জনতা ব্যাংক লিমিটেড: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
সম্পাদনা সারাংশ নেই |
সম্পাদনা সারাংশ নেই |
||
৯৫ নং লাইন: | ৯৫ নং লাইন: | ||
| সি.এস.আর || ১৩.২ || ১.৫ || ১৬ | | সি.এস.আর || ১৩.২ || ১.৫ || ১৬ | ||
|} | |} | ||
উৎস আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ, অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ সরকার, | উৎস আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ, অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ সরকার, ''বার্ষিক প্রতিবেদন , ২০১৯-২০২০ ও ২০২০-২১''। | ||
দেশে রেমিট্যান্স প্রেরণের সুবিধার্থে ইতালির রোম ও মিলানে ’’জনতা এক্সচেঞ্জ কোম্পানি’’ এস.আর.এল (SRL) নামে জনতা ব্যাংক লিমিটেডের একটি সহযোগী প্রতিষ্ঠান কাজ করে যাচ্ছে। জনতা এক্সচেঞ্জ কোম্পানি থেকে বাংলাদেশের যে কোনো ব্যাংকের শাখায় প্রাপকের হিসাবে ৭২ ঘন্টার মধ্যে অর্থ জমা দেওয়ার ইলেক্ট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার (EFT) ব্যবস্থা চালু রয়েছে। World Link Money Transfer.S.A- ‘Greece’’-এর সাথেও EFT পদ্ধতি চালু আছে। অন্যান্য এক্সচেঞ্জ কোম্পানির সাথেও EFT পদ্ধতির মাধ্যমে বৈদেশিক রেমিট্যান্স আনার কাজ চলছে। জনতা এক্সচেঞ্জ কোম্পানি ইতোমধ্যে একই Software ব্যবহার করে শ্রীলংকায় রেমিট্যান্সের কার্যক্রম বাস্তবায়ন করেছে। ফরেন রেমিট্যান্স ও ফরেন এক্সচেঞ্জ ব্যবসা সহজীকরণ ও আধুনিকীকরণের লক্ষ্যে দেশে-বিদেশে ১৯টি শাখায় SWIFT ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের (UAE) আবুধাবী, দুবাই, শারজাহ ও আল-আইন-এ এই ব্যাংকের ৪টি শাখায় গ্রাহকদের কম্পিউটারাইজড ও অন-লাইন ব্যাংকিং সার্ভিস প্রদান করা হচ্ছে। | দেশে রেমিট্যান্স প্রেরণের সুবিধার্থে ইতালির রোম ও মিলানে ’’জনতা এক্সচেঞ্জ কোম্পানি’’ এস.আর.এল (SRL) নামে জনতা ব্যাংক লিমিটেডের একটি সহযোগী প্রতিষ্ঠান কাজ করে যাচ্ছে। জনতা এক্সচেঞ্জ কোম্পানি থেকে বাংলাদেশের যে কোনো ব্যাংকের শাখায় প্রাপকের হিসাবে ৭২ ঘন্টার মধ্যে অর্থ জমা দেওয়ার ইলেক্ট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার (EFT) ব্যবস্থা চালু রয়েছে। World Link Money Transfer.S.A- ‘Greece’’-এর সাথেও EFT পদ্ধতি চালু আছে। অন্যান্য এক্সচেঞ্জ কোম্পানির সাথেও EFT পদ্ধতির মাধ্যমে বৈদেশিক