গোপালপুর উপজেলা: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
NasirkhanBot (আলোচনা | অবদান) অ (Robot: Automated text replacement (-'''''তথ্যসূত্র''''' +'''তথ্যসূত্র''')) |
সম্পাদনা সারাংশ নেই |
||
(একজন ব্যবহারকারী দ্বারা সম্পাদিত একটি মধ্যবর্তী সংশোধন দেখানো হচ্ছে না) | |||
১ নং লাইন: | ১ নং লাইন: | ||
[[Category:বাংলাপিডিয়া]] | [[Category:বাংলাপিডিয়া]] | ||
'''গোপালপুর উপজেলা''' ([[টাঙ্গাইল জেলা|টাঙ্গাইল জেলা]]) আয়তন: | '''গোপালপুর উপজেলা''' ([[টাঙ্গাইল জেলা|টাঙ্গাইল জেলা]]) আয়তন: ১৯৩.৩৭ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৪°২৯´ থেকে ২৪°৪১´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯°৪৫´ থেকে ৯০°০০´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে মধুপুর উপজেলা, দক্ষিণে ঘাটাইল ও ভূয়াপুর উপজেলা, পূর্বে ঘাটাইল ও মধুপুর উপজেলা, পশ্চিমে সরিষাবাড়ী ও ভূয়াপুর উপজেলা। | ||
''জনসংখ্যা'' | ''জনসংখ্যা'' ২৫২৩৩১; পুরুষ ১২৩৫০৪, মহিলা ১২৮৮২৭। মুসলিম ২৪২৬০০, হিন্দু ৯৬৭৪, বৌদ্ধ ১, খ্রিস্টান ১৯ এবং অন্যান্য ৩৭। | ||
জলাশয় আত্রাই, ঝিনাই ও বৈরান নদী এবং সরাতল বিল, দিগদা বিল, নগিল্লা বিল, ডোগা বিল ও শাখাল বিল উল্লেখযোগ্য। | জলাশয় আত্রাই, ঝিনাই ও বৈরান নদী এবং সরাতল বিল, দিগদা বিল, নগিল্লা বিল, ডোগা বিল ও শাখাল বিল উল্লেখযোগ্য। | ||
''প্রশাসন'' গোপালপুর থানা গঠিত ১৯২০ সালে এবং থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮৩ সালে। পৌরসভা গঠিত হয় ১৯৭৪ সালে। | ''প্রশাসন'' গোপালপুর থানা গঠিত ১৯২০ সালে এবং থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮৩ সালে। পৌরসভা গঠিত হয় ১৯৭৪ সালে। | ||
{| class="table table-bordered table-hover" | {| class="table table-bordered table-hover" | ||
|- | |- | ||
| colspan="9" | উপজেলা | | colspan="9" | উপজেলা | ||
|- | |- | ||
| rowspan="2" | পৌরসভা || rowspan="2" | ইউনিয়ন || rowspan="2" | মৌজা || rowspan="2" | গ্রাম || colspan="2" | জনসংখ্যা || rowspan="2" | ঘনত্ব(প্রতি বর্গ কিমি) || colspan="2" | শিক্ষার হার (%) | |||
|- | |- | ||
| শহর || গ্রাম || শহর || গ্রাম | | শহর || গ্রাম || শহর || গ্রাম | ||
|- | |- | ||
| ১ | | ১ || ৭ || ১১১ || ১৫৮ || ৫০১৬০ || ২০২১৭১ || ১৩০৫ || ৪৯.৫ || ৪৪.৮ | ||
|} | |} | ||
{| class="table table-bordered table-hover" | {| class="table table-bordered table-hover" | ||
|- | |- | ||
|পৌরসভা | | colspan="9" |পৌরসভা | ||
|- | |- | ||
| আয়তন (বর্গ কিমি) || ওয়ার্ড || মহল্লা || লোকসংখ্যা || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) || শিক্ষার হার (%) | | আয়তন (বর্গ কিমি) || ওয়ার্ড || মহল্লা || লোকসংখ্যা || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) || শিক্ষার হার (%) | ||
|- | |- | ||
| ২৩. | | ২৩.১৫ || ৯ || ৩৫ || ৫০১৬০ || ২১৬৭ || ৪৯.৫ | ||
|} | |} | ||
