দেবীদ্বার উপজেলা: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
সম্পাদনা সারাংশ নেই |
সম্পাদনা সারাংশ নেই |
||
৭১ নং লাইন: | ৭১ নং লাইন: | ||
''মুক্তিযুদ্ধ'' ১৯৭১ সালের ৩১ মার্চ কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কে পাকবাহিনীর সঙ্গে বাঙালিদের এক সংঘর্ষে ৩৩ জন বাঙালি শহীদ হন। তাছাড়া পাকবাহিনী ৭ আগস্ট চরকামতায়, ২৯ সেপ্টেম্বর জাকেরগঞ্জ এলাকায় এবং ১৪ নভেম্বর থানা সদরের নিকট গণহত্যা চালিয়ে বহু সংখ্যক নিরীহ লোককে হত্যা করে এবং ঘরবাড়িতে লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করে। উপজেলার বরকামতা, দেবীদ্বার থানা, বারুর, পোনরা গ্রাম প্রভৃতি স্থানে পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের যুদ্ধ সংঘটিত হয়। উপজেলায় মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন হিসেবে ১টি গণকবর ‘মুক্তিযোদ্ধা চত্তর’ নামে পরিচিত। | ''মুক্তিযুদ্ধ'' ১৯৭১ সালের ৩১ মার্চ কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কে পাকবাহিনীর সঙ্গে বাঙালিদের এক সংঘর্ষে ৩৩ জন বাঙালি শহীদ হন। তাছাড়া পাকবাহিনী ৭ আগস্ট চরকামতায়, ২৯ সেপ্টেম্বর জাকেরগঞ্জ এলাকায় এবং ১৪ নভেম্বর থানা সদরের নিকট গণহত্যা চালিয়ে বহু সংখ্যক নিরীহ লোককে হত্যা করে এবং ঘরবাড়িতে লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করে। উপজেলার বরকামতা, দেবীদ্বার থানা, বারুর, পোনরা গ্রাম প্রভৃতি স্থানে পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের যুদ্ধ সংঘটিত হয়। উপজেলায় মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন হিসেবে ১টি গণকবর ‘মুক্তিযোদ্ধা চত্তর’ নামে পরিচিত। | ||
''বিস্তারিত দেখুন'' দেবীদ্বার উপজেলা, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ৪। | ''বিস্তারিত দেখুন'' দেবীদ্বার উপজেলা, ''বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ'', বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ৪। | ||
''শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান'' গড় হার ৫২.৮%; পুরুষ ৫৪.৪%, মহিলা ৫১.৪%। কলেজ ৭, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৪৭, কারিগরি বিদ্যালয় ৩, মাদ্রাসা ৩০। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: দেবীদ্বার রেয়াজউদ্দীন পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৮), গঙ্গামন্ডল রাজ ইনস্টিটিউশন (১৯২২), ধামতী ইসলামিয়া কামিল মাদ্রাসা (১৯২০)। | ''শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান'' গড় হার ৫২.৮%; পুরুষ ৫৪.৪%, মহিলা ৫১.৪%। কলেজ ৭, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৪৭, কারিগরি বিদ্যালয় ৩, মাদ্রাসা ৩০। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: দেবীদ্বার রেয়াজউদ্দীন পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৮), গঙ্গামন্ডল রাজ ইনস্টিটিউশন (১৯২২), ধামতী ইসলামিয়া কামিল মাদ্রাসা (১৯২০)। | ||
১০৩ নং লাইন: | ১০৩ নং লাইন: | ||
''প্রধান রপ্তানিদ্রব্য'' আলু, শাকসবজি। | ''প্রধান রপ্তানিদ্রব্য'' আলু, শাকসবজি। | ||
''বিদ্যুৎ ব্যবহার'' এ উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন | ''বিদ্যুৎ ব্যবহার'' এ উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ৬৯.৪% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে। | ||
''পানীয়জলের উৎস'' নলকূপ ৯৩.৮%, ট্যাপ ২.২% এবং অন্যান্য ৪.০%। এ উপজেলার অগভীর নলকূপের পানিতে আর্সেনিকের উপস্থিতি প্রমাণিত হয়েছে। | ''পানীয়জলের উৎস'' নলকূপ ৯৩.৮%, ট্যাপ ২.২% এবং অন্যান্য ৪.০%। এ উপজেলার অগভীর নলকূপের পানিতে আর্সেনিকের উপস্থিতি প্রমাণিত হয়েছে। |
