হাফিজ, আবদুল: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
NasirkhanBot (আলোচনা | অবদান) অ (Added Ennglish article link) |
সম্পাদনা সারাংশ নেই |
||
৩ নং লাইন: | ৩ নং লাইন: | ||
'''হাফিজ, আবদুল''' (১৯০৭-১৯৯৪) লেখক, পত্রিকা সম্পাদক। তিনি ব্রাহ্মণবাড়ীয়া জেলার নবীনগর উপজেলাধীন লক্ষ্মীপুর গ্রামে ১৯০৭ সালের ডিসেম্বর মাসে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি তাঁর প্রাথমিক শিক্ষা শুরু করেন গ্রামের মকতবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি তাঁর গ্রাজুয়েশন সম্পন্ন করেন। দক্ষ ক্রীড়াবিদ আবদুল হাফিজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফুটবল টিমের একজন খেলোয়ার ছিলেন। | '''হাফিজ, আবদুল''' (১৯০৭-১৯৯৪) লেখক, পত্রিকা সম্পাদক। তিনি ব্রাহ্মণবাড়ীয়া জেলার নবীনগর উপজেলাধীন লক্ষ্মীপুর গ্রামে ১৯০৭ সালের ডিসেম্বর মাসে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি তাঁর প্রাথমিক শিক্ষা শুরু করেন গ্রামের মকতবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি তাঁর গ্রাজুয়েশন সম্পন্ন করেন। দক্ষ ক্রীড়াবিদ আবদুল হাফিজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফুটবল টিমের একজন খেলোয়ার ছিলেন। | ||
১৯৩৩ সালে এম.এ শেষ বর্ষের ছাত্র থাকাকালীন সময়ে তিনি কলকাতা পুলিশ বিভাগে সাব-ইন্সপেক্টর পদে যোগ দেন। ভারত বিভাগের সময়ে তিনি তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে বসবাস করার ইচ্ছা প্রকাশ করেন এবং ১৯৫০ থেকে ১৯৬৩ সাল পর্যন্ত ইন্টেলিজেন্স ব্রাঞ্চে ডেপুটি সুপারিন্টেন্ডেন্ট হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিনি ১৯৬৩ সালে পদোন্নতি পেয়ে পুলিশের অ্যাডিশনাল সুপারিন্টেন্ডেন্ট পদে নিয়োগ লাভ করেন। পরবর্তীকালে পুলিশের চাকুরি থেকে স্বেচ্ছায় অবসর গ্রহণ করেন এবং ১৯৬৬ থেকে ১৯৬৮ সাল পর্যন্ত ফ্রাঙ্কলিন বুক প্রোগ্রামে প্রধান সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। এটি বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর তিনি ইত্তেফাক গ্রুপের সাথে জড়িয়ে পড়েন। তিনি তফাজ্জল হোসেনের ( | ১৯৩৩ সালে এম.এ শেষ বর্ষের ছাত্র থাকাকালীন সময়ে তিনি কলকাতা পুলিশ বিভাগে সাব-ইন্সপেক্টর পদে যোগ দেন। ভারত বিভাগের সময়ে তিনি তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে বসবাস করার ইচ্ছা প্রকাশ করেন এবং ১৯৫০ থেকে ১৯৬৩ সাল পর্যন্ত ইন্টেলিজেন্স ব্রাঞ্চে ডেপুটি সুপারিন্টেন্ডেন্ট হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিনি ১৯৬৩ সালে পদোন্নতি পেয়ে পুলিশের অ্যাডিশনাল সুপারিন্টেন্ডেন্ট পদে নিয়োগ লাভ করেন। পরবর্তীকালে পুলিশের চাকুরি থেকে স্বেচ্ছায় অবসর গ্রহণ করেন এবং ১৯৬৬ থেকে ১৯৬৮ সাল পর্যন্ত ফ্রাঙ্কলিন বুক প্রোগ্রামে প্রধান সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। এটি বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর তিনি ইত্তেফাক গ্রুপের সাথে জড়িয়ে পড়েন। তিনি তফাজ্জল হোসেনের (মানিক মিঞা) গ্রন্থসমূহ সম্পাদনা ও সংকলন করেন। ১৯৭৮ সালে প্রতিষ্ঠা থেকেই তিনি সাপ্তাহিক রোববার পত্রিকার সম্পাদনার সাথে জড়িত ছিলেন এবং তিনি ১৯৯৪ সাল পর্যন্ত এ দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন। | ||
সাহিত্যের প্রতি, বিশেষ করে অনুবাদের প্রতি তাঁর বিশেষ আগ্রহ ছিল। তিনি পার্ল এস. বাক-এর মাদার অনুবাদ করেন এবং ১৯৫১ সালে তা প্রকাশ করেন। তিনি পার্ল এস. বাক, এরিক মারিয়া রেমার্ক, গ্রাজিয়া ডেলেড্ডা, সিনক্লেয়ার লুইস, আপটন সিনক্লেয়ার, হাফিজ ও অন্যান্য আরও কয়েকজনের প্রায় বিশটির মতো গ্রন্থ অনুবাদ করেন। | সাহিত্যের প্রতি, বিশেষ করে অনুবাদের প্রতি তাঁর বিশেষ আগ্রহ ছিল। তিনি পার্ল এস. বাক-এর মাদার অনুবাদ করেন এবং ১৯৫১ সালে তা প্রকাশ করেন। তিনি পার্ল এস. বাক, এরিক মারিয়া রেমার্ক, গ্রাজিয়া ডেলেড্ডা, সিনক্লেয়ার লুইস, আপটন সিনক্লেয়ার, হাফিজ ও অন্যান্য আরও কয়েকজনের প্রায় বিশটির মতো গ্রন্থ অনুবাদ করেন। | ||
