চৌধুরী, জামিলুর রেজা: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

("'''চৌধুরী, জামিলুর রেজা''' (১৯৪৩-২০২০) বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, প্রকৌশলী, গবেষক, বিজ্ঞানী, তথ্য-প্রযুক্তিবিদ, জাতীয় অধ্যাপক এবং ১৯৯৬ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অন্যতম উপদেষ্টা।..." দিয়ে পাতা তৈরি)
 
সম্পাদনা সারাংশ নেই
 
(একই ব্যবহারকারী দ্বারা সম্পাদিত একটি মধ্যবর্তী সংশোধন দেখানো হচ্ছে না)
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
[[Image:ChoudhuryJamilurReza.jpg|right|thumbnail|200px|জামিলুর রেজা চৌধুরী]]
'''চৌধুরী, জামিলুর রেজা''' (১৯৪৩-২০২০)  বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, প্রকৌশলী, গবেষক, বিজ্ঞানী, তথ্য-প্রযুক্তিবিদ, জাতীয় অধ্যাপক এবং ১৯৯৬ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অন্যতম উপদেষ্টা। জামিলুর রেজা চৌধুরী জন্ম ১৯৪৩ সালের ১৫ই নভেম্বর সিলেট শহরে। তাঁর পিতা প্রকৌশলী আবিদ রেজা চৌধুরী এবং মাতা হায়াতুন নেছা চৌধুরী। পিতার চাকরির সুবাদে জামিলুর রেজা চৌধুরীর শৈশবকাল কেটেছে  দেশের বিভিন্ন স্থানে। ১৯৫৭ সালে তিনি ঢাকার সেন্ট গ্রেগরিজ হাই স্কুল এন্ড কলেজ থেকে ম্যাট্রিক এবং ১৯৫৯ সালে ঢাকা কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। তিনি ১৯৬৩ সালে ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়-বুয়েট) থেকে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং-এ বি.এস.সি ডিগ্রি লাভ করেন। জামিলুর রেজা চৌধুরী ইংল্যান্ডের সাউদাম্পটন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৬৪ সালে অ্যাডভান্স স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে এম.এস.সি এবং ১৯৬৮ সালে একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ‘শিয়ার ওয়াল এন্ড স্ট্রাকচারাল এনালাইসি অব হাইরাইজ বিল্ডিং’ বিষয়ে পিএইচ.ডি গবেষণা সম্পন্ন করেন। ১৯৭৫ সালে নাফিল্ড ফেলোশিপের আওতায় যুক্তরাজ্যের সারে বিশ্ববিদ্যালয়ে পোস্ট-ডক্টরাল গবেষণা করেন।
'''চৌধুরী, জামিলুর রেজা''' (১৯৪৩-২০২০)  বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, প্রকৌশলী, গবেষক, বিজ্ঞানী, তথ্য-প্রযুক্তিবিদ, জাতীয় অধ্যাপক এবং ১৯৯৬ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অন্যতম উপদেষ্টা। জামিলুর রেজা চৌধুরী জন্ম ১৯৪৩ সালের ১৫ই নভেম্বর সিলেট শহরে। তাঁর পিতা প্রকৌশলী আবিদ রেজা চৌধুরী এবং মাতা হায়াতুন নেছা চৌধুরী। পিতার চাকরির সুবাদে জামিলুর রেজা চৌধুরীর শৈশবকাল কেটেছে  দেশের বিভিন্ন স্থানে। ১৯৫৭ সালে তিনি ঢাকার সেন্ট গ্রেগরিজ হাই স্কুল এন্ড কলেজ থেকে ম্যাট্রিক এবং ১৯৫৯ সালে ঢাকা কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। তিনি ১৯৬৩ সালে ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়-বুয়েট) থেকে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং-এ বি.এস.সি ডিগ্রি লাভ করেন। জামিলুর রেজা চৌধুরী ইংল্যান্ডের সাউদাম্পটন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৬৪ সালে অ্যাডভান্স স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে এম.এস.সি এবং ১৯৬৮ সালে একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ‘শিয়ার ওয়াল এন্ড স্ট্রাকচারাল এনালাইসি অব হাইরাইজ বিল্ডিং’ বিষয়ে পিএইচ.ডি গবেষণা সম্পন্ন করেন। ১৯৭৫ সালে নাফিল্ড ফেলোশিপের আওতায় যুক্তরাজ্যের সারে বিশ্ববিদ্যালয়ে পোস্ট-ডক্টরাল গবেষণা করেন।


১৭ নং লাইন: ১৮ নং লাইন:
জাতীয় অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরী ২০২০ সালের ২৮শে এপ্রিল ৭৭ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন।  [মোহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান খান]  
জাতীয় অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরী ২০২০ সালের ২৮শে এপ্রিল ৭৭ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন।  [মোহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান খান]  


[[en:
[[en: Choudhury, Jamilur Reza]]

১৫:৫৬, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ

জামিলুর রেজা চৌধুরী

চৌধুরী, জামিলুর রেজা (১৯৪৩-২০২০) বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, প্রকৌশলী, গবেষক, বিজ্ঞানী, তথ্য-প্রযুক্তিবিদ, জাতীয় অধ্যাপক এবং ১৯৯৬ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অন্যতম উপদেষ্টা। জামিলুর রেজা চৌধুরী জন্ম ১৯৪৩ সালের ১৫ই নভেম্বর সিলেট শহরে। তাঁর পিতা প্রকৌশলী আবিদ রেজা চৌধুরী এবং মাতা হায়াতুন নেছা চৌধুরী। পিতার চাকরির সুবাদে জামিলুর রেজা চৌধুরীর শৈশবকাল কেটেছে দেশের বিভিন্ন স্থানে। ১৯৫৭ সালে তিনি ঢাকার সেন্ট গ্রেগরিজ হাই স্কুল এন্ড কলেজ থেকে ম্যাট্রিক এবং ১৯৫৯ সালে ঢাকা কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। তিনি ১৯৬৩ সালে ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়-বুয়েট) থেকে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং-এ বি.এস.সি ডিগ্রি লাভ করেন। জামিলুর রেজা চৌধুরী ইংল্যান্ডের সাউদাম্পটন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৬৪ সালে অ্যাডভান্স স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে এম.এস.সি এবং ১৯৬৮ সালে একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ‘শিয়ার ওয়াল এন্ড স্ট্রাকচারাল এনালাইসি অব হাইরাইজ বিল্ডিং’ বিষয়ে পিএইচ.ডি গবেষণা সম্পন্ন করেন। ১৯৭৫ সালে নাফিল্ড ফেলোশিপের আওতায় যুক্তরাজ্যের সারে বিশ্ববিদ্যালয়ে পোস্ট-ডক্টরাল গবেষণা করেন।

ড. জামিলুর রেজা চৌধুরী ১৯৬৩ সালে বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে প্রভাষক হিসাবে যোগদানের মধ্য দিয়ে তাঁর পেশাগত কর্মজীবন শুরু করেন এবং ১৯৭৬ সালে অধ্যাপক হিসেবে নিয়োগ লাভ করেন। তিনি সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রধান (১৯৭৮-১৯৭৯ এবং ১৯৮১-১৯৮৩), সিভিল ইঞ্জনিয়ারিং অনুষদের ডিন (১৯৮৩-১৯৮৫) এবং বুয়েট কম্পিউটার সেন্টারের পরিচালক (১৯৮২-১৯৯২) হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। ২০০১ সালে বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপনা থেকে অবসর গ্রহণের পর প্রফেসর চৌধুরী বেসরকারি ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম উপাচার্য হিসেবে যোগদান করেন এবং ২০১০ সাল পর্যন্ত এ দায়িত্ব পালন করেন। উপাচার্য হিসেবে তাঁর সৃজনশীল ও সুযোগ্য নেতৃত্বে ব্রাক বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের মধ্যে অন্যতম অগ্রণী বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নীত হয়। প্রফেসর জামিলুর রেজা চৌধুরী ২০১২ সালে মে মাসে ইউনিভার্সিটি অফ এশিয়া প্যাসিফিক-এর উপাচার্য হিসেবে যোগদান করেন এবং মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত এ পদে নিয়োজিত ছিলেন।