রেমিট্যান্স আনার কাজ চলছে। জনতা এক্সচেঞ্জ কোম্পানি ইতোমধ্যে একই Software ব্যবহার করে শ্রীলংকায় রেমিট্যান্সের কার্যক্রম বাস্তবায়ন করেছে। ফরেন রেমিট্যান্স ও ফরেন এক্সচেঞ্জ ব্যবসা সহজীকরণ ও আধুনিকীকরণের লক্ষ্যে দেশে-বিদেশে ১৯টি শাখায় SWIFT ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের (UAE) আবুধাবী, দুবাই, শারজাহ ও আল-আইন-এ এই ব্যাংকের ৪টি শাখায় গ্রাহকদের কম্পিউটারাইজড ও অন-লাইন ব্যাংকিং সার্ভিস প্রদান করা হচ্ছে। |
০৯:৩৭, ২ জুলাই ২০২৩ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ
জনতা ব্যাংক লিমিটেড বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ব্যাংক। ১৯৭২ সালের ব্যাংক জাতীয়করণ অধ্যাদেশ (রাষ্ট্রপতির আদেশ-২৬) অনুযায়ী তৎকালীন ইউনাইটেড ব্যাংক লিমিটেড ও ইউনিয়ন ব্যাংক লিমিটেড-এর সমন্বয়ে জনতা ব্যাংক গঠিত হয়। ২০০৪-০৫ সালে গৃহীত Enterprise Growth and Bank Modernization Project (EGBMP) শীর্ষক রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংক সংস্কার কর্মসূচির ভিত্তিতে এবং বিদ্যমান কোম্পানি আইন মোতাবেক ‘জনতা ব্যাংক লিমিটেড’ গঠন করা হয়। ১৫ নভেম্বর ২০০৭ তারিখ থেকে জনতা ব্যাংক লিমিটেড-এর কার্যক্রম শুরু হয়।
ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব একটি পরিচালনা পর্ষদের ওপরে অর্পিত। এই পরিষদে সরকার কর্তৃক নিযুক্ত ৮ জন সদস্য আছেন যার প্রধান হলেন চেয়ারম্যান। ব্যাংকটির নির্বাহী প্রধান হচ্ছেন ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা। তাকে সহায়তা প্রদান করেন ২/৩ উপ ব্যবস্থাপনা পরিচালক, ছয় জন মহাব্যবস্থাপক এবং অন্যান্য ঊর্ধ্বতন নির্বাহী কর্মকর্তা। মহাব্যবস্থাপকগণ ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, সিলেট ও বরিশাল বিভাগে অবস্থিত ব্যাংকটির শাখাগুলির দায়িত্বে রয়েছেন। এছাড়া প্রধান কার্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ বিভাগগুলিতেও প্রধান হিসাবে কয়েকজন মহাব্যবস্থাপক দায়িত্ব পালন করেন। ঢাকায় একটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রসহ ব্যাংকটির প্রধান কার্যালয়ে ২৭টি বিভাগ রয়েছে।
