সখীপুর উপজেলা: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

সম্পাদনা সারাংশ নেই
সম্পাদনা সারাংশ নেই
 
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
[[Category:বাংলাপিডিয়া]]
[[Category:বাংলাপিডিয়া]]
'''সখীপুর উপজেলা''' ([[টাঙ্গাইল জেলা|টাঙ্গাইল জেলা]])  আয়তন: ৪২৯.৬৩ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৪°১১´ থেকে ২৪°২৬´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯০°০৪´ থেকে ৯০°১৮´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে ঘাটাইল উপজেলা, দক্ষিণে মির্জাপুর উপজেলা, পূর্বে ভালুকা, শ্রীপুর (গাজীপুর) ও কালিয়াকৈর উপজেলা, পশ্চিমে কালিহাতি ও বাসাইল উপজেলা।
'''সখীপুর উপজেলা''' ([[টাঙ্গাইল জেলা|টাঙ্গাইল জেলা]])  আয়তন: ৪৩৫.১৯ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৪°১১´ থেকে ২৪°২৬´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯০°০৪´ থেকে ৯০°১৮´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে ঘাটাইল উপজেলা, দক্ষিণে মির্জাপুর উপজেলা, পূর্বে ভালুকা, শ্রীপুর (গাজীপুর) ও কালিয়াকৈর উপজেলা, পশ্চিমে কালিহাতি ও বাসাইল উপজেলা।


''জনসংখ্যা'' ২৪১৬৬৫; পুরুষ ১২১৬৮৩, মহিলা ১১৯৯৮২। মুসলিম ২২৭৭৫৬, হিন্দু ১৩৭৯১, বৌদ্ধ ২৬, খ্রিস্টান এবং অন্যান্য ৮৪।
''জনসংখ্যা'' ২৭৭৬৮৫; পুরুষ ১৩২০৬১, মহিলা ১৪৫৬২৪। মুসলিম ২৬১৩৯৮, হিন্দু ১৫৫৯৮, বৌদ্ধ , খ্রিস্টান ৫৯ এবং অন্যান্য ৬২১।


''জলাশয়'' প্রধান নদী: বংশী ও সালদা।
''জলাশয়'' প্রধান নদী: বংশী ও সালদা।
১৬ নং লাইন: ১৬ নং লাইন:
| শহর  || গ্রাম  || শহর  || গ্রাম
| শহর  || গ্রাম  || শহর  || গ্রাম
|-
|-
| ১ || ৬  || ৬৫ || ১২৩ || ২৮৫১৩ || ২১৩১৫২ || ৫৬২  || ৪৬.৬  || ৩১.৬
| ১ || ৬ || ৬০ || ১২২ || ৪৫৬৪৫ || ২৩২০৪০ || ৬৩৮ || ৪৬.৬ (২০০১) || ৩৮.৮
|}
{| class="table table-bordered table-hover"
|-
| colspan="9" | পৌরসভা
|-
| আয়তন (বর্গ কিমি) || ওয়ার্ড || মহল্লা || লোকসংখ্যা || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) || শিক্ষার হার (%)
|-
| - || ৯ || ১৮ || ৩০০২৮ || - || ৫৭.৬
|}
|}
{| class="table table-bordered table-hover"
{| class="table table-bordered table-hover"
২৪ নং লাইন: ৩২ নং লাইন:
| আয়তন (বর্গ কিমি)  || মৌজা  || লোকসংখ্যা  || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি)  || শিক্ষার হার (%)
| আয়তন (বর্গ কিমি)  || মৌজা  || লোকসংখ্যা  || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি)  || শিক্ষার হার (%)
|-
|-
| ১৯.৬৮ || ৬  || ২৮৫১৩  || ৪৪৯ || ৪৬.
| ১৯.৬৮ (২০০১) || || ১৫৬১৭ || ৪৪৯ (২০০১) || ৪২.
|}
|}
{| class="table table-bordered table-hover"
{| class="table table-bordered table-hover"
৩৪ নং লাইন: ৪২ নং লাইন:
| পুরুষ  || মহিলা
| পুরুষ  || মহিলা
|-  
|-  
| কাঁকড়াজান ৬৭ || ১৭৮৬৪  || ১৮২১৭ || ১৮৫০৫  || ২৫.৭১
| কাঁকড়াজান ৬৭ || ১৬৫০৯ || ১৭৯৯৭ || ২০৪৫৬ || ৩৬.
|-
|-
| কালিয়া ৮১ || ১৭৭৮৫  || ২৪৮৭৭ || ২৪৩৯৩  || ৩১.১৫
| কালিয়া ৮১ || ১৭১৭৩ || ২৫২৮৮ || ২৭৮৪৬ || ৩৭.
|-
|-
| গজারিয়া ২৭ || ১৮৮০৪  || ২৪২৫৩ || ২৩৭৫১  || ৪০.৫৫
| গজারিয়া ২৭ || ৬২৬০ || ১৭৯৮৭ || ২০১৩৩ || ৪০.
|-
|-
| বহেড়াতৈল ১৩ || ১০৮১৫  || ১১৯২৯ || ১২১৮৯  || ৩৩.৬৪
| বহেড়াতৈল ১৩ || ১০৬৫৬ || ১১৩০৯ || ১৩১০৪ || ৩৬.
|-
|-
| যাদবপুর ৫৪ || ২৭২১১  || ২৫৯০৯ || ২৫০৯৪  || ৩৩.৭৫
| যাদবপুর ৫৪ || ১১৪০৭ || ২৮২১২ || ৩০৮৮০ || ৪০.
|-
|-
| হাতিবান্ধা ৪০ || ১৫০৪০  || ১৬৪৯৮ || ১৬০৫০  || ৩৩.৯৫
| হাতিবান্ধা ৪০ || ১৫০৩৯ || ১৬৩৭২ || ১৮০৭৩ || ৪২.
|}
|}
''সূত্র'' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।
''সূত্র'' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।