অধ্যাপনা ও শিক্ষা প্রশাসনে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি অধ্যাপক চৌধুরী জাতীয় পর্যায়ের এবং জাইকা, ইউএনএসস্ক্যাপ (UNESCAP)-সহ বহু আন্তর্জাতিক সংস্থার বিভিন্ন প্রকল্পের পরামর্শক হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। প্রকল্পসমূহের মধ্যে রয়েছে উঁচু ভবন, শিল্প-কারখানা ভবন, ট্রান্সমিশন টাওয়ার, বিমানের হ্যাঙ্গার, স্টেডিয়াম, বন্দর ও জেটি, সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কম্পিউটারাইজেশন ইত্যাদি। বাংলাদেশের মাল্টিপারপাস সাইক্লোন শেল্টার প্রতিষ্ঠা প্রকল্পের টিম লিডার হিসেবে প্রফেসর চৌধুরী উপকূলীয় এলাকায় সাইক্লোন শেল্টারগুলির জন্য মাস্টার প্ল্যান তৈরি করেছিলেন। তিনি এশিয়ার অন্যতম দীর্ঘ পদ্মা বহুমুখী সেতুর টেকনিক্যাল কমিটির আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞম-লীর প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়াও, বাংলাদেশের প্রথম ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেস হাইওয়ে, কর্ণফুলী নদীর বঙ্গবন্ধু টানেল, ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েসহ দেশের বিভিন্ন মেগা প্রকল্প প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে পরামর্শক ছিলেন তিনি। তিনি ১৯৯৩ সালে বাংলাদেশের জাতীয় বিল্ডিং কোডের স্টিয়ারিং কমিটির অন্যতম সদস্য ছিলেন। তিনি বাংলাদেশ শিল্প ব্যাংক-এর পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান (১৯৯৬-১৯৯৮) এবং বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (চট্টগ্রাম)-এর বোর্ড অব গভর্নরসের চেয়ারম্যান (১৯৯৭-২০০৩) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

একজন সিভিল ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে দেশ-বিদেশে সুপরিচিত হলেও, বাংলাদেশের তথ্য-প্রযুক্তি (আইসিটি) খাতের উন্নয়ন ও বিকাশেও জামিলুর রেজা চৌধুরী বিশেষ অবদান রেখেছেন। তিনি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে গঠিত সফটওয়্যার এক্সপোর্ট এবং আইটি সার্ভিস অবকাঠামো উন্নয়ন সংক্রান্ত টাস্ক ফোর্সের চেয়ারম্যান (১৯৯৭-২০০২) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি সফটওয়্যার এক্সপোর্ট ও ডাটা প্রসেসিং সার্ভিস এক্সপোর্ট কমিটি (১৯৯৭), বাংলাদেশের জন্য আইসিটি নীতি প্রণয়ন বিষয়ক কমিটি, (১৯৯৯ এবং ২০০২) এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উচ্চশিক্ষায় আইসিটি গ্রুপের (২০০৫) আহ্বায়ক ছিলেন। তিনি বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বাধীন আইসিটি টাস্কফোর্সের (২০০১-২০০৭) অন্যতম সদস্য ছিলেন। বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের ছবিসহ ভোটার তালিকা প্রস্তুত কমিটির আহ্বায়ক হিসেবেও তিনি দায়িত্ব পালন করেন। জামিলুর রেজা চৌধুরী ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে গঠিত প্রধানমন্ত্রীর টাস্কফোর্সের একজন র‌্যাংকিং সদস্য ছিলেন।

অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরী বাংলাদেশের বিভিন্ন সংগঠনের সাথে সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলেন। তিনি বাংলাদেশ ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের সভাপতি (১৯৯২-১৯৯৩) ছাড়াও, বাংলাদেশ আর্থকোয়েক সোসাইটি; বাংলাদেশ কম্পিউটার সোসাইটি; বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা); বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এলামনাই এসোসিয়েশন এবং বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি দারিদ্র্য বিমোচন, পরিচিতিহীনতা জনিত সমস্যা দূরীকরণ এবং নিপীড়ন হতে মুক্তির জন্য কাজ করা স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা বাংলাদেশ ফ্রিডম ফাউন্ডেশন (বি.এফ.এফ)-এর ট্রাস্টি এবং পরে চেয়ারম্যান ছিলেন। ১৯৯৬ সালে অধ্যাপক চৌধুরী গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা নিযুক্ত হন।এ সময় তিনি জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন।