{| class="table table-bordered table-hover" | {| class="table table-bordered table-hover" | ||
|- | |- | ||
| ইউনিয়ন | | colspan="9" | ইউনিয়ন | ||
|- | |- | ||
| rowspan="2" | ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড || rowspan="2" | আয়তন (একর) || colspan="2" | লোকসংখ্যা || rowspan="2" | শিক্ষার হার (%) | | rowspan="2" | ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড || rowspan="2" | আয়তন (একর) || colspan="2" | লোকসংখ্যা || rowspan="2" | শিক্ষার হার (%) | ||
৪৩ নং লাইন: | ৩৩ নং লাইন: | ||
| পুরুষ || মহিলা | | পুরুষ || মহিলা | ||
|- | |- | ||
| আলম নগর ১৭ | | আলম নগর ১৭ || ৪৭৭৬ || ৯৫৯৯ || ১০১৫৩ || ৪১.২ | ||
|- | |- | ||
| ঝাওয়াইল ৭৩ | | ঝাওয়াইল ৭৩ || ৬৮৬২ || ১৫৭৪৯ || ১৬৯২৬ || ৪২.৩ | ||
|- | |- | ||
| ধোপাকান্দি ২১ | | ধোপাকান্দি ২১ || ৫৪০৮ || ১২২৬৪ || ১২৭৩৬ || ৪৫.৫ | ||
|- | |- | ||
| নগদাশিমলা ৯৪ | | নগদাশিমলা ৯৪ || ৬৫২৯ || ১৫৭৫৯ || ১৫৬৭৭ || ৪৭.৫ | ||
|- | |- | ||
| মির্জাপুর ৮০ | | মির্জাপুর ৮০ || ৫৫৯০ || ১৩১৬৮ || ১৪১৯১ || ৪২.৮ | ||
|- | |- | ||
| হাদিরা ৫৮ | | হাদিরা ৫৮ || ৬২৯৭ || ১৬০১৬ || ১৬৫৩৫ || ৪৬.৬ | ||
|- | |- | ||
| হেমনগর ৬৫ | | হেমনগর ৬৫ || ৬১৪১ || ১৬১৭৮ || ১৭২২০ || ৪৫.৯ | ||
|} | |} | ||
''সূত্র'' আদমশুমারি রিপোর্ট | ''সূত্র'' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো। | ||
''প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ'' খামার বাড়ী ও আনন্দময়ী কালীমন্দির। | ''প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ'' খামার বাড়ী ও আনন্দময়ী কালীমন্দির। | ||
'' | [[Image:GopalpurUpazila.jpg|thumb|400px|right]] | ||
''মুক্তিযুদ্ধ'' ১৯৭১ সালের এপ্রিল মাসের প্রথম সপ্তাহে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা গোপালপুর থানা দখল করে নেয়। এরপর থানার অস্ত্রশস্ত্র আয়ত্ত করে থানা ভবনে আগুন ধরিয়ে দেয়। উপজেলার পানকাতার, সাইলাজানি, হেমনগর প্রভৃতি স্থানে পাকসেনাদের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের যুদ্ধ হয়। উপজেলায় ১টি বধ্যভূমি ও ১টি গণকবর রয়েছে, ১টি স্মৃতিস্তম্ভ স্থাপিত হয়েছে। | |||
''বিস্তারিত দেখুন'' গোপালপুর উপজেলা, ''বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ'', বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ২। | |||
''ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান'' মসজিদ ৩৯৪, মন্দির ৩৯। | |||
''শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান'' গড় হার | ''শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান'' গড় হার ৪৫.৭%; পুরুষ ৪৭.৯%, মহিলা ৪৩.৬%। কলেজ ৫, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৪৪, প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৩৫, মাদ্রাসা ৪৬। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: গোপালপুর ডিগ্রি কলেজ (১৯৬৮), মেহেরুন্নেছা মহিলা কলেজ (১৯৯৫), হেমনগর শশীমূখী উচ্চ বিদ্যালয় (১৯০০), রাধারাণী পাইলট উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় (১৯০২), সূতি ভি. এম উচ্চ বিদ্যালয় (১৯২০), রানী হেমন্তকুমারী উচ্চ বিদ্যালয়। | ||
