খঞ্জন: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
সম্পাদনা সারাংশ নেই |
সম্পাদনা সারাংশ নেই |
||
(একই ব্যবহারকারী দ্বারা সম্পাদিত ২টি মধ্যবর্তী সংশোধন দেখানো হচ্ছে না) | |||
২ নং লাইন: | ২ নং লাইন: | ||
'''খঞ্জন''' (Wagtail) লম্বালেজবিশিষ্ট, চড়ুই আকারের গায়ক পাখি। এদের বাইরের পালক সাদা। এরা বীজ, পোকামাকড়, ক্ষুদ্র শামুক, কেঁচো ইত্যাদি খায়। এসব পাখি দ্রুত হাঁটে ও দৌড়ায়, শিকার ধরতে ছুটে চলে। খঞ্জন সর্বক্ষণ লেজ নাড়ে, থাকে নদীনালার কাছে ও আর্দ্র তৃণভূমিতে। পুরুষ পাখি স্ত্রী পাখির তুলনায় উজ্জ্বল রঙের। একটু ভিন্ন ধরনের বনখঞ্জন (Dendronanthus indicus) বনে বাসা বাঁধে। এরা ঘাস ও শিকড় দিয়ে বাসা বানায়, তাতে চুল ও পালকের আস্তর থাকে। ডিম ৪-৬টি, রং হলুদ দাগসহ নীলচে-সাদা বা বাদামি। | '''খঞ্জন''' (Wagtail) লম্বালেজবিশিষ্ট, চড়ুই আকারের গায়ক পাখি। এদের বাইরের পালক সাদা। এরা বীজ, পোকামাকড়, ক্ষুদ্র শামুক, কেঁচো ইত্যাদি খায়। এসব পাখি দ্রুত হাঁটে ও দৌড়ায়, শিকার ধরতে ছুটে চলে। খঞ্জন সর্বক্ষণ লেজ নাড়ে, থাকে নদীনালার কাছে ও আর্দ্র তৃণভূমিতে। পুরুষ পাখি স্ত্রী পাখির তুলনায় উজ্জ্বল রঙের। একটু ভিন্ন ধরনের বনখঞ্জন (Dendronanthus indicus) বনে বাসা বাঁধে। এরা ঘাস ও শিকড় দিয়ে বাসা বানায়, তাতে চুল ও পালকের আস্তর থাকে। ডিম ৪-৬টি, রং হলুদ দাগসহ নীলচে-সাদা বা বাদামি। | ||
[[Image:Wagtail2.jpg|thumb|400px|right|পাকরা খঞ্জন]] [[Image:Wagtail1.jpg|thumb|400px|right|হলুদ খঞ্জন]] | |||
গোটা পৃথিবীতে খঞ্জন প্রজাতির সংখ্যা প্রায় ১২, বাংলাদেশে ৬, তন্মধ্যে একটি স্থায়ী, বাকিরা পরিযায়ী। | |||
'''''বাংলাদেশের খঞ্জন''''' | |||
[ | পাকরা খঞ্জন, [''Motacilla maderaspatensis'' White-browed Wagtail (Large Pied Wagtail)]: কালো ও সাদা পালকের বড় আকারের খঞ্জন, অনেকটা দোয়েলের মতো, কিন্তু ভ্রু সুস্পষ্ট সাদা রঙের। স্ত্রী পাখির রং ফ্যাকাশে ও বাদামি ধাঁচের। ছোট নদী ও পুকুরের ধারে জোড়ায় জোড়ায় থাকে। সর্বত্র বিস্তৃত। | ||
''পরিযায়ী'' | |||
''' | বন খঞ্জন, [''Dendronanthus indicus'' (''Motacilla indica''), Forest Wagtail]: পিঠ সবুজ-বাদামি। ডানা কালচে-বাদামি, তাতে হলুদ রঙের দুটি চওড়া ফোঁটা। লেজ গাঢ় বাদামি, কিনার সাদা। দেশের উত্তর-পূর্ব ও দক্ষিন ও চিরসবুজ বনে বিস্তৃত। | ||
''' | ''Motacilla alba'', White Wagtail: শীতকালে পালকের কালো পোঁচ কমে যায় বা লোপ পায়। নিচের অংশের মতো থুঁতনি ও গলা সাদা হয়ে ওঠে। স্ত্রী ও পুরুষ অভিন্ন। উন্মুক্ত তৃণভূমিতে বিক্ষিপ্ত দলে ঘুরে বেড়ায়, খাবার খোঁজে।সর্বত্র বিস্তৃত। | ||
Motacilla | খঞ্জন, ''Motacilla cinerea'', Grey Wagtail: প্রধানত ধূসর ও হলুদ রঙের পাখি। ছোট নদীর ধারে একা ঘুরে বেড়ায়। শীতকালে স্ত্রী ও পুরুষ দৃশ্যত অভিন্ন। গ্রীষ্মকালে পুরুষ পাখির চিবুক, গলা ও বুকের উপরের অংশ কালো রং ধারণ করে। সর্বত্র বিস্তৃত। | ||
'' | ''Motacilla citreola'', Citrine Wagtail [Yellow- headed Wagtail]: গ্রীষ্মকালে পুরুষ পাখির উজ্জ্বল হলুদ রঙের মাথা বৈশিষ্ট্যপূর্ণ। শীতকালে স্ত্রী ও পুরুষ পাখির চাঁদি ও পিঠ কালচে-ধূসর, পেটের দিক হলুদ-সাদা। চওড়া হলুদ রঙের ভ্রুরেখা ও অল্পবিস্তর হলুদ কপালের কারণে অন্য খঞ্জন থেকে স্পষ্টতই পৃথক। জলাভূমিতে বিক্ষিপ্ত বা বড় দলে থাকে। সর্বত্র বিস্তৃত। | ||
