ভর অববাহিকা: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

(Added Ennglish article link)
 
সম্পাদনা সারাংশ নেই
 
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
[[Category:বাংলাপিডিয়া]]
[[Category:বাংলাপিডিয়া]]
'''ভর অববাহিকা''' (Bhar Basin)  আত্রাই উপজেলায় অবস্থিত অধিক নিচু ভূমি। ‘ভর’ শব্দের অর্থ নিচু ভূমি।''' '''এই অববাহিকাকে কখনও কখনও চলন বিল অবনমন নামেও আখ্যায়িত করা হয়ে থাকে। বর্তমানে বন্যা ও পানিসম্পদ সম্পর্কিত লেখালেখিতে এটিকে সাধারণভাবে নিম্নতর আত্রাই অববাহিকা নামে উল্লেখ করা হয়। অববাহিকা বা নিম্নভূমিটির ভিত্তি ৪০ কিমি দীর্ঘ এবং পশ্চিম-মধ্য বরেন্দ্র অঞ্চলের পূর্ব পার্শ্ব বরাবর বিস্তৃত। এর দৈর্ঘ্য প্রায় ১৬০ কিমি এবং হুরাসাগর নদী যেখানে যমুনাতে গিয়ে পড়েছে সে পর্যন্ত বিস্তৃত। প্রায় ৩,১২০ বর্গ কিমি আয়তনের এই অববাহিকাটিকে তুলনামূলক উচ্চতার পার্থক্য ও স্বাভাবিক প্লাবন গভীরতার ভিত্তিতে দুটি অংশে বিভক্ত করা যায়। বর্ষাকালে (জুন-অক্টোবর) পুরো এলাকা ০.৬১ মিটার থেকে ৩.৭ মিটার পর্যন্ত ভিন্ন ভিন্ন গভীরতায় প্লাবিত হয়। মাঝে মাঝে উঁচু ভিটির উপর নির্মিত ঘরবাড়ি দিয়ে বিচ্ছিন্ন হওয়ায় এই অববাহিকাকে বর্ষাকালে হ্রদের মতো দেখায় না। ভর অববাহিকার সর্বত্রই জলিধান, নলখাগড়া, ঘাস প্রভৃতি জন্মে।
'''ভর অববাহিকা''' (Bhar Basin)  আত্রাই উপজেলায় অবস্থিত অধিক নিচু ভূমি। ‘ভর’ শব্দের অর্থ নিচু ভূমি। এই অববাহিকাকে কখনও কখনও চলন বিল অবনমন নামেও আখ্যায়িত করা হয়ে থাকে। বর্তমানে বন্যা ও পানিসম্পদ সম্পর্কিত লেখালেখিতে এটিকে সাধারণভাবে নিম্নতর আত্রাই অববাহিকা নামে উল্লেখ করা হয়। অববাহিকা বা নিম্নভূমিটির ভিত্তি ৪০ কিমি দীর্ঘ এবং পশ্চিম-মধ্য বরেন্দ্র অঞ্চলের পূর্ব পার্শ্ব বরাবর বিস্তৃত। এর দৈর্ঘ্য প্রায় ১৬০ কিমি এবং হুরাসাগর নদী যেখানে যমুনাতে গিয়ে পড়েছে সে পর্যন্ত বিস্তৃত। প্রায় ৩,১২০ বর্গ কিমি আয়তনের এই অববাহিকাটিকে তুলনামূলক উচ্চতার পার্থক্য ও স্বাভাবিক প্লাবন গভীরতার ভিত্তিতে দুটি অংশে বিভক্ত করা যায়। বর্ষাকালে (জুন-অক্টোবর) পুরো এলাকা ০.৬১ মিটার থেকে ৩.৭ মিটার পর্যন্ত ভিন্ন ভিন্ন গভীরতায় প্লাবিত হয়। মাঝে মাঝে উঁচু ভিটির উপর নির্মিত ঘরবাড়ি দিয়ে বিচ্ছিন্ন হওয়ায় এই অববাহিকাকে বর্ষাকালে হ্রদের মতো দেখায় না। ভর অববাহিকার সর্বত্রই জলিধান, নলখাগড়া, ঘাস প্রভৃতি জন্মে।


অববাহিকার পশ্চিমার্ধ চলন বিল থেকে প্রবাহ পেয়ে থাকে এবং ফইলাম নামের বিস্তৃত জলা এলাকা ও অন্যান্য কতিপয় জলাশয়ের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে সবশেষে হুরাসাগর নদীর মধ্য দিয়ে যমুনাতে পতিত হয়। বরেন্দ্রভূমির মধ্য দিয়ে উত্তর-দক্ষিণ বরাবর প্রবাহিত অনেক স্রোতস্বিনীর মাধ্যমে ভর অববাহিকায় অত্যধিক পলি ভরাট প্রক্রিয়া চলছে। প্রবাহগুলোর প্রায় সবই এখানে এসে বাধাপ্রাপ্ত হয়ে দক্ষিণ-পূর্বে মোড় নিয়েছে। অকস্মাৎ গতি পরিবর্তনের ফলে এসকল নদ-নদী ও প্রবাহগুলো তাদের বাহিত পলির বেশিরভাগই এখানে সঞ্চিত করে। নদনদী ও জলপ্রবাহসমূহের নিয়ত গতি পরিবর্তন এবং তাদের পলি ভরাট প্রক্রিয়া অববাহিকার ভিত্তি বা তলদেশকে ধীরে ধীরে উঁচু করে তুলছে। অববাহিকার এই অংশ প্রায়ই গভীরভাবে বন্যাপ্লাবিত হয়। মান্ডা-র কাছাকাছি যেখানে আত্রাই নদী দক্ষিণ-পূর্ব দিকে মোড় নিয়েছে সেখানে প্রায় বৃত্তাকার গভীর অববাহিকার সৃষ্টি হয়েছে এবং ভূ-প্রকৃতি অত্যধিক অনিয়মিত। এই এলাকার মাটি প্রধানত ভারি কাদা ধরনের। অববাহিকার পূর্ব অংশে অনেক শৈলশিরা থাকা সত্ত্বেও অধিকাংশ ভূমিই বর্ষা ঋতুতে গভীরভাবে প্লাবিত হয়। বন্যার সময় ভর অববাহিকায় গঙ্গার পানির অনুপ্রবেশ ঘটে।  [তাহ্মিনা আহ্মেদ]
অববাহিকার পশ্চিমার্ধ চলন বিল থেকে প্রবাহ পেয়ে থাকে এবং ফইলাম নামের বিস্তৃত জলা এলাকা ও অন্যান্য কতিপয় জলাশয়ের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে সবশেষে হুরাসাগর নদীর মধ্য দিয়ে যমুনাতে পতিত হয়। বরেন্দ্রভূমির মধ্য দিয়ে উত্তর-দক্ষিণ বরাবর প্রবাহিত অনেক স্রোতস্বিনীর মাধ্যমে ভর অববাহিকায় অত্যধিক পলি ভরাট প্রক্রিয়া চলছে। প্রবাহগুলোর প্রায় সবই এখানে এসে বাধাপ্রাপ্ত হয়ে দক্ষিণ-পূর্বে মোড় নিয়েছে। অকস্মাৎ গতি পরিবর্তনের ফলে এসকল নদ-নদী ও প্রবাহগুলো তাদের বাহিত পলির বেশিরভাগই এখানে সঞ্চিত করে। নদনদী ও জলপ্রবাহসমূহের নিয়ত গতি পরিবর্তন এবং তাদের পলি ভরাট প্রক্রিয়া অববাহিকার ভিত্তি বা তলদেশকে ধীরে ধীরে উঁচু করে তুলছে। অববাহিকার এই অংশ প্রায়ই গভীরভাবে বন্যাপ্লাবিত হয়। মান্ডা-র কাছাকাছি যেখানে আত্রাই নদী দক্ষিণ-পূর্ব দিকে মোড় নিয়েছে সেখানে প্রায় বৃত্তাকার গভীর অববাহিকার সৃষ্টি হয়েছে এবং ভূ-প্রকৃতি অত্যধিক অনিয়মিত। এই এলাকার মাটি প্রধানত ভারি কাদা ধরনের। অববাহিকার পূর্ব অংশে অনেক শৈলশিরা থাকা সত্ত্বেও অধিকাংশ ভূমিই বর্ষা ঋতুতে গভীরভাবে প্লাবিত হয়। বন্যার সময় ভর অববাহিকায় গঙ্গার পানির অনুপ্রবেশ ঘটে।  [তাহমিনা আহমেদ]