০২:৩০, ৭ অক্টোবর ২০২৩ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ
দেবীদ্বার উপজেলা (কুমিল্লা জেলা) আয়তন: ২৩৮.৬৫ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৩°২৯´ থেকে ২৩°৪২´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯০°৫৯´ থেকে ৯১°০৫´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে মুরাদনগর উপজেলা, দক্ষিণে চান্দিনা উপজেলা, পূর্বে বুড়িচং ও ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা, পশ্চিমে মুরাদনগর উপজেলা।
জনসংখ্যা ৪৩১৩৫২; পুরুষ ২০৪২০৭, মহিলা ২২৭১৪৫। মুসলিম ৪০৮৬৩৮, হিন্দু ২২৬৭৭, বৌদ্ধ ৩, খ্রিস্টান ১১ এবং অন্যান্য ২৩।
জলাশয় প্রধান নদী: গোমতী; ভিংলাবাড়ি খাল, কার্জন খাল এবং হাছন রাজার দিঘি, দেও দিঘি, পান দিঘি, ধামতীপাল দিঘি, জ্যোৎস্না জলমহাল ও ভিরাল্লা জলমহাল উল্লেখযোগ্য।
প্রশাসন দেবীদ্বার থানা গঠিত হয় ১৯১৫ সালে এবং থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮৩ সালে।
উপজেলা | ||||||||
পৌরসভা | ইউনিয়ন | মৌজা | গ্রাম | জনসংখ্যা | ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) | শিক্ষার হার (%) | ||
শহর | গ্রাম | শহর | গ্রাম | |||||
১ | ১৫ | ১২৯ | ১৯২ | ৬১৪১৮ | ৩৬৯৯৩৪ | ১৮০৭ | ৬০.৬ | ৫১.৫ |
পৌরসভা | ||||||||
আয়তন (বর্গ কিমি) | ওয়ার্ড | মহল্লা | লোকসংখ্যা | ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) | শিক্ষার হার (%) | |||
২১.০৫ | ৯ | ২২ | ৬১৪১৮ | ২৯১৮ | ৬০.৬ |
ইউনিয়ন | ||||||||
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড | আয়তন (একর) | লোকসংখ্যা | শিক্ষার হার (%) | |||||
পুরুষ | মহিলা | |||||||
ইসবপুর ১১ | ২৯৬৫ | ৮৮৯৪ | ১০৪০৩ | ৫৬.৪ | ||||
এলাহাবাদ ৭১ | ৪০৩৯ | ১৩২৮৮ | ১৪৪৮৯ | ৫২.৭ | ||||
উত্তর গুনাইঘর ৫৩ | ৩০৭৫ | ৯০৮৫ | ১০৪৬৬ | ৫৩.৭ | ||||
দক্ষিণ গুনাইঘর ৫৯ | ৩৪৮৪ | ৯৮১৮ | ১১৩৩৯ | ৪৫.২ | ||||
জাফরগঞ্জ ৬৫ | ২৯৬৪ | ১২৪২৪ | ১৩৪২৭ | ৪৬.৩ | ||||
ধামতী ৩৫ | ৩৭৬৩ | ৯৮০৮ | ১১১৩৩ | ৫৩.০ | ||||
ফতেহাবাদ ৪৭ | ৫২৩৮ | ১৮৬২৮ | ২১৪১৮ | ৫৪.৪ | ||||
বড় শালঘর ১০ | ৩৪৩০ | ৮২৮৪ | ৯২৩৮ | ৬০.৭ | ||||
বরকামতা ২৩ | ৩২৪৮ | ১৫৭০৮ | ১৬২৫৫ | ৫৫.২ | ||||
ভানি ৮৩ | ৩৮৮৮ | ১২২২১ | ১৩৫৬১ | ৫১.২ | ||||
মোহনপুর ১৭ | ৩৪৪১ | ১৩০০৪ | ১৪০৬০ | ৪৮.২ | ||||
রসুলপুর ৮৯ | ৩৩০৭ | ১০৪১১ | ১১৪৮৭ | ৪৭.২ | ||||
রাজামেহের ৭৭ | ৩৭৭৬ | ১১০৩০ | ১২৪৫১ | ৫৩.৮ | ||||
সুবিল ৯৫ | ৩৬৩৮ | ৯৭৬৭ | ১১২৬৩ | ৪৬.৬ | ||||
সুলতানপুর ৪১ | ৪০৪৪ | ১২৫৩৭ | ১৪০৩৭ | ৪৮.৪ |
সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।
প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ বায়তুল আজগর জামে মসজিদ (গুনাইঘর), অষ্টভুজাকৃতির শিব মন্দির (ধামতি বাজার)।
মুক্তিযুদ্ধ ১৯৭১ সালের ৩১ মার্চ কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কে পাকবাহিনীর সঙ্গে বাঙালিদের এক সংঘর্ষে ৩৩ জন বাঙালি শহীদ হন। তাছাড়া পাকবাহিনী ৭ আগস্ট চরকামতায়, ২৯ সেপ্টেম্বর জাকেরগঞ্জ এলাকায় এবং ১৪ নভেম্বর থানা সদরের নিকট গণহত্যা চালিয়ে বহু সংখ্যক নিরীহ লোককে হত্যা করে এবং ঘরবাড়িতে লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করে। উপজেলার বরকামতা, দেবীদ্বার থানা, বারুর, পোনরা গ্রাম প্রভৃতি স্থানে পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের যুদ্ধ সংঘটিত হয়। উপজেলায় মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন হিসেবে ১টি গণকবর ‘মুক্তিযোদ্ধা চত্তর’ নামে পরিচিত।
