সারিয়াকান্দি উপজেলা: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

সম্পাদনা সারাংশ নেই
সম্পাদনা সারাংশ নেই
 
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
[[Category:বাংলাপিডিয়া]]
[[Category:বাংলাপিডিয়া]]
'''সারিয়াকান্দি উপজেলা''' ([[বগুড়া জেলা|বগুড়া জেলা]])  আয়তন: ৪০৮.৪৫ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৪°৪৪´ থেকে ২৫°০৪´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯°৩১´ থেকে ৮৯°৪৫´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে সাঘাটা ও সোনাতলা উপজেলা, দক্ষিণে ধুনট ও কাজীপুর উপজেলা, পূর্বে ইসলামপুর, মাদারগঞ্জ ও সরিষাবাড়ী উপজেলা, পশ্চিমে গাবতলী উপজেলা।
'''সারিয়াকান্দি উপজেলা''' ([[বগুড়া জেলা|বগুড়া জেলা]])  আয়তন: ৪০৮.৫০ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৪°৪৪´ থেকে ২৫°০৪´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯°৩১´ থেকে ৮৯°৪৫´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে সাঘাটা ও সোনাতলা উপজেলা, দক্ষিণে ধুনট ও কাজীপুর উপজেলা, পূর্বে ইসলামপুর, মাদারগঞ্জ ও সরিষাবাড়ী উপজেলা, পশ্চিমে গাবতলী উপজেলা।


''জনসংখ্যা'' ২৪০০৮৩; পুরুষ ১২২৮৮৪, মহিলা ১১৭১৯৯। মুসলিম ২৩৩৩৮৩, হিন্দু ৬৬৩৮, বৌদ্ধ ২৪ এবং অন্যান্য ৩৮।
''জনসংখ্যা'' ২৭০৭১৯; পুরুষ ১৩৫২৬৬, মহিলা ১৩৫৪৫৩। মুসলিম ২৬৪৭৩৩, হিন্দু ৫৯৫৫, খ্রিস্টান ১, বৌদ্ধ এবং অন্যান্য ২৯।


