বসু, হেমেন্দ্রমোহন: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

(Added Ennglish article link)
 
সম্পাদনা সারাংশ নেই
 
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
[[Category:বাংলাপিডিয়া]]
[[Category:বাংলাপিডিয়া]]
[[Image:BoseHemendraMohan.jpg|thumb|400px|right|হেমেন্দ্রমোহন বসু]]
'''বসু, হেমেন্দ্রমোহন''' (১৮৬৪-১৯১৬)  ব্যবসায় উদ্যোক্তা এবং  [[গ্রামোফোন|গ্রামোফোন]] তৈরি ও বাণিজ্যিকীকরণের ক্ষেত্রে প্রথম ভারতীয়। ময়মনসিংহের জয়সিদ্ধি গ্রামে তাঁর জন্ম। তিনি কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে পড়াশুনা করেন। কিন্তু ডাক্তারি পেশা গ্রহণের পরিবর্তে তিনি বাণিজ্যকে পেশা হিসেবে গ্রহণ করেন।
'''বসু, হেমেন্দ্রমোহন''' (১৮৬৪-১৯১৬)  ব্যবসায় উদ্যোক্তা এবং  [[গ্রামোফোন|গ্রামোফোন]] তৈরি ও বাণিজ্যিকীকরণের ক্ষেত্রে প্রথম ভারতীয়। ময়মনসিংহের জয়সিদ্ধি গ্রামে তাঁর জন্ম। তিনি কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে পড়াশুনা করেন। কিন্তু ডাক্তারি পেশা গ্রহণের পরিবর্তে তিনি বাণিজ্যকে পেশা হিসেবে গ্রহণ করেন।


হেমেন্দ্রমোহন সুগন্ধী দ্রব্যের প্রতি বিশেষ আগ্রহী ছিলেন। তাই ১৮৯৪ সালে তিনি ‘বোস পারফিউমার্স’ বাণিজ্যিক সনদে সুগন্ধী দ্রব্য প্রস্ত্তত করা শুরু করেন এবং অতি অল্প সময়ে এতে সফল হন। শীঘ্রই তিনি তাঁর পণ্যসামগ্রীতে কেশতৈল ও অন্যান্য প্রসাধনী দ্রব্য যুক্ত করেন এবং কলকাতার ৬ নম্বর শিবনারায়ণ দাস লেনে একটি কারখানা স্থাপন করেন। ১৯০০ সালে তিনি ৫ নম্বর শিবনারায়ণ দাস লেনে ‘কুন্তলীন প্রেস’ নামে একটি মুদ্রণ ও প্রকাশনা সংস্থাও স্থাপন করেন। বিদেশী সাইকেল, বিশেষত রোভার সাইকেলের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে তিনি প্রথমবারের মতো সাইকেল তৈরির একটি কারখানাও প্রতিষ্ঠা করেন।
হেমেন্দ্রমোহন সুগন্ধী দ্রব্যের প্রতি বিশেষ আগ্রহী ছিলেন। তাই ১৮৯৪ সালে তিনি ‘বোস পারফিউমার্স’ বাণিজ্যিক সনদে সুগন্ধী দ্রব্য প্রস্ত্তত করা শুরু করেন এবং অতি অল্প সময়ে এতে সফল হন। শীঘ্রই তিনি তাঁর পণ্যসামগ্রীতে কেশতৈল ও অন্যান্য প্রসাধনী দ্রব্য যুক্ত করেন এবং কলকাতার ৬ নম্বর শিবনারায়ণ দাস লেনে একটি কারখানা স্থাপন করেন। ১৯০০ সালে তিনি ৫ নম্বর শিবনারায়ণ দাস লেনে ‘কুন্তলীন প্রেস’ নামে একটি মুদ্রণ ও প্রকাশনা সংস্থাও স্থাপন করেন। বিদেশী সাইকেল, বিশেষত রোভার সাইকেলের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে তিনি প্রথমবারের মতো সাইকেল তৈরির একটি কারখানাও প্রতিষ্ঠা করেন।


