হোসেন, সিরাজুদ্দীন: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

(Added Ennglish article link)
 
সম্পাদনা সারাংশ নেই
 
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
[[Category:বাংলাপিডিয়া]]
[[Category:বাংলাপিডিয়া]]
[[Image:HossainSirajuddin.jpg|thumb|400px|সিরাজুদ্দীন হোসেন]]
'''হোসেন, সিরাজুদ্দীন''' (১৯২৯-১৯৭১)  সাংবাদিক, লেখক, মুক্তিযুদ্ধে শহীদ। তিনি ১৯২৯ সালের ১ মার্চ মাগুরা জেলার শালিখার অন্তর্গত শরশুনা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৪৩ সালে ঝিকরগাছা স্কুল থেকে ম্যাট্রিকুলেশন ও ১৯৪৫ সালে যশোর মধুসূদন কলেজ থেকে আই.এ পাস করার পর তিনি কোলকাতা ইসলামিয়া কলেজে ভর্তি হন এবং সেখান থেকে ১৯৪৭ সালে বি.এ পাস করেন।
'''হোসেন, সিরাজুদ্দীন''' (১৯২৯-১৯৭১)  সাংবাদিক, লেখক, মুক্তিযুদ্ধে শহীদ। তিনি ১৯২৯ সালের ১ মার্চ মাগুরা জেলার শালিখার অন্তর্গত শরশুনা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৪৩ সালে ঝিকরগাছা স্কুল থেকে ম্যাট্রিকুলেশন ও ১৯৪৫ সালে যশোর মধুসূদন কলেজ থেকে আই.এ পাস করার পর তিনি কোলকাতা ইসলামিয়া কলেজে ভর্তি হন এবং সেখান থেকে ১৯৪৭ সালে বি.এ পাস করেন।


সিরাজুদ্দীন হোসেন সাংবাদিক হিসেবে দৈনিক [[আজাদ, দৈনিক|আজাদ]] পত্রিকায় প্রথমে কোলকাতায় এবং পরে ১৯৫৫ সাল পর্যন্ত একই পত্রিকায় ঢাকায় কাজ করেন। ওই বছর তিনি ফ্রাঙ্কলিন পাবলিকেশন্স-এ যোগ দেন। তিনি ইত্তেফাক পত্রিকার বার্তা সম্পাদক (১৯৫৪-১৯৬৬, ১৯৬৯), সংবাদ সংস্থা পিপিআই-এর ব্যুরো চীফ (১৯৬৬-১৯৬৯) এবং দৈনিক [[ইত্তেফাক, দৈনিক|ইত্তেফাক]]-এর নির্বাহী সম্পাদক (১৯৭০-১৯৭১) হিসেবে কাজ করেন। স্পষ্টবাদী, সত্যনিষ্ঠ এবং নির্ভীক সাংবাদিক সিরাজুদ্দীন হোসেন ছয় দফা আন্দোলন এবং পরে মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষে সক্রিয়ভাবে কাজ করেন। সাংবাদিক ও লেখক হিসেবে তিনি বাঙালির শোষণ ও বঞ্চনার বিরুদ্ধে লিখেছেন, চেষ্টা করে গেছেন প্রগতিশীল ও অসাম্প্রদায়িক ধারার রাজনীতি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে। শিশু-অপহরণ, সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ইত্যাদি সম্পর্কে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন লিখে তিনি সাংবাদিক হিসেবে বিশেষ খ্যাতি অর্জন করেন।
সিরাজুদ্দীন হোসেন সাংবাদিক হিসেবে দৈনিক [[আজাদ, দৈনিক|আজাদ]] পত্রিকায় প্রথমে কোলকাতায় এবং পরে ১৯৫৫ সাল পর্যন্ত একই পত্রিকায় ঢাকায় কাজ করেন। ওই বছর তিনি ফ্রাঙ্কলিন পাবলিকেশন্স-এ যোগ দেন। তিনি ইত্তেফাক পত্রিকার বার্তা সম্পাদক (১৯৫৪-১৯৬৬, ১৯৬৯), সংবাদ সংস্থা পিপিআই-এর ব্যুরো চীফ (১৯৬৬-১৯৬৯) এবং দৈনিক [[ইত্তেফাক, দৈনিক|ইত্তেফাক]]-এর নির্বাহী সম্পাদক (১৯৭০-১৯৭১) হিসেবে কাজ করেন। স্পষ্টবাদী, সত্যনিষ্ঠ এবং নির্ভীক সাংবাদিক সিরাজুদ্দীন হোসেন ছয় দফা আন্দোলন এবং পরে মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষে সক্রিয়ভাবে কাজ করেন। সাংবাদিক ও লেখক হিসেবে তিনি বাঙালির শোষণ ও বঞ্চনার বিরুদ্ধে লিখেছেন, চেষ্টা করে গেছেন প্রগতিশীল ও অসাম্প্রদায়িক ধারার রাজনীতি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে। শিশু-অপহরণ, সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ইত্যাদি সম্পর্কে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন লিখে তিনি সাংবাদিক হিসেবে বিশেষ খ্যাতি অর্জন করেন।
[[Image:HossainSirajuddin.jpg|thumb|400px|সিরাজুদ্দীন হোসেন]]