বিস্তারিত দেখুন দেবীদ্বার উপজেলা, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ৪।
শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৫২.৮%; পুরুষ ৫৪.৪%, মহিলা ৫১.৪%। কলেজ ৭, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৪৭, কারিগরি বিদ্যালয় ৩, মাদ্রাসা ৩০। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: দেবীদ্বার রেয়াজউদ্দীন পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৮), গঙ্গামন্ডল রাজ ইনস্টিটিউশন (১৯২২), ধামতী ইসলামিয়া কামিল মাদ্রাসা (১৯২০)।
পত্র-পত্রিকা সাপ্তাহিক: দেবীদ্বার’ ও ‘কুমিল্লা কণ্ঠ’।
সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান লাইব্রেরি ৩, ক্লাব ৫৭, নাট্যদল ১, প্রেসক্লাব ১।
বিনোদন কেন্দ্র দেবীদ্বার পৌর পার্ক ও দেবীদ্বার পৌর শিশুপার্ক।
জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৫৪.১৭%, অকৃষি শ্রমিক ১.৭৪%, শিল্প ১.০২%, ব্যবসা ১৪.০৪%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ৪.৫৭%, চাকরি ১১.৮২%, নির্মাণ ১.২২%, ধর্মীয় সেবা ০.৩৩%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ২.৯০% এবং অন্যান্য ৮.১৯%।
কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৭৪.৬১%, ভূমিহীন ২৫.৩৯%। শহরে ৬০.২০% এবং গ্রামে ৭৫.১৭% পরিবারের কৃষিজমি আছে।
প্রধান কৃষি ফসল ধান, গম, সরিষা, ভূট্টা, আলু, শাকসবজি।
বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি তামাক, পাট, কাউন, তিল, চিনাবাদাম, মাসকলাই, মসুর, ছোলা।
প্রধান ফল-ফলাদি পেয়ারা, লিচু।
যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ১৪৭ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ১৩ কিমি, কাঁচারাস্তা ৩৩৪ কিমি; নৌপথ ৫২ কিমি।
বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পাল্কি, গরু ও ঘোড়ার গাড়ি।
শিল্প ও কলকারখানা পাটকল, হিমাগার, বরফকল, ইটভাটা।
কুটিরশিল্প লৌহশিল্প, মৃৎশিল্প, তাঁতশিল্প, বুননশিল্প (জাল), বাঁশের কাজ, বেতের কাজ।
হাটবাজার ও মেলা হাটবাজার ১৫। দীঘিরপাড় ও রসুলপুর হাট এবং পোনরার পৌষসংক্রান্তি ও বৈশাখি মেলা উল্লেখযোগ্য।
প্রধান রপ্তানিদ্রব্য আলু, শাকসবজি।
বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ৬৯.৪% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।
পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৯৩.৮%, ট্যাপ ২.২% এবং অন্যান্য ৪.০%। এ উপজেলার অগভীর নলকূপের পানিতে আর্সেনিকের উপস্থিতি প্রমাণিত হয়েছে।
স্যানিটেশন ব্যবস্থা উপজেলার ৭৭.৮% পরিবার স্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন এবং ১৮.১% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ৪.১% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।
স্বাস্থ্যকেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্স ১, হাসপাতাল ১, পরিবার-পরিকল্পনা কেন্দ্র ১২, সিএমএইচ ইউনিট ১।
প্রাকৃতিক দুর্যোগ ১৯৯১ সালের ঘূর্ণিঝড়ে উপজেলার প্রায় শতাধিক লোকের মৃত্যু এবং বেশসংখ্যক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়। তাছাড়া ১৯৮৮, ১৯৯৮ ও ২০০৪ সালে গোমতী নদীর বাঁধ ভেঙে প্লাবনের ফলে ঘরবাড়ি ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়।
এনজিও ব্র্যাক, আশা, নিজেরা করি। [মো. মাহমুদ হাসান শামীম]
তথ্যসূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; দেবীদ্বার উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।