বেসিক ব্যাংক লিমিটেড: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
NasirkhanBot (আলোচনা | অবদান) অ (Added Ennglish article link) |
সম্পাদনা সারাংশ নেই |
||
(একই ব্যবহারকারী দ্বারা সম্পাদিত ২টি মধ্যবর্তী সংশোধন দেখানো হচ্ছে না) | |||
১ নং লাইন: | ১ নং লাইন: | ||
[[Category:বাংলাপিডিয়া]] | [[Category:বাংলাপিডিয়া]] | ||
'''বেসিক ব্যাংক লিমিটেড''' (বাংলাদেশ স্মল ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যান্ড কমার্স ব্যাংক লিমিটেড) | '''বেসিক ব্যাংক লিমিটেড''' (বাংলাদেশ স্মল ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যান্ড কমার্স ব্যাংক লিমিটেড) বেসরকারি খাতে পর্যাপ্ত ক্ষুদ্র শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে অর্থায়নের উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠিত ব্যাংক। ১৯১৩ সালের কোম্পানি আইনের আওতায় ১৯৮৮ সালের ২ আগস্ট ব্যাংকটি প্রতিষ্ঠিত হয় এবং ১৯৮৯ সালের ২১ জানুয়ারি থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যক্রম শুরু কর। মোট ৮০ মিলিয়ন টাকার পরিশোধিত মূলধন (বিসিসি ফাউন্ডেশনের ৭০% শেয়ার এবং বাংলাদেশ সরকারের ৩০% শেয়ার) নিয়ে এর যাত্রা শুরু হয়েছিল। ৬ জুন ১৯৯১-এ বিশ্বব্যাপী বিসিসিআই ফাউন্ডেশন অকার্যকর হয়ে গেলে উদ্ভূত অচলাবস্থা রোধ করতে বাংলাদেশ সরকার ৪ জুন ১৯৯২-এ ফাউন্ডেশনের ১০০% শেয়ার ও ব্যাংকটি অধিগ্রহণ করে। তবে ব্যাংকটিকে জাতীয়করণ করা হয় নি। পূর্বের মত বেসরকারি ব্যাংক হিসেবে পরিচালিত হয়ে সরকারের মালিকানাধীন বেসরকারি ব্যাংক হিসেবেই ব্যাংকটি পরিচিতি লাভ করেছে। মার্চ ২০২১ শেষে বেসিক ব্যাংকের অনুমোদিত ও পরিশোধিত মূলধন দাঁড়ায় যথাক্রমে ৫৫,০০০ এবং ১০৮৪৭ মিলিয়ন টাকা। | ||
বেসিক ব্যাংক লিমিটেড উন্নয়ন এবং বাণিজ্যিক ব্যাংকের এক সংমিশ্রণ। ব্যাংকটি ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পকে অগ্রাধিকার দিয়ে শিল্প খাত প্রসারের জন্য মধ্য ও দীর্ঘ মেয়াদি ঋণ সরবরাহ এবং অন্যান্য আর্থিক সহায়তা প্রদানের দায়িত্বে নিয়োজিত। সংঘ স্মারক ও সংঘ বিধি অনুযায়ী ব্যাংকটির মোট ঋণদানযোগ্য তহবিলের অন্তত শতকরা ৫০ ভাগ ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের অর্থায়নে | বেসিক ব্যাংক লিমিটেড উন্নয়ন এবং বাণিজ্যিক ব্যাংকের এক সংমিশ্রণ। ব্যাংকটি ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পকে অগ্রাধিকার দিয়ে শিল্প খাত প্রসারের জন্য মধ্য ও দীর্ঘ মেয়াদি ঋণ সরবরাহ এবং অন্যান্য আর্থিক সহায়তা প্রদানের দায়িত্বে নিয়োজিত। সংঘ স্মারক ও সংঘ বিধি অনুযায়ী ব্যাংকটির মোট ঋণদানযোগ্য তহবিলের অন্তত শতকরা ৫০ ভাগ ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের অর্থায়নে ব্যবহৃত হয়। | ||
