ভুরুঙ্গামারী উপজেলা: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
NasirkhanBot (আলোচনা | অবদান) অ (Robot: Automated text replacement (-'''''তথ্যসূত্র''''' +'''তথ্যসূত্র''')) |
সম্পাদনা সারাংশ নেই |
||
(একজন ব্যবহারকারী দ্বারা সম্পাদিত একটি মধ্যবর্তী সংশোধন দেখানো হচ্ছে না) | |||
১ নং লাইন: | ১ নং লাইন: | ||
[[Category:বাংলাপিডিয়া]] | [[Category:বাংলাপিডিয়া]] | ||
'''ভুরুঙ্গামারী উপজেলা''' (কুড়িগ্রাম জেলা) আয়তন: ২৩৬ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৬°২০´ থেকে ২৬°১৪´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯°৩৬´ থেকে ৮৯°৪৮´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ এবং আসাম রাজ্য, দক্ষিণে নাগেশ্বরী উপজেলা, পূর্বে আসাম রাজ্য, পশ্চিমে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য। ছিটমহল ১০। | '''ভুরুঙ্গামারী উপজেলা''' ([[কুড়িগ্রাম জেলা|কুড়িগ্রাম জেলা]]) আয়তন: ২৩৬.২৬ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৬°২০´ থেকে ২৬°১৪´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯°৩৬´ থেকে ৮৯°৪৮´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ এবং আসাম রাজ্য, দক্ষিণে নাগেশ্বরী উপজেলা, পূর্বে আসাম রাজ্য, পশ্চিমে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য। ছিটমহল ১০। | ||
''জনসংখ্যা'' | ''জনসংখ্যা'' ২৩১৫৩৮; পুরুষ ১১৩৫০২, মহিলা ১১৮০৩৬। মুসলিম ২২৭৫৭৪, হিন্দু ৩৯৪৫, বৌদ্ধ ৫, খ্রিস্টান ১১ এবং অন্যান্য ৩। | ||
''জলাশয়'' প্রধান নদী: দুধকুমার, ফুলকুমার। দিয়াডাঙ্গা বিল, সর্বজায়া বিল ও মরা সাঙ্কোশ বিল উল্লেখযোগ্য। | ''জলাশয়'' প্রধান নদী: দুধকুমার, ফুলকুমার। দিয়াডাঙ্গা বিল, সর্বজায়া বিল ও মরা সাঙ্কোশ বিল উল্লেখযোগ্য। | ||
১৫ নং লাইন: | ১৫ নং লাইন: | ||
|- | |- | ||
| শহর || গ্রাম || শহর || গ্রাম | | শহর || গ্রাম || শহর || গ্রাম | ||
|- | |- | ||
| - | | - || ১০ || ৫৬ || ১২৬ || ২৯৬৮৩ || ২০১৮৫৫ || ৯৮০ || ৫৬.৭ || ৩৭.০ | ||
|} | |} | ||
{| class="table table-bordered table-hover" | {| class="table table-bordered table-hover" | ||
|- | |- | ||
| উপজেলা শহর | | colspan="9" | উপজেলা শহর | ||
|- | |- | ||
| আয়তন (বর্গ কিমি) || মৌজা || লোকসংখ্যা || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) || শিক্ষার হার (%) | | আয়তন (বর্গ কিমি) || মৌজা || লোকসংখ্যা || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) || শিক্ষার হার (%) | ||
|- | |- | ||
| ১৪.৯২ | | ১৪.৯২ || ৩ || ২৯৬৮৩ || ১৯৮৯ || ৫৬.৭ | ||
|} | |} | ||
{| class="table table-bordered table-hover" | {| class="table table-bordered table-hover" | ||
|- | |- | ||
| ইউনিয়ন | | colspan="9" | ইউনিয়ন | ||
|- | |- | ||
| rowspan="2" | ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড || rowspan="2" | আয়তন (একর) || colspan="2" | লোকসংখ্যা || rowspan="2" | শিক্ষার হার (%) | | rowspan="2" | ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড || rowspan="2" | আয়তন (একর) || colspan="2" | লোকসংখ্যা || rowspan="2" | শিক্ষার হার (%) | ||