আমানত গ্রহণ এবং ঋণপ্রদান ছাড়াও ব্যাংকটি বিভিন্ন সেবামূলক কাজ এবং উদ্বর্তপত্র-বহির্ভূত (অফ-ব্যালেন্সশিট) কর্মকাণ্ড সম্পাদন করে থাকে। ১৯৭২ সালে ১৫৭ কোটি টাকার প্রারম্ভিক আমানত নিয়ে জনতা ব্যাংক ব্যাংকিং কর্মকাণ্ড শুরু করে। সে সময় থেকে দেশের শহর ও পল্লী অঞ্চলে ব্যাংকিং সুবিধা সম্প্রসারণে এবং আমানত সংগ্রহে ব্যাংকটি প্রয়াস চালিয়ে আসছে। ১৯৭৬ সালে বিশেষ আমানত সংগ্রহ কর্মসূচির আওতায় ব্যাংকের আমানতের পরিমাণ লক্ষ্যণীয়ভাবে বৃদ্ধি পায়। আমানতের এই বৃদ্ধির হার ১৯৭২-৭৪ সালে ছিল ৬৩% এবং ১৯৭৮-৮০ সালে ৪২%। ১৯৯৮ সালে আমানত বৃদ্ধি পায় ৪.৯৯% হারে এবং ২০০০ সালে ৮.২% হারে। ১৯৭২ সালে ব্যাংকটির ঋণ এবং অগ্রিমের মোট পরিমাণ ছিল ৩৯ কোটি টাকা, যা বৃদ্ধি পেয়ে ১৯৮৪ সালে দাঁড়ায় ৫২৮ কোটি টাকা। উদ্বর্তপত্র-বহির্ভূত কাজের ফলে ১৯৯৮ সালে ব্যাংকটির ২,৬০৭ কোটি টাকা এবং ২০০০ সালে ২,৫৪৬ কোটি টাকা মূল্যের পরিসম্পদ সৃষ্টি হয়।
সরকারি কর্মচারি এবং সরকারের খাদ্যসংগ্রহ কর্মসূচিতে নিয়োজিত ব্যক্তিদের বেতন প্রদান এই ব্যাংকটির এজেন্সি সেবাকর্মের অন্তর্গত। ব্যাংকটির ঋণ এবং অগ্রিম প্রদান কর্মকাণ্ড শুধু ব্যবসায়ী এবং শিল্পপতিদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। প্রায় সকল শ্রেণী এবং পেশার লোকদেরকে ব্যাংকটি ঋণসুবিধা প্রদান করে থাকে। শিল্প এবং বাণিজ্যের পাশাপাশি, কৃষি বা অন্যান্য অগ্রাধিকার খাতেও ব্যাংকটি অর্থায়ন, পরামর্শমূলক সেবা দিয়ে থাকে। সরকারি এবং বেসরকারি স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসার শিক্ষকদেরকে এই ব্যাংক দীর্ঘদিন থেকে বেতনের সরকারি অংশ প্রদানের দায়িত্ব পালন করে আসছে। ব্যাংকটি বেশ কিছুসংখ্যক বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের (এনজিও) সাথে যৌথভাবে বিভিন্ন দারিদ্র্য দূরীকরণ কর্মসূচি বাস্তবায়নের সঙ্গে যুক্ত।
জনতা ব্যাংক লিমিটেড শিল্পঋণ বিভাগের মাধ্যমে যেসব খাতে অর্থায়ন করে থাকে সেগুলি হলো (১) বস্ত্র (স্থানীয় ও রপ্তানিমুখী), (২) খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ, (৩) পশুখাদ্য, (৪) অবকাঠামো উন্নয়ন, (৫) পেপার, (৬) চিকিৎসা (হাসপাতাল ও ফার্মাসিউটিক্যাল ইন্ডাস্ট্রি), (৭) ভারি ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্প, (৮) তথ্য প্রযুক্তি ও টেলিকমিউনিকেশন, (৯) বিদ্যুৎ উৎপাদন, (১০) সার, (১১) চামড়া ও (১২) সিমেন্ট। দারিদ্র্য বিমোচন কৌশলপত্র (পিআরএসপি) ও শিল্পনীতি ২০০৫ এবং সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্য (এমডিজি)-এর আওতায় কর্মসংস্থানমুখী অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং ২০১৫ সালের মধ্যে দারিদ্র্যের হার অর্ধেকে কমিয়ে আনার লক্ষ্যে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (SMEs) স্থাপন ও প্রসারের মাধ্যমে দেশকে মাঝারি আয়ের দেশে উন্নীত করার একটি কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। জনতা ব্যাংক লিমিটেড এ পর্যন্ত ক্ষুদ্র, মাঝারি ও কুটির শিল্পের ৪,৫৩৯টি প্রকল্পে ৫,৮৫৯ মিলিয়ন টাকা ঋণ প্রদান করেছে। জনতা ব্যাংক এসএমই কার্যক্রমের আওতায় যেসব খাতে অর্থায়ন করে সেগুলো হলো (১) কম্পোজিট টেক্সটাইল, কম্পোজিট নিটিং, স্পিনিং, উইভিং অ্যান্ড ফিনিশিং ও ডাইং, (২) এলপিজি, (৩) কৃত্রিম ফুল উৎপাদন, (৪) ফুল চাষ, (৫) রপ্তানিমুখী চামড়াজাত পণ্য, (৬) রপ্তানিমুখী পাটজাত পণ্য, (৭) ইলেক্ট্রনিক্স এবং বৈদ্যুতিক সামগ্রী, (৮) কম্পিউটার সফটওয়্যার ও তথ্য প্রযুক্তি, (৯) সিরামিক, মেলামাইন, টাইলস ও গ্লাস মিরর, (১০) স্মল পাওয়ার প্ল্যান্ট, (১১) প্লাস্টিক ও প্লাস্টিকজাত সামগ্রী ও সিডি, (১২) স্বাস্থ্য, শিক্ষা, সেবা ও হোটেল, (১৩) অ্যালুমিনিয়াম সামগ্রী, (১৪) হাঁস-মুরগি, ছাগল, ভেড়া, গরু ইত্যাদির মাংস প্রক্রিয়াকরণ ও বাজারজাতকরণ, (১৫) হাঁস-মুরগি ও মৎস্য খামার, হ্যাচারি এবং ফিড মিল, (১৬) খাদ্য ও খাদ্যজাত দ্রব্য উৎপাদন, (১৭) প্রিন্টিং ও প্যাকেজিং, (১৮) কেমিক্যাল ও ফার্মাসিউটিক্যালস, (১৯) দুগ্ধ উৎপাদন, প্রক্রিয়াজাতকরণ ও বাজারজাতকরণ, (২০) হস্ত ও কুটির শিল্প, (২১) চা উৎপাদন ও প্রক্রিয়াকরণ, (২২) জৈব সার, মিশ্র সার ও গুটি ইউরিয়া ইত্যাদি তৈরি ও বাজারজাতকরণ, (২৩) কীটনাশক তৈরি ও (২৪) বায়োপেস্টিসাইড। এছাড়া সরকারের শিল্পনীতির আওতায় ব্যাংক সম্ভাবনাময় প্রকল্প/ব্যবসায় এসএমই ঋণ মঞ্জুর করে থাকে।
ব্যাংকটির বর্তমান (২০১৯) শাখার সংখ্যা ৯১৫। বিশ্বের ৫০১টি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সাথে জনতা ব্যাংকের ব্যাংকিং যোগাযোগ রয়েছে। দেশের ইউনিয়ন পর্যায়ে বিভিন্ন মৌসুমী ফসল উৎপাদন, মৎস্য চাষ, হাঁস-মুরগি ও গবাদিপশু পালন, হর্টিকালচার ইত্যাদি কৃষি খাতে সরাসরি ঋণ প্রদান করছে। পল্লী ঋণের আওতায় সকল স্তরের গ্রামীণ জনগোষ্ঠী যাতে সহজ শর্তে ঋণ সুবিধা পায় সেদিকে লক্ষ্য রেখে ব্যাংকের ঋণ নীতিমালা পুনর্বিন্যাস করা হয়েছে। দারিদ্র্য বিমোচন ও কর্মসংস্থান ক্ষুদ্র কৃষক ও ভূমিহীন শ্রমিক উন্নয়ন প্রকল্প, স্বনির্ভর ঋণ কর্মসূচি, সমবায় ঋণ প্রকল্প, বহুমুখী ঋণ কর্মসূচি, ঘরোয়া/পরিবারভিত্তিক ক্ষুদ্রঋণ, শস্যগুদাম ঋণ প্রকল্প এবং প্রান্তিক ও ক্ষুদ্র খামার ঋণ কর্মসূচি।