বেসিক ব্যাংকের প্রধান কার্যাবলীর মধ্যে রয়েছে ক | বেসিক ব্যাংকের প্রধান কার্যাবলীর মধ্যে রয়েছে (ক) ক্ষুদ্র শিল্প উদ্যোক্তাদেরকে মেয়াদি ঋণ প্রদান; (খ) পুর্ণাঙ্গ বাণিজ্যিক ব্যাংক হিসেবে আমানত গ্রহণ, চলতি ও সঞ্চয়ী হিসাব ব্যবস্থাপনা, ট্রেড ফাইন্যান্স, নির্মাণ উৎপাদন ও প্রক্রিয়াকরণ পর্যায়ে শিল্প অর্থায়ন এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে সহায়তাকরণ; (গ) ক্ষুদ্র শিল্প উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠানকে ব্যবসা পরিচালনা বিষয়ে কারিগরি সহায়তা প্রদান করা এবং (ঘ) নগর দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মধ্যে এনজিওদের মধ্যস্থতায় [[ক্ষুদ্রঋণ|ক্ষুদ্রঋণ]] প্রদান করা যাতে তারা সহজে পুঁজি সংগ্রহে সক্ষম হয়। | ||
ব্যাংকের মৌল কর্ম পরিকল্পনা ও উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে নীতি-নির্দেশনা দিয়ে থাকে ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ। পুরো মালিকানা সরকারের হওয়ায় সরকারই ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তা ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহীদের সমন্বয়ে পুরো পর্ষদের মনোনয়ন দিয়ে থাকে। ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদাধিকার বলে পর্ষদের একজন সদস্য। বর্তমানে ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ মোট | ব্যাংকের মৌল কর্ম পরিকল্পনা ও উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে নীতি-নির্দেশনা দিয়ে থাকে ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ। পুরো মালিকানা সরকারের হওয়ায় সরকারই ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তা ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহীদের সমন্বয়ে পুরো পর্ষদের মনোনয়ন দিয়ে থাকে। ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদাধিকার বলে পর্ষদের একজন সদস্য। বর্তমানে ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ মোট ৫ সদস্যের পরিচালনা পর্ষদ রয়েছে। | ||
ব্যবস্থাপনা পরিচালক ব্যাংকটির সার্বিক | ব্যবস্থাপনা পরিচালক ব্যাংকটির সার্বিক কর্মকাণ্ড নিয়ন্ত্রণ করেন। ব্যবস্থাপনা পরিচালককে মহাব্যবস্থাপক এবং কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে কর্মরত বিভাগীয় প্রধানগণ সহায়তা করে থাকেন। ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপকগণ ব্যবস্থাপনা পরিচালকের নিকট সরাসরি এবং বিভাগীয় প্রধানের নিকট বিষয় সংশ্লিষ্ট কর্মকাণ্ডের রিপোর্ট করে থাকেন। | ||
২০০৭ সালের মার্চ মাস থেকে ব্যাংকিং লেনদেন তথা সামগ্রিক কার্যক্রমকে কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য অন-লাইন ব্যাংকিং কার্যক্রম শুরু হয়েছে। ২০০৭ সালে এটিএম কার্ড প্রবর্তনের মাধ্যমে গ্রাহকদের নিকট ব্যাংকিং সেবা সহজলভ্য করার উদ্যোগ নেওয়া হয়। শিল্পঋণ মঞ্জুরির ক্ষেত্রে পরিবেশের ওপর শিল্প প্রকল্পের প্রভাব বিবেচনায় নিয়ে পরিবেশ বান্ধব প্রকল্পে ঋণ মঞ্জুরি দেওয়াকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। প্রকল্পের ধরন হচ্ছে গার্মেন্টস এবং টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রিজ, ইঞ্জিনিয়ারিং, পাটজাত দ্রব্য, কেমিক্যাল, সিনথেটিক লেদার, এমব্রয়ডারি, পেপার প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিং, হার্ডবোর্ড, মৎস্য ও চিংড়ি, ফিশিং নেট, খাদ্য প্রক্রিয়া, বিস্কুট ও ব্রেড, ময়দা মিল, লুব্রিকেটিং, সিএনজি ইত্যাদি। | |||
মৌল তথ্য ও পরিসংখ্যান (মিলিয়ন টাকায়) | মৌল তথ্য ও পরিসংখ্যান (মিলিয়ন টাকায়) | ||
বিবরণ || | {| class="table table-bordered table-hover" | ||
|- | |||
| বিবরণ || ২০১৮ || ২০১৯ || ২০২০ | |||
|- | |||
| অনুমোদিত মূলধন || ৫৫০০০ || ৫৫০০০ || ৫৫০০০ | |||
|- | |||
| পরিশোধিত মূলধন || ১০৮৪৭ || ১০৮৪৭ || ১০৮৪৭ | |||
|- | |||
| রিজার্ভ || -৪৫৬.৭ || -৮১৩৪.৭ || ২৬৮৪ | |||
|- | |||
| আমানত || ১৩১৮২১.৬ || ১৩৮৩০৭.৩ || ১৩৯৭১৫ | |||
|- | |||
| ক) তলবি আমানত || ৬৬০৫.২ || ৭৬৮৩.৫ || ৮৩৪৬.৬ | |||
|- | |||
| খ) মেয়াদি আমানত || ১২৫২১৬.৪ || ১৩০৬২৩.৮ || ১৩১৩৬৮.৩ | |||
|- | |||
| ঋণ ও অগ্রিম || ১৫১৯৬৮.১ || ১৫১৭৬৯.৬ || ১৪৯১২৫.৯ | |||
|- | |||
| বিনিয়োগ || ২৩৯৩৯.৩ || ২৪৪৮১.৪ || ২৬২৫৮.৬ | |||
|- | |||
| মোট পরিসম্পদ || ১৯১৫৬০.৪ || ১৯৪৯২৮ || ১৯৬৬৪৬.৬ | |||
|- | |||
| মোট আয় || ৯৬০৫.১ || ৮৪৮৯.১ || ৭৭৭৩ | |||
|- | |||
| মোট ব্যয় || ১০৭৮৭ || ১১৫৮৫.৬ || ১১৩৮৭.৫ | |||
|- | |||
| বৈদেশিক মুদ্রা ব্যবসা পরিচালনা || ৬৫৭৬০.৪ || ৫৫৮৬৫.৩ || ৪৬৯৫৫.৭ | |||
|- | |||
| ক) রপ্তানি || ২৩১০২.৪ || ২২৪৭০.৯ || ১৯১৬১.১ | |||
|- | |||
| খ) আমদানি || ৪১৯২৫.৪ || ৩২৫১৪.৭ || ২৭৭৫৮.৬ | |||
|- | |||
| গ) রেমিট্যান্স || ৭৩২.৬ || ৮৭৯.৭ || ৩৬ | |||
|- | |||
| মোট জনশক্তি (সংখ্যায়) || ২০৭৫ || ২০৯৭ || ২০৭০ | |||
|- | |||
| ক) কর্মকর্তা || ১৫০৪ || ১৫২৯ || ১৫০৭ | |||
|- | |||
| খ) কর্মচারি || ৫৭১ || ৫৬৮ || ৫৬৩ | |||
|- | |||
| বিদেশি প্রতিসংগী ব্যাংক (সংখ্যায়) || ১৭ || ১৭ || ১৭ | |||
|- | |||
| শাখা (সংখ্যায়) || ৬৮ || ৭২ || ৭২ | |||
|- | |||
| ক) দেশে || ৬৮ || ৭২ || ৭২ | |||
|- | |||
| খ) বিদেশে || ০ || ০ || ০ | |||
|- | |||
| কৃষিখাতে | |||
|- | |||
| ক) ঋণ বিতরণ || ১১৯৬.৪ || ১১১৫.২ || ৬৪৩.৪ | |||
|- | |||
| খ) আদায় || ১৪০৮.৬ || ১৮৬৬.৪ || ৮০৫.৭ | |||
|- | |||
| শিল্প খাতে | |||
|- | |||
| ক) ঋণ বিতরণ || ৩৩০০৮.৬ || ২৩৬৮৬.৮ || ১৩০১৯.৮ | |||
|- | |||