৩৯ নং লাইন: | ৩৪ নং লাইন: | ||
| পুরুষ || মহিলা | | পুরুষ || মহিলা | ||
|- | |- | ||
| আন্ধারী ঝাড় | | আন্ধারী ঝাড় ১৩ || ৬৫৪৭ || ১১৩৪৯ || ১১৯৬৯ || ৩৮.৯ | ||
|- | |- | ||
| চর ভুরুঙ্গামারী ৪৭ | | চর ভুরুঙ্গামারী ৪৭ || ৪৬০৭ || ৭১৮৮ || ৭৫৩২ || ৩৫.৪ | ||
|- | |- | ||
| জয়মনিরহাট ৫৭ | | জয়মনিরহাট ৫৭ || ৪৩৭২ || ৮০১১ || ৮৬০৯ || ৪৪.২ | ||
|- | |- | ||
| তিলাই ৯৫ | | তিলাই ৯৫ || ৪৬৯৫ || ৭৮৫০ || ৮২৬১ || ৩৭.৪ | ||
|- | |- | ||
| পাইকের ছড়া ৬৬ | | পাইকের ছড়া ৬৬ || ৬৩৬০ || ১২২৩০ || ১২৫৭২ || ৩৬.৭ | ||
|- | |- | ||
| পাথরডুবি ৭৬ | | পাথরডুবি ৭৬ || ৬৩৬৩ || ১০৪৩৮ || ১০৯৩১ || ৩৯.৭ | ||
|- | |- | ||
| বঙ্গসোনাহাট ৩৮ | | বঙ্গসোনাহাট ৩৮ || ৫৩৩১ || ৯৮৮৭ || ১০৩৭০ || ৩০.২ | ||
|- | |- | ||
| বলদিয়া ২৮ | | বলদিয়া ২৮ || ৬১২৬ || ১১৯০৩ || ১৩০৬২ || ৩৫.৭ | ||
|- | |- | ||
| ভুরুঙ্গামারী ১৯ | | ভুরুঙ্গামারী ১৯ || ৭১৬১ || ২৩৭৭৪ || ২৩৪১১ || ৪৯.১ | ||
|- | |- | ||
| শিলখুড়ি ৮৫ | | শিলখুড়ি ৮৫ || ৬৮২১ || ১০৮৭২ || ১১৩১৯ || ৩৬.০ | ||
|} | |} | ||
''সূত্র'' আদমশুমারি রিপোর্ট | ''সূত্র'' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো। | ||
[[Image:BhurungamariUpazila.jpg|thumb|right|400px]] | |||
''প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ'' দেওয়ানের খামার জামে মসজিদ, পাটেশ্বরী বাজারের দক্ষিণ-পশ্চিমাংশে একটি পুরনো মসজিদের ধ্বংসাবশেষ (মুগল আমলে নির্মিত), ইন্দ্রপ্রসাদ দেব মন্দির, জয়মনির জমিদার বাড়ি। | ''প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ'' দেওয়ানের খামার জামে মসজিদ, পাটেশ্বরী বাজারের দক্ষিণ-পশ্চিমাংশে একটি পুরনো মসজিদের ধ্বংসাবশেষ (মুগল আমলে নির্মিত), ইন্দ্রপ্রসাদ দেব মন্দির, জয়মনির জমিদার বাড়ি। | ||
'' | ''মুক্তিযুদ্ধ'' ১৯৭১ সালের ১১ নভেম্বর ভূরুঙ্গামারী মুক্ত করতে পাকসেনাদের সাথে লড়াইয়ে ভারতীয় বাহিনীর মেজর রামসিংহসহ মিত্রবাহিনীর ৬৯ জন এবং মুক্তিবাহিনীর ৫ জন সদস্য শহীদ হন। ভুরুঙ্গামারী মুক্ত করার পর ২০ নভেম্বর এক লড়াইয়ে পাকবাহিনীর শতাধিক সৈন্য নিহত হয় এবং লেফটেন্যান্ট আবু সাঈদ মোহাম্মদ আশফাকুস সামাদসহ (বীর উত্তম) অনেক মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। এছাড়াও এ উপজেলায় পাকসেনাদের অনুপ্রবেশ ঠেকাতে ২৬ নভেম্বর মুক্তিযোদ্ধারা সোনাহাট ব্রিজ ধ্বংস করে। উপজেলায় ১টি গণকবর ১ (টিএনও বাসভবনের পেছনে গণকবর) ও ১টি বধ্যভূমি (হাসপাতালের পেছনে) রয়েছে। এছাড়াও ভুরুঙ্গামারী ইউনিয়নের বাগভা-ার গ্রামে ৩০-৩২টি মানুষের মাথার খুলি পাওয়া গেছে। | ||
''বিস্তারিত দেখুন'' ভুরুঙ্গামারী উপজেলা, ''বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ'', বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ৭। | |||
''ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান'' মসজিদ ৫২০, মন্দির ১৪। | |||
''শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান'' গড় হার | ''শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান'' গড় হার ৩৯.৬%; পুরুষ ৪৩.১%, মহিলা ৩৬.২%। কলেজ ৫, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৪০, প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৩৫, মাদ্রাসা ২৭। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: ভুরুঙ্গামারী ডিগ্রি কলেজ (১৯৬৭), ভুরুঙ্গামারী মহিলা ডিগ্রি কলেজ (১৯৯৪), ভুরুঙ্গামারী পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় (১৯২৫), পাটেশ্বরী বরকতিয়া উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৫০), থানাঘাট বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৬১), ধামেরহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (১৯৫০), ভুরুঙ্গামারী মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বাউশমারী সিনিয়র মাদ্রাসা (১৯৩৮), ভুরুঙ্গামারী সিনিয়র মাদ্রাসা (১৯৪৮)। | ||
''সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান'' লাইব্রেরি ২, ক্লাব ১৫, সিনেমা হল ৩, খেলার মাঠ ৮। | ''সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান'' লাইব্রেরি ২, ক্লাব ১৫, সিনেমা হল ৩, খেলার মাঠ ৮। | ||
৯১ নং লাইন: | ৭৮ নং লাইন: | ||
''বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায়'' ফসলাদি চীনা, আউশ ধান, অড়হর। | ''বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায়'' ফসলাদি চীনা, আউশ ধান, অড়হর। | ||
''প্রধান ফল- | ''প্রধান ফল-ফলাদি'' আম, কাঁঠাল, সুপারি, কামরাঙা, জলপাই, পেয়ারা, জাম, চালতা, জামরুল, লটকন, লিচু। | ||
''মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার'' গবাদিপশু ৫, হাঁস-মুরগি ৩২, মৎস্য নার্সারি ১০। | ''মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার'' গবাদিপশু ৫, হাঁস-মুরগি ৩২, মৎস্য নার্সারি ১০। | ||
''যোগাযোগ বিশেষত্ব'' পাকারাস্তা | ''যোগাযোগ বিশেষত্ব'' পাকারাস্তা ৫৯ কিমি, কাঁচারাস্তা ২৪০ কিমি; নৌপথ ১৫ কিমি। | ||
''বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন'' পাল্কি, গরু ও মহিষের গাড়ি। | ''বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন'' পাল্কি, গরু ও মহিষের গাড়ি। | ||
১০৫ নং লাইন: | ৯২ নং লাইন: | ||
''হাটবাজার ও মেলা'' হাটবাজার ২৫, মেলা ২। জয়মনিরহাট, সোনাহাট, শাহী বাজার হাট, ভুরুঙ্গামারী হাট এবং ভরতের মেলা (পাটেশ্বরী) ও বারনী মেলা (কালিরহাট) উল্লেখযোগ্য। | ''হাটবাজার ও মেলা'' হাটবাজার ২৫, মেলা ২। জয়মনিরহাট, সোনাহাট, শাহী বাজার হাট, ভুরুঙ্গামারী হাট এবং ভরতের মেলা (পাটেশ্বরী) ও বারনী মেলা (কালিরহাট) উল্লেখযোগ্য। | ||
''প্রধান রপ্তানিদ্রব্য'' | ''প্রধান রপ্তানিদ্রব্য'' পাট, সুপারি, ধান, বাঁশ, মুরগি। | ||
''বিদ্যুৎ ব্যবহার'' এ উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে | ''বিদ্যুৎ ব্যবহার'' এ উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ১৮.৬% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে। | ||
