বৃদ্ধিচ্যুতি: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
NasirkhanBot (আলোচনা | অবদান) অ (Added Ennglish article link) |
সম্পাদনা সারাংশ নেই |
||
১ নং লাইন: | ১ নং লাইন: | ||
[[Category:বাংলাপিডিয়া]] | [[Category:বাংলাপিডিয়া]] | ||
'''বৃদ্ধিচ্যুতি '''(Growth fault) পাললিক শিলার চ্যুতি যা অবক্ষেপণের সঙ্গে সঙ্গে অব্যাহতভাবে গঠিত হয়। এতে ঊর্ধ্বক্ষেপণ গভীরতার সঙ্গে বৃদ্ধি পায় এবং নিম্নক্ষেপণ অংশের স্তর ঊর্ধ্বক্ষেপণ অংশের সহস্তরের চেয়ে পুরু হয়। উচ্চ অবক্ষেপণ হারবিশিষ্ট অঞ্চলে বৃদ্ধিচ্যুতি অধিক দৃশ্যমান এবং সাধারণত ঘন বদ্বীপীয় স্তরে সংশ্লিষ্ট থাকে। | '''বৃদ্ধিচ্যুতি''' (Growth fault) পাললিক শিলার চ্যুতি যা অবক্ষেপণের সঙ্গে সঙ্গে অব্যাহতভাবে গঠিত হয়। এতে ঊর্ধ্বক্ষেপণ গভীরতার সঙ্গে বৃদ্ধি পায় এবং নিম্নক্ষেপণ অংশের স্তর ঊর্ধ্বক্ষেপণ অংশের সহস্তরের চেয়ে পুরু হয়। উচ্চ অবক্ষেপণ হারবিশিষ্ট অঞ্চলে বৃদ্ধিচ্যুতি অধিক দৃশ্যমান এবং সাধারণত ঘন বদ্বীপীয় স্তরে সংশ্লিষ্ট থাকে। | ||
অধিকাংশ বৃদ্ধি চ্যুতির একটি বাঁকানো ভঙ্গিমা থাকে এবং ৪৫ ডিগ্রির কম কৌণিক রেখায় পরস্পরকে ছেদ করে। এগুলো সমুদ্রের দিকে ধনুকের মতো ভিতরমুখী বক্রতাযুক্ত এবং লিসট্রিক, অর্থাৎ গভীরতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে এগুলো অনুভূমিকভাবে চ্যাপ্টা হতে থাকে। বালু পরকলা যেখানে নিম্নস্তূপে অগ্রমুখী, চ্যুতি গতিময়তা সাধারণত সেখানেই সবচেয়ে বেশি, আর স্বল্প ঘন আন্তঃনদীবাহিত কাদায় যে অংশ আবৃত, সেখানে এই গতিময়তা কমে আসে অথবা বন্ধ হয়ে যায়। বৃদ্ধিচ্যুতিসমূহ তুলনামূলকভাবে প্রস্থে ছোট, প্রায় ১৫ থেকে ২০ কিমি, আর দৈর্ঘ্যে ৪৫ থেকে ৫০ কিমি। যেহেতু বদ্বীপীয় অগ্রমুখে অবক্ষেপণ সমুদ্রপৃষ্ঠের আপেক্ষিক পরিবর্তনের দ্বারা দারুণভাবে প্রভাবিত হয়, তাই সাধারণত মনে করা হয় সমুদ্রপৃষ্ঠের পরিবর্তন বৃদ্ধিচ্যুতির গঠনকেও প্রভাবিত করে। তীব্র ঘূর্ণিঝড় বদ্বীপীয় অঞ্চলের কাছে অবক্ষেপণ ধারাকে পরিবর্তিত এবং বৃদ্ধিচ্যুতির গঠনকে প্রভাবিত করতে পারে। তেল ও গ্যাস অনুসন্ধান এবং উন্নয়নের জন্য এগুলো গুরুত্বপূর্ণ। সাধারণত বৃদ্ধিচ্যুতি সংশ্লিষ্ট শিলাসোপানে প্রচুর পরিমাণ তরল ও গ্যাসীয় হাইড্রোকার্বন মজুত থাকে। এতদসংক্রান্ত তেল ও গ্যাস মজুতের একটা ভালো উদাহরণ হচ্ছে নাইজেরিয়ার নাইজার বদ্বীপ। সেখানে হাইড্রোকার্বনের অধিকাংশই বৃদ্ধিচ্যুতি বরাবর শিলাসোপানে উৎপন্ন হয়। গাঙ্গেয়-ব্রহ্মপুত্র বদ্বীপে এ পর্যন্ত কোন বৃদ্ধিচ্যুতি নিশ্চিতভাবে চিহ্নিত হয় নি। অবশ্য এটি স্বল্প অনুসন্ধান কার্যক্রমের জন্যও হতে পারে, কারণ বদ্বীপ অঞ্চলে এখনও ব্যাপক জরিপ চালানো হয় নি। সাধারণ ধারণা এই যে, এই অঞ্চলে বৃদ্ধিচ্যুতি রয়েছে। কিন্তু এ পর্যন্ত নিশ্চিত শনাক্তকরণ হয় নি। সোয়াচ অফ নো গ্রাউন্ড থেকে সামুদ্রিক ভূ-কম্পীয় জরিপে বদ্বীপীয় অঞ্চলে সম্ভাব্য স্খলন অবক্ষেপের ইঙ্গিত মেলে, যা বৃদ্ধিচ্যুতির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট হতে পারে। | অধিকাংশ বৃদ্ধি চ্যুতির একটি বাঁকানো ভঙ্গিমা থাকে এবং ৪৫ ডিগ্রির কম কৌণিক রেখায় পরস্পরকে ছেদ করে। এগুলো সমুদ্রের দিকে ধনুকের মতো ভিতরমুখী বক্রতাযুক্ত এবং লিসট্রিক, অর্থাৎ গভীরতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে এগুলো অনুভূমিকভাবে চ্যাপ্টা হতে থাকে। বালু পরকলা যেখানে নিম্নস্তূপে অগ্রমুখী, চ্যুতি গতিময়তা সাধারণত সেখানেই সবচেয়ে বেশি, আর স্বল্প ঘন আন্তঃনদীবাহিত কাদায় যে অংশ আবৃত, সেখানে এই গতিময়তা কমে আসে অথবা বন্ধ হয়ে যায়। বৃদ্ধিচ্যুতিসমূহ তুলনামূলকভাবে প্রস্থে ছোট, প্রায় ১৫ থেকে ২০ কিমি, আর দৈর্ঘ্যে ৪৫ থেকে ৫০ কিমি। যেহেতু বদ্বীপীয় অগ্রমুখে অবক্ষেপণ সমুদ্রপৃষ্ঠের আপেক্ষিক পরিবর্তনের দ্বারা দারুণভাবে প্রভাবিত হয়, তাই সাধারণত মনে করা হয় সমুদ্রপৃষ্ঠের পরিবর্তন বৃদ্ধিচ্যুতির গঠনকেও প্রভাবিত করে। তীব্র ঘূর্ণিঝড় বদ্বীপীয় অঞ্চলের কাছে অবক্ষেপণ ধারাকে পরিবর্তিত এবং বৃদ্ধিচ্যুতির গঠনকে প্রভাবিত করতে পারে। তেল ও গ্যাস অনুসন্ধান এবং উন্নয়নের জন্য এগুলো গুরুত্বপূর্ণ। সাধারণত বৃদ্ধিচ্যুতি সংশ্লিষ্ট শিলাসোপানে প্রচুর পরিমাণ তরল ও গ্যাসীয় হাইড্রোকার্বন মজুত থাকে। এতদসংক্রান্ত তেল ও গ্যাস মজুতের একটা ভালো উদাহরণ হচ্ছে নাইজেরিয়ার নাইজার বদ্বীপ। সেখানে হাইড্রোকার্বনের অধিকাংশই বৃদ্ধিচ্যুতি বরাবর শিলাসোপানে উৎপন্ন হয়। গাঙ্গেয়-ব্রহ্মপুত্র বদ্বীপে এ পর্যন্ত কোন বৃদ্ধিচ্যুতি নিশ্চিতভাবে চিহ্নিত হয় নি। অবশ্য এটি স্বল্প অনুসন্ধান কার্যক্রমের জন্যও হতে পারে, কারণ বদ্বীপ অঞ্চলে এখনও ব্যাপক জরিপ চালানো হয় নি। সাধারণ ধারণা এই যে, এই অঞ্চলে বৃদ্ধিচ্যুতি রয়েছে। কিন্তু এ পর্যন্ত নিশ্চিত শনাক্তকরণ হয় নি। সোয়াচ অফ নো গ্রাউন্ড থেকে সামুদ্রিক ভূ-কম্পীয় জরিপে বদ্বীপীয় অঞ্চলে সম্ভাব্য স্খলন অবক্ষেপের ইঙ্গিত মেলে, যা বৃদ্ধিচ্যুতির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট হতে পারে। | ||
যেহেতু বৃদ্ধিচ্যুতিসমূহ উচ্চ অবক্ষেপণ ও স্খলনের সঙ্গে সর্ম্পকযুক্ত, তাই গাঙ্গেয়-ব্রহ্মপুত্র বদ্বীপে এর উপস্থিতির সম্ভাবনা উত্তম। বৃদ্ধিচ্যুতির প্রাপ্তি গাঙ্গেয় ব্রহ্মপুত্র বদ্বীপে ভবিষ্যৎ তেল ও গ্যাস অনুসন্ধানে গুরুত্বপূর্ণ | যেহেতু বৃদ্ধিচ্যুতিসমূহ উচ্চ অবক্ষেপণ ও স্খলনের সঙ্গে সর্ম্পকযুক্ত, তাই গাঙ্গেয়-ব্রহ্মপুত্র বদ্বীপে এর উপস্থিতির সম্ভাবনা উত্তম। বৃদ্ধিচ্যুতির প্রাপ্তি গাঙ্গেয় ব্রহ্মপুত্র বদ্বীপে ভবিষ্যৎ তেল ও গ্যাস অনুসন্ধানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। [মাহমুদ আলম] | ||