পত্র- | ''পত্র-পত্রিকা'' গোপালপুর বার্তা (১৯৮৮), বৈরান (সাহিত্যপত্র) ও আচড় (সাহিত্যপত্র)। | ||
''সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান'' লাইব্রেরি ২, ক্লাব ৩, সাংস্কৃতিক সংগঠন ১। | ''সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান'' লাইব্রেরি ২, ক্লাব ৩, সাংস্কৃতিক সংগঠন ১। | ||
''জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস'' কৃষি ৬৬.৯৩%, অকৃষি শ্রমিক ২.০৬%, শিল্প ০.৮২%, ব্যবসা ১০.৫৭%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ৪.৬৭%, চাকরি ৬.০৯%, নির্মাণ ১.১২%, ধর্মীয় সেবা ০.১৭%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.৬১% এবং অন্যান্য ৬.৯৬%। | ''জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস'' কৃষি ৬৬.৯৩%, অকৃষি শ্রমিক ২.০৬%, শিল্প ০.৮২%, ব্যবসা ১০.৫৭%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ৪.৬৭%, চাকরি ৬.০৯%, নির্মাণ ১.১২%, ধর্মীয় সেবা ০.১৭%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.৬১% এবং অন্যান্য ৬.৯৬%। | ||
''কৃষিভূমির মালিকানা'' ভূমিমালিক ৬৩.৯২%, ভূমিহীন ৩৬.০৮%। শহরে ৫৪.৬৭% এবং গ্রামে ৬৫.৯৬% পরিবারের কৃষিজমি রয়েছে। | ''কৃষিভূমির মালিকানা'' ভূমিমালিক ৬৩.৯২%, ভূমিহীন ৩৬.০৮%। শহরে ৫৪.৬৭% এবং গ্রামে ৬৫.৯৬% পরিবারের কৃষিজমি রয়েছে। | ||
''প্রধান কৃষি ফসল'' ধান, পাট, ডাল, সরিষা, গম, পিঁয়াজ, রসুন, শাকসবজি। | ''প্রধান কৃষি ফসল'' ধান, পাট, ডাল, সরিষা, গম, পিঁয়াজ, রসুন, শাকসবজি। | ||
''বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি'' চিনা, কাউন, তিসি, যব, স্থানীয় জাতের ধান। | ''বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি'' চিনা, কাউন, তিসি, যব, স্থানীয় জাতের ধান। | ||
''প্রধান ফল- | ''প্রধান ফল-ফলাদি'' আম, কাঁঠাল, কলা, লিচু। | ||
''মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার'' এ উপজেলায় মৎস, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার রয়েছে। | ''মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার'' এ উপজেলায় মৎস, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার রয়েছে। | ||
''যোগাযোগ বিশেষত্ব'' | ''যোগাযোগ বিশেষত্ব'' পাকা রাস্তা ১৩৮.১৩ কিমি, আধা-পাকা রাস্তা ২.৫২ কিমি, কাঁচা রাস্তা ৩৮৭.৫৭ কিমি; রেলপথ ৭.৫ কিমি। | ||
''বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন'' ডুলি, ঘোড়ার গাড়ি, পাল্কি। | ''বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন'' ডুলি, ঘোড়ার গাড়ি, পাল্কি। | ||
''শিল্প ও কলকারখানা'' এ উপজেলায় টেক্সটাইল মিল, টুপি ফ্যাক্টরি, চাল কল, ইট ভাটা, ওয়েল্ডিং, তেল কল, করাত কল, স্টিল ও কাঠের আসবাবপত্র তৈরির কারখানা রয়েছে। | ''শিল্প ও কলকারখানা'' এ উপজেলায় টেক্সটাইল মিল, টুপি ফ্যাক্টরি, চাল কল, ইট ভাটা, ওয়েল্ডিং, তেল কল, করাত কল, স্টিল ও কাঠের আসবাবপত্র তৈরির কারখানা রয়েছে। | ||