[[Image:SakhipurUpazila.jpg|thumb|right|400px]]
[[Image:SakhipurUpazila.jpg|thumb|right|400px]]
''প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ'' হযরত শাহ্ জালালের (রহ) সফরসঙ্গি শাহ্ কামালের (রহ) মাযার (গড় গোবিন্দপুর গ্রাম)।
''প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ'' হযরত শাহ্ জালালের (রহ) সফরসঙ্গি শাহ্ কামালের (রহ) মাযার (গড় গোবিন্দপুর গ্রাম)।


''মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাবলি'' ১৯৭১ সালের ১০ জুন এ উপজেলার বহেড়াতৈলে কাদেরিয়া বাহিনী শপথ নিয়েছিল। ৬ অক্টোবর বল­ায় পাকসেনাদের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের লড়াইয়ে ৪ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন।
''মুক্তিযুদ্ধ'' ১৯৭১ সালের ১০ জুন এ উপজেলার বহেড়াতৈলে কাদেরিয়া বাহিনী শপথ নিয়েছিল। তবে এর পূর্বে মে মাসে বইলানপুরে পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের একটি যুদ্ধ সংঘটিত হয়। জুন মাসে অপর একটি যুদ্ধ হয় উপজেলার কচুয়া এলাকায়। ৬ অক্টোবর বল্লায় পাকসেনাদের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের লড়াইয়ে ৪ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। উপজেলার বহেড়াতৈল মুক্তিযোদ্ধাদের শপথ নেয়ার স্থানে একটি শপথ স্তম্ভ এবং অপর একটি স্থানে ১টি স্মৃতিস্তম্ভ স্থাপিত হয়েছে।


''মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন'' স্মৃতিসৌধ ১; শপথ স্তম্ভ ১ (মুক্তিযোদ্ধাদের শপথ নেয়ার স্থান, বহেড়াতৈল)।
''বিস্তারিত দেখুন'' সখীপুর উপজেলা, ''বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ'', বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ১০।


''ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান''  মসজিদ ৪৫৭, মন্দির ১৩, মাযার ২। উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান: সখীপুর কেন্দ্রিয় জামে মসজিদ, কুতুবপুর মসজিদ, শাহ্ কামালের (রহ) মাযার।
''ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান'' মসজিদ ৪৫৭, মন্দির ১৩, মাযার ২। উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান: সখীপুর কেন্দ্রিয় জামে মসজিদ, কুতুবপুর মসজিদ, শাহ্ কামালের (রহ) মাযার।  


''শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান'' গড় হার ৩৩.%; পুরুষ ৩৯.%, মহিলা ২৭.%। কলেজ ৭, মাধ্যামিক বিদ্যালয় ৬০, প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৩৬, মাদ্রাসা ২৭। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: মুজিব ডিগ্রী কলেজ (১৯৭২), সখীপুর আবাসিক মহিলা কলেজ (১৯৯৫), হাতিয়া মহাবিদ্যালয় (১৯৬৯), বোয়ালী মহাবিদ্যালয় (১৯৯৩), সবুজ বাংলা উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৯৩), হাতিয়া হাজী হাফিজ উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৬৪)।
''শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান'' গড় হার ৪১.%; পুরুষ ৪৪.%, মহিলা ৩৮.%। কলেজ ৭, মাধ্যামিক বিদ্যালয় ৬০, প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৩৬, মাদ্রাসা ২৭। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: মুজিব ডিগ্রী কলেজ (১৯৭২), সখীপুর আবাসিক মহিলা কলেজ (১৯৯৫), হাতিয়া মহাবিদ্যালয় (১৯৬৯), বোয়ালী মহাবিদ্যালয় (১৯৯৩), সবুজ বাংলা উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৯৩), হাতিয়া হাজী হাফিজ উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৬৪)।


''জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস'' কৃষি ৬৯.৮২%, অকৃষি শ্রমিক ১.৯৪%, শিল্প ০.৪৫%, ব্যবসা ৯.৩৮%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ২.২২%, চাকরি ৪.৮৪%, নির্মাণ ০.৬৭%, ধর্মীয় সেবা ০.১৪%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ৩.৬৭% এবং অন্যান্য ৬.৮৭%।
''জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস'' কৃষি ৬৯.৮২%, অকৃষি শ্রমিক ১.৯৪%, শিল্প ০.৪৫%, ব্যবসা ৯.৩৮%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ২.২২%, চাকরি ৪.৮৪%, নির্মাণ ০.৬৭%, ধর্মীয় সেবা ০.১৪%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ৩.৬৭% এবং অন্যান্য ৬.৮৭%।
৭১ নং লাইন: ৭৯ নং লাইন:
''মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার'' মৎস্য ৫৬, গবাদিপশু ১২, হাঁস-মুরগি ২৮।
''মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার'' মৎস্য ৫৬, গবাদিপশু ১২, হাঁস-মুরগি ২৮।


''যোগাযোগ বিশেষত্ব'' পাকারাস্তা ৬৪.৪৯ কিমি, কাঁচারাস্তা ৫৭৮.৭৫ কিমি।
''যোগাযোগ বিশেষত্ব'' পাকারাস্তা ১৩৮.৯৮ কিমি, কাঁচারাস্তা ৫৪০.৭৯ কিমি।


''বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন'' পাল্কি, ঘোড়ার গাড়ি, গরুর গাড়ি।
''বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন'' পাল্কি, ঘোড়ার গাড়ি, গরুর গাড়ি।
৮৩ নং লাইন: ৯১ নং লাইন:
''প্রধান রপ্তানিদ্রব্য''   ধান, কলা, কাঁঠাল, শাকসবজি।
''প্রধান রপ্তানিদ্রব্য''   ধান, কলা, কাঁঠাল, শাকসবজি।


''বিদ্যুৎ ব্যবহার'' এ উপজেলার সবক’টি ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ১৩.১৬% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।
''বিদ্যুৎ ব্যবহার'' এ উপজেলার সবক’টি ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ৭২.% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।


''পানীয়জলের উৎস'' নলকূপ ৮২.০৯%, পুকুর .৪৭%, ট্যাপ ০.৬৭% এবং অন্যান্য ১৬.৮৩%।
''পানীয়জলের উৎস''   নলকূপ ৮৯.০%, ট্যাপ ২.০% এবং অন্যান্য .%।  


''স্যানিটেশন ব্যবস্থা'' এ উপজেলার ৩৫.৩৫% (গ্রামে ৩১.৯২% ও শহরে ৬২.৬০%) পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ২২.৩৭% (গ্রামে ২৩.১৮% ও শহরে ১৫.৯৯%) পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ৪২.২৮% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।
''স্যানিটেশন ব্যবস্থা'' এ উপজেলার ৬৭.% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ১৮.% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ১৩.% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।


