র্যাডক্লিফ, সিরিল জন: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
NasirkhanBot (আলোচনা | অবদান) অ (Added Ennglish article link) |
সম্পাদনা সারাংশ নেই |
||
২ নং লাইন: | ২ নং লাইন: | ||
'''র্যাডক্লিফ, সিরিল জন''' (১৮৯৯-১৯৭৭) আইনজীবী এবং ভারতের সীমানা নির্ধারণে গঠিত র্যাডক্লিফ কমিশনের প্রধান। তিনি ছিলেন র্যাডক্লিফের প্রথম ভাইকাউন্ট। তাঁর জন্ম ১৮৯৯ সালের ৩০ মার্চ ইংল্যান্ডের ডেনবিশায়ারের ল্যানিচ্যান এ। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় তিনি বাধ্যতামূলকভাবে ব্রিটিশ সৈন্যবাহিনীতে যোগ দেন। কিন্তু ক্ষীণদৃষ্টির কারণে তাঁকে ফ্রন্ট থেকে সরিয়ে দেয়া হয়। এর পরে তিনি সৈনিকদের শ্রম দপ্তরে যোগ দেন। | '''র্যাডক্লিফ, সিরিল জন''' (১৮৯৯-১৯৭৭) আইনজীবী এবং ভারতের সীমানা নির্ধারণে গঠিত র্যাডক্লিফ কমিশনের প্রধান। তিনি ছিলেন র্যাডক্লিফের প্রথম ভাইকাউন্ট। তাঁর জন্ম ১৮৯৯ সালের ৩০ মার্চ ইংল্যান্ডের ডেনবিশায়ারের ল্যানিচ্যান এ। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় তিনি বাধ্যতামূলকভাবে ব্রিটিশ সৈন্যবাহিনীতে যোগ দেন। কিন্তু ক্ষীণদৃষ্টির কারণে তাঁকে ফ্রন্ট থেকে সরিয়ে দেয়া হয়। এর পরে তিনি সৈনিকদের শ্রম দপ্তরে যোগ দেন। | ||
[[Image:RadcliffeCyrilJohn.jpg|thumb|right|সিরিল জন র্যাডক্লিফ]] | |||
যুদ্ধের পরে র্যাডক্লিফ অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। সেখানে তিনি অল সোলস কলেজ এ ফেলোশীপের জন্য মনোনীত হন। তিনি আইন শাস্ত্র এবং আইনী বিষয়াদি সম্পর্কে অধ্যয়ন করেন। সিরিল র্যাডক্লিফ ১৯২৪ সালে একজন আইনজীবী হিসেবে বার এ যোগ দেন এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পর্যন্ত আইন পেশায় নিয়োজিত ছিলেন। বিশ্বযুদ্ধ শুরু হলে র্যাডক্লিফ ব্রিটিশ সরকারের তথ্য মন্ত্রণালয়ে যোগ দেন। ১৯৪১ সালে তিনি এ মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক হন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে তিনি পুনরায় আইন পেশায় ফিরে যান। ব্রিটিশ সরকার ১৯৪৭ সালে ভারত শাসন আইনের অধীনে র্যাডক্লিফকে ভারতে দুটি সীমানা নির্ধারণকারী কমিশনের চেয়ারম্যান নিযুক্ত করে। কমিশন দুটি হলো ‘বেঙ্গল বাউন্ডারি কমিশন’ এবং ‘পাঞ্জাব বাউন্ডারি কমিশন’। ১৯৪৭ সালের ৩ জুন র্যাডক্লিফ কমিশনের চেয়ারম্যান নিযুক্ত হন এবং ৮ জুলাই ভারত আসেন। | যুদ্ধের পরে র্যাডক্লিফ অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। সেখানে তিনি অল সোলস কলেজ এ ফেলোশীপের জন্য মনোনীত হন। তিনি আইন শাস্ত্র এবং আইনী বিষয়াদি সম্পর্কে অধ্যয়ন করেন। সিরিল র্যাডক্লিফ ১৯২৪ সালে একজন আইনজীবী হিসেবে বার এ যোগ দেন এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পর্যন্ত আইন পেশায় নিয়োজিত ছিলেন। বিশ্বযুদ্ধ শুরু হলে র্যাডক্লিফ ব্রিটিশ সরকারের তথ্য মন্ত্রণালয়ে যোগ দেন। ১৯৪১ সালে তিনি এ মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক হন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে তিনি পুনরায় আইন পেশায় ফিরে যান। ব্রিটিশ সরকার ১৯৪৭ সালে ভারত শাসন আইনের অধীনে র্যাডক্লিফকে ভারতে দুটি সীমানা নির্ধারণকারী কমিশনের চেয়ারম্যান নিযুক্ত করে। কমিশন দুটি হলো ‘বেঙ্গল বাউন্ডারি কমিশন’ এবং ‘পাঞ্জাব বাউন্ডারি কমিশন’। ১৯৪৭ সালের ৩ জুন র্যাডক্লিফ কমিশনের চেয়ারম্যান নিযুক্ত হন এবং ৮ জুলাই ভারত আসেন। | ||
তিনি ভারত বিভাগ, নতুন দুটি রাষ্ট্র ভারত ও পাকিস্তানের মানচিত্র এবং আন্তর্জাতিক সীমা নির্দেশ করে তাঁর রিপোর্ট পেশ করেন। তাঁর পরিকল্পনা ভারতের ইতিহাসে [[র্যাডক্লিফ রোয়েদাদ|র্যাডক্লিফ রোয়েদাদ]] হিসেবে পরিচিত। তাঁর প্রস্তাবনায় ব্রিটিশ ভারত বিভক্ত হয়ে ১৯৪৭ সালের ১৪ আগস্ট পাকিস্তান এবং ১৫ আগস্ট ভারত নামে দুটি স্বাধীন রাষ্ট্রের উদ্ভব ঘটে। | তিনি ভারত বিভাগ, নতুন দুটি রাষ্ট্র ভারত ও পাকিস্তানের মানচিত্র এবং আন্তর্জাতিক সীমা নির্দেশ করে তাঁর রিপোর্ট পেশ করেন। তাঁর পরিকল্পনা ভারতের ইতিহাসে [[র্যাডক্লিফ রোয়েদাদ|র্যাডক্লিফ রোয়েদাদ]] হিসেবে পরিচিত। তাঁর প্রস্তাবনