মনিরুজ্জামান, তালুকদার: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
("'''মনিরুজ্জামান, তালুকদার''' (১৯৩৮-২০১৯) বিশিষ্ট রাষ্ট্রবিজ্ঞানী, জাতীয় অধ্যাপক। তিনি ১৯৩৮ সালের ১ জুলাই সিরাজগঞ্জ জেলার তারাকান্দি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম..." দিয়ে পাতা তৈরি) |
সম্পাদনা সারাংশ নেই |
||
১ নং লাইন: | ১ নং লাইন: | ||
[[Image:ManiruzzamanTalukder.jpg|right|thumbnail|200px|তালুকদার মনিরুজ্জামান]] | |||
'''মনিরুজ্জামান, তালুকদার''' (১৯৩৮-২০১৯) বিশিষ্ট রাষ্ট্রবিজ্ঞানী, জাতীয় অধ্যাপক। তিনি ১৯৩৮ সালের ১ জুলাই সিরাজগঞ্জ জেলার তারাকান্দি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম মো. আবদুল মজিদ তালুকদার এবং মাতার নাম ফাতেমাতুজ্জোহরা। ৫ ভাই ২ বোনের মধ্যে তাঁর স্থান ছিল দ্বিতীয়। শিক্ষাজীবনে তিনি একজন কৃতী ছাত্র ছিলেন। ১৯৫৩ সালে তালুকদার মনিরুজ্জামান সিরাজগঞ্জ এইচ ই স্কুল থেকে ম্যাট্রিকুলেশন পরীক্ষায় ১ম গ্রেড মেধাবৃত্তিসহ ১ম বিভাগে ৬ষ্ঠ স্থান অধিকার করেন। ১৯৫৬ সালে ঢাকার জগন্নাথ কলেজ থেকে ১ম গ্রেড বৃত্তিসহ ১ম স্থান অধিকার করে ইন্টারমেডিয়েট পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। অতঃপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে বি.এ (অনার্স) ক্লাসে ভর্তি হন। ১৯৫৯ সালে তিনি প্রথম শ্রেণিতে প্রথম স্থান অধিকারসহ অনার্স ডিগ্রি লাভ করেন। একই বিভাগ থেকে ১৯৬০ সালে তিনি উচ্চতর দ্বিতীয় বিভাগে দ্বিতীয় স্থানসহ মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন। এরপর তিনি উচ্চতর ডিগ্রি অর্জনের জন্য কানাডার কুইন্স বিশ্ববিদ্যালয় গমন করেন এবং ১৯৬৩ সালে সেখান থেকে পিএইচ.ডি ডিগ্রি অর্জন করেন। বিশিষ্ট রাষ্ট্রবিজ্ঞানী কে বি সাইয়িদ ছিলেন তাঁর সুপারভাইজার। পিএইচ.ডি ডিগ্রি অর্জন শেষে ১৯৬৬ সালে তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে সিনিয়র লেকচারার হিসেবে যোগদান করেন। ১৯৬৮ সালে একই বিভাগে তিনি এসোসিয়েট প্রফেসর পদে উন্নীত হন এবং ১৯৭৪ সাল পর্যন্ত বিভাগীয় প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৪ সালেই তিনি প্রফেসর হন। একই বছর তিনি প্রফেসর হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে যোগদান করেন। ১৯৭৫ থেকে ১৯৭৮ সময়ে তিনি বিভাগের চেয়ারম্যান ছিলেন। ২০০৬ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অবসর গ্রহণ করেন এবং একই বছর সরকার তাঁকে জাতীয় অধ্যাপক পদে মনোনীত করে। | '''মনিরুজ্জামান, তালুকদার''' (১৯৩৮-২০১৯) বিশিষ্ট রাষ্ট্রবিজ্ঞানী, জাতীয় অধ্যাপক। তিনি ১৯৩৮ সালের ১ জুলাই সিরাজগঞ্জ জেলার তারাকান্দি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম মো. আবদুল মজিদ তালুকদার এবং মাতার নাম ফাতেমাতুজ্জোহরা। ৫ ভাই ২ বোনের মধ্যে তাঁর স্থান ছিল দ্বিতীয়। শিক্ষাজীবনে তিনি একজন কৃতী ছাত্র ছিলেন। ১৯৫৩ সালে তালুকদার মনিরুজ্জামান সিরাজগঞ্জ এইচ ই স্কুল থেকে ম্যাট্রিকুলেশন পরীক্ষায় ১ম গ্রেড মেধাবৃত্তিসহ ১ম বিভাগে ৬ষ্ঠ স্থান অধিকার করেন। ১৯৫৬ সালে ঢাকার জগন্নাথ কলেজ থেকে ১ম গ্রেড বৃত্তিসহ ১ম স্থান অধিকার করে ইন্টারমেডিয়েট পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। অতঃপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে বি.