বদরউদ্দিন শাহ্ মাদার: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

(Added Ennglish article link)
 
সম্পাদনা সারাংশ নেই
 
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
[[Category:বাংলাপিডিয়া]]
[[Category:বাংলাপিডিয়া]]
'''বদরউদ্দিন শাহ্ মাদার '''(১৫শ শতক)'''  '''সুফি সাধক, যাঁর নামে মাদারীপুর জেলা শহরের নামকরণ করা হয়েছে। খ্রিস্টীয় পনের শতকে মধ্যপ্রাচ্য থেকে যে ক’জন সুফিসাধক বাংলাদেশে এসেছিলেন, বদরউদ্দিন শাহ্ মাদার তাঁদের অন্যতম।  [[ইসলাম|ইসলাম]] প্রচারের উদ্দেশ্য নিয়েই তাঁরা এ এলাকায় আগমন করেন। বেশ কয়েকজন সুফি বৃহত্তর ফরিদপুর জেলার বিভিন্ন স্থানে তাঁদের আস্তানা গড়ে তোলেন। তাঁদের মধ্যে বদরউদ্দিন শাহ্ মাদার ফরিদপুর থেকে দক্ষিণ-পূর্ব দিকে বরিশাল যাওয়ার পথে জল ও জঙ্গলে পূর্ণ একটি স্থানে এসে উপস্থিত হন এবং পদ্মা নদীর শাখা আড়িয়ালখাঁ নদের দক্ষিণ তীরে আস্তানা গড়ে তোলেন। ক্রমশ তাঁর আস্তানায় ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের ভিড় বাড়তে থাকে। এভাবে আস্তানাকে ঘিরে প্রথমে গড়ে ওঠে ছোট একটি বাজার। পরে সেই বাজারকে ঘিরে আস্তে আস্তে গড়ে ওঠে বিশাল এক জনবসতি। এক সময় মাদারের নামানুসারে এই আস্তানা কেন্দ্রিক জনবসতির নাম হয় মাদারীপুর। বর্তমানে মাদারীপুর একটি পূর্ণাঙ্গ জেলা। আড়িয়ালখাঁ নদের দক্ষিণ তীরে এবং মাদারীপুর জেলা সদরের উত্তর-পূর্ব দিকে গোরস্থানের পাশে মাদারের  [[দরগাহ|দরগাহ]] শরিফ এখনও রয়েছে। এটি সংক্ষেপে শাহ্ মাদারের দরগাহ নামে পরিচিত।
'''বদরউদ্দিন শাহ্ মাদার''' (১৫শ শতক) সুফি সাধক, যাঁর নামে মাদারীপুর জেলা শহরের নামকরণ করা হয়েছে। খ্রিস্টীয় পনের শতকে মধ্যপ্রাচ্য থেকে যে ক’জন সুফিসাধক বাংলাদেশে এসেছিলেন, বদরউদ্দিন শাহ্ মাদার তাঁদের অন্যতম।  [[ইসলাম|ইসলাম]] প্রচারের উদ্দেশ্য নিয়েই তাঁরা এ এলাকায় আগমন করেন। বেশ কয়েকজন সুফি বৃহত্তর ফরিদপুর জেলার বিভিন্ন স্থানে তাঁদের আস্তানা গড়ে তোলেন। তাঁদের মধ্যে বদরউদ্দিন শাহ্ মাদার ফরিদপুর থেকে দক্ষিণ-পূর্ব দিকে বরিশাল যাওয়ার পথে জল ও জঙ্গলে পূর্ণ একটি স্থানে এসে উপস্থিত হন এবং পদ্মা নদীর শাখা আড়িয়ালখাঁ নদের দক্ষিণ তীরে আস্তানা গড়ে তোলেন। ক্রমশ তাঁর আস্তানায় ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের ভিড় বাড়তে থাকে। এভাবে আস্তানাকে ঘিরে প্রথমে গড়ে ওঠে ছোট একটি বাজার। পরে সেই বাজারকে ঘিরে আস্তে আস্তে গড়ে ওঠে বিশাল এক জনবসতি। এক সময় মাদারের নামানুসারে এই আস্তানা কেন্দ্রিক জনবসতির নাম হয় মাদারীপুর। বর্তমানে মাদারীপুর একটি পূর্ণাঙ্গ জেলা। আড়িয়ালখাঁ নদের দক্ষিণ তীরে এবং মাদারীপুর জেলা সদরের উত্তর-পূর্ব দিকে গোরস্থানের পাশে মাদারের  [[দরগাহ|দরগাহ]] শরিফ এখনও রয়েছে। এটি সংক্ষেপে শাহ্ মাদারের দরগাহ নামে পরিচিত।