''পানীয়জলের উৎস'' নলকূপ | ''পানীয়জলের উৎস'' নলকূপ ৯৭.১%, ট্যাপ ০.২% এবং অন্যান্য ২.৭%। | ||
''স্যানিটেশন ব্যবস্থা'' এ উপজেলার | ''স্যানিটেশন ব্যবস্থা'' এ উপজেলার ৭৫.৭% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ১৭.৪% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ৬.৯% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই। | ||
''স্বাস্থ্যকেন্দ্র'' উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্র ১, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ৪, পরিবার পরিকল্পনা ক্লিনিক ১০, স্যাটেলাইট ক্লিনিক ৪২, ক্লিনিক ৩, ডায়াগনস্টিক সেন্টার ১। | ''স্বাস্থ্যকেন্দ্র'' উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্র ১, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ৪, পরিবার পরিকল্পনা ক্লিনিক ১০, স্যাটেলাইট ক্লিনিক ৪২, ক্লিনিক ৩, ডায়াগনস্টিক সেন্টার ১। | ||
১১৭ নং লাইন: | ১০৪ নং লাইন: | ||
''প্রাকৃতিক দুর্যোগ'' ১৯৫৭ সালের ঘূর্ণিঝড় ও ১৯৯৩ সালের বন্যায় এ অঞ্চলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। | ''প্রাকৃতিক দুর্যোগ'' ১৯৫৭ সালের ঘূর্ণিঝড় ও ১৯৯৩ সালের বন্যায় এ অঞ্চলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। | ||
''এনজিও'' কেয়ার, ব্র্যাক, আরডিআরএস, আশা। | ''এনজিও'' কেয়ার, ব্র্যাক, আরডিআরএস, আশা। [মো. কামাল হোসেন] | ||
[মো. কামাল হোসেন] | |||
'''তথ্যসূত্র''' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; ভুরুঙ্গামারী উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭। | '''তথ্যসূত্র''' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; ভুরুঙ্গামারী উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭। | ||
[[en:Bhurungamari Upazila]] | [[en:Bhurungamari Upazila]] |
১৮:৩৭, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ
ভুরুঙ্গামারী উপজেলা (কুড়িগ্রাম জেলা) আয়তন: ২৩৬.২৬ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৬°২০´ থেকে ২৬°১৪´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯°৩৬´ থেকে ৮৯°৪৮´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ এবং আসাম রাজ্য, দক্ষিণে নাগেশ্বরী উপজেলা, পূর্বে আসাম রাজ্য, পশ্চিমে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য। ছিটমহল ১০।
জনসংখ্যা ২৩১৫৩৮; পুরুষ ১১৩৫০২, মহিলা ১১৮০৩৬। মুসলিম ২২৭৫৭৪, হিন্দু ৩৯৪৫, বৌদ্ধ ৫, খ্রিস্টান ১১ এবং অন্যান্য ৩।
জলাশয় প্রধান নদী: দুধকুমার, ফুলকুমার। দিয়াডাঙ্গা বিল, সর্বজায়া বিল ও মরা সাঙ্কোশ বিল উল্লেখযোগ্য।
প্রশাসন ভুরুঙ্গামারী থানা গঠিত হয় ১৯১৫ সালে এবং ১৯৮৩ সালের ১০ এপ্রিল থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয়।
উপজেলা | ||||||||
পৌরসভা | ইউনিয়ন | মৌজা | গ্রাম | জনসংখ্যা | ঘনত্ব(প্রতি বর্গ কিমি) | শিক্ষার হার (%) | ||
শহর | গ্রাম | শহর | গ্রাম | |||||
