মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
NasirkhanBot (আলোচনা | অবদান) অ (Added Ennglish article link) |
সম্পাদনা সারাংশ নেই |
||
(একই ব্যবহারকারী দ্বারা সম্পাদিত একটি মধ্যবর্তী সংশোধন দেখানো হচ্ছে না) | |||
২ নং লাইন: | ২ নং লাইন: | ||
'''মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর''' বাংলাদেশের গৌরবময় মুক্তিযুদ্ধ সংক্রান্ত নিদর্শন ও স্মারকচিহ্নসমূহ সংগ্রহ, সংরক্ষণ ও প্রদর্শনের স্থান। এটি ১৯৯৬ সালের ২২ মার্চ ঢাকাস্থ সেগুনবাগিচার একটি পুরানো দ্বিতল বাড়িতে প্রতিষ্ঠিত হয়। এর প্রবেশ পথেই রয়েছে ‘শিখা চিরন্তন’, প্রস্তরে উৎকীর্ণ করা আছে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের অঙ্গীকার: সাক্ষী বাংলার রক্তভেজা মাটি/ সাক্ষী আকাশের চন্দ্রতারা/ ভুলি নাই, শহীদদের কোন স্মৃতি/ ভুলবনা কিছুই আমরা।’ | '''মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর''' বাংলাদেশের গৌরবময় মুক্তিযুদ্ধ সংক্রান্ত নিদর্শন ও স্মারকচিহ্নসমূহ সংগ্রহ, সংরক্ষণ ও প্রদর্শনের স্থান। এটি ১৯৯৬ সালের ২২ মার্চ ঢাকাস্থ সেগুনবাগিচার একটি পুরানো দ্বিতল বাড়িতে প্রতিষ্ঠিত হয়। এর প্রবেশ পথেই রয়েছে ‘শিখা চিরন্তন’, প্রস্তরে উৎকীর্ণ করা আছে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের অঙ্গীকার: সাক্ষী বাংলার রক্তভেজা মাটি/ সাক্ষী আকাশের চন্দ্রতারা/ ভুলি নাই, শহীদদের কোন স্মৃতি/ ভুলবনা কিছুই আমরা।’ | ||
[[Image:LiberationWarMuseum1.jpg|thumb|right|400px|মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, সেগুনবাগিচা ঢাকা]] | |||
কতিপয় সমাজনেতৃবৃন্দ মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও স্মৃতিকে রক্ষার উদ্দেশ্যে নিজেরাই স্বতঃপ্রবৃত্ত হয়ে জাদুঘর প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ গ্রহণ করেন। প্রতিষ্ঠাতাদের দৃষ্টিভঙ্গিতে এটি জনগণ দ্বারা স্থাপিত জাদুঘর। সম্পূর্ণ বেসরকারি উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধের তথ্য, প্রমাণাদি, বস্ত্তগত নিদর্শন, দলিলপত্র ইত্যাদি সংগ্রহ করে এখানে রাখা হয়। নিরপেক্ষ ও বস্ত্তনিষ্ঠভাবে ঐতিহাসিক ঘটনাধারা মেলে ধরার এই প্রয়াসে দেশব্যাপী সাড়া জাগে এবং অনেক ব্যক্তি স্মারক প্রদান ও আর্থিক সহায়তাদানে এগিয়ে আসেন। এর একটি ট্রাস্টি বোর্ড রয়েছে। প্রতিষ্ঠাতা সদস্যবৃন্দের মধ্যে রয়েছেন আলী যাকের, ডা. সারওয়ার আলী, আসাদুজ্জামান নূর, রবিউল হুসাইন, সারা যাকের, জিয়াউদ্দিন তারেক আলী, মফিদুল হক ও আক্কু চৌধুরী। | কতিপয় সমাজনেতৃবৃন্দ মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও স্মৃতিকে রক্ষার উদ্দেশ্যে নিজেরাই স্বতঃপ্রবৃত্ত হয়ে জাদুঘর প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ গ্রহণ করেন। প্রতিষ্ঠাতাদের দৃষ্টিভঙ্গিতে এটি জনগণ দ্বারা স্থাপিত জাদুঘর। সম্পূর্ণ বেসরকারি উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধের তথ্য, প্রমাণাদি, বস্ত্তগত নিদর্শন, দলিলপত্র ইত্যাদি সংগ্রহ করে এখানে রাখা হয়। নিরপেক্ষ ও বস্ত্তনিষ্ঠভাবে ঐতিহাসিক ঘটনাধারা মেলে ধরার এই প্রয়াসে দেশব্যাপী সাড়া জাগে এবং অনেক ব্যক্তি স্মারক প্রদান ও আর্থিক সহায়তাদানে এগিয়ে আসেন। এর একটি ট্রাস্টি বোর্ড রয়েছে। প্রতিষ্ঠাতা সদস্যবৃন্দের মধ্যে রয়েছেন আলী যাকের, ডা. সারওয়ার আলী, আসাদুজ্জামান নূর, রবিউল হুসাইন, সারা যাকের, জিয়াউদ্দিন তারেক আলী, মফিদুল হক ও আক্কু চৌধুরী। | ||
মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে ছয়টি গ্যালারি রয়েছে। প্রথম গ্যালারিতে প্রদর্শিত হয়েছে বাঙালির ঐতিহ্যের পরিচয় এবং ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের বিরুদ্ধে সংগ্রামের চিত্র। দ্বিতীয় গ্যালারিতে ১৯৪৭ সালের দেশভাগ-পরবর্তী পাকিস্তানি শাসন-শোষণের ইতিহাস তুলে ধরা হয়েছে। তৃতীয় গ্যালিরিতে প্রদর্শিত হয়েছে একাত্তরের অসহযোগ আন্দোলন, ২৫ মার্চ সংঘটিত গণহত্যা, স্বাধীনতার ঘোষণা, প্রাথমিক প্রতিরোধ ও শরণার্থীদের জীবনচিত্র। দোতলার তিনটি গ্যালারিতে রয়েছে প্রতিরোধ ও মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন দিক, পাকিস্তান সেনা ও তাদের দোসরদের বুদ্ধিজীবী হত্যা এবং বাঙালির বিজয় দৃশ্য। মুক্তিযুদ্ধের গৌরবময় ইতিহাস সম্পর্কে দেশের মানুষকে সচেতন করতে জাদুঘর নানা ধরনের কর্মকান্ড পরিচালনা করে থাকে। জাদুঘরের ব্যবস্থাপনায় বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের পরিবহণ ও পরিদর্শন সুবিধাসম্বলিত কর্মসূচি বা আউটরিচ প্রোগ্রাম পরিচালিত হয়। এছাড়া একটি গাড়িকে ভ্রাম্যমাণ জাদুঘরে রূপান্তর করা হয়েছে, যা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করে থাকে। মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে একটি ছোট প্রদর্শনমালা ও উন্মুক্ত মঞ্চ রয়েছে, যেখানে বিভিন্ন প্রদর্শনী ও অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। জাদুঘর সকাল ১০ টা থেকে বিকাল ৫ টা পর্যন্ত সপ্তাহে ৬ দিন খোলা থাকে। রবিবার সাপ্তাহিক ছুটি। | |||
মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে | মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে রক্ষিত কয়েকটি স্মারক | ||
<gallery> | |||
Image:LiberationWarMuseum6.jpg | |||
Image:LiberationWarMuseum4.jpg | |||
Image:LiberationWarMuseum5.jpg | |||
Image:LiberationWarMuseum7.jpg | |||
Image:LiberationWarMuseum2.jpg | |||
Image:LiberationWarMuseum3.jpg | |||
Image:LiberationWarMuseum8.jpg | |||
</gallery> | |||
ঢাকার আগারগাঁও-এ জাদুঘরের নতুন ভবনের নির্মাণকাজ শুরু হয়েছে। ভবনটির নির্মাণকাজ শেষ হলে এটি আগারগাঁও-এ স্থানান্তরিত হবে। | ঢাকার আগারগাঁও-এ জাদুঘরের নতুন ভবনের নির্মাণকাজ শুরু হয়েছে। ভবনটির নির্মাণকাজ শেষ হলে এটি আগারগাঁও-এ স্থানান্তরিত হবে। |
০৯:৪৯, ১৭ মে ২০১৫ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ
মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর বাংলাদেশের গৌরবময় মুক্তিযুদ্ধ সংক্রান্ত নিদর্শন ও স্মারকচিহ্নসমূহ সংগ্রহ, সংরক্ষণ ও প্রদর্শনের স্থান। এটি ১৯৯৬ সালের ২২ মার্চ ঢাকাস্থ সেগুনবাগিচার একটি পুরানো দ্বিতল বাড়িতে প্রতিষ্ঠিত হয়। এর প্রবেশ পথেই রয়েছে ‘শিখা চিরন্তন’, প্রস্তরে উৎকীর্ণ করা আছে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের অঙ্গীকার: সাক্ষী বাংলার রক্তভেজা মাটি/ সাক্ষী আকাশের চন্দ্রতারা/ ভুলি নাই, শহীদদের কোন স্মৃতি/ ভুলবনা কিছুই আমরা।’