''জলাশয়'' প্রধান নদী: যমুনা, বাঙ্গালী।
''জলাশয়'' প্রধান নদী: যমুনা, বাঙ্গালী।
১৫ নং লাইন: ১৫ নং লাইন:
| শহর  || গ্রাম  || শহর  || গ্রাম
| শহর  || গ্রাম  || শহর  || গ্রাম
|-
|-
| ১ || ১২ || ১২০  || ১৪৬  || ১৭৩২০  || ২২২৭৬৩  || ৫৮৮  || ৪৩.৮  || ৩১.
| ১ || ১২ || ১১৭ || ১৭৩ || ১৮৫৪৩ || ২৫২১৭৬ || ৬৬৩ || ৫০.|| ৩৫.
|}
|}
{| class="table table-bordered table-hover"
{| class="table table-bordered table-hover"
|-
|-
| colspan="9" | উপজেলা শহর
| colspan="9" | পৌরসভা
|-
|-
| আয়তন (বর্গ কিমি)  || মৌজা || লোকসংখ্যা  || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি)  || শিক্ষার হার (%)
| আয়তন (বর্গ কিমি)  || ওয়ার্ড  || মহল্লা || লোকসংখ্যা  || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি)  || শিক্ষার হার (%)
|-
|-
| ৩.৫৮ || ৯ || ১৭ || ১৭৩২০  || ৪৮৩৮  || ৪৩.
| ৩.৫৮ || ৯ || ১৭ || ১৮৫৪৩ || ৫১৮০ || ৫০.
|}
|}
{| class="table table-bordered table-hover"
{| class="table table-bordered table-hover"
৩৩ নং লাইন: ৩৩ নং লাইন:
| পুরুষ  || মহিলা
| পুরুষ  || মহিলা
|-  
|-  
| কর্ণিবাড়ী ৫৬ || ১২৯২০  || ১২৩৫৬  || ১১১৩৬  || ৩৮.৪২
| কর্ণিবাড়ী ৫৬ || ১২৯১৯ || ১২৬৭২ || ১১৮০৭ || ৪৩.
|-  
|-
| কাজলা ৫৫ || ১৬৫০৯ || ৮৬৪৪  || ৮১১৬  || ১৩.২৩
| কাজলা ৫৫ || ১৬৫০৯ || ১৩৫৩৪ || ১২৬৫৭ || ২০.
|-  
|-
| কামালপুর ৪৪ || ৫৩৩৬  || ১২১১৮  || ১১৯৭০  || ২৬.০৭
| কামালপুর ৪৪ || ৫৩৩৭ || ১১৫৫৭ || ১১৯২১ || ৩৫.
|-  
|-
| কুতুবপুর ৬৩ || ৪৮৩৬  || ১২৫৩৩  || ১১৯৪৩  || ৩৩.০৫
| কুতুবপুর ৬৩ || ৪৮৩৭ || ১২৪৭০ || ১৩২৫০ || ৪২.
|-  
|-
| চন্দনবাইশা ২৫ || ৩১৮০ || ৫২১৬  || ৫১৬৫  || ৩৬.৮১
| চন্দনবাইশা ২৫ || ৩১৮০ || ৫০৩৮ || ৫৪৯৯ || ৩৭.
|-  
|-
| চালুয়াবাড়ী ১৯ || ১৪৪৫৪  || ৭৫৮৮  || ৬৯৭৯  || ১৭.২৫
| চালুয়াবাড়ী ১৯ || ১৪৪৫৬ || ৮৯৯৪ || ৮৩৮৮ || ১৯.
|-  
|-
| নারচী ৭৫ || ৩৮৮১ || ৯০০৫  || ৮৮১৬  || ৩৬.৪০
| নারচী ৭৫ || ৩৮৮১ || ৯১৬৮ || ৯৮৪৪ || ৪৪.
|-  
|-
| ফুলবাড়ী ৩১ || ৫৮৭৬  || ১৬০৪২  || ১৫৪১৮  || ৩৯.৬৬
| ফুলবাড়ী ৩১ || ৫৮৭৯ || ১৬৩২৮ || ১৭০৩৩ || ৪৫.
|-  
|-
| বোহাইল ১২ || ১৭১৫৫  || ৭২৫১  || ৬৫২২  || ২৯.৩৫
| বোহাইল ১২ || ১৭১৫৬ || ১২০৬২ || ১১২৭৭ || ২২.
|-  
|-
| ভেলাবাড়ী ১১ || ৩৬৪৪  || ৮০৫৯  || ৭৬৬৫  || ২৬.২৫
| ভেলাবাড়ী ১১ || ৩৬৪৬ || ৮২৫২ || ৮৪৭১ || ৩৫.
|-  
|-
| সারিয়াকান্দি ৮৮ || ৬৩২৮  || ৭১৮৮  || ৬৯৫৩  || ৩৬.২৮
| সারিয়াকান্দি ৮৮ || ৫৪৪৩ || ৭৮৩২ || ৭৯৪৭ || ৩৮.
|-  
|-
| হাটশেরপুর ৩৭ || ৬৮১৩  || ৮০৬৩  || ৮০১৭  || ৩১.৩৩
| হাটশেরপুর ৩৭ || ৬৮১৭ || ৭৯৬১ || ৮২১৪ || ৪১.
|}
|}


''সূত্র'' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।
''সূত্র'' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।


[[Image:SariakandiUpazila.jpg|thumb|400px|right]]
[[Image:SariakandiUpazila.jpg|thumb|400px|right]]
''প্রাচীন নির্দশনাদি ও প্রত্নসম্পদ''  ফুলবাড়ী ইউনিয়নের হরিণা গ্রামে কাশীরায়ের জমিদার বাড়ি, উপজেলা সদরে নীলকুঠির ধ্বংসাবশেষ।
''প্রাচীন নির্দশনাদি ও প্রত্নসম্পদ''  ফুলবাড়ী ইউনিয়নের হরিণা গ্রামে কাশীরায়ের জমিদার বাড়ি, উপজেলা সদরে নীলকুঠির ধ্বংসাবশেষ।


''মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাবলি'' মুক্তিযুদ্ধের সময় এ উপজেলা ৭ নং সেক্টরের অধীন ছিল। ১৯৭১ সালের ১৬ আগস্ট রামচন্দ্রপুর গ্রামে মুক্তিবাহিনীর সঙ্গে পাকবাহিনীর এক লড়াই হয়। উক্ত লড়াইয়ে ১ জন দারোগাসহ ৫ জন পাকসেনা ও বেশসংখ্যক রাজাকার নিহত হয়। ২০ আগস্ট মুক্তিবাহিনী যমুনা নদীতে পাকসেনাদের একটি লঞ্চে রকেট ছুঁড়ে লঞ্চটি ধ্বংস করে। এ মাসে মুক্তিযোদ্ধারা সারিয়াকান্দি রাস্তার একটি ব্রিজ বিস্ফোরক দিয়ে ধ্বংস করে। ব্রিজের নিকটবর্তী স্থানে মুক্তিবাহিনীর পুঁতে রাখা মাইন বিস্ফোরণে ১ জন অফিসারসহ ৬ জন পাকসেনা নিহত হয়। ৪ সেপ্টেম্বর বগুড়া থেকে সারিয়াকান্দি আসার পথে ফুলবাড়ী ঘাটে মুক্তিযোদ্ধাদের হামলায় ৬ জন পাকসেনা নিহত হয়। ১৯ সেপ্টেম্বর সারিয়াকান্দির তাজুরপাড়া গ্রামে পাকবাহিনী ও মুক্তিবাহিনীর এক লড়াইয়ে বেশসংখ্যক পাকসেনা নিহত হয়। ২০ অক্টোবর নারচী ও গণকপাড়া গ্রামে পাকবাহিনী ও মুক্তিযোদ্ধাদের এক লড়াইয়ে পাকবাহিনীর ১ জন ক্যাপ্টেনসহ ৯ জন পাকসেনা এবং ১২ জন বাঙালি নিহত হয়। ১০ নভেম্বর মুক্তিবাহিনী সারিয়াকান্দি থানার বাইগুনি গ্রামে মাইন বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ১ জন কর্ণেলসহ ৫ জন পাকসেনাকে হত্যা করে। ২৮ নভেম্বর মুক্তিযোদ্ধা ও পাকবাহিনীর সঙ্গে এক লড়াইয়ে ২ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। ২৯ নভেম্বর মুক্তিযোদ্ধাদের সারিয়াকান্দি থানা আক্রমণে পাকসেনা ও রাজাকারসহ ১৮ জন নিহত হয় এবং ৩ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। তাছাড়াও মুক্তিযোদ্ধারা এ উপজেলার ১৯ জন রাজাকারকে মৃত্যুদন্ড প্রদান করেন এবং যমুনা নদীর তীরে মৃত্যুদন্ড কার্যকর করেন।
''মুক্তিযুদ্ধ'' মুক্তিযুদ্ধের সময় এ উপজেলা ৭ নং সেক্টরের অধীন ছিল। ১৯৭১ সালের ১৬ আগস্ট রামচন্দ্রপুর গ্রামে মুক্তিবাহিনীর সঙ্গে পাকবাহিনীর এক লড়াই হয়। উক্ত লড়াইয়ে ১ জন দারোগাসহ ৫ জন পাকসেনা ও বেশসংখ্যক রাজাকার নিহত হয়। ২০ আগস্ট মুক্তিবাহিনী যমুনা নদীতে পাকসেনাদের একটি লঞ্চে রকেট ছুঁড়ে লঞ্চটি ধ্বংস করে। এ মাসে মুক্তিযোদ্ধারা সারিয়াকান্দি রাস্তার একটি ব্রিজ বিস্ফোরক দিয়ে ধ্বংস করে। ব্রিজের নিকটবর্তী স্থানে মুক্তিবাহিনীর পুঁতে রাখা মাইন বিস্ফোরণে ১ জন অফিসারসহ ৬ জন পাকসেনা নিহত হয়। ৪ সেপ্টেম্বর বগুড়া থেকে সারিয়াকান্দি আসার পথে ফুলবাড়ী ঘাটে মুক্তিযোদ্ধাদের হামলায় ৬ জন পাকসেনা নিহত হয়। ১৯ সেপ্টেম্বর সারিয়াকান্দির তাজুরপাড়া গ্রামে পাকবাহিনী ও মুক্তিবাহিনীর এক লড়াইয়ে বেশসংখ্যক পাকসেনা নিহত হয়। ২০ অক্টোবর নারচী ও গণকপাড়া গ্রামে পাকবাহিনী ও মুক্তিযোদ্ধাদের এক লড়াইয়ে পাকবাহিনীর ১ জন ক্যাপ্টেনসহ ৯ জন পাকসেনা এবং ১২ জন বাঙালি নিহত হয়। ১০ নভেম্বর মুক্তিবাহিনী সারিয়াকান্দি থানার বাইগুনি গ্রামে মাইন বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ১ জন কর্ণেলসহ ৫ জন পাকসেনাকে হত্যা করে। ২৮ নভেম্বর মুক্তিযোদ্ধা ও পাকবাহিনীর সঙ্গে এক লড়াইয়ে ২ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। ২৯ নভেম্বর মুক্তিযোদ্ধাদের সারিয়াকান্দি থানা আক্রমণে পাকসেনা ও রাজাকারসহ ১৮ জন নিহত হয় এবং ৩ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। তাছাড়াও মুক্তিযোদ্ধারা এ উপজেলার ১৯ জন রাজাকারকে মৃত্যুদ- প্রদান করেন এবং যমুনা নদীর তীরে মৃত্যুদ- কার্যকর করেন।
 