[[en:Bhar Basin]]
[[en:Bhar Basin]]

১০:২৬, ৮ এপ্রিল ২০১৫ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ

ভর অববাহিকা (Bhar Basin)  আত্রাই উপজেলায় অবস্থিত অধিক নিচু ভূমি। ‘ভর’ শব্দের অর্থ নিচু ভূমি। এই অববাহিকাকে কখনও কখনও চলন বিল অবনমন নামেও আখ্যায়িত করা হয়ে থাকে। বর্তমানে বন্যা ও পানিসম্পদ সম্পর্কিত লেখালেখিতে এটিকে সাধারণভাবে নিম্নতর আত্রাই অববাহিকা নামে উল্লেখ করা হয়। অববাহিকা বা নিম্নভূমিটির ভিত্তি ৪০ কিমি দীর্ঘ এবং পশ্চিম-মধ্য বরেন্দ্র অঞ্চলের পূর্ব পার্শ্ব বরাবর বিস্তৃত। এর দৈর্ঘ্য প্রায় ১৬০ কিমি এবং হুরাসাগর নদী যেখানে যমুনাতে গিয়ে পড়েছে সে পর্যন্ত বিস্তৃত। প্রায় ৩,১২০ বর্গ কিমি আয়তনের এই অববাহিকাটিকে তুলনামূলক উচ্চতার পার্থক্য ও স্বাভাবিক প্লাবন গভীরতার ভিত্তিতে দুটি অংশে বিভক্ত করা যায়। বর্ষাকালে (জুন-অক্টোবর) পুরো এলাকা ০.৬১ মিটার থেকে ৩.৭ মিটার পর্যন্ত ভিন্ন ভিন্ন গভীরতায় প্লাবিত হয়। মাঝে মাঝে উঁচু ভিটির উপর নির্মিত ঘরবাড়ি দিয়ে বিচ্ছিন্ন হওয়ায় এই অববাহিকাকে বর্ষাকালে হ্রদের মতো দেখায় না। ভর অববাহিকার সর্বত্রই জলিধান, নলখাগড়া, ঘাস প্রভৃতি জন্মে।

অববাহিকার পশ্চিমার্ধ চলন বিল থেকে প্রবাহ পেয়ে থাকে এবং ফইলাম নামের বিস্তৃত জলা এলাকা ও অন্যান্য কতিপয় জলাশয়ের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে সবশেষে হুরাসাগর নদীর মধ্য দিয়ে যমুনাতে পতিত হয়। বরেন্দ্রভূমির মধ্য দিয়ে উত্তর-দক্ষিণ বরাবর প্রবাহিত অনেক স্রোতস্বিনীর মাধ্যমে ভর অববাহিকায় অত্যধিক পলি ভরাট প্রক্রিয়া চলছে। প্রবাহগুলোর প্রায় সবই এখানে এসে বাধাপ্রাপ্ত হয়ে দক্ষিণ-পূর্বে মোড় নিয়েছে। অকস্মাৎ গতি পরিবর্তনের ফলে এসকল নদ-নদী ও প্রবাহগুলো তাদের বাহিত পলির বেশিরভাগই এখানে সঞ্চিত করে। নদনদী ও জলপ্রবাহসমূহের নিয়ত গতি পরিবর্তন এবং তাদের পলি ভরাট প্রক্রিয়া অববাহিকার ভিত্তি বা তলদেশকে ধীরে ধীরে উঁচু করে তুলছে। অববাহিকার এই অংশ প্রায়ই গভীরভাবে বন্যাপ্লাবিত হয়। মান্ডা-র কাছাকাছি যেখানে আত্রাই নদী দক্ষিণ-পূর্ব দিকে মোড় নিয়েছে সেখানে প্রায় বৃত্তাকার গভীর অববাহিকার সৃষ্টি হয়েছে এবং ভূ-প্রকৃতি অত্যধিক অনিয়মিত। এই এলাকার মাটি প্রধানত ভারি কাদা ধরনের। অববাহিকার পূর্ব অংশে অনেক শৈলশিরা থাকা সত্ত্বেও অধিকাংশ ভূমিই বর্ষা ঋতুতে গভীরভাবে প্লাবিত হয়। বন্যার সময় ভর অববাহিকায় গঙ্গার পানির অনুপ্রবেশ ঘটে।  [তাহমিনা আহমেদ]