| খ) আদায় || ২৬৯৩৫.৪ || ২৪১১৬.৫ || ১৪৩৮৩.২ | |||
|- | |||
| খাতভিত্তিক ঋণের স্থিতি | |||
|- | |||
| ক) কৃষি ও মৎস্য || ৩০২৩.৭ || ৩০১৯.৯ || ৩০০৯.৫ | |||
|- | |||
| খ) শিল্প || ৩৯৩৮৩.৫ || ৩৯৩৩২.২ || ৩৮২৪০ | |||
|- | |||
| গ) ব্যবসা বাণিজ্য || ৪৬০২৪.৮ || ৪৫৯৬৪.৮ || ৪৫৬৪১.৬ | |||
|- | |||
| ঘ) দারিদ্র্য বিমোচন || ২.৪ || ২.৪ || ২.৪ | |||
|- | |||
| সি.এস.আর || ১.৪ || ১.৩ || ১.৬ | |||
|} | |||
''উৎস'' আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ, অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ সরকার, ''বার্ষিক প্রতিবেদন, ২০১৯-২০২০ ও ২০২০-২১''। | |||
শহুরে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য বেসিক ব্যাংক ক্ষুদ্রঋণ কর্মসূচি চালু রেখেছে। এ কর্মসূচির আওতায় দরিদ্র ঋণ গ্রহীতাদের সরাসরি বা এনজিও-এর মাধ্যমে ঋণ বিতরণের ব্যবস্থা রয়েছে। ২০২০ সালে ব্যাংকের আমানত ও ঋণ অগ্রিমের স্থিতির অংশ ছিল ব্যাংকিং খাতের মোট আমানত ও ঋণ অগ্রিমের স্থিতির যথাক্রমে ০.৯৮ এবং ১.২৬ শতাংশ এবং আমানত ও ঋণ অগ্রিমের গড় সুদহার ব্যবধান দাঁড়ায় ৩.১শতাংশ । [মোহাম্মদ আবদুল মজিদ] | |||
শহুরে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য বেসিক ব্যাংক ক্ষুদ্রঋণ কর্মসূচি চালু রেখেছে। এ কর্মসূচির আওতায় দরিদ্র ঋণ গ্রহীতাদের সরাসরি বা এনজিও-এর মাধ্যমে ঋণ বিতরণের ব্যবস্থা রয়েছে। | |||
[[en:BASIC Bank Limited]] | [[en:BASIC Bank Limited]] |
১৫:০৭, ১ জুলাই ২০২৩ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ
বেসিক ব্যাংক লিমিটেড (বাংলাদেশ স্মল ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যান্ড কমার্স ব্যাংক লিমিটেড) বেসরকারি খাতে পর্যাপ্ত ক্ষুদ্র শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে অর্থায়নের উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠিত ব্যাংক। ১৯১৩ সালের কোম্পানি আইনের আওতায় ১৯৮৮ সালের ২ আগস্ট ব্যাংকটি প্রতিষ্ঠিত হয় এবং ১৯৮৯ সালের ২১ জানুয়ারি থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যক্রম শুরু কর। মোট ৮০ মিলিয়ন টাকার পরিশোধিত মূলধন (বিসিসি ফাউন্ডেশনের ৭০% শেয়ার এবং বাংলাদেশ সরকারের ৩০% শেয়ার) নিয়ে এর যাত্রা শুরু হয়েছিল। ৬ জুন ১৯৯১-এ বিশ্বব্যাপী বিসিসিআই ফাউন্ডেশন অকার্যকর হয়ে গেলে উদ্ভূত অচলাবস্থা রোধ করতে বাংলাদেশ সরকার ৪ জুন ১৯৯২-এ ফাউন্ডেশনের ১০০% শেয়ার ও ব্যাংকটি অধিগ্রহণ করে। তবে ব্যাংকটিকে জাতীয়করণ করা হয় নি। পূর্বের মত বেসরকারি ব্যাংক হিসেবে পরিচালিত হয়ে সরকারের মালিকানাধীন বেসরকারি ব্যাংক হিসেবেই ব্যাংকটি পরিচিতি লাভ করেছে। মার্চ ২০২১ শেষে বেসিক ব্যাংকের অনুমোদিত ও পরিশোধিত মূলধন দাঁড়ায় যথাক্রমে ৫৫,০০০ এবং ১০৮৪৭ মিলিয়ন টাকা।
বেসিক ব্যাংক লিমিটেড উন্নয়ন এবং বাণিজ্যিক ব্যাংকের এক সংমিশ্রণ। ব্যাংকটি ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পকে অগ্রাধিকার দিয়ে শিল্প খাত প্রসারের জন্য মধ্য ও দীর্ঘ মেয়াদি ঋণ সরবরাহ এবং অন্যান্য আর্থিক সহায়তা প্রদানের দায়িত্বে নিয়োজিত। সংঘ স্মারক ও সংঘ বিধি অনুযায়ী ব্যাংকটির মোট ঋণদানযোগ্য তহবিলের অন্তত শতকরা ৫০ ভাগ ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের অর্থায়নে ব্যবহৃত হয়।
বেসিক ব্যাংকের প্রধান কার্যাবলীর মধ্যে রয়েছে (ক) ক্ষুদ্র শিল্প উদ্যোক্তাদেরকে মেয়াদি ঋণ প্রদান; (খ) পুর্ণাঙ্গ বাণিজ্যিক ব্যাংক হিসেবে আমানত গ্রহণ, চলতি ও সঞ্চয়ী হিসাব ব্যবস্থাপনা, ট্রেড ফাইন্যান্স, নির্মাণ উৎপাদন ও প্রক্রিয়াকরণ পর্যায়ে শিল্প অর্থায়ন এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে সহায়তাকরণ; (গ) ক্ষুদ্র শিল্প উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠানকে ব্যবসা পরিচালনা বিষয়ে কারিগরি সহায়তা প্রদান করা এবং (ঘ) নগর দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মধ্যে এনজিওদের মধ্যস্থতায় ক্ষুদ্রঋণ প্রদান করা যাতে তারা সহজে পুঁজি সংগ্রহে সক্ষম হয়।
ব্যাংকের মৌল কর্ম পরিকল্পনা ও উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে নীতি-নির্দেশনা দিয়ে থাকে ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ। পুরো মালিকানা সরকারের হওয়ায় সরকারই ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তা ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহীদের সমন্বয়ে পুরো পর্ষদের মনোনয়ন দিয়ে থাকে। ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদাধিকার বলে পর্ষদের একজন সদস্য। বর্তমানে ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ মোট ৫ সদস্যের পরিচালনা পর্ষদ রয়েছে।
ব্যবস্থাপনা পরিচালক ব্যাংকটির সার্বিক কর্মকাণ্ড নিয়ন্ত্রণ করেন। ব্যবস্থাপনা পরিচালককে মহাব্যবস্থাপক এবং কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে কর্মরত বিভাগীয় প্রধানগণ সহায়তা করে থাকেন। ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপকগণ ব্যবস্থাপনা পরিচালকের নিকট সরাসরি এবং বিভাগীয় প্রধানের নিকট বিষয় সংশ্লিষ্ট কর্মকাণ্ডের রিপোর্ট করে থাকেন।
২০০৭ সালের মার্চ মাস থেকে ব্যাংকিং লেনদেন তথা সামগ্রিক কার্যক্রমকে কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য অন-লাইন ব্যাংকিং কার্যক্রম শুরু হয়েছে। ২০০৭ সালে এটিএম কার্ড প্রবর্তনের মাধ্যমে গ্রাহকদের নিকট ব্যাংকিং সেবা সহজলভ্য করার উদ্যোগ নেওয়া হয়। শিল্পঋণ মঞ্জুরির ক্ষেত্রে পরিবেশের ওপর শিল্প প্রকল্পের প্রভাব বিবেচনায় নিয়ে পরিবেশ বান্ধব প্রকল্পে ঋণ মঞ্জুরি