১১ নং লাইন: | ১১ নং লাইন: | ||
১৯৮৮ সালে আবদুল হাফিজ তাঁর পিতা ও তাঁর নিজ নামে বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটিতে একটি ট্রাস্ট ফান্ড প্রতিষ্ঠা করেন। এ ট্রাস্ট ফান্ডের উদ্দেশ্য হলো এতদঞ্চলে অসাম্প্রদায়িক সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হিসেবে ফারসি চর্চাকে উৎসাহ প্রদান করা। | ১৯৮৮ সালে আবদুল হাফিজ তাঁর পিতা ও তাঁর নিজ নামে বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটিতে একটি ট্রাস্ট ফান্ড প্রতিষ্ঠা করেন। এ ট্রাস্ট ফান্ডের উদ্দেশ্য হলো এতদঞ্চলে অসাম্প্রদায়িক সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হিসেবে ফারসি চর্চাকে উৎসাহ প্রদান করা। | ||
১৯৯৪ সালের ৩০ অক্টোবর আবদুল হাফিজের মৃত্যু হয়। | ১৯৯৪ সালের ৩০ অক্টোবর আবদুল হাফিজের মৃত্যু হয়। [লালা রূখ সেলিম] | ||
[লালা রূখ সেলিম | |||
[[en:Hafiz, Abdul]] | [[en:Hafiz, Abdul]] |
০৬:২৬, ২৯ মার্চ ২০১৫ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ
হাফিজ, আবদুল (১৯০৭-১৯৯৪) লেখক, পত্রিকা সম্পাদক। তিনি ব্রাহ্মণবাড়ীয়া জেলার নবীনগর উপজেলাধীন লক্ষ্মীপুর গ্রামে ১৯০৭ সালের ডিসেম্বর মাসে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি তাঁর প্রাথমিক শিক্ষা শুরু করেন গ্রামের মকতবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি তাঁর গ্রাজুয়েশন সম্পন্ন করেন। দক্ষ ক্রীড়াবিদ আবদুল হাফিজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফুটবল টিমের একজন খেলোয়ার ছিলেন।
১৯৩৩ সালে এম.এ শেষ বর্ষের ছাত্র থাকাকালীন সময়ে তিনি কলকাতা পুলিশ বিভাগে সাব-ইন্সপেক্টর পদে যোগ দেন। ভারত বিভাগের সময়ে তিনি তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে বসবাস করার ইচ্ছা প্রকাশ করেন এবং ১৯৫০ থেকে ১৯৬৩ সাল পর্যন্ত ইন্টেলিজেন্স ব্রাঞ্চে ডেপুটি সুপারিন্টেন্ডেন্ট হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিনি ১৯৬৩ সালে পদোন্নতি পেয়ে পুলিশের অ্যাডিশনাল সুপারিন্টেন্ডেন্ট পদে নিয়োগ লাভ করেন। পরবর্তীকালে পুলিশের চাকুরি থেকে স্বেচ্ছায় অবসর গ্রহণ করেন এবং ১৯৬৬ থেকে ১৯৬৮ সাল পর্যন্ত ফ্রাঙ্কলিন বুক প্রোগ্রামে প্রধান সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। এটি বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর তিনি ইত্তেফাক গ্রুপের সাথে জড়িয়ে পড়েন। তিনি তফাজ্জল হোসেনের (মানিক মিঞা) গ্রন্থসমূহ সম্পাদনা ও সংকলন করেন। ১৯৭৮ সালে প্রতিষ্ঠা থেকেই তিনি সাপ্তাহিক রোববার পত্রিকার সম্পাদনার সাথে জড়িত ছিলেন এবং তিনি ১৯৯৪ সাল পর্যন্ত এ দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন।
সাহিত্যের প্রতি, বিশেষ করে অনুবাদের প্রতি তাঁর বিশেষ আগ্রহ ছিল। তিনি পার্ল এস. বাক-এর মাদার অনুবাদ করেন এবং ১৯৫১ সালে তা প্রকাশ করেন। তিনি পার্ল এস. বাক, এরিক মারিয়া রেমার্ক, গ্রাজিয়া ডেলেড্ডা, সিনক্লেয়ার লুইস, আপটন সিনক্লেয়ার, হাফিজ ও অন্যান্য আরও কয়েকজনের প্রায় বিশটির মতো গ্রন্থ অনুবাদ করেন।
আবদুল হাফিজ পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে যেমন দায়িত্ব পালন করেছেন তেমনি পাশাপাশি সাহিত্য চর্চাও করে গেছেন। তাঁর নিজের লিখিত প্রকাশিত গ্রন্থ হলো যা দেখেছি (স্মৃতিচারণ)। তাঁর অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ ১৯৭৭ সালে তাঁকে অনুবাদক হিসেবে বাংলা একাডেমী পদক প্রদান করা হয়।
১৯৮৮ সালে আবদুল হাফিজ তাঁর পিতা ও তাঁর নিজ নামে বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটিতে একটি ট্রাস্ট ফান্ড প্রতিষ্ঠা করেন। এ ট্রাস্ট ফান্ডের উদ্দেশ্য হলো এতদঞ্চলে অসাম্প্রদায়িক সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হিসেবে ফারসি চর্চাকে উৎসাহ প্রদান করা।
১৯৯৪ সালের ৩০ অক্টোবর আবদুল হাফিজের মৃত্যু হয়। [লালা রূখ সেলিম]