মহাস্থান মসজিদ: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

(Added Ennglish article link)
 
সম্পাদনা সারাংশ নেই
 
২ নং লাইন: ২ নং লাইন:
'''মহাস্থান মসজিদ'''  মহাস্থানগড়ের দক্ষিণ-পূর্ব কোণে অবস্থিত এক গম্বুজের বর্গাকার মসজিদ। মুগল আমলের এ মসজিদ স্থানীয় লোকালয়ে মহাস্থান মসজিদ বা মহাস্থানগড় মসজিদ নামে পরিচিত। একটি কৃষ্ণপ্রস্তর ফলকে উৎকীর্ণ ফার্সি লিপি থেকে জানা যায়, জনৈক খোদাদিল (১১৩০ হি/ ১৭১৮ খ্রি) মুগল সম্রাট [[ফররুখ সিয়ার|ফররুখ সিয়ার ]]এর (১৭১৭-১৭২৭ খ্রি) শাসনামলে মসজিদটি নির্মাণ করেন। মূলত এ মসজিদ নির্মিত হয়েছিল এক গম্বুজের এক ক্ষুদ্রাকার নির্মাণ কাঠামোর আকারে (বাইরের দিক থেকে মাপ ৭মি × ৭মি)। মসজিদের পশ্চিম দিকের দেওয়ালের ভেতরের দিকে তিনটি মিহরাব এবং এগুলির বিপরীতে পূর্বদিকের সম্মুখভাগের দেওয়ালে তিনটি দরজা রয়েছে। উত্তর ও দক্ষিণের দেওয়ালে আরও একটি করে দরজা রয়েছে ।
'''মহাস্থান মসজিদ'''  মহাস্থানগড়ের দক্ষিণ-পূর্ব কোণে অবস্থিত এক গম্বুজের বর্গাকার মসজিদ। মুগল আমলের এ মসজিদ স্থানীয় লোকালয়ে মহাস্থান মসজিদ বা মহাস্থানগড় মসজিদ নামে পরিচিত। একটি কৃষ্ণপ্রস্তর ফলকে উৎকীর্ণ ফার্সি লিপি থেকে জানা যায়, জনৈক খোদাদিল (১১৩০ হি/ ১৭১৮ খ্রি) মুগল সম্রাট [[ফররুখ সিয়ার|ফররুখ সিয়ার ]]এর (১৭১৭-১৭২৭ খ্রি) শাসনামলে মসজিদটি নির্মাণ করেন। মূলত এ মসজিদ নির্মিত হয়েছিল এক গম্বুজের এক ক্ষুদ্রাকার নির্মাণ কাঠামোর আকারে (বাইরের দিক থেকে মাপ ৭মি × ৭মি)। মসজিদের পশ্চিম দিকের দেওয়ালের ভেতরের দিকে তিনটি মিহরাব এবং এগুলির বিপরীতে পূর্বদিকের সম্মুখভাগের দেওয়ালে তিনটি দরজা রয়েছে। উত্তর ও দক্ষিণের দেওয়ালে আরও একটি করে দরজা রয়েছে ।