''কুটিরশিল্প'' বাঁশ ও বেতের কাজ, স্বর্ণশিল্প, লৌহশিল্প, মৃৎশিল্প, বুননশিল্প। | ''কুটিরশিল্প'' বাঁশ ও বেতের কাজ, স্বর্ণশিল্প, লৌহশিল্প, মৃৎশিল্প, বুননশিল্প। | ||
''হাটবাজার ও মেলা'' কোনবাড়ির হাট, নলিন হাট, ভেংগুলা হাট, মোহরপুর হাট, মেহনগর হাট ও বনাওয়াইল হাট এবং গোপালপুরের নৌকা বাইচ মেলা, বৈশাখী মেলা, সূতিকাঙ্গাল দাসতলার রথমেলা, অম্বুবাঁচীর মেলা ও ডুবাইলের ঘোড়দৌড় মেলা উল্লেখযোগ্য। | ''হাটবাজার ও মেলা'' কোনবাড়ির হাট, নলিন হাট, ভেংগুলা হাট, মোহরপুর হাট, মেহনগর হাট ও বনাওয়াইল হাট এবং গোপালপুরের নৌকা বাইচ মেলা, বৈশাখী মেলা, সূতিকাঙ্গাল দাসতলার রথমেলা, অম্বুবাঁচীর মেলা ও ডুবাইলের ঘোড়দৌড় মেলা উল্লেখযোগ্য। | ||
''প্রধান রপ্তানিদ্রব্য'' | ''প্রধান রপ্তানিদ্রব্য'' পাট, চামড়া, সরিষা, কালাই, ধান, পিঁয়াজ। | ||
''বিদ্যুৎ ব্যবহার'' এ উপজেলার সবক’টি ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে | ''বিদ্যুৎ ব্যবহার'' এ উপজেলার সবক’টি ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ৪৯.৫% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে। | ||
''পানীয়জলের উৎস'' নলকূপ | ''পানীয়জলের উৎস'' নলকূপ ৯৬.০%, ট্যাপ ০.৯% এবং অন্যান্য ৩.১%। | ||
''স্যানিটেশন ব্যবস্থা'' এ উপজেলার | ''স্যানিটেশন ব্যবস্থা'' এ উপজেলার ৫৯.০% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৩৩.৮% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ৭.২% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই। | ||
''স্বাস্থ্যকেন্দ্র'' উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ৭, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ৪, ক্লিনিক ৩। | ''স্বাস্থ্যকেন্দ্র'' উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ৭, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ৪, ক্লিনিক ৩। | ||
''প্রাকৃতিক দুর্যোগ'' ১৯৮৮ সালের বন্যায় বহু লোক প্রাণ হারায় এবং ঘরবাড়ি, গবাদিপশু, ফসল ও সম্পদের ব্যাপক ক্ষতি হয়। | ''প্রাকৃতিক দুর্যোগ'' ১৯৮৮ সালের বন্যায় বহু লোক প্রাণ হারায় এবং ঘরবাড়ি, গবাদিপশু, ফসল ও সম্পদের ব্যাপক ক্ষতি হয়। | ||
এনজিও ব্র্যাক, আশা। [সমরেশ দেবনাথ] | ''এনজিও'' ব্র্যাক, আশা। [সমরেশ দেবনাথ] | ||
'''তথ্যসূত্র''' | '''তথ্যসূত্র''' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; গোপালপুর উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭। | ||
[[en:Gopalpur Upazila]] | [[en:Gopalpur Upazila]] |
১৬:১৪, ৫ অক্টোবর ২০২৩ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ
গোপালপুর উপজেলা (টাঙ্গাইল জেলা) আয়তন: ১৯৩.৩৭ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৪°২৯´ থেকে ২৪°৪১´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯°৪৫´ থেকে ৯০°০০´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে মধুপুর উপজেলা, দক্ষিণে ঘাটাইল ও ভূয়াপুর উপজেলা, পূর্বে ঘাটাইল ও মধুপুর উপজেলা, পশ্চিমে সরিষাবাড়ী ও ভূয়াপুর উপজেলা।