হেমেন্দ্রমোহনের পরবর্তী অর্জন গ্রামোফোন রেকর্ডস।১৯০০ সালে তিনি পাশ্চাত্য থেকে গ্রামোফোন তৈরির প্রযুক্তি আমদানি করে কলকাতায়
হেমেন্দ্রমোহনের পরবর্তী অর্জন গ্রামোফোন রেকর্ডস।১৯০০ সালে তিনি পাশ্চাত্য থেকে গ্রামোফোন তৈরির প্রযুক্তি আমদানি করে কলকাতায় একটি গ্রামোফোন রেকর্ডিং কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন এবং এর মাধ্যমে গ্রামোফোন রেকর্ডস প্রস্ত্তত ও বিতরণ শুরু করেন। এ ক্ষেত্রেও তিনি ভারতীয়দের মধ্যে প্রথম এবং এ ব্যবসায় তাঁর সাফল্য পূর্ববর্তী সকল অর্জনকে ছাড়িয়ে যায়। বাজারে তাঁর রেকর্ড ‘এইচ বোস’স রেকর্ডস’ নামে পরিচিতি লাভ করে। তাঁর তৈরি রেকর্ডের মাধ্যমেই  [[বসু, আচার্য জগদীশচন্দ্র|জগদীশচন্দ্র বসু]],  [[রায়, প্রফুল্লচন্দ্র|প্রফুল্লচন্দ্র রায়]], সুরেন্দ্রনাথ মৈত্র,  [[ঠাকুর, রবীন্দ্রনাথ|রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর]] এবং দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের মতো ব্যক্তিদের আবৃত্তি, বাণী ও সাক্ষাৎকার ধারণ করা সম্ভব হয়।
[[Image:BoseHemendraMohan.jpg|thumb|400px|right|হেমেন্দ্রমোহন বসু]]
 
একটি গ্রামোফোন রেকর্ডিং কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন এবং এর মাধ্যমে গ্রামোফোন রেকর্ডস প্রস্ত্তত ও বিতরণ শুরু করেন। এ ক্ষেত্রেও তিনি ভারতীয়দের মধ্যে প্রথম এবং এ ব্যবসায় তাঁর সাফল্য পূর্ববর্তী সকল অর্জনকে ছাড়িয়ে যায়। বাজারে তাঁর রেকর্ড ‘এইচ বোস’স রেকর্ডস’ নামে পরিচিতি লাভ করে। তাঁর তৈরি রেকর্ডের মাধ্যমেই  [[বসু, আচার্য জগদীশচন্দ্র|জগদীশচন্দ্র বসু]],  [[রায়, প্রফুল্লচন্দ্র|প্রফুল্লচন্দ্র রায়]], সুরেন্দ্রনাথ মৈত্র,  [[ঠাকুর, রবীন্দ্রনাথ|রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর]] এবং দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের মতো ব্যক্তিদের আবৃত্তি, বাণী ও সাক্ষাৎকার ধারণ করা সম্ভব হয়।


১৯০৭ সাল থেকে এইচ বোস’স রেকর্ডস-এর অসংখ্য ডিস্ক বাজারে মুক্তি পায় এবং এর চাহিদা ক্রমশ এতই বৃদ্ধি পায় যে, হেমেন্দ্র ভারতের একজন খ্যাতিমান ও সম্মানিত ব্যক্তিতে পরিণত হন। তাঁর তৈরি ডিস্ক ‘স্বদেশী রেকর্ডস’ নামে পরিচিত হয়, কারণ তিনি ছিলেন একজন বাঙালি শিল্পোদ্যোক্তা এবং তিনি  [[স্বদেশী আন্দোলন|স্বদেশী আন্দোলন]] ও জাতীয়তাবাদের ওপর অনেক রেকর্ড প্রকাশ করেছিলেন। ১৯১৬ সালের ২৮ আগস্ট তাঁর মৃত্যু হয়।  [সিরাজুল ইসলাম]
১৯০৭ সাল থেকে এইচ বোস’স রেকর্ডস-এর অসংখ্য ডিস্ক বাজারে মুক্তি পায় এবং এর চাহিদা ক্রমশ এতই বৃদ্ধি পায় যে, হেমেন্দ্র ভারতের একজন খ্যাতিমান ও সম্মানিত ব্যক্তিতে পরিণত হন। তাঁর তৈরি ডিস্ক ‘স্বদেশী রেকর্ডস’ নামে পরিচিত হয়, কারণ তিনি ছিলেন একজন বাঙালি শিল্পোদ্যোক্তা এবং তিনি  [[স্বদেশী আন্দোলন|স্বদেশী আন্দোলন]] ও জাতীয়তাবাদের ওপর অনেক রেকর্ড প্রকাশ করেছিলেন। ১৯১৬ সালের ২৮ আগস্ট তাঁর মৃত্যু হয়।  [সিরাজুল ইসলাম]


