কাসিমবাজার রাজ: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
NasirkhanBot (আলোচনা | অবদান) অ (Added Ennglish article link) |
সম্পাদনা সারাংশ নেই |
||
৪ নং লাইন: | ৪ নং লাইন: | ||
কান্ত বাবুর পুত্র লোকনাথ নন্দী বাংলার অন্যান্য অংশে তাঁর জমিদারির বিস্তৃতি ঘটান। তিনি মুর্শিদাবাদের নবাবের নিকট থেকে ‘মহারাজা’ উপাধি লাভ করেন। লোকনাথ নন্দী ১৮০৪ সালে মৃত্যুবরণ করেন। | কান্ত বাবুর পুত্র লোকনাথ নন্দী বাংলার অন্যান্য অংশে তাঁর জমিদারির বিস্তৃতি ঘটান। তিনি মুর্শিদাবাদের নবাবের নিকট থেকে ‘মহারাজা’ উপাধি লাভ করেন। লোকনাথ নন্দী ১৮০৪ সালে মৃত্যুবরণ করেন। | ||
মহারাজা লোকনাথ নন্দীর মৃত্যুর পর কাসিমবাজার এস্টেটের আর তেমন বিস্তৃতি ঘটেনি। তাঁর পুত্র ও উত্তরাধিকারী হরিনাথ ছিলেন নাবালক, এবং একারণে ১৮০৪ থেকে ১৮২০ সাল পর্যন্ত জমিদারি ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব কোর্ট অব ওয়ার্ডস্-এর হাতে ন্যস্ত থাকে। ১৮২০ থেকে ১৮৩২ সালে তাঁর মৃত্যু পর্যন্ত হরিনাথ জমিদারি পরিচালনা করেন। ১৮৩৩ থেকে ১৮৪০ সাল পর্যন্ত কোর্ট অব ওয়ার্ডস্ পুনরায় এস্টেট দেখাশুনার দায়িত্ব পালন করে। এরপর হরিনাথের পুত্র কৃষ্ণনাথ জমিদারি ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব লাভ করেন। ১৮৪৪ সালে কৃষ্ণনাথের মৃত্যুর পর কোর্ট অব ওয়ার্ডস পুনরায় জমিদারি ব্যবস্থাপনার ভার গ্রহণ করে এবং ১৮৪৭ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করে। কাসিম বাজার জমিদার পরিবারের সর্বাধিক উল্লেখযোগ্য ব্যক্তি ছিলেন মনীন্দ্র চন্দ্র নন্দী। ১৮৯০ থেকে ১৯২০ সাল পর্যন্ত তিনি জমিদারি পরিচালনা করেন। তাঁর সময়ে কাসিমবাজার এস্টেট শিল্পকারখানা ও বাণিজ্যে অর্থ বিনিয়োগ করে। তিনি প্রায় ১৫ বছর বহরমপুর পৌরসভার চেয়ারম্যান ছিলেন। তিনি ব্রিটিশ ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন, দি বেঙ্গল ল্যান্ডহোল্ডার্স অ্যাসোসিয়েশন, এবং দি বেঙ্গল ন্যাশনাল চেম্বার অ্যান্ড কমার্স প্রভৃতি সংগঠনে গুরুত্বপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। ১৯২৯ সালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। জমিদারি ব্যবস্থা বিলুপ্ত হওয়ার পূর্বে কাসিমবাজার রাজের সর্বশেষ জমিদার ছিলেন শ্রীশ চন্দ্র নন্দী (১৮৯৭-১৯৫২)। ১৯৩৭ সালে জমিদারদের কোটায় তিনি বাংলার প্রাদেশিক আইনসভার সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি এ.কে ফজলুল হকের মন্ত্রিসভার (১৯৩৭-৪২) একজন মন্ত্রী ছিলেন। | মহারাজা লোকনাথ নন্দীর মৃত্যুর পর কাসিমবাজার এস্টেটের আর তেমন বিস্তৃতি ঘটেনি। তাঁর পুত্র ও উত্তরাধিকারী হরিনাথ ছিলেন নাবালক, এবং একারণে ১৮০৪ থেকে ১৮২০ সাল পর্যন্ত জমিদারি ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব কোর্ট অব ওয়ার্ডস্-এর হাতে ন্যস্ত থাকে। ১৮২০ থেকে ১৮৩২ সালে তাঁর মৃত্যু পর্যন্ত হরিনাথ জমিদারি পরিচালনা করেন। ১৮৩৩ থেকে ১৮৪০ সাল পর্যন্ত কোর্ট অব ওয়ার্ডস্ পুনরায় এস্টেট দেখাশুনার দায়িত্ব পালন করে। এরপর হরিনাথের পুত্র কৃষ্ণনাথ জমিদারি ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব লাভ করেন। ১৮৪৪ সালে কৃষ্ণনাথের মৃত্যুর পর কোর্ট অব ওয়ার্ডস পুনরায় জমিদারি ব্যবস্থাপনার ভার গ্রহণ করে এবং ১৮৪৭ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করে। কাসিম বাজার জমিদার পরিবারের সর্বাধিক উল্লেখযোগ্য ব্যক্তি ছিলেন মনীন্দ্র চন্দ্র নন্দী। ১৮৯০ থেকে ১৯২০ সাল পর্যন্ত তিনি জমিদারি পরিচালনা করেন। তাঁর সময়ে কাসিমবাজার এস্টেট শিল্পকারখানা ও বাণিজ্যে অর্থ বিনিয়োগ করে। তিনি প্রায় ১৫ বছর বহরমপুর পৌরসভার চেয়ারম্যান ছিলেন। তিনি ব্রিটিশ ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন, দি বেঙ্গল ল্যান্ডহোল্ডার্স অ্যাসোসিয়েশন, এবং দি বেঙ্গল ন্যাশনাল চেম্বার অ্যান্ড কমার্স প্রভৃতি সংগঠনে গুরুত্বপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। ১৯২৯ সালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। জমিদারি ব্যবস্থা বিলুপ্ত হওয়ার পূর্বে কাসিমবাজার রাজের সর্বশেষ জমিদার ছিলেন শ্রীশ চন্দ্র নন্দী (১৮৯৭-১৯৫২)। ১৯৩৭ সালে জমিদারদের কোটায় তিনি বাংলার প্রাদেশিক আইনসভার সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি এ.কে ফজলুল হকের মন্ত্রিসভার (১৯৩৭-৪২) একজন মন্ত্রী ছিলেন। [সিরাজুল ইসলাম] | ||