জনসংখ্যা ২৫২৩৩১; পুরুষ ১২৩৫০৪, মহিলা ১২৮৮২৭। মুসলিম ২৪২৬০০, হিন্দু ৯৬৭৪, বৌদ্ধ ১, খ্রিস্টান ১৯ এবং অন্যান্য ৩৭।
জলাশয় আত্রাই, ঝিনাই ও বৈরান নদী এবং সরাতল বিল, দিগদা বিল, নগিল্লা বিল, ডোগা বিল ও শাখাল বিল উল্লেখযোগ্য।
প্রশাসন গোপালপুর থানা গঠিত ১৯২০ সালে এবং থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮৩ সালে। পৌরসভা গঠিত হয় ১৯৭৪ সালে।
উপজেলা | ||||||||
পৌরসভা | ইউনিয়ন | মৌজা | গ্রাম | জনসংখ্যা | ঘনত্ব(প্রতি বর্গ কিমি) | শিক্ষার হার (%) | ||
শহর | গ্রাম | শহর | গ্রাম | |||||
১ | ৭ | ১১১ | ১৫৮ | ৫০১৬০ | ২০২১৭১ | ১৩০৫ | ৪৯.৫ | ৪৪.৮ |
পৌরসভা | ||||||||
আয়তন (বর্গ কিমি) | ওয়ার্ড | মহল্লা | লোকসংখ্যা | ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) | শিক্ষার হার (%) | |||
২৩.১৫ | ৯ | ৩৫ | ৫০১৬০ | ২১৬৭ | ৪৯.৫ |
ইউনিয়ন | ||||||||
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড | আয়তন (একর) | লোকসংখ্যা | শিক্ষার হার (%) | |||||
পুরুষ | মহিলা | |||||||
আলম নগর ১৭ | ৪৭৭৬ | ৯৫৯৯ | ১০১৫৩ | ৪১.২ | ||||
ঝাওয়াইল ৭৩ | ৬৮৬২ | ১৫৭৪৯ | ১৬৯২৬ | ৪২.৩ | ||||
ধোপাকান্দি ২১ | ৫৪০৮ | ১২২৬৪ | ১২৭৩৬ | ৪৫.৫ | ||||
নগদাশিমলা ৯৪ | ৬৫২৯ | ১৫৭৫৯ | ১৫৬৭৭ | ৪৭.৫ | ||||
মির্জাপুর ৮০ | ৫৫৯০ | ১৩১৬৮ | ১৪১৯১ | ৪২.৮ | ||||
হাদিরা ৫৮ | ৬২৯৭ | ১৬০১৬ | ১৬৫৩৫ | ৪৬.৬ | ||||
হেমনগর ৬৫ | ৬১৪১ | ১৬১৭৮ | ১৭২২০ | ৪৫.৯ |
সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।
প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ খামার বাড়ী ও আনন্দময়ী কালীমন্দির।
মুক্তিযুদ্ধ ১৯৭১ সালের এপ্রিল মাসের প্রথম সপ্তাহে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা গোপালপুর থানা দখল করে নেয়। এরপর থানার অস্ত্রশস্ত্র আয়ত্ত করে থানা ভবনে আগুন ধরিয়ে দেয়। উপজেলার পানকাতার, সাইলাজানি, হেমনগর প্রভৃতি স্থানে পাকসেনাদের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের যুদ্ধ হয়। উপজেলায় ১টি বধ্যভূমি ও ১টি গণকবর রয়েছে, ১টি স্মৃতিস্তম্ভ স্থাপিত হয়েছে।
বিস্তারিত দেখুন গোপালপুর উপজেলা, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ২।
ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদ ৩৯৪, মন্দির ৩৯।
শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৪৫.৭%; পুরুষ ৪৭.৯%, মহিলা ৪৩.৬%। কলেজ ৫, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৪৪, প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৩৫, মাদ্রাসা ৪৬। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: গোপালপুর ডিগ্রি কলেজ (১৯৬৮), মেহেরুন্নেছা মহিলা কলেজ (১৯৯৫), হেমনগর শশীমূখী উচ্চ বিদ্যালয় (১৯০০), রাধারাণী পাইলট উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় (১৯০২), সূতি ভি. এম উচ্চ বিদ্যালয় (১৯২০), রানী হেমন্তকুমারী উচ্চ বিদ্যালয়।