বিশেষায়িত ঋণ কর্মসূচি ফুল চাষ ও বাজারজাতকরণ ঋণ, বনজ ও ভেষজ উদ্ভিদের নার্সারি ঋণ, প্রতিবন্ধীদের জন্য ঋণ, নিবিড় পদ্ধতিতে ভূট্টা চাষ ঋণ, চাকরিজীবীদের জন্য ঋণ, উন্নতজাতের গাভী পালন ঋণ এবং ছাগল ও ভেড়া পালন ঋণ।
উদ্যোক্তা উন্নয়ন ঋণ কর্মসূচি মহিলা উদ্যোক্তা উন্নয়ন ঋণ, সাইবার ক্যাফে ঋণ, ডক্টরস ঋণ, ক্ষুদ্রব্যবসা উন্নয়ন ঋণ।
কৃষিভিত্তিক শিল্প ঋণ কর্মসূচি হাঁসমুরগি, মৎস্য ও দুগ্ধ খামার এবং হ্যাচারি ঋণ, আধানিবিড় পদ্ধতিতে চিংড়ি চাষ, গবাদিপশু মোটাতাজাকরণ, পশু খাদ্য তৈরি কারখানা, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ এবং বিশেষায়িত হিমাগার স্থাপন।
জনতা ব্যাংক আয়-ব্যয় বিবরণীর (পারফরম্যান্স বাজেটের) মাধ্যমে স্বীয় কর্মকাণ্ড পরিবীক্ষণ করে থাকে এবং ব্যাংকটির একটি নিজস্ব বিপণন তথ্যকেন্দ্র রয়েছে। ব্যাংকটি প্রশিক্ষণ ও প্রেষণার (মোটিভেশন) মাধ্যমে মানবসম্পদ উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে থাকে। আর্থিক খাত সংস্কার কর্মসূচির দ্বারা (এফএসআরপি) ব্যাংকটি ঋণঝুঁকি বিশ্লেষণ করে এবং নীতিগত পদক্ষেপ গ্রহণ করে। মূলধন ঘাটতি পরিপূরণ, ব্যাপক আমানত সংগ্রহ এবং আরও লাভজনক খাতে উদ্বৃত্ত সম্পদ বিনিয়োগ ব্যাংকটির ১৯৯০-এর দশকে গৃহীত নীতিমালার অন্তর্ভুক্ত ছিল। কর্মকাণ্ড সম্প্রসারণ এবং সুদবহির্ভূত খাতে আয় বাড়ানোর লক্ষ্যে গৃহীত কৌশলের অংশ হিসেবে ব্যাংকটি গত দশকে উদ্বর্তপত্র-বহির্ভূত (অফ-ব্যালেন্সশিট) ক্ষেত্রসমূহে নিজ কর্মতৎপরতাকে সম্প্রসারণ করেছে।
দক্ষ জনবল সৃষ্টির লক্ষ্যে পেশাগত ও বিষয়ভিত্তিক প্রশিক্ষণের উপর বিশেষ দৃষ্টি রয়েছে ব্যাংকটির বিগত বছরের সাফল্যের উপর ভিত্তি করে ২০২১ সালে ব্যাংকটিকে আরও উন্নততর পর্যায়ে এগিয়ে নেওয়ার জন্য পরিশীলিত কর্মকৌশল গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়া সাধারণ ব্যাংকিং ব্যবসার পাশাপাশি মূলধন বাজারে বিনিয়োগের উদ্দেশ্যে মার্চেন্ট ব্যাংকিং ইউনিট কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এ ছাড়া ইসলামি ব্যাংকিং চালুর কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন আছে। রপ্তানি প্রসার, অধিক বৈদেশিক রেমিট্যান্স আহরণ, বৈদেশিক বিনিময় ব্যবসা থেকে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ আয়, আমানত ব্যয় হ্রাস ও রপ্তানি ব্যবসা বৃদ্ধি ব্যাংকটির দক্ষ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে অর্জন করে সম্ভব হয়েছে।
মৌল তথ্য ও পরিসংখ্যান (মিলিয়ন টাকায়)
বিবরণ | ২০১৮ | ২০১৯ | ২০২০ |
অনুমোদিত মূলধন | ৩০০০০ | ৩০০০০ | ৩০০০০ |
পরিশোধিত মূলধন | ২৩১৪০ | ২৩১৪০ | ২৩১৪০ |
রিজার্ভ | ৩১৪১৬.৪ | ১৮৯২৪.৭ | ২৯০২৭ |
আমানত | ৬৭৫৪৮ | ৬৯১৪০৯.৪ | ৮২৪০০৮ |
ক) তলবি আমানত | ৯৬১৮৬ | ১০৫৯৪৯.৫ | ১০১০৪ |
খ) মেয়াদি আমানত | ৫৭৯৩৬২ | ৫৮৫৪৬৯.৯ | ৮১৩৯০৪ |
ঋণ ও অগ্রিম | ৫৩৩৭০৭ | ৫৪৮৪৭৩.৯ | ৬০৪৯৫০ |
বিনিয়োগ | ১৬৬৭৮৩ | ১৯০৮১৬.৩ | ২৭৪২০৩ |
মোট পরিসম্পদ | ৮৬৬০৪৬ | ৮৯২৪৭১.১ | ১০৪৩৩১১ |
মোট আয় | ৫০৭০৫ | ৪৯৯৫৮.৯ | ৫৪৩৮১ |
মোট ব্যয় | ৪০৯১৬ | ৪২৮৮৩.২ | ৪৪৭৬৪ |
বৈদেশিক মুদ্রা ব্যবসা পরিচালনা | ৪১১৭২.৭ | ৩৮৩৮৮৭.৫ | ৩৫৭৪৩৯ |
ক) রপ্তানি | ১১৪৬৮১ | ১৭৩৯৮.২ | ৯৩০০৬ |
খ) আমদানি | ২২০৪১৩.৭ | ২১০৯৫৭.২ | ১৮৬২৮৯ |
গ) রেমিট্যান্স | ৭৬০৭৮ | ৭৫৫৩২ | ৭৮১৪৪ |
মোট জনশক্তি (সংখ্যায়) | ১১৮৪৯ | ১১৮৫১ | ১১৪৮৩ |
ক) কর্মকর্তা | ৯৫১৩ | ৯৮৩৩ | ৯৬৭২ |
খ) কর্মচারি | ২২৫৬ | ২০১৮ | ১৮১১ |
বিদেশি প্রতিসংগী ব্যাংক (সংখ্যায়) | ৫২৫ | ৫২০ | ৫০১ |
শাখা (সংখ্যায়) | ৯১৩ | ৯১৫ | ৯১৬ |
ক) দেশে | ৯০৯ | ৯১১ | ৯১২ |
খ) বিদেশে | ৪ | ৪ | ৪ |
কৃষি খাতে | |||
ক) ঋণ বিতরণ | ৯৮৭২.৭ | ৫২৮৯.২ | ৬৫৬৫ |
খ) আদায় | ৯০৪৭.৯ | ৫১৬৮ | ৬০৮৭ |
শিল্প খাতে | |||
ক) ঋণ বিতরণ | ৫৯০৯৬ | ৪০২৬৫.৯ | ১৩০৫৭ |
খ) আদায় | ১৩৩০০ | ৩১৬১৪.৮ | ১০৮৯১ |
খাত ভিত্তিক ঋণের স্থিতি | |||
ক) কৃষি ও মৎস্য | ২১০৬৫.৭ | ২১১৮৬.৯ | ১৯১১৮ |
খ) শিল্প | ১৬১৪৫৩.২ | ১৬৩৯৯৬.৪ | ১০৪৬৭৫ |
গ) ব্যবসা বাণিজ্য | ১৮৫৮৫০.৪ | ১৩৪৩৩৬৬ | ৩১০২৫২ |
ঘ) দারিদ্র্য বিমোচন | ০ | ||
সি.এস.আর | ১৩.২ | ১.৫ | ১৬ |
উৎস আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ, অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ সরকার, বার্ষিক প্রতিবেদন , ২০১৯-২০২০ ও ২০২০-২১।