হলুদ খঞ্জন, ''Motacilla flava'', Yellow Wagtail: ছোট লম্বাটে, লম্বা লেজ, পিঠ প্রধানত হলুদ বা জলপাই সবুজ, বুক-পেট হলুদ। জলাভূমি বা ক্ষেতজমিতে সর্বক্ষণ উপর-নিচ লেজ দুলিয়ে ছোটাছুটি করে। সর্বত্র বিস্তৃত। [মোঃ আনোয়ারুল ইসলাম এবং শরীফ খান] | |||
Motacilla | |||
[[en:Wagtail]] | [[en:Wagtail]] |
১০:১৮, ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৪ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ
খঞ্জন (Wagtail) লম্বালেজবিশিষ্ট, চড়ুই আকারের গায়ক পাখি। এদের বাইরের পালক সাদা। এরা বীজ, পোকামাকড়, ক্ষুদ্র শামুক, কেঁচো ইত্যাদি খায়। এসব পাখি দ্রুত হাঁটে ও দৌড়ায়, শিকার ধরতে ছুটে চলে। খঞ্জন সর্বক্ষণ লেজ নাড়ে, থাকে নদীনালার কাছে ও আর্দ্র তৃণভূমিতে। পুরুষ পাখি স্ত্রী পাখির তুলনায় উজ্জ্বল রঙের। একটু ভিন্ন ধরনের বনখঞ্জন (Dendronanthus indicus) বনে বাসা বাঁধে। এরা ঘাস ও শিকড় দিয়ে বাসা বানায়, তাতে চুল ও পালকের আস্তর থাকে। ডিম ৪-৬টি, রং হলুদ দাগসহ নীলচে-সাদা বা বাদামি।
গোটা পৃথিবীতে খঞ্জন প্রজাতির সংখ্যা প্রায় ১২, বাংলাদেশে ৬, তন্মধ্যে একটি স্থায়ী, বাকিরা পরিযায়ী।
বাংলাদেশের খঞ্জন
পাকরা খঞ্জন, [Motacilla maderaspatensis White-browed Wagtail (Large Pied Wagtail)]: কালো ও সাদা পালকের বড় আকারের খঞ্জন, অনেকটা দোয়েলের মতো, কিন্তু ভ্রু সুস্পষ্ট সাদা রঙের। স্ত্রী পাখির রং ফ্যাকাশে ও বাদামি ধাঁচের। ছোট নদী ও পুকুরের ধারে জোড়ায় জোড়ায় থাকে। সর্বত্র বিস্তৃত।
পরিযায়ী
বন খঞ্জন, [Dendronanthus indicus (Motacilla indica), Forest Wagtail]: পিঠ সবুজ-বাদামি। ডানা কালচে-বাদামি, তাতে হলুদ রঙের দুটি চওড়া ফোঁটা। লেজ গাঢ় বাদামি, কিনার সাদা। দেশের উত্তর-পূর্ব ও দক্ষিন ও চিরসবুজ বনে বিস্তৃত।
Motacilla alba, White Wagtail: শীতকালে পালকের কালো পোঁচ কমে যায় বা লোপ পায়। নিচের অংশের মতো থুঁতনি ও গলা সাদা হয়ে ওঠে। স্ত্রী ও পুরুষ অভিন্ন। উন্মুক্ত তৃণভূমিতে বিক্ষিপ্ত দলে ঘুরে বেড়ায়, খাবার খোঁজে।সর্বত্র বিস্তৃত।
খঞ্জন, Motacilla cinerea, Grey Wagtail: প্রধানত ধূসর ও হলুদ রঙের পাখি। ছোট নদীর ধারে একা ঘুরে বেড়ায়। শীতকালে স্ত্রী ও পুরুষ দৃশ্যত অভিন্ন। গ্রীষ্মকালে পুরুষ পাখির চিবুক, গলা ও বুকের উপরের অংশ কালো রং ধারণ করে। সর্বত্র বিস্তৃত।
Motacilla citreola, Citrine Wagtail [Yellow- headed Wagtail]: গ্রীষ্মকালে পুরুষ পাখির উজ্জ্বল হলুদ রঙের মাথা বৈশিষ্ট্যপূর্ণ। শীতকালে স্ত্রী ও পুরুষ পাখির চাঁদি ও পিঠ কালচে-ধূসর, পেটের দিক হলুদ-সাদা। চওড়া হলুদ রঙের ভ্রুরেখা ও অল্পবিস্তর হলুদ কপালের কারণে অন্য খঞ্জন থেকে স্পষ্টতই পৃথক। জলাভূমিতে বিক্ষিপ্ত বা বড় দলে থাকে। সর্বত্র বিস্তৃত।
হলুদ খঞ্জন, Motacilla flava, Yellow Wagtail: ছোট লম্বাটে, লম্বা লেজ, পিঠ প্রধানত হলুদ বা জলপাই সবুজ, বুক-পেট হলুদ। জলাভূমি বা ক্ষেতজমিতে সর্বক্ষণ উপর-নিচ লেজ দুলিয়ে ছোটাছুটি করে। সর্বত্র বিস্তৃত। [মোঃ আনোয়ারুল ইসলাম এবং শরীফ খান]