দেওয়াকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। প্রকল্পের ধরন হচ্ছে গার্মেন্টস এবং টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রিজ, ইঞ্জিনিয়ারিং, পাটজাত দ্রব্য, কেমিক্যাল, সিনথেটিক লেদার, এমব্রয়ডারি, পেপার প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিং, হার্ডবোর্ড, মৎস্য ও চিংড়ি, ফিশিং নেট, খাদ্য প্রক্রিয়া, বিস্কুট ও ব্রেড, ময়দা মিল, লুব্রিকেটিং, সিএনজি ইত্যাদি।
মৌল তথ্য ও পরিসংখ্যান (মিলিয়ন টাকায়)
বিবরণ | ২০১৮ | ২০১৯ | ২০২০ |
অনুমোদিত মূলধন | ৫৫০০০ | ৫৫০০০ | ৫৫০০০ |
পরিশোধিত মূলধন | ১০৮৪৭ | ১০৮৪৭ | ১০৮৪৭ |
রিজার্ভ | -৪৫৬.৭ | -৮১৩৪.৭ | ২৬৮৪ |
আমানত | ১৩১৮২১.৬ | ১৩৮৩০৭.৩ | ১৩৯৭১৫ |
ক) তলবি আমানত | ৬৬০৫.২ | ৭৬৮৩.৫ | ৮৩৪৬.৬ |
খ) মেয়াদি আমানত | ১২৫২১৬.৪ | ১৩০৬২৩.৮ | ১৩১৩৬৮.৩ |
ঋণ ও অগ্রিম | ১৫১৯৬৮.১ | ১৫১৭৬৯.৬ | ১৪৯১২৫.৯ |
বিনিয়োগ | ২৩৯৩৯.৩ | ২৪৪৮১.৪ | ২৬২৫৮.৬ |
মোট পরিসম্পদ | ১৯১৫৬০.৪ | ১৯৪৯২৮ | ১৯৬৬৪৬.৬ |
মোট আয় | ৯৬০৫.১ | ৮৪৮৯.১ | ৭৭৭৩ |
মোট ব্যয় | ১০৭৮৭ | ১১৫৮৫.৬ | ১১৩৮৭.৫ |
বৈদেশিক মুদ্রা ব্যবসা পরিচালনা | ৬৫৭৬০.৪ | ৫৫৮৬৫.৩ | ৪৬৯৫৫.৭ |
ক) রপ্তানি | ২৩১০২.৪ | ২২৪৭০.৯ | ১৯১৬১.১ |
খ) আমদানি | ৪১৯২৫.৪ | ৩২৫১৪.৭ | ২৭৭৫৮.৬ |
গ) রেমিট্যান্স | ৭৩২.৬ | ৮৭৯.৭ | ৩৬ |
মোট জনশক্তি (সংখ্যায়) | ২০৭৫ | ২০৯৭ | ২০৭০ |
ক) কর্মকর্তা | ১৫০৪ | ১৫২৯ | ১৫০৭ |
খ) কর্মচারি | ৫৭১ | ৫৬৮ | ৫৬৩ |
বিদেশি প্রতিসংগী ব্যাংক (সংখ্যায়) | ১৭ | ১৭ | ১৭ |
শাখা (সংখ্যায়) | ৬৮ | ৭২ | ৭২ |
ক) দেশে | ৬৮ | ৭২ | ৭২ |
খ) বিদেশে | ০ | ০ | ০ |
কৃষিখাতে | |||
ক) ঋণ বিতরণ | ১১৯৬.৪ | ১১১৫.২ | ৬৪৩.৪ |
খ) আদায় | ১৪০৮.৬ | ১৮৬৬.৪ | ৮০৫.৭ |
শিল্প খাতে | |||
ক) ঋণ বিতরণ | ৩৩০০৮.৬ | ২৩৬৮৬.৮ | ১৩০১৯.৮ |
খ) আদায় | ২৬৯৩৫.৪ | ২৪১১৬.৫ | ১৪৩৮৩.২ |
খাতভিত্তিক ঋণের স্থিতি | |||
ক) কৃষি ও মৎস্য | ৩০২৩.৭ | ৩০১৯.৯ | ৩০০৯.৫ |
খ) শিল্প | ৩৯৩৮৩.৫ | ৩৯৩৩২.২ | ৩৮২৪০ |
গ) ব্যবসা বাণিজ্য | ৪৬০২৪.৮ | ৪৫৯৬৪.৮ | ৪৫৬৪১.৬ |
ঘ) দারিদ্র্য বিমোচন | ২.৪ | ২.৪ | ২.৪ |
সি.এস.আর | ১.৪ | ১.৩ | ১.৬ |
উৎস আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ, অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ সরকার, বার্ষিক প্রতিবেদন, ২০১৯-২০২০ ও ২০২০-২১।
শহুরে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য বেসিক ব্যাংক ক্ষুদ্রঋণ কর্মসূচি চালু রেখেছে। এ কর্মসূচির আওতায় দরিদ্র ঋণ গ্রহীতাদের সরাসরি বা এনজিও-এর মাধ্যমে ঋণ বিতরণের ব্যবস্থা রয়েছে। ২০২০ সালে ব্যাংকের আমানত ও ঋণ অগ্রিমের স্থিতির অংশ ছিল ব্যাংকিং খাতের মোট আমানত ও ঋণ অগ্রিমের স্থিতির যথাক্রমে ০.৯৮ এবং ১.২৬ শতাংশ এবং আমানত ও ঋণ অগ্রিমের গড় সুদহার ব্যবধান দাঁড়ায় ৩.১শতাংশ । [মোহাম্মদ আবদুল মজিদ]