দেশি-বিদেশি গবেষণা জার্নালে প্রফেসর চৌধুরীর ৭০টিরও অধিক গবেষণাকর্ম প্রকাশিত হয়েছে। তাঁর প্রকাশনার বিষয়বস্তুর মধ্যে সুউচ্চ ভবন নির্মাণ, কম খরচে আবাসন, ভূমিকম্প প্রতিরোধী নকশা তৈরি, ঘূর্ণিঝড় এবং ঝড়-জলোচ্ছ্বাস সহনীয় কাঠামো নির্মাণ, কাঠামোর পুনরুদ্ধার, কম্পিউটার অ্যাপ্লিকেশন এবং আইসিটি নীতি সম্পর্কিত বিষয়াদি অন্যতম। উল্লেখ্য যে, প্রফেসর জামিলুর রেজা চৌধুরী সুউচ্চ ভবনের শিয়ার ওয়াল (Shear wall) বিশ্লেষণের জন্য একটি সহজ পদ্ধতির উদ্ভাবক। এ পদ্ধতিটি ‘Cull and Choudhury’s Method’ হিসেবে বিশ্বব্যাপী পরিচিত। এ পদ্ধতিটি এখন বিশ^ জুড়ে ব্যবহৃত হচ্ছে এবং সিভিল ইঞ্জনিয়ারিং-এর পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিক্ষা ও গবেষণায় অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ প্রফেসর জামিলুর রেজা চৌধুরী জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে অনেক পুরস্কার, সম্মাননা ও স্বীকৃতি অর্জন করেছেন। তাঁর প্রাপ্ত পুরস্কারের মধ্যে শেলটেক পুরস্কার (২০১০); বাংলাদেশ ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউশন স্বর্ণপদক (১৯৯৮); ড. রশিদ স্বর্ণপদক (১৯৯৭); রোটারি সিড অ্যাওয়ার্ড (২০০০); লায়ন্স ইন্টারন্যাশনাল (ডিস্ট্রিক-৩১৫) স্বর্ণপদক এবং জাইকা স্বীকৃতি পুরস্কার (২০১৩) অন্যতম। ২০১৮ সালে প্রফেসর চৌধুরীকে জাপান সরকারের সর্বোচ্চ আন্তর্জাতিক পুরস্কার অর্ডার অফ দ্য রাইজিং সান (গোল্ড রে ও নেক রিবন) পদক-এ ভূষিত করা হয়। পুরকৌশল বিষয়ে পাণ্ডিত্যের স্বীকৃতি হিসেবে ইনস্টিটিউশন অফ ইঞ্জিনিয়ার্স (বাংলাদেশ), ইনস্টিটিউশন অফ সিভিল ইঞ্জিনিয়ার্স (ইউ.কে.), বাংলাদেশ একাডেমি অফ সায়েন্সেস, বাংলা একাডেমি এবং বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি তাঁকে সম্মানসূচক ফেলোশিপ প্রদান করে। জামিলুর রেজা চৌধুরী ২০১০ সালে যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অফ ম্যানচেস্টার কর্তৃক ডক্টর অফ ইঞ্জিনিয়ারিং (অনারিসকসা) ডিগ্রি লাভ করেন। উল্লেখ্য যে, তিনিই প্রথম বাংলাদেশি যিনি একটি ব্রিটিশ বিশ^বিদ্যালয় থেকে এ সম্মান অর্জন করেন। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে তাঁর অনন্য অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার ২০১৭ সালে তাঁকে বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা ‘একুশে পদকে’ ভূষিত করে। ২০১৮ সালে সরকার জামিলুর রেজা চৌধুরীকে বাংলাদেশের জাতীয় অধ্যাপক নিযুক্ত করেন।

প্রফেসর জামিলুর রেজা চৌধুরী বাংলাদেশ ব্লক চেইন অলিম্পিয়াডের উপদেষ্টা ছিলেন। ২০২০ সালের মে মাসে বাংলাদেশ ব্লক চেইন অলিম্পিয়াড পুরস্কার-এর নাম পরিবর্তন করে ‘অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরী চ্যাম্পিয়ন্স অ্যাওয়ার্ড' রাখা হয়। বাংলাদেশে পুরকৌশল জগতের এ কিংবদন্তীর প্রতি সম্মান প্রদর্শনের লক্ষ্যে ২০২১ সালের এপ্রিলে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরকৌশল ভবনের নাম পরিবর্তন করে ‘ড. জামিলুর রেজা চৌধুরী পুরকৌশল ভবন’ নামকরণ করা হয়। বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয় এলামনি এসোসিয়েশন ২০২৩ সালে জামিলুর রেজা চৌধুরীর স্মরণে আলোর পথযাত্রী (বিকন অব লাইট) শিরোনামে একটি স্মারকগ্রন্থ প্রকাশ করে।

জাতীয় অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরী ২০২০ সালের ২৮শে এপ্রিল ৭৭ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন। [মোহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান খান]