''স্বাস্থ্যকেন্দ্র'' হাসপাতাল ১, দাতব্য চিকিৎসালয় ৪, চক্ষু হাসপাতাল ১, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ৪, পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র ৪, শিশু হাসপাতাল ১, পরিবার পরিকল্পনা ক্লিনিক ৬,  ব্র্যাক স্বাস্থ্যকেন্দ্র ১, গ্রামীণ স্বাস্থ্যকেন্দ্র ১, ক্লিনিক ২, ডায়াগনস্টিক সেন্টার ১।
''স্বাস্থ্যকেন্দ্র'' হাসপাতাল ১, দাতব্য চিকিৎসালয় ৪, চক্ষু হাসপাতাল ১, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ৪, পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র ৪, শিশু হাসপাতাল ১, পরিবার পরিকল্পনা ক্লিনিক ৬,  ব্র্যাক স্বাস্থ্যকেন্দ্র ১, গ্রামীণ স্বাস্থ্যকেন্দ্র ১, ক্লিনিক ২, ডায়াগনস্টিক সেন্টার ১।
৯৩ নং লাইন: ১০১ নং লাইন:
''এনজিও'' ব্র্যাক, প্রশিকা, ব্যুরো টাঙ্গাইল, সেভস।  [হারুন রশীদ]
''এনজিও'' ব্র্যাক, প্রশিকা, ব্যুরো টাঙ্গাইল, সেভস।  [হারুন রশীদ]


'''তথ্যসূত্র'''  আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; সখীপুর উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।
'''তথ্যসূত্র'''  আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; সখীপুর উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।


[[en:Sakhipur Upazila]]
[[en:Sakhipur Upazila]]

১৬:৪২, ৫ অক্টোবর ২০২৩ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ

সখীপুর উপজেলা (টাঙ্গাইল জেলা)  আয়তন: ৪৩৫.১৯ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৪°১১´ থেকে ২৪°২৬´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯০°০৪´ থেকে ৯০°১৮´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে ঘাটাইল উপজেলা, দক্ষিণে মির্জাপুর উপজেলা, পূর্বে ভালুকা, শ্রীপুর (গাজীপুর) ও কালিয়াকৈর উপজেলা, পশ্চিমে কালিহাতি ও বাসাইল উপজেলা।

জনসংখ্যা ২৭৭৬৮৫; পুরুষ ১৩২০৬১, মহিলা ১৪৫৬২৪। মুসলিম ২৬১৩৯৮, হিন্দু ১৫৫৯৮, বৌদ্ধ ৯, খ্রিস্টান ৫৯ এবং অন্যান্য ৬২১।

জলাশয় প্রধান নদী: বংশী ও সালদা।

প্রশাসন সখীপুর থানা গঠিত হয় ১৯৭৬ সালে এবং থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮৩ সালে।

উপজেলা
পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
শহর গ্রাম শহর গ্রাম
৬০ ১২২ ৪৫৬৪৫ ২৩২০৪০ ৬৩৮ ৪৬.৬ (২০০১) ৩৮.৮
পৌরসভা
আয়তন (বর্গ কিমি) ওয়ার্ড মহল্লা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
- ১৮ ৩০০২৮ - ৫৭.৬
উপজেলা শহর
আয়তন (বর্গ কিমি) মৌজা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
১৯.৬৮ (২০০১) ১৫৬১৭ ৪৪৯ (২০০১) ৪২.২
ইউনিয়ন
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড আয়তন (একর) লোকসংখ্যা শিক্ষার হার (%)
পুরুষ মহিলা
কাঁকড়াজান ৬৭ ১৬৫০৯ ১৭৯৯৭ ২০৪৫৬ ৩৬.০
কালিয়া ৮১ ১৭১৭৩ ২৫২৮৮ ২৭৮৪৬ ৩৭.৯
গজারিয়া ২৭ ৬২৬০ ১৭৯৮৭ ২০১৩৩ ৪০.৮
বহেড়াতৈল ১৩ ১০৬৫৬ ১১৩০৯ ১৩১০৪ ৩৬.১
যাদবপুর ৫৪ ১১৪০৭ ২৮২১২ ৩০৮৮০ ৪০.৪
হাতিবান্ধা ৪০ ১৫০৩৯ ১৬৩৭২ ১৮০৭৩ ৪২.০

সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।

প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ হযরত শাহ্ জালালের (রহ) সফরসঙ্গি শাহ্ কামালের (রহ) মাযার (গড় গোবিন্দপুর গ্রাম)।

মুক্তিযুদ্ধ ১৯৭১ সালের ১০ জুন এ উপজেলার বহেড়াতৈলে কাদেরিয়া বাহিনী শপথ নিয়েছিল। তবে এর পূর্বে মে মাসে বইলানপুরে পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের একটি যুদ্ধ সংঘটিত হয়। জুন মাসে অপর একটি যুদ্ধ হয় উপজেলার কচুয়া এলাকায়। ৬ অক্টোবর বল্লায় পাকসেনাদের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের লড়াইয়ে ৪ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। উপজেলার বহেড়াতৈল মুক্তিযোদ্ধাদের শপথ নেয়ার স্থানে একটি শপথ স্তম্ভ এবং অপর একটি স্থানে ১টি স্মৃতিস্তম্ভ স্থাপিত হয়েছে।