১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চালাকালীন তিনি অধিকৃত ঢাকায় ইত্তেফাকে দুঃসাহসিক সম্পাদকীয় লেখেন, মুক্তিযোদ্ধাদের নানাভাবে সহায়তা দেন এবং অবরুদ্ধ বাংলাদেশের সংবাদ সংগ্রহ করে মুজিবনগর সরকারের কাছে নিয়মিত প্রেরণ করেন। দেশ স্বাধীন হবার মাত্র ছয়দিন আগে ১৯৭১ সালে ১০ ডিসেম্বর  পাকিস্তানী সৈন্যরা তাঁর চামেলীবাগের বাসা থেকে তাঁকে ধরে নিয়ে যায়। পরে তাঁর আর কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। [মো. আসাদুজ্জামান সোহেল]
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চালাকালীন তিনি অধিকৃত ঢাকায় ইত্তেফাকে দুঃসাহসিক সম্পাদকীয় লেখেন, মুক্তিযোদ্ধাদের নানাভাবে সহায়তা দেন এবং অবরুদ্ধ বাংলাদেশের সংবাদ সংগ্রহ করে মুজিবনগর সরকারের কাছে নিয়মিত প্রেরণ করেন। দেশ স্বাধীন হবার মাত্র ছয়দিন আগে ১৯৭১ সালে ১০ ডিসেম্বর  পাকিস্তানী সৈন্যরা তাঁর চামেলীবাগের বাসা থেকে তাঁকে ধরে নিয়ে যায়। পরে তাঁর আর কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। [মো. আসাদুজ্জামান সোহেল]


[[en:Hossain, Sirajuddin]]
[[en:Hossain, Sirajuddin]]

১২:১১, ২৪ মার্চ ২০১৫ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ

সিরাজুদ্দীন হোসেন

হোসেন, সিরাজুদ্দীন (১৯২৯-১৯৭১)  সাংবাদিক, লেখক, মুক্তিযুদ্ধে শহীদ। তিনি ১৯২৯ সালের ১ মার্চ মাগুরা জেলার শালিখার অন্তর্গত শরশুনা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৪৩ সালে ঝিকরগাছা স্কুল থেকে ম্যাট্রিকুলেশন ও ১৯৪৫ সালে যশোর মধুসূদন কলেজ থেকে আই.এ পাস করার পর তিনি কোলকাতা ইসলামিয়া কলেজে ভর্তি হন এবং সেখান থেকে ১৯৪৭ সালে বি.এ পাস করেন।

সিরাজুদ্দীন হোসেন সাংবাদিক হিসেবে দৈনিক আজাদ পত্রিকায় প্রথমে কোলকাতায় এবং পরে ১৯৫৫ সাল পর্যন্ত একই পত্রিকায় ঢাকায় কাজ করেন। ওই বছর তিনি ফ্রাঙ্কলিন পাবলিকেশন্স-এ যোগ দেন। তিনি ইত্তেফাক পত্রিকার বার্তা সম্পাদক (১৯৫৪-১৯৬৬, ১৯৬৯), সংবাদ সংস্থা পিপিআই-এর ব্যুরো চীফ (১৯৬৬-১৯৬৯) এবং দৈনিক ইত্তেফাক-এর নির্বাহী সম্পাদক (১৯৭০-১৯৭১) হিসেবে কাজ করেন। স্পষ্টবাদী, সত্যনিষ্ঠ এবং নির্ভীক সাংবাদিক সিরাজুদ্দীন হোসেন ছয় দফা আন্দোলন এবং পরে মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষে সক্রিয়ভাবে কাজ করেন। সাংবাদিক ও লেখক হিসেবে তিনি বাঙালির শোষণ ও বঞ্চনার বিরুদ্ধে লিখেছেন, চেষ্টা করে গেছেন প্রগতিশীল ও অসাম্প্রদায়িক ধারার রাজনীতি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে। শিশু-অপহরণ, সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ইত্যাদি সম্পর্কে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন লিখে তিনি সাংবাদিক হিসেবে বিশেষ খ্যাতি অর্জন করেন।

১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চালাকালীন তিনি অধিকৃত ঢাকায় ইত্তেফাকে দুঃসাহসিক সম্পাদকীয় লেখেন, মুক্তিযোদ্ধাদের নানাভাবে সহায়তা দেন এবং অবরুদ্ধ বাংলাদেশের সংবাদ সংগ্রহ করে মুজিবনগর সরকারের কাছে নিয়মিত প্রেরণ করেন। দেশ স্বাধীন হবার মাত্র ছয়দিন আগে ১৯৭১ সালে ১০ ডিসেম্বর  পাকিস্তানী সৈন্যরা তাঁর চামেলীবাগের বাসা থেকে তাঁকে ধরে নিয়ে যায়। পরে তাঁর আর কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। [মো. আসাদুজ্জামান সোহেল]