''বিস্তারিত দেখুন''  সারিয়াকান্দি উপজেলা, ''বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ'', বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ১০।


''ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান''  মসজিদ ৪৬৫, মন্দির ৬, মাযার ১।
''ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান'' মসজিদ ৪৬৫, মন্দির ৬, মাযার ১।


''শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান'' গড় হার ৩২.%; পুরুষ ৩৭.%, মহিলা ২৭.%। কলেজ ৫, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ২২, প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৬০, মাদ্রাসা ৩০। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: চন্দননাইশ ডিগ্রি কলেজ (১৯৬৪), জামথল টেকনিক্যাল ম্যানেজমেন্ট কলেজ (২০০১), নওখিলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (১৯০১), দেবডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (১৯০৩), ছাগলধরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (১৯০৪), সারিয়াকান্দি মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (১৯০৫), হাটফুলবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (১৯০৫), কাজলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (১৯০৫)।
''শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান'' গড় হার ৩৬.%; পুরুষ ৪০.%, মহিলা ৩৩.%। কলেজ ৫, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ২২, প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৬০, মাদ্রাসা ৩০। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: চন্দননাইশ ডিগ্রি কলেজ (১৯৬৪), জামথল টেকনিক্যাল ম্যানেজমেন্ট কলেজ (২০০১), নওখিলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (১৯০১), দেবডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (১৯০৩), ছাগলধরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (১৯০৪), সারিয়াকান্দি মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (১৯০৫), হাটফুলবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (১৯০৫), কাজলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (১৯০৫)।


''সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান'' ক্লাব ২০, সাংস্কৃতিক সংগঠন ২, মহিলা সংগঠন ৪, থিয়েটার গ্রুপ ১, সিনেমা হল ২।
''সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান'' ক্লাব ২০, সাংস্কৃতিক সংগঠন ২, মহিলা সংগঠন ৪, থিয়েটার গ্রুপ ১, সিনেমা হল ২।
৮৩ নং লাইন: ৮৫ নং লাইন:
''মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার'' মৎস্য ১২৩২, গবাদিপশু ১১০, হাঁস-মুরগি ৮৫।
''মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার'' মৎস্য ১২৩২, গবাদিপশু ১১০, হাঁস-মুরগি ৮৫।


''যোগাযোগ বিশেষত্ব'' পাকারাস্তা ৩১.১৯ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ৩০ কিমি, কাঁচারাস্তা ২৩৬.৬৬ কিমি''';''' নৌপথ ১৬ নটিক্যাল মাইল।
''যোগাযোগ বিশেষত্ব'' পাকারাস্তা ৮৬ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ৯.০৪ কিমি, কাঁচারাস্তা ৪০৬.০৬ কিমি; নৌপথ ১৭.৪ কিমি।


''বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন'' গরু ও ঘোড়ার গাড়ি, সোয়ারী, পাল্কি।
''বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন'' গরু ও ঘোড়ার গাড়ি, সোয়ারী, পাল্কি।
৯৫ নং লাইন: ৯৭ নং লাইন:
''প্রধান রপ্তানিদ্রব্য''  পাট, শাকসবজি।
''প্রধান রপ্তানিদ্রব্য''  পাট, শাকসবজি।