পত্র-পত্রিকা গোপালপুর বার্তা (১৯৮৮), বৈরান (সাহিত্যপত্র) ও আচড় (সাহিত্যপত্র)।
সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান লাইব্রেরি ২, ক্লাব ৩, সাংস্কৃতিক সংগঠন ১।
জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৬৬.৯৩%, অকৃষি শ্রমিক ২.০৬%, শিল্প ০.৮২%, ব্যবসা ১০.৫৭%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ৪.৬৭%, চাকরি ৬.০৯%, নির্মাণ ১.১২%, ধর্মীয় সেবা ০.১৭%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.৬১% এবং অন্যান্য ৬.৯৬%।
কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৬৩.৯২%, ভূমিহীন ৩৬.০৮%। শহরে ৫৪.৬৭% এবং গ্রামে ৬৫.৯৬% পরিবারের কৃষিজমি রয়েছে।
প্রধান কৃষি ফসল ধান, পাট, ডাল, সরিষা, গম, পিঁয়াজ, রসুন, শাকসবজি।
বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি চিনা, কাউন, তিসি, যব, স্থানীয় জাতের ধান।
প্রধান ফল-ফলাদি আম, কাঁঠাল, কলা, লিচু।
মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার এ উপজেলায় মৎস, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার রয়েছে।
যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকা রাস্তা ১৩৮.১৩ কিমি, আধা-পাকা রাস্তা ২.৫২ কিমি, কাঁচা রাস্তা ৩৮৭.৫৭ কিমি; রেলপথ ৭.৫ কিমি।
বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন ডুলি, ঘোড়ার গাড়ি, পাল্কি।
শিল্প ও কলকারখানা এ উপজেলায় টেক্সটাইল মিল, টুপি ফ্যাক্টরি, চাল কল, ইট ভাটা, ওয়েল্ডিং, তেল কল, করাত কল, স্টিল ও কাঠের আসবাবপত্র তৈরির কারখানা রয়েছে।
কুটিরশিল্প বাঁশ ও বেতের কাজ, স্বর্ণশিল্প, লৌহশিল্প, মৃৎশিল্প, বুননশিল্প।
হাটবাজার ও মেলা কোনবাড়ির হাট, নলিন হাট, ভেংগুলা হাট, মোহরপুর হাট, মেহনগর হাট ও বনাওয়াইল হাট এবং গোপালপুরের নৌকা বাইচ মেলা, বৈশাখী মেলা, সূতিকাঙ্গাল দাসতলার রথমেলা, অম্বুবাঁচীর মেলা ও ডুবাইলের ঘোড়দৌড় মেলা উল্লেখযোগ্য।
প্রধান রপ্তানিদ্রব্য পাট, চামড়া, সরিষা, কালাই, ধান, পিঁয়াজ।
বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ৪৯.৫% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।
পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৯৬.০%, ট্যাপ ০.৯% এবং অন্যান্য ৩.১%।
স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ৫৯.০% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৩৩.৮% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ৭.২% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।
স্বাস্থ্যকেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ৭, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ৪, ক্লিনিক ৩।
প্রাকৃতিক দুর্যোগ ১৯৮৮ সালের বন্যায় বহু লোক প্রাণ হারায় এবং ঘরবাড়ি, গবাদিপশু, ফসল ও সম্পদের ব্যাপক ক্ষতি হয়।
এনজিও ব্র্যাক, আশা। [সমরেশ দেবনাথ]
তথ্যসূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; গোপালপুর উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।