বিস্তারিত দেখুন সখীপুর উপজেলা, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ১০।

ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদ ৪৫৭, মন্দির ১৩, মাযার ২। উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান: সখীপুর কেন্দ্রিয় জামে মসজিদ, কুতুবপুর মসজিদ, শাহ্ কামালের (রহ) মাযার।

শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৪১.১%; পুরুষ ৪৪.৪%, মহিলা ৩৮.১%। কলেজ ৭, মাধ্যামিক বিদ্যালয় ৬০, প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৩৬, মাদ্রাসা ২৭। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: মুজিব ডিগ্রী কলেজ (১৯৭২), সখীপুর আবাসিক মহিলা কলেজ (১৯৯৫), হাতিয়া মহাবিদ্যালয় (১৯৬৯), বোয়ালী মহাবিদ্যালয় (১৯৯৩), সবুজ বাংলা উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৯৩), হাতিয়া হাজী হাফিজ উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৬৪)।

জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৬৯.৮২%, অকৃষি শ্রমিক ১.৯৪%, শিল্প ০.৪৫%, ব্যবসা ৯.৩৮%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ২.২২%, চাকরি ৪.৮৪%, নির্মাণ ০.৬৭%, ধর্মীয় সেবা ০.১৪%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ৩.৬৭% এবং অন্যান্য ৬.৮৭%।

কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৭২.৫২%, ভূমিহীন ২৭.৪৮%। শহরে ৬৮.৭২% এবং গ্রামে ৭২.৯৯% পরিবারের কৃষিজমি রয়েছে।

প্রধান কৃষি ফসল ধান, পাট, তুলা, সরিষা, আলু, গম, ডাল, শাকসবজি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি  তিল, কলাই, অড়হর।

প্রধান ফল-ফলাদি কলা, কাঁঠাল, আম, জাম, লিচু, পেঁপে, আনারস, তরমুজ।

মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার মৎস্য ৫৬, গবাদিপশু ১২, হাঁস-মুরগি ২৮।

যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ১৩৮.৯৮ কিমি, কাঁচারাস্তা ৫৪০.৭৯ কিমি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পাল্কি, ঘোড়ার গাড়ি, গরুর গাড়ি।

শিল্প ও কলকারখানা চালকল, ময়দাকল, বরফকল, করাতকল, চিড়াকল, ওয়েল্ডিং কারখানা।

কুটিরশিল্প তাঁতশিল্প, স্বর্ণশিল্প, লৌহশিল্প, দারুশিল্প, বাঁশের কাজ, বেতের কাজ, সেলাই কাজ।

হাটবাজার ও মেলা হাটবাজার ৩৮, মেলা ৩। কচুয়া হাট, বড়চাওনা হাট, নলুয়া হাট, রতনপুর হাট, হাতিয়া হাট, সখীপুর বাজার, কুতুবপুর বাজার, মহানন্দপুর বাজার এবং ফালু শাহ মেলা ও মুসলিম দরগা মেলা উলে­খযোগ্য।

প্রধান রপ্তানিদ্রব্য   ধান, কলা, কাঁঠাল, শাকসবজি।

বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ৭২.৫% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।

পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৮৯.০%, ট্যাপ ২.০% এবং অন্যান্য ৯.০%।

স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ৬৭.৬% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ১৮.৭% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ১৩.৭% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।

স্বাস্থ্যকেন্দ্র হাসপাতাল ১, দাতব্য চিকিৎসালয় ৪, চক্ষু হাসপাতাল ১, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ৪, পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র ৪, শিশু হাসপাতাল ১, পরিবার পরিকল্পনা ক্লিনিক ৬,  ব্র্যাক স্বাস্থ্যকেন্দ্র ১, গ্রামীণ স্বাস্থ্যকেন্দ্র ১, ক্লিনিক ২, ডায়াগনস্টিক সেন্টার ১।

এনজিও ব্র্যাক, প্রশিকা, ব্যুরো টাঙ্গাইল, সেভস।  [হারুন রশীদ]

তথ্যসূত্র  আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; সখীপুর উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।