দেশে রেমিট্যান্স প্রেরণের সুবিধার্থে ইতালির রোম ও মিলানে ’’জনতা এক্সচেঞ্জ কোম্পানি’’ এস.আর.এল (SRL) নামে জনতা ব্যাংক লিমিটেডের একটি সহযোগী প্রতিষ্ঠান কাজ করে যাচ্ছে। জনতা এক্সচেঞ্জ কোম্পানি থেকে বাংলাদেশের যে কোনো ব্যাংকের শাখায় প্রাপকের হিসাবে ৭২ ঘন্টার মধ্যে অর্থ জমা দেওয়ার ইলেক্ট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার (EFT) ব্যবস্থা চালু রয়েছে। World Link Money Transfer.S.A- ‘Greece’’-এর সাথেও EFT পদ্ধতি চালু আছে। অন্যান্য এক্সচেঞ্জ কোম্পানির সাথেও EFT পদ্ধতির মাধ্যমে বৈদেশিক রেমিট্যান্স আনার কাজ চলছে। জনতা এক্সচেঞ্জ কোম্পানি ইতোমধ্যে একই Software ব্যবহার করে শ্রীলংকায় রেমিট্যান্সের কার্যক্রম বাস্তবায়ন করেছে। ফরেন রেমিট্যান্স ও ফরেন এক্সচেঞ্জ ব্যবসা সহজীকরণ ও আধুনিকীকরণের লক্ষ্যে দেশে-বিদেশে ১৯টি শাখায় SWIFT ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের (UAE) আবুধাবী, দুবাই, শারজাহ ও আল-আইন-এ এই ব্যাংকের ৪টি শাখায় গ্রাহকদের কম্পিউটারাইজড ও অন-লাইন ব্যাংকিং সার্ভিস প্রদান করা হচ্ছে।
১৯৯০ সাল থেকে এ পর্যন্ত লোকাল এরিয়া নেটওয়ার্কের মাধ্যমে দেশে ব্যাংকের ১৩৫টি শাখার কার্যক্রম কম্পিউটারভুক্ত করা হয়েছে। বর্তমানে ব্যাংকের ৯১১টি শাখাকে অন-লাইন ব্যাংকিং কার্যক্রমের আওতায় আনা হয়েছে। ব্যাংকে একটি IT Investment Plan চালু আছে। এই পরিকল্পনায় আরও ২৩৫টি গুরুত্বপূর্ণ শাখাকে পর্যায়ক্রমে অন-লাইন ব্যাংকিং কর্যক্রমের আওতায় আনার কাজ চলছে।
২০০০ সাল থেকে ব্যাংকের গ্রাহকরা Ready Cash Card (Debit Card)-এর সাহায্যে Shopping and Utility Bill Payment-এর সুবিধা ভোগ করে আসছে। বর্তমানে ব্যাংকে ক্রেডিট কার্ড ও এটিএম কার্ড দুটোই চালু আছে, গ্রাহকরা মোট ১৪১টি বুথ সহস্রাধিক চঙঝ POS (Point Of Sales)-এ ক্রেডিট কার্ড ও এটিএম কার্ড সেবা পাচ্ছে।
২০০০ সাল হতে www.janatabank-bd.com নামে জনতা ব্যাংকের নিজস্ব ওয়েব সাইট চালু করা হয়েছে। গ্রাহকদের উন্নততর সেবা প্রদান করার লক্ষ্যে ২০০১ সাল থেকে জনতা ব্যাংক ওয়েবসাইটে ইন্টারনেট ব্যাংকিং ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যা জনতা ভবন কর্পোরেট শাখার মাধ্যমে পরিচালিত হয়।
২০১৯ সালে ব্যাংকের আমানত ও ঋণ অগ্রিমের স্থিতির অংশ ছিল ব্যাংকিং খাতের মোট আমানত ও ঋণ অগ্রিমের স্থিতির যথাক্রমে ৫.৪ এবং ৫.০ শতাংশ এবং আমানত ও ঋণ অগ্রিমের গড় সুদহার ব্যবধান দাঁড়ায় ৩.১ শতাংশ। [মোহাম্মদ আবদুল মজিদ]