[[Image:MahasthanMosquePlan.jpg|thumb|ভূমি নকশা, মহাস্থান মসজিদ]]
দরজার খিলান ও মিহরাবের কুলুঙ্গিগুলিতে বহুখাঁজযুক্ত (multi-cusped) করে বৈচিত্র্যময় করে তোলা হয়েছে। কেন্দ্রীয় মিহরাব ও এর সাথে সম্পর্কিত মধ্যভাগের দ্বারপথটি পার্শ্ব মিহরাব ও দ্বারপথগুলির তুলনায় বড় আকারের। এগুলির নির্মাণকাঠামো তৈরি করা হয়েছে আয়তাকার প্যানেলসমূহের সীমাচৌহদ্দির মধ্যে। সম্মুখভাগের মাঝের দ্বারপথ ও পশ্চিম দেওয়ালের বাইরে কেন্দ্রীয় মিহরাবের বাইরের দিকে বেরিয়ে থাকা (projection) যে অংশ রয়েছে, সেগুলির পাশে ক্ষুদ্রাকৃতির মিনার দিয়ে অলঙ্কৃত করা হয়েছে। মসজিদের বাইরের কোণগুলিতে চারটি অষ্টভুজ বুরুজ রয়েছে। ইটনির্মিত এ মসজিদ চুন-সুরকির পলেস্তারায় আবৃত। এর খিলানের পাশের ত্রিকোণাকার স্থানগুলিতে চুন-সুরকির পাতলা ফুলনকশা করা। মসজিদের গম্বুজটি পার্শ্ব দেওয়ালগুলির উপর নির্মিত পিপার উপর স্থাপিত। কিন্তু স্কুইঞ্চ বা কোণ খিলানগুলির জন্য কোন স্তম্ভ বুনিয়াদ নেই। তুলনামূলকভাবে নিচু ছাদ-পাঁচিল ও গম্বুজে রয়েছে ফাঁক ফাঁক করে নির্মিত ভোঁতা অনুচ্চ স্তম্ভবিশেষ।
দরজার খিলান ও মিহরাবের কুলুঙ্গিগুলিতে বহুখাঁজযুক্ত (multi-cusped) করে বৈচিত্র্যময় করে তোলা হয়েছে। কেন্দ্রীয় মিহরাব ও এর সাথে সম্পর্কিত মধ্যভাগের দ্বারপথটি পার্শ্ব মিহরাব ও দ্বারপথগুলির তুলনায় বড় আকারের। এগুলির নির্মাণকাঠামো তৈরি করা হয়েছে আয়তাকার প্যানেলসমূহের সীমাচৌহদ্দির মধ্যে। সম্মুখভাগের মাঝের দ্বারপথ ও পশ্চিম দেওয়ালের বাইরে কেন্দ্রীয় মিহরাবের বাইরের দিকে বেরিয়ে থাকা (projection) যে অংশ রয়েছে, সেগুলির পাশে ক্ষুদ্রাকৃতির মিনার দিয়ে অলঙ্কৃত করা হয়েছে। মসজিদের বাইরের কোণগুলিতে চারটি অষ্টভুজ বুরুজ রয়েছে। ইটনির্মিত এ মসজিদ চুন-সুরকির পলেস্তারায় আবৃত। এর খিলানের পাশের ত্রিকোণাকার স্থানগুলিতে চুন-সুরকির পাতলা ফুলনকশা করা। মসজিদের গম্বুজটি পার্শ্ব দেওয়ালগুলির উপর নির্মিত পিপার উপর স্থাপিত। কিন্তু স্কুইঞ্চ বা কোণ খিলানগুলির জন্য কোন স্তম্ভ বুনিয়াদ নেই। তুলনামূলকভাবে নিচু ছাদ-পাঁচিল ও গম্বুজে রয়েছে ফাঁক ফাঁক করে নির্মিত ভোঁতা অনুচ্চ স্তম্ভবিশেষ।
[[Image:MahasthanMosquePlan.jpg|thumb]]
#ভূমি নকশা, মহাস্থান মসজিদ


ছাদ-পাঁচিলের শীর্ষদেশ ক্ষুদ্রাকার চমকযুক্ত পোড়ামাটির চূড়া (pinnacles) বসিয়ে অলঙ্কৃত করা হয়েছে। এছাড়া মসজিদের গম্বুজটির শীর্ষভাগে একই ধরনের চমকযুক্ত পোড়ামাটির নব (knob) বসিয়ে উদ্গত নকশা করা হয়েছে। ১৮ শতকের এই ছোট মসজিদ এখন একটি বড় জামে মসজিদ। থামের সারি স্থাপন করে উপরে চালা বা আচ্ছাদনের ব্যবস্থা করে একমাত্র পশ্চিম ছাড়া সবদিকে এটিকে সম্প্রসারণ করা হয়েছে। সমগ্র মসজিদ জুড়ে পুরু পলেস্তারার ওপর চুনকাম করা হয়েছে।  [মোহাম্মদ আইয়ুব খান]
ছাদ-পাঁচিলের শীর্ষদেশ ক্ষুদ্রাকার চমকযুক্ত পোড়ামাটির চূড়া (pinnacles) বসিয়ে অলঙ্কৃত করা হয়েছে। এছাড়া মসজিদের গম্বুজটির শীর্ষভাগে একই ধরনের চমকযুক্ত পোড়ামাটির নব (knob) বসিয়ে উদ্গত নকশা করা হয়েছে। ১৮ শতকের এই ছোট মসজিদ এখন একটি বড় জামে মসজিদ। থামের সারি স্থাপন করে উপরে চালা বা আচ্ছাদনের ব্যবস্থা করে একমাত্র পশ্চিম ছাড়া সবদিকে এটিকে সম্প্রসারণ করা হয়েছে। সমগ্র মসজিদ জুড়ে পুরু পলেস্তারার ওপর চুনকাম করা হয়েছে।  [মোহাম্মদ আইয়ুব খান]

