। এর আওতায় হতদরিদ্রদের বিনামূল্যে খাদ্য সহায়তা প্রদান করা হয়। অন্যটি হলো ভালনারেবল গ্রুপ ডেভেলপমেন্ট (ভিজিডি)। এর আওতায় দলগঠন, প্রশিক্ষণ, দক্ষতাবৃদ্ধি ও সঞ্চয় কার্যক্রমও রয়েছে।
বিভিন্ন ধরনের নগদ অর্থ ও খাদ্য সহায়তা কর্মসূচির আওতায় ২০০৮-০৯ অর্থবছরে প্রায় ৮.৫ মিলিয়ন দরিদ্র পরিবার বা ৪২.৫ মিলিয়ন ব্যক্তি উপকৃত হয়েছিল। টেস্ট রিলিফ বা কাবিখার উপকারভোগীরা এর অন্তর্ভুক্ত নয়। সরকারি তথ্য অনুযায়ী এ দুই কর্মসূচির আওতায় ৯.৩ মিলিয়ন সুবিধাভোগী ছিল। পরিসংখ্যানে দেখা যায় যে, ২০০৮-০৯ অর্থবছরে ভিজিএফ-এ সবচেয়ে বেশি (শতকরা ২৮) উপকারভোগী ছিল। এর পরেই নগদ অর্থ সহায়তা ছিল শতকরা ৯.৯ ভাগ এবং ভিজিডি ছিল শতকরা ৩.৭ ভাগ। অন্যান্য কর্মসূচির উপকারভোগীর সংখ্যা ছিল শতকরা ১ ভাগেরও কম।
মৌলিক চাহিদার ব্যয়ভিত্তিক দরিদ্র জনসংখ্যার মধ্যে শতকরা মাত্র ৪০ ভাগ জনগোষ্ঠী বিভিন্ন কর্মসূচির আওতাভুক্ত। [এ.এম.এম শওকত আলী]