[[en:Bose, Hemendra Mohan]]
[[en:Bose, Hemendra Mohan]]
[[en:Bose, Hemendra Mohan]]
[[en:Bose, Hemendra Mohan]]


[[en:Bose, Hemendra Mohan]]
[[en:Bose, Hemendra Mohan]]

০৭:৫৮, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ

হেমেন্দ্রমোহন বসু

বসু, হেমেন্দ্রমোহন (১৮৬৪-১৯১৬)  ব্যবসায় উদ্যোক্তা এবং  গ্রামোফোন তৈরি ও বাণিজ্যিকীকরণের ক্ষেত্রে প্রথম ভারতীয়। ময়মনসিংহের জয়সিদ্ধি গ্রামে তাঁর জন্ম। তিনি কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে পড়াশুনা করেন। কিন্তু ডাক্তারি পেশা গ্রহণের পরিবর্তে তিনি বাণিজ্যকে পেশা হিসেবে গ্রহণ করেন।

হেমেন্দ্রমোহন সুগন্ধী দ্রব্যের প্রতি বিশেষ আগ্রহী ছিলেন। তাই ১৮৯৪ সালে তিনি ‘বোস পারফিউমার্স’ বাণিজ্যিক সনদে সুগন্ধী দ্রব্য প্রস্ত্তত করা শুরু করেন এবং অতি অল্প সময়ে এতে সফল হন। শীঘ্রই তিনি তাঁর পণ্যসামগ্রীতে কেশতৈল ও অন্যান্য প্রসাধনী দ্রব্য যুক্ত করেন এবং কলকাতার ৬ নম্বর শিবনারায়ণ দাস লেনে একটি কারখানা স্থাপন করেন। ১৯০০ সালে তিনি ৫ নম্বর শিবনারায়ণ দাস লেনে ‘কুন্তলীন প্রেস’ নামে একটি মুদ্রণ ও প্রকাশনা সংস্থাও স্থাপন করেন। বিদেশী সাইকেল, বিশেষত রোভার সাইকেলের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে তিনি প্রথমবারের মতো সাইকেল তৈরির একটি কারখানাও প্রতিষ্ঠা করেন।

হেমেন্দ্রমোহনের পরবর্তী অর্জন গ্রামোফোন রেকর্ডস।১৯০০ সালে তিনি পাশ্চাত্য থেকে গ্রামোফোন তৈরির প্রযুক্তি আমদানি করে কলকাতায় একটি গ্রামোফোন রেকর্ডিং কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন এবং এর মাধ্যমে গ্রামোফোন রেকর্ডস প্রস্ত্তত ও বিতরণ শুরু করেন। এ ক্ষেত্রেও তিনি ভারতীয়দের মধ্যে প্রথম এবং এ ব্যবসায় তাঁর সাফল্য পূর্ববর্তী সকল অর্জনকে ছাড়িয়ে যায়। বাজারে তাঁর রেকর্ড ‘এইচ বোস’স রেকর্ডস’ নামে পরিচিতি লাভ করে। তাঁর তৈরি রেকর্ডের মাধ্যমেই  জগদীশচন্দ্র বসুপ্রফুল্লচন্দ্র রায়, সুরেন্দ্রনাথ মৈত্র,  রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের মতো ব্যক্তিদের আবৃত্তি, বাণী ও সাক্ষাৎকার ধারণ করা সম্ভব হয়।

১৯০৭ সাল থেকে এইচ বোস’স রেকর্ডস-এর অসংখ্য ডিস্ক বাজারে মুক্তি পায় এবং এর চাহিদা ক্রমশ এতই বৃদ্ধি পায় যে, হেমেন্দ্র ভারতের একজন খ্যাতিমান ও সম্মানিত ব্যক্তিতে পরিণত হন। তাঁর তৈরি ডিস্ক ‘স্বদেশী রেকর্ডস’ নামে পরিচিত হয়, কারণ তিনি ছিলেন একজন বাঙালি শিল্পোদ্যোক্তা এবং তিনি  স্বদেশী আন্দোলন ও জাতীয়তাবাদের ওপর অনেক রেকর্ড প্রকাশ করেছিলেন। ১৯১৬ সালের ২৮ আগস্ট তাঁর মৃত্যু হয়।  [সিরাজুল ইসলাম]