০৬:১২, ৩ মার্চ ২০১৫ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ

মহাস্থান মসজিদ  মহাস্থানগড়ের দক্ষিণ-পূর্ব কোণে অবস্থিত এক গম্বুজের বর্গাকার মসজিদ। মুগল আমলের এ মসজিদ স্থানীয় লোকালয়ে মহাস্থান মসজিদ বা মহাস্থানগড় মসজিদ নামে পরিচিত। একটি কৃষ্ণপ্রস্তর ফলকে উৎকীর্ণ ফার্সি লিপি থেকে জানা যায়, জনৈক খোদাদিল (১১৩০ হি/ ১৭১৮ খ্রি) মুগল সম্রাট ফররুখ সিয়ার এর (১৭১৭-১৭২৭ খ্রি) শাসনামলে মসজিদটি নির্মাণ করেন। মূলত এ মসজিদ নির্মিত হয়েছিল এক গম্বুজের এক ক্ষুদ্রাকার নির্মাণ কাঠামোর আকারে (বাইরের দিক থেকে মাপ ৭মি × ৭মি)। মসজিদের পশ্চিম দিকের দেওয়ালের ভেতরের দিকে তিনটি মিহরাব এবং এগুলির বিপরীতে পূর্বদিকের সম্মুখভাগের দেওয়ালে তিনটি দরজা রয়েছে। উত্তর ও দক্ষিণের দেওয়ালে আরও একটি করে দরজা রয়েছে ।

ভূমি নকশা, মহাস্থান মসজিদ

দরজার খিলান ও মিহরাবের কুলুঙ্গিগুলিতে বহুখাঁজযুক্ত (multi-cusped) করে বৈচিত্র্যময় করে তোলা হয়েছে। কেন্দ্রীয় মিহরাব ও এর সাথে সম্পর্কিত মধ্যভাগের দ্বারপথটি পার্শ্ব মিহরাব ও দ্বারপথগুলির তুলনায় বড় আকারের। এগুলির নির্মাণকাঠামো তৈরি করা হয়েছে আয়তাকার প্যানেলসমূহের সীমাচৌহদ্দির মধ্যে। সম্মুখভাগের মাঝের দ্বারপথ ও পশ্চিম দেওয়ালের বাইরে কেন্দ্রীয় মিহরাবের বাইরের দিকে বেরিয়ে থাকা (projection) যে অংশ রয়েছে, সেগুলির পাশে ক্ষুদ্রাকৃতির মিনার দিয়ে অলঙ্কৃত করা হয়েছে। মসজিদের বাইরের কোণগুলিতে চারটি অষ্টভুজ বুরুজ রয়েছে। ইটনির্মিত এ মসজিদ চুন-সুরকির পলেস্তারায় আবৃত। এর খিলানের পাশের ত্রিকোণাকার স্থানগুলিতে চুন-সুরকির পাতলা ফুলনকশা করা। মসজিদের গম্বুজটি পার্শ্ব দেওয়ালগুলির উপর নির্মিত পিপার উপর স্থাপিত। কিন্তু স্কুইঞ্চ বা কোণ খিলানগুলির জন্য কোন স্তম্ভ বুনিয়াদ নেই। তুলনামূলকভাবে নিচু ছাদ-পাঁচিল ও গম্বুজে রয়েছে ফাঁক ফাঁক করে নির্মিত ভোঁতা অনুচ্চ স্তম্ভবিশেষ।

ছাদ-পাঁচিলের শীর্ষদেশ ক্ষুদ্রাকার চমকযুক্ত পোড়ামাটির চূড়া (pinnacles) বসিয়ে অলঙ্কৃত করা হয়েছে। এছাড়া মসজিদের গম্বুজটির শীর্ষভাগে একই ধরনের চমকযুক্ত পোড়ামাটির নব (knob) বসিয়ে উদ্গত নকশা করা হয়েছে। ১৮ শতকের এই ছোট মসজিদ এখন একটি বড় জামে মসজিদ। থামের সারি স্থাপন করে উপরে চালা বা আচ্ছাদনের ব্যবস্থা করে একমাত্র পশ্চিম ছাড়া সবদিকে এটিকে সম্প্রসারণ করা হয়েছে। সমগ্র মসজিদ জুড়ে পুরু পলেস্তারার ওপর চুনকাম করা হয়েছে।  [মোহাম্মদ আইয়ুব খান]