''বিদ্যুৎ ব্যবহার'' এ উপজেলার সবক’টি ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন বিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে .৬০% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।
''বিদ্যুৎ ব্যবহার'' এ উপজেলার সবক’টি ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন বিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ২৮.% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।


''পানীয়জলের উৎস''  নলকূপ ৯৪%, ট্যাপ ০.২৪%, পুকুর ০.৩১% এবং অন্যান্য .৪৫%।
''পানীয়জলের উৎস''  নলকূপ ৯৫.৭%, ট্যাপ ০.% এবং অন্যান্য .%।  


''স্যানিটেশন ব্যবস্থা''  এ উপজেলার ১৯.১১% (গ্রামে ১৬.০৩% ও শহরে ৫৮.৬৯%) পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৫৩.৭০% (গ্রামে ৫৬.৪৩% ও শহরে ১৮.৬২%) পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ২৭.২০% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।
''স্যানিটেশন ব্যবস্থা''  এ উপজেলার ৬৭.% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ২১.% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ১০.% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।


''স্বাস্থ্যকেন্দ্র''  উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্র ১, পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ১২, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ৪, ক্লিনিক ১।
''স্বাস্থ্যকেন্দ্র''  উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্র ১, পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ১২, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ৪, ক্লিনিক ১।
১০৭ নং লাইন: ১০৯ নং লাইন:
''এনজিও'' ব্র্যাক, ওয়ার্ল্ড ভিশন, আশা, ঠেঙ্গামারা মহিলা সবুজ সংঘ।  [মো. হাফিজুর রহমান]
''এনজিও'' ব্র্যাক, ওয়ার্ল্ড ভিশন, আশা, ঠেঙ্গামারা মহিলা সবুজ সংঘ।  [মো. হাফিজুর রহমান]


'''তথ্যসূত্র'''  আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; সারিয়াকান্দি উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।
'''তথ্যসূত্র'''  আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; সারিয়াকান্দি উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।


[[en:Sariakandi Upazila]]
[[en:Sariakandi Upazila]]

১৬:৪৫, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ

সারিয়াকান্দি উপজেলা (বগুড়া জেলা)  আয়তন: ৪০৮.৫০ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৪°৪৪´ থেকে ২৫°০৪´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯°৩১´ থেকে ৮৯°৪৫´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে সাঘাটা ও সোনাতলা উপজেলা, দক্ষিণে ধুনট ও কাজীপুর উপজেলা, পূর্বে ইসলামপুর, মাদারগঞ্জ ও সরিষাবাড়ী উপজেলা, পশ্চিমে গাবতলী উপজেলা।

জনসংখ্যা ২৭০৭১৯; পুরুষ ১৩৫২৬৬, মহিলা ১৩৫৪৫৩। মুসলিম ২৬৪৭৩৩, হিন্দু ৫৯৫৫, খ্রিস্টান ১, বৌদ্ধ ১ এবং অন্যান্য ২৯।

জলাশয় প্রধান নদী: যমুনা, বাঙ্গালী।

প্রশাসন সারিয়াকান্দি থানা গঠিত হয় ১৮৮৬ সালে এবং পৌরসভায় রূপান্তর করা হয় ১৯৯৯ সালে।

উপজেলা
পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
শহর গ্রাম শহর গ্রাম
১২ ১১৭ ১৭৩ ১৮৫৪৩ ২৫২১৭৬ ৬৬৩ ৫০.৫ ৩৫.৯
পৌরসভা
আয়তন (বর্গ কিমি) ওয়ার্ড মহল্লা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
৩.৫৮ ১৭ ১৮৫৪৩ ৫১৮০ ৫০.৫
ইউনিয়ন
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড আয়তন (একর) লোকসংখ্যা শিক্ষার হার (%)
পুরুষ মহিলা
কর্ণিবাড়ী ৫৬ ১২৯১৯ ১২৬৭২ ১১৮০৭ ৪৩.১
কাজলা ৫৫ ১৬৫০৯ ১৩৫৩৪ ১২৬৫৭ ২০.৭
কামালপুর ৪৪ ৫৩৩৭ ১১৫৫৭ ১১৯২১ ৩৫.৭
কুতুবপুর ৬৩ ৪৮৩৭ ১২৪৭০ ১৩২৫০ ৪২.৪
চন্দনবাইশা ২৫ ৩১৮০ ৫০৩৮ ৫৪৯৯ ৩৭.৭
চালুয়াবাড়ী ১৯ ১৪৪৫৬ ৮৯৯৪ ৮৩৮৮ ১৯.৫
নারচী ৭৫ ৩৮৮১ ৯১৬৮ ৯৮৪৪ ৪৪.৭
ফুলবাড়ী ৩১ ৫৮৭৯ ১৬৩২৮ ১৭০৩৩ ৪৫.১
বোহাইল ১২ ১৭১৫৬ ১২০৬২ ১১২৭৭ ২২.০
ভেলাবাড়ী ১১ ৩৬৪৬ ৮২৫২ ৮৪৭১ ৩৫.২
সারিয়াকান্দি ৮৮ ৫৪৪৩ ৭৮৩২ ৭৯৪৭ ৩৮.৬
হাটশেরপুর ৩৭ ৬৮১৭ ৭৯৬১ ৮২১৪ ৪১.০

সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।

প্রাচীন নির্দশনাদি ও প্রত্নসম্পদ  ফুলবাড়ী ইউনিয়নের হরিণা গ্রামে কাশীরায়ের জমিদার বাড়ি, উপজেলা সদরে নীলকুঠির ধ্বংসাবশেষ।

মুক্তিযুদ্ধ মুক্তিযুদ্ধের সময় এ উপজেলা ৭ নং সেক্টরের অধীন ছিল। ১৯৭১ সালের ১৬ আগস্ট রামচন্দ্রপুর গ্রামে মুক্তিবাহিনীর সঙ্গে পাকবাহিনীর এক লড়াই হয়। উক্ত লড়াইয়ে ১ জন দারোগাসহ ৫ জন পাকসেনা ও বেশসংখ্যক রাজাকার নিহত হয়। ২০ আগস্ট মুক্তিবাহিনী যমুনা নদীতে পাকসেনাদের একটি লঞ্চে রকেট ছুঁড়ে লঞ্চটি ধ্বংস করে। এ মাসে মুক্তিযোদ্ধারা সারিয়াকান্দি রাস্তার একটি ব্রিজ বিস্ফোরক দিয়ে ধ্বংস করে। ব্রিজের নিকটবর্তী স্থানে মুক্তিবাহিনীর পুঁতে রাখা মাইন বিস্ফোরণে ১ জন অফিসারসহ ৬ জন পাকসেনা নিহত হয়। ৪ সেপ্টেম্বর বগুড়া থেকে সারিয়াকান্দি আসার পথে ফুলবাড়ী ঘাটে মুক্তিযোদ্ধাদের হামলায় ৬ জন পাকসেনা নিহত হয়। ১৯ সেপ্টেম্বর সারিয়াকান্দির তাজুরপাড়া গ্রামে পাকবাহিনী ও মুক্তিবাহিনীর এক লড়াইয়ে বেশসংখ্যক পাকসেনা নিহত হয়। ২০ অক্টোবর নারচী ও গণকপাড়া গ্রামে পাকবাহিনী ও মুক্তিযোদ্ধাদের এক লড়াইয়ে পাকবাহিনীর ১ জন ক্যাপ্টেনসহ ৯ জন পাকসেনা এবং ১২ জন বাঙালি নিহত হয়। ১০ নভেম্বর মুক্তিবাহিনী সারিয়াকান্দি থানার বাইগুনি গ্রামে মাইন বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ১ জন কর্ণেলসহ ৫ জন পাকসেনাকে হত্যা করে। ২৮ নভেম্বর মুক্তিযোদ্ধা ও পাকবাহিনীর সঙ্গে এক লড়াইয়ে ২ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। ২৯ নভেম্বর মুক্তিযোদ্ধাদের সারিয়াকান্দি থানা আক্রমণে পাকসেনা ও রাজাকারসহ ১৮ জন নিহত হয় এবং ৩ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। তাছাড়াও মুক্তিযোদ্ধারা এ উপজেলার ১৯ জন রাজাকারকে মৃত্যুদ- প্রদান করেন এবং যমুনা নদীর তীরে মৃত্যুদ- কার্যকর করেন।

বিস্তারিত দেখুন সারিয়াকান্দি উপজেলা, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ১০।

ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদ ৪৬৫, মন্দির ৬, মাযার ১।

শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৩৬.৯%; পুরুষ ৪০.৬%, মহিলা ৩৩.৪%। কলেজ ৫, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ২২, প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৬০, মাদ্রাসা ৩০। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: চন্দননাইশ ডিগ্রি কলেজ (১৯৬৪), জামথল টেকনিক্যাল ম্যানেজমেন্ট কলেজ (২০০১), নওখিলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (১৯০১), দেবডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (১৯০৩), ছাগলধরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (১৯০৪), সারিয়াকান্দি মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (১৯০৫), হাটফুলবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (১৯০৫), কাজলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (১৯০৫)।

সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান ক্লাব ২০, সাংস্কৃতিক সংগঠন ২, মহিলা সংগঠন ৪, থিয়েটার গ্রুপ ১, সিনেমা হল ২।

জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৬৭.৮২%, অকৃষি শ্রমিক ২.০৩%, শিল্প ০.৫৭%, ব্যবসা ১১.৭১%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ২.৩৫%, চাকরি ৬.২৪%, নির্মাণ ১.৩৩%, ধর্মীয় সেবা ০.১১%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.২০% এবং অন্যান্য ৭.৬৪%।

কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৫৬.৬১%, ভূমিহীন ৪৩.৩৯%। শহরে ৩৩.৪১% এবং গ্রামে ৫৮.৪১% পরিবারের কৃষিজমি রয়েছে।

প্রধান কৃষি ফসল ধান, পাট, গম, সরিষা, শাকসবজি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি  তিল, তিসি, অড়হর, খেসারি, মাষকলাই, কাউন, মিষ্টি আলু।

প্রধান ফল-ফলাদি আম, কাঁঠাল, পেয়ারা, কলা, পেঁপে।

মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার মৎস্য ১২৩২, গবাদিপশু ১১০, হাঁস-মুরগি ৮৫।

যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ৮৬ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ৯.০৪ কিমি, কাঁচারাস্তা ৪০৬.০৬ কিমি; নৌপথ ১৭.৪ কিমি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন গরু ও ঘোড়ার গাড়ি, সোয়ারী, পাল্কি।

শিল্প ও কলকারখানা রাইস মিল ৩৮, আইসক্রিম ফ্যাক্টরি ৯, খাদ্য ও পানীয়জাত দ্রব্য ২৩৩, ধাতব শিল্প ২০, ওয়েল্ডিং কারখানা ১২।

কুটিরশিল্প স্বর্ণশিল্প ৪৭, লৌহশিল্প ৭৪, মৃৎশিল্প ২৫০, তাঁতশিল্প ৩০, দারুশিল্প ২৫১, বাঁশের কাজ ১৭৫, সেলাই কাজ ২২৫।

হাটবাজার ও মেলা হাটবাজার ২০, মেলা ৩। ফুলবাড়ী হাট, সারিয়াকান্দি হাট, চন্দনবাইশা হাট এবং শ্রী পঞ্চমী মেলা (হরিণা গ্রাম) ও পৌষমেলা (ছাইহাটা) উল্লেখযোগ্য।

প্রধান রপ্তানিদ্রব্য  পাট, শাকসবজি।

বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন বিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ২৮.১% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।

পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৯৫.৭%, ট্যাপ ০.২% এবং অন্যান্য ৪.১%।

স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ৬৭.৭% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ২১.৮% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ১০.৫% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।

স্বাস্থ্যকেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্র ১, পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ১২, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ৪, ক্লিনিক ১।

প্রাকৃতিক দুর্যোগ ১৮৬৬ ও ১৮৭৪ সালের দুর্ভিক্ষে এ উপজেলার বহু লোক অনাহারে মারা যায়। ১৮৮৫ ও ১৮৯৭ সালের ভূমিকম্প এবং ১৯৫৯ ও ১৯৮৪ সালের বন্যায় উপজেলার বেশসংখ্যক লোকের প্রানহাণিসহ ঘরবাড়ি, গবাদিপশু ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়।

এনজিও ব্র্যাক, ওয়ার্ল্ড ভিশন, আশা, ঠেঙ্গামারা মহিলা সবুজ সংঘ।  [মো. হাফিজুর রহমান]

তথ্যসূত্র  আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; সারিয়াকান্দি উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।