জনশ্রুতি আছে যে, ভাঙতে ভাঙতে আড়িয়ালখাঁ যখন শাহ্ মাদারের দরগার সন্নিকটে এসে পৌঁছায়, তখন এক অলৌকিক ঘটনা ঘটে। এখানে এসে আড়িয়ালখাঁর স্রোতের গতিমুখ বদলে যায়, থেমে যায় দরগাহর সমূহ ভাঙন। আশেপাশের এলাকা ভাঙনের কবলে পড়ে বিলীন হয়ে গেলেও শাহ্ মাদারের দরগাহ এখনও অক্ষত রয়েছে। এর ফলে মাদারীপুর শহরটি দরগাহর দক্ষিণ দিকে ক্রমশ বিস্তৃতির সুযোগ পাচ্ছে। প্রতিবছর দেশ-বিদেশের অজস্র পুণ্যার্থী শাহ্ মাদারের দরগা জিয়ারত করার উদ্দেশ্যে মাদারীপুরে আসেন। এই দরগাহ মাদারীপুরের ঐতিহ্যবাহী প্রত্নসম্পদ হিসেবে চিহ্নিত ও স্বীকৃত।
জনশ্রুতি আছে যে, ভাঙতে ভাঙতে আড়িয়ালখাঁ যখন শাহ্ মাদারের দরগার সন্নিকটে এসে পৌঁছায়, তখন এক অলৌকিক ঘটনা ঘটে। এখানে এসে আড়িয়ালখাঁর স্রোতের গতিমুখ বদলে যায়, থেমে যায় দরগাহর সমূহ ভাঙন। আশেপাশের এলাকা ভাঙনের কবলে পড়ে বিলীন হয়ে গেলেও শাহ্ মাদারের দরগাহ এখনও অক্ষত রয়েছে। এর ফলে মাদারীপুর শহরটি দরগাহর দক্ষিণ দিকে ক্রমশ বিস্তৃতির সুযোগ পাচ্ছে। প্রতিবছর দেশ-বিদেশের অজস্র পুণ্যার্থী শাহ্ মাদারের দরগা জিয়ারত করার উদ্দেশ্যে মাদারীপুরে আসেন। এই দরগাহ মাদারীপুরের ঐতিহ্যবাহী প্রত্নসম্পদ হিসেবে চিহ্নিত ও স্বীকৃত। [তপন বাগচী]


[তপন বাগচী]
[[en:Badruddin Shah Madar]]
[[en:Badruddin Shah Madar]]
[[en:Badruddin Shah Madar]]


[[en:Badruddin Shah Madar]]
[[en:Badruddin Shah Madar]]

১০:১১, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ

বদরউদ্দিন শাহ্ মাদার (১৫শ শতক) সুফি সাধক, যাঁর নামে মাদারীপুর জেলা শহরের নামকরণ করা হয়েছে। খ্রিস্টীয় পনের শতকে মধ্যপ্রাচ্য থেকে যে ক’জন সুফিসাধক বাংলাদেশে এসেছিলেন, বদরউদ্দিন শাহ্ মাদার তাঁদের অন্যতম।  ইসলাম প্রচারের উদ্দেশ্য নিয়েই তাঁরা এ এলাকায় আগমন করেন। বেশ কয়েকজন সুফি বৃহত্তর ফরিদপুর জেলার বিভিন্ন স্থানে তাঁদের আস্তানা গড়ে তোলেন। তাঁদের মধ্যে বদরউদ্দিন শাহ্ মাদার ফরিদপুর থেকে দক্ষিণ-পূর্ব দিকে বরিশাল যাওয়ার পথে জল ও জঙ্গলে পূর্ণ একটি স্থানে এসে উপস্থিত হন এবং পদ্মা নদীর শাখা আড়িয়ালখাঁ নদের দক্ষিণ তীরে আস্তানা গড়ে তোলেন। ক্রমশ তাঁর আস্তানায় ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের ভিড় বাড়তে থাকে। এভাবে আস্তানাকে ঘিরে প্রথমে গড়ে ওঠে ছোট একটি বাজার। পরে সেই বাজারকে ঘিরে আস্তে আস্তে গড়ে ওঠে বিশাল এক জনবসতি। এক সময় মাদারের নামানুসারে এই আস্তানা কেন্দ্রিক জনবসতির নাম হয় মাদারীপুর। বর্তমানে মাদারীপুর একটি পূর্ণাঙ্গ জেলা। আড়িয়ালখাঁ নদের দক্ষিণ তীরে এবং মাদারীপুর জেলা সদরের উত্তর-পূর্ব দিকে গোরস্থানের পাশে মাদারের  দরগাহ শরিফ এখনও রয়েছে। এটি সংক্ষেপে শাহ্ মাদারের দরগাহ নামে পরিচিত।

জনশ্রুতি আছে যে, ভাঙতে ভাঙতে আড়িয়ালখাঁ যখন শাহ্ মাদারের দরগার সন্নিকটে এসে পৌঁছায়, তখন এক অলৌকিক ঘটনা ঘটে। এখানে এসে আড়িয়ালখাঁর স্রোতের গতিমুখ বদলে যায়, থেমে যায় দরগাহর সমূহ ভাঙন। আশেপাশের এলাকা ভাঙনের কবলে পড়ে বিলীন হয়ে গেলেও শাহ্ মাদারের দরগাহ এখনও অক্ষত রয়েছে। এর ফলে মাদারীপুর শহরটি দরগাহর দক্ষিণ দিকে ক্রমশ বিস্তৃতির সুযোগ পাচ্ছে। প্রতিবছর দেশ-বিদেশের অজস্র পুণ্যার্থী শাহ্ মাদারের দরগা জিয়ারত করার উদ্দেশ্যে মাদারীপুরে আসেন। এই দরগাহ মাদারীপুরের ঐতিহ্যবাহী প্রত্নসম্পদ হিসেবে চিহ্নিত ও স্বীকৃত। [তপন বাগচী]