- | ১০ | ৫৬ | ১২৬ | ২৯৬৮৩ | ২০১৮৫৫ | ৯৮০ | ৫৬.৭ | ৩৭.০ |
উপজেলা শহর | ||||||||
আয়তন (বর্গ কিমি) | মৌজা | লোকসংখ্যা | ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) | শিক্ষার হার (%) | ||||
১৪.৯২ | ৩ | ২৯৬৮৩ | ১৯৮৯ | ৫৬.৭ |
ইউনিয়ন | ||||||||
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড | আয়তন (একর) | লোকসংখ্যা | শিক্ষার হার (%) | |||||
পুরুষ | মহিলা | |||||||
আন্ধারী ঝাড় ১৩ | ৬৫৪৭ | ১১৩৪৯ | ১১৯৬৯ | ৩৮.৯ | ||||
চর ভুরুঙ্গামারী ৪৭ | ৪৬০৭ | ৭১৮৮ | ৭৫৩২ | ৩৫.৪ | ||||
জয়মনিরহাট ৫৭ | ৪৩৭২ | ৮০১১ | ৮৬০৯ | ৪৪.২ | ||||
তিলাই ৯৫ | ৪৬৯৫ | ৭৮৫০ | ৮২৬১ | ৩৭.৪ | ||||
পাইকের ছড়া ৬৬ | ৬৩৬০ | ১২২৩০ | ১২৫৭২ | ৩৬.৭ | ||||
পাথরডুবি ৭৬ | ৬৩৬৩ | ১০৪৩৮ | ১০৯৩১ | ৩৯.৭ | ||||
বঙ্গসোনাহাট ৩৮ | ৫৩৩১ | ৯৮৮৭ | ১০৩৭০ | ৩০.২ | ||||
বলদিয়া ২৮ | ৬১২৬ | ১১৯০৩ | ১৩০৬২ | ৩৫.৭ | ||||
ভুরুঙ্গামারী ১৯ | ৭১৬১ | ২৩৭৭৪ | ২৩৪১১ | ৪৯.১ | ||||
শিলখুড়ি ৮৫ | ৬৮২১ | ১০৮৭২ | ১১৩১৯ | ৩৬.০ |
সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।
প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ দেওয়ানের খামার জামে মসজিদ, পাটেশ্বরী বাজারের দক্ষিণ-পশ্চিমাংশে একটি পুরনো মসজিদের ধ্বংসাবশেষ (মুগল আমলে নির্মিত), ইন্দ্রপ্রসাদ দেব মন্দির, জয়মনির জমিদার বাড়ি।
মুক্তিযুদ্ধ ১৯৭১ সালের ১১ নভেম্বর ভূরুঙ্গামারী মুক্ত করতে পাকসেনাদের সাথে লড়াইয়ে ভারতীয় বাহিনীর মেজর রামসিংহসহ মিত্রবাহিনীর ৬৯ জন এবং মুক্তিবাহিনীর ৫ জন সদস্য শহীদ হন। ভুরুঙ্গামারী মুক্ত করার পর ২০ নভেম্বর এক লড়াইয়ে পাকবাহিনীর শতাধিক সৈন্য নিহত হয় এবং লেফটেন্যান্ট আবু সাঈদ মোহাম্মদ আশফাকুস সামাদসহ (বীর উত্তম) অনেক মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। এছাড়াও এ উপজেলায় পাকসেনাদের অনুপ্রবেশ ঠেকাতে ২৬ নভেম্বর মুক্তিযোদ্ধারা সোনাহাট ব্রিজ ধ্বংস করে। উপজেলায় ১টি গণকবর ১ (টিএনও বাসভবনের পেছনে গণকবর) ও ১টি বধ্যভূমি (হাসপাতালের পেছনে) রয়েছে। এছাড়াও ভুরুঙ্গামারী ইউনিয়নের বাগভা-ার গ্রামে ৩০-৩২টি মানুষের মাথার খুলি পাওয়া গেছে।
বিস্তারিত দেখুন ভুরুঙ্গামারী উপজেলা, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ৭।
ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদ ৫২০, মন্দির ১৪।
শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৩৯.৬%; পুরুষ ৪৩.১%, মহিলা ৩৬.২%। কলেজ ৫, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৪০, প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৩৫, মাদ্রাসা ২৭। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: ভুরুঙ্গামারী ডিগ্রি কলেজ (১৯৬৭), ভুরুঙ্গামারী মহিলা ডিগ্রি কলেজ (১৯৯৪), ভুরুঙ্গামারী পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় (১৯২৫), পাটেশ্বরী বরকতিয়া উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৫০), থানাঘাট বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৬১), ধামেরহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (১৯৫০), ভুরুঙ্গামারী মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বাউশমারী সিনিয়র মাদ্রাসা (১৯৩৮), ভুরুঙ্গামারী সিনিয়র মাদ্রাসা (১৯৪৮)।
সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান লাইব্রেরি ২, ক্লাব ১৫, সিনেমা হল ৩, খেলার মাঠ ৮।
জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৭৫.২%, অকৃষি শ্রমিক ৪.১৫%, শিল্প ০.৪%, ব্যবসা ৮.০৬%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ১.৪৮%, চাকরি ২.৯৯%, নির্মাণ ০.৪৪%, ধর্মীয় সেবা ০.১১%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.৩% এবং অন্যান্য ৬.৮৭%।
কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৫৪.৪৫%, ভূমিহীন ৪৫.৫৫%। শহরে ৪৪.২৩% এবং গ্রামে ৫৫.৭৮% পরিবারের কৃষিজমি রয়েছে।
প্রধান কৃষি ফসল ধান, পাট, আলু, গম, আখ, বাঁশ, শাকসবজি।
বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি চীনা, আউশ ধান, অড়হর।
প্রধান ফল-ফলাদি আম, কাঁঠাল, সুপারি, কামরাঙা, জলপাই, পেয়ারা, জাম, চালতা, জামরুল, লটকন, লিচু।
মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার গবাদিপশু ৫, হাঁস-মুরগি ৩২, মৎস্য নার্সারি ১০।
যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ৫৯ কিমি, কাঁচারাস্তা ২৪০ কিমি; নৌপথ ১৫ কিমি।
বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পাল্কি, গরু ও মহিষের গাড়ি।
শিল্প ও কলকারখানা চা’কল, আগরবাতি ফ্যাক্টরি, বলপেন ফ্যাক্টরি, বিস্কুট ফ্যাক্টরি, আইসক্রিম ফ্যাক্টরি, ওয়েল্ডিং কারখানা, মোমবাতি কারখানা, সার কারখানা।
কুটিরশিল্প স্বর্ণশিল্প, লৌহশিল্প, মৃৎশিল্প, পাটশিল্প, সূচিশিল্প, বাঁশের কাজ।
হাটবাজার ও মেলা হাটবাজার ২৫, মেলা ২। জয়মনিরহাট, সোনাহাট, শাহী বাজার হাট, ভুরুঙ্গামারী হাট এবং ভরতের মেলা (পাটেশ্বরী) ও বারনী মেলা (কালিরহাট) উল্লেখযোগ্য।
প্রধান রপ্তানিদ্রব্য পাট, সুপারি, ধান, বাঁশ, মুরগি।
বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ১৮.৬% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।
পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৯৭.১%, ট্যাপ ০.২% এবং অন্যান্য ২.৭%।
স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ৭৫.৭% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ১৭.৪% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ৬.৯% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।
স্বাস্থ্যকেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্র ১, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ৪, পরিবার পরিকল্পনা ক্লিনিক ১০, স্যাটেলাইট ক্লিনিক ৪২, ক্লিনিক ৩, ডায়াগনস্টিক সেন্টার ১।
প্রাকৃতিক দুর্যোগ ১৯৫৭ সালের ঘূর্ণিঝড় ও ১৯৯৩ সালের বন্যায় এ অঞ্চলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়।
এনজিও কেয়ার, ব্র্যাক, আরডিআরএস, আশা। [মো. কামাল হোসেন]
তথ্যসূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; ভুরুঙ্গামারী উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।