কতিপয় সমাজনেতৃবৃন্দ মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও স্মৃতিকে রক্ষার উদ্দেশ্যে নিজেরাই স্বতঃপ্রবৃত্ত হয়ে জাদুঘর প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ গ্রহণ করেন। প্রতিষ্ঠাতাদের দৃষ্টিভঙ্গিতে এটি জনগণ দ্বারা স্থাপিত জাদুঘর। সম্পূর্ণ বেসরকারি উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধের তথ্য, প্রমাণাদি, বস্ত্তগত নিদর্শন, দলিলপত্র ইত্যাদি সংগ্রহ করে এখানে রাখা হয়। নিরপেক্ষ ও বস্ত্তনিষ্ঠভাবে ঐতিহাসিক ঘটনাধারা মেলে ধরার এই প্রয়াসে দেশব্যাপী সাড়া জাগে এবং অনেক ব্যক্তি স্মারক প্রদান ও আর্থিক সহায়তাদানে এগিয়ে আসেন। এর একটি ট্রাস্টি বোর্ড রয়েছে। প্রতিষ্ঠাতা সদস্যবৃন্দের মধ্যে রয়েছেন আলী যাকের, ডা. সারওয়ার আলী, আসাদুজ্জামান নূর, রবিউল হুসাইন, সারা যাকের, জিয়াউদ্দিন তারেক আলী, মফিদুল হক ও আক্কু চৌধুরী।
মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে ছয়টি গ্যালারি রয়েছে। প্রথম গ্যালারিতে প্রদর্শিত হয়েছে বাঙালির ঐতিহ্যের পরিচয় এবং ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের বিরুদ্ধে সংগ্রামের চিত্র। দ্বিতীয় গ্যালারিতে ১৯৪৭ সালের দেশভাগ-পরবর্তী পাকিস্তানি শাসন-শোষণের ইতিহাস তুলে ধরা হয়েছে। তৃতীয় গ্যালিরিতে প্রদর্শিত হয়েছে একাত্তরের অসহযোগ আন্দোলন, ২৫ মার্চ সংঘটিত গণহত্যা, স্বাধীনতার ঘোষণা, প্রাথমিক প্রতিরোধ ও শরণার্থীদের জীবনচিত্র। দোতলার তিনটি গ্যালারিতে রয়েছে প্রতিরোধ ও মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন দিক, পাকিস্তান সেনা ও তাদের দোসরদের বুদ্ধিজীবী হত্যা এবং বাঙালির বিজয় দৃশ্য। মুক্তিযুদ্ধের গৌরবময় ইতিহাস সম্পর্কে দেশের মানুষকে সচেতন করতে জাদুঘর নানা ধরনের কর্মকান্ড পরিচালনা করে থাকে। জাদুঘরের ব্যবস্থাপনায় বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের পরিবহণ ও পরিদর্শন সুবিধাসম্বলিত কর্মসূচি বা আউটরিচ প্রোগ্রাম পরিচালিত হয়। এছাড়া একটি গাড়িকে ভ্রাম্যমাণ জাদুঘরে রূপান্তর করা হয়েছে, যা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করে থাকে। মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে একটি ছোট প্রদর্শনমালা ও উন্মুক্ত মঞ্চ রয়েছে, যেখানে বিভিন্ন প্রদর্শনী ও অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। জাদুঘর সকাল ১০ টা থেকে বিকাল ৫ টা পর্যন্ত সপ্তাহে ৬ দিন খোলা থাকে। রবিবার সাপ্তাহিক ছুটি।
মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে রক্ষিত কয়েকটি স্মারক
ঢাকার আগারগাঁও-এ জাদুঘরের নতুন ভবনের নির্মাণকাজ শুরু হয়েছে। ভবনটির নির্মাণকাজ শেষ হলে এটি আগারগাঁও-এ স্থানান্তরিত হবে।
মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর বিশ্বের অপরাপর আটটি দেশের সমভাবাপন্ন জাদুঘরের সঙ্গে মিলে গঠন করেছে ‘ইন্টারন্যাশনাল কোয়ালিশন অব হিস্টরিক সাইট মিউজিয়ামস অব কনসান্স’। ২০১০ সাল পর্যন্ত ৪২৮,৬২৯ দর্শক এই জাদুঘর পরিদর্শন করেছে। জাদুঘরের সংগৃহীত স্মারক সংখ্যা দশ হাজারেরও বেশি। [মফিদুল হক]