[সিরাজুল ইসলাম] | |||
[[en:Kasimbazar Raj]] | [[en:Kasimbazar Raj]] |
১০:২৫, ১৩ আগস্ট ২০১৪ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ
কাসিমবাজার রাজ বাংলার অন্যতম বৃহৎ জমিদারি। ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের প্রথমদিকে এ জমিদারির উদ্ভব ঘটে। কাসিমবাজারের কৃষ্ণকান্ত নন্দী ছিলেন কাসিমবাজার জমিদারির প্রতিষ্ঠাতা। তিনি কান্ত বাবু নামে সমধিক পরিচিত ছিলেন। প্রথম জীবনে তিনি ছিলেন একজন মুদি দোকানী। পরবর্তী সময়ে তিনি সিল্ক, লবণ ও সূতা প্রভৃতি বিবিধ পণ্যের ব্যবসায়ে নিয়োজিত হন এবং একসময় ওয়ারেন হেস্টিংসের বানিয়া পদে নিয়োগ লাভ করেন। কান্ত বাবু প্রথমে বাহারবন্দ পরগণার (বর্তমান গাইবান্ধা ও কুড়িগ্রাম জেলা) জমিদারি লাভ করেন। হেস্টিংসের পত্তনী ব্যবস্থার (১৭৭২-১৭৭৭) অধীনে বাহারবন্দসহ অনেক পরগণা কান্ত বাবুর কাছে পত্তন দেয়া হয়। পরবর্তীকালে চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের আওতায় সুবিধাজনক রাজস্ব দাবিতে তাঁকে পরগণাটির জমিদারি বন্দোবস্ত দেয়া হয়। চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের পরপরই কান্ত বাবু আরও কিছু জমিদারি স্বত্ব ক্রয় করেন। ১৭৯৪ সালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
কান্ত বাবুর পুত্র লোকনাথ নন্দী বাংলার অন্যান্য অংশে তাঁর জমিদারির বিস্তৃতি ঘটান। তিনি মুর্শিদাবাদের নবাবের নিকট থেকে ‘মহারাজা’ উপাধি লাভ করেন। লোকনাথ নন্দী ১৮০৪ সালে মৃত্যুবরণ করেন।
মহারাজা লোকনাথ নন্দীর মৃত্যুর পর কাসিমবাজার এস্টেটের আর তেমন বিস্তৃতি ঘটেনি। তাঁর পুত্র ও উত্তরাধিকারী হরিনাথ ছিলেন নাবালক, এবং একারণে ১৮০৪ থেকে ১৮২০ সাল পর্যন্ত জমিদারি ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব কোর্ট অব ওয়ার্ডস্-এর হাতে ন্যস্ত থাকে। ১৮২০ থেকে ১৮৩২ সালে তাঁর মৃত্যু পর্যন্ত হরিনাথ জমিদারি পরিচালনা করেন। ১৮৩৩ থেকে ১৮৪০ সাল পর্যন্ত কোর্ট অব ওয়ার্ডস্ পুনরায় এস্টেট দেখাশুনার দায়িত্ব পালন করে। এরপর হরিনাথের পুত্র কৃষ্ণনাথ জমিদারি ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব লাভ করেন। ১৮৪৪ সালে কৃষ্ণনাথের মৃত্যুর পর কোর্ট অব ওয়ার্ডস পুনরায় জমিদারি ব্যবস্থাপনার ভার গ্রহণ করে এবং ১৮৪৭ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করে। কাসিম বাজার জমিদার পরিবারের সর্বাধিক উল্লেখযোগ্য ব্যক্তি ছিলেন মনীন্দ্র চন্দ্র নন্দী। ১৮৯০ থেকে ১৯২০ সাল পর্যন্ত তিনি জমিদারি পরিচালনা করেন। তাঁর সময়ে কাসিমবাজার এস্টেট শিল্পকারখানা ও বাণিজ্যে অর্থ বিনিয়োগ করে। তিনি প্রায় ১৫ বছর বহরমপুর পৌরসভার চেয়ারম্যান ছিলেন। তিনি ব্রিটিশ ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন, দি বেঙ্গল ল্যান্ডহোল্ডার্স অ্যাসোসিয়েশন, এবং দি বেঙ্গল ন্যাশনাল চেম্বার অ্যান্ড কমার্স প্রভৃতি সংগঠনে গুরুত্বপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। ১৯২৯ সালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। জমিদারি ব্যবস্থা বিলুপ্ত হওয়ার পূর্বে কাসিমবাজার রাজের সর্বশেষ জমিদার ছিলেন শ্রীশ চন্দ্র নন্দী (১৮৯৭-১৯৫২)। ১৯৩৭ সালে জমিদারদের কোটায় তিনি বাংলার প্রাদেশিক আইনসভার সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি এ.কে ফজলুল হকের মন্ত্রিসভার (১৯৩৭-৪২) একজন মন্ত্রী ছিলেন। [সিরাজুল ইসলাম]