[[en:Growth Fault]] | [[en:Growth Fault]] |
০৪:৫১, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ
বৃদ্ধিচ্যুতি (Growth fault) পাললিক শিলার চ্যুতি যা অবক্ষেপণের সঙ্গে সঙ্গে অব্যাহতভাবে গঠিত হয়। এতে ঊর্ধ্বক্ষেপণ গভীরতার সঙ্গে বৃদ্ধি পায় এবং নিম্নক্ষেপণ অংশের স্তর ঊর্ধ্বক্ষেপণ অংশের সহস্তরের চেয়ে পুরু হয়। উচ্চ অবক্ষেপণ হারবিশিষ্ট অঞ্চলে বৃদ্ধিচ্যুতি অধিক দৃশ্যমান এবং সাধারণত ঘন বদ্বীপীয় স্তরে সংশ্লিষ্ট থাকে।
অধিকাংশ বৃদ্ধি চ্যুতির একটি বাঁকানো ভঙ্গিমা থাকে এবং ৪৫ ডিগ্রির কম কৌণিক রেখায় পরস্পরকে ছেদ করে। এগুলো সমুদ্রের দিকে ধনুকের মতো ভিতরমুখী বক্রতাযুক্ত এবং লিসট্রিক, অর্থাৎ গভীরতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে এগুলো অনুভূমিকভাবে চ্যাপ্টা হতে থাকে। বালু পরকলা যেখানে নিম্নস্তূপে অগ্রমুখী, চ্যুতি গতিময়তা সাধারণত সেখানেই সবচেয়ে বেশি, আর স্বল্প ঘন আন্তঃনদীবাহিত কাদায় যে অংশ আবৃত, সেখানে এই গতিময়তা কমে আসে অথবা বন্ধ হয়ে যায়। বৃদ্ধিচ্যুতিসমূহ তুলনামূলকভাবে প্রস্থে ছোট, প্রায় ১৫ থেকে ২০ কিমি, আর দৈর্ঘ্যে ৪৫ থেকে ৫০ কিমি। যেহেতু বদ্বীপীয় অগ্রমুখে অবক্ষেপণ সমুদ্রপৃষ্ঠের আপেক্ষিক পরিবর্তনের দ্বারা দারুণভাবে প্রভাবিত হয়, তাই সাধারণত মনে করা হয় সমুদ্রপৃষ্ঠের পরিবর্তন বৃদ্ধিচ্যুতির গঠনকেও প্রভাবিত করে। তীব্র ঘূর্ণিঝড় বদ্বীপীয় অঞ্চলের কাছে অবক্ষেপণ ধারাকে পরিবর্তিত এবং বৃদ্ধিচ্যুতির গঠনকে প্রভাবিত করতে পারে। তেল ও গ্যাস অনুসন্ধান এবং উন্নয়নের জন্য এগুলো গুরুত্বপূর্ণ। সাধারণত বৃদ্ধিচ্যুতি সংশ্লিষ্ট শিলাসোপানে প্রচুর পরিমাণ তরল ও গ্যাসীয় হাইড্রোকার্বন মজুত থাকে। এতদসংক্রান্ত তেল ও গ্যাস মজুতের একটা ভালো উদাহরণ হচ্ছে নাইজেরিয়ার নাইজার বদ্বীপ। সেখানে হাইড্রোকার্বনের অধিকাংশই বৃদ্ধিচ্যুতি বরাবর শিলাসোপানে উৎপন্ন হয়। গাঙ্গেয়-ব্রহ্মপুত্র বদ্বীপে এ পর্যন্ত কোন বৃদ্ধিচ্যুতি নিশ্চিতভাবে চিহ্নিত হয় নি। অবশ্য এটি স্বল্প অনুসন্ধান কার্যক্রমের জন্যও হতে পারে, কারণ বদ্বীপ অঞ্চলে এখনও ব্যাপক জরিপ চালানো হয় নি। সাধারণ ধারণা এই যে, এই অঞ্চলে বৃদ্ধিচ্যুতি রয়েছে। কিন্তু এ পর্যন্ত নিশ্চিত শনাক্তকরণ হয় নি। সোয়াচ অফ নো গ্রাউন্ড থেকে সামুদ্রিক ভূ-কম্পীয় জরিপে বদ্বীপীয় অঞ্চলে সম্ভাব্য স্খলন অবক্ষেপের ইঙ্গিত মেলে, যা বৃদ্ধিচ্যুতির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট হতে পারে।
যেহেতু বৃদ্ধিচ্যুতিসমূহ উচ্চ অবক্ষেপণ ও স্খলনের সঙ্গে সর্ম্পকযুক্ত, তাই গাঙ্গেয়-ব্রহ্মপুত্র বদ্বীপে এর উপস্থিতির সম্ভাবনা উত্তম। বৃদ্ধিচ্যুতির প্রাপ্তি গাঙ্গেয় ব্রহ্মপুত্র বদ্বীপে ভবিষ্যৎ তেল ও গ্যাস অনুসন্ধানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। [মাহমুদ আলম]