এ (অনার্স) ক্লাসে ভর্তি হন। ১৯৫৯ সালে তিনি প্রথম শ্রেণিতে প্রথম স্থান অধিকারসহ অনার্স ডিগ্রি লাভ করেন। একই বিভাগ থেকে ১৯৬০ সালে তিনি উচ্চতর দ্বিতীয় বিভাগে দ্বিতীয় স্থানসহ মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন। এরপর তিনি উচ্চতর ডিগ্রি অর্জনের জন্য কানাডার কুইন্স বিশ্ববিদ্যালয় গমন করেন এবং ১৯৬৩ সালে সেখান থেকে পিএইচ.ডি ডিগ্রি অর্জন করেন। বিশিষ্ট রাষ্ট্রবিজ্ঞানী কে বি সাইয়িদ ছিলেন তাঁর সুপারভাইজার। পিএইচ.ডি ডিগ্রি অর্জন শেষে ১৯৬৬ সালে তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে সিনিয়র লেকচারার হিসেবে যোগদান করেন। ১৯৬৮ সালে একই বিভাগে তিনি এসোসিয়েট প্রফেসর পদে উন্নীত হন এবং ১৯৭৪ সাল পর্যন্ত বিভাগীয় প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৪ সালেই তিনি প্রফেসর হন। একই বছর তিনি প্রফেসর হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে যোগদান করেন। ১৯৭৫ থেকে ১৯৭৮ সময়ে তিনি বিভাগের চেয়ারম্যান ছিলেন। ২০০৬ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অবসর গ্রহণ করেন এবং একই বছর সরকার তাঁকে জাতীয় অধ্যাপক পদে মনোনীত করে। | ||
১৪:৩০, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ
মনিরুজ্জামান, তালুকদার (১৯৩৮-২০১৯) বিশিষ্ট রাষ্ট্রবিজ্ঞানী, জাতীয় অধ্যাপক। তিনি ১৯৩৮ সালের ১ জুলাই সিরাজগঞ্জ জেলার তারাকান্দি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম মো. আবদুল মজিদ তালুকদার এবং মাতার নাম ফাতেমাতুজ্জোহরা। ৫ ভাই ২ বোনের মধ্যে তাঁর স্থান ছিল দ্বিতীয়। শিক্ষাজীবনে তিনি একজন কৃতী ছাত্র ছিলেন। ১৯৫৩ সালে তালুকদার মনিরুজ্জামান সিরাজগঞ্জ এইচ ই স্কুল থেকে ম্যাট্রিকুলেশন পরীক্ষায় ১ম গ্রেড মেধাবৃত্তিসহ ১ম বিভাগে ৬ষ্ঠ স্থান অধিকার করেন। ১৯৫৬ সালে ঢাকার জগন্নাথ কলেজ থেকে ১ম গ্রেড বৃত্তিসহ ১ম স্থান অধিকার করে ইন্টারমেডিয়েট পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। অতঃপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে বি.এ (অনার্স) ক্লাসে ভর্তি হন। ১৯৫৯ সালে তিনি প্রথম শ্রেণিতে প্রথম স্থান অধিকারসহ অনার্স ডিগ্রি লাভ করেন। একই বিভাগ থেকে ১৯৬০ সালে তিনি উচ্চতর দ্বিতীয় বিভাগে দ্বিতীয় স্থানসহ মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন। এরপর তিনি উচ্চতর ডিগ্রি অর্জনের জন্য কানাডার কুইন্স বিশ্ববিদ্যালয় গমন করেন এবং ১৯৬৩ সালে সেখান থেকে পিএইচ.ডি ডিগ্রি অর্জন করেন। বিশিষ্ট রাষ্ট্রবিজ্ঞানী কে বি সাইয়িদ ছিলেন তাঁর সুপারভাইজার। পিএইচ.ডি ডিগ্রি অর্জন শেষে ১৯৬৬ সালে তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে সিনিয়র লেকচারার হিসেবে যোগদান করেন। ১৯৬৮ সালে একই বিভাগে তিনি এসোসিয়েট প্রফেসর পদে উন্নীত হন এবং ১৯৭৪ সাল পর্যন্ত বিভাগীয় প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৪ সালেই তিনি প্রফেসর হন। একই বছর তিনি প্রফেসর হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে যোগদান করেন। ১৯৭৫ থেকে ১৯৭৮ সময়ে তিনি বিভাগের চেয়ারম্যান ছিলেন। ২০০৬ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অবসর গ্রহণ করেন এবং একই বছর সরকার তাঁকে জাতীয় অধ্যাপক পদে মনোনীত করে।
উচ্চপর্যায়ে গবেষণার জন্য শিক্ষাজীবনে তিনি একাধিক ফেলোশিপ প্রাপ্ত হন, যার মধ্যে লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের Nuffield Fellowship (১৯৭৮-১৯৭৯), অস্ট্রেলিয়ার ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ফেলোশিপ (১৯৮১), উড্র উইলসন সেন্টার ফেলোশিপ, যুক্তরাষ্ট্র (১৯৮৩-১৯৮৪), জাপান ফাউন্ডেশন ফেলোশিপ (১৯৯৫-১৯৯৬) ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।
রাষ্ট্রবিজ্ঞানী তালুকদার মনিরুজ্জামানের দেশ ও বিদেশ থেকে প্রকাশিত একাধিক গ্রন্থ ও জার্নালে অসংখ্য আর্টিকেল রয়েছে। তাঁর গ্রন্থসমূহের মধ্যে The Politics of Development : The Case Study of Pakistan, (Dhaka 1971); The Bangladesh Revolution and Its Aftermath, (Dhaka 1980); Group Interests and Political Changes : Studies of Pakistan and Bangladesh, (Delhi 1982); The Security of the Small States in the Third World, (Australia 1982); Military Withdrawal from Polities : A Comparative Study, (USA 1987) বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। এছাড়া Pacific Affairs, The Journal of Conflict Resolution, Encyclopedia of Government and Politics (London), Cambridge Encyclopedia of India, Pakistan, Bangladesh, Sri Lanka, Nepal, Bhutan and Maldives; The Journal of Political Science Review (Delhi), The Journal of Commonwealth and Comparative Politics (London), Asian Survey, The Journal of Asian Studies (USA), The Journal of Developing Areas (USA), Public Administration (London), American Political Science Review ইত্যাদি বিদেশী জার্নালে ও জ্ঞানকোষে তাঁর লেখা প্রকাশিত হয়েছে।
তাঁর স্ত্রীর নাম রাজিয়া আক্তার বানু। তিনি লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনিও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে অধ্যাপক ছিলেন। ২০১৯ সালে ২৯শে ডিসেম্বর প্রফেসর তালুকদার মনিরুজ্জামান মৃত্যুবরণ করেন। ২০১১ সালে তাঁর স্ত্রী পরলোকগমন করেন। এ দম্পতির দুই পুত্র ও এক কন্যা সন্তান রয়েছে। [হারুন-অর-রশিদ]
তথ্যসূত্র পরিবার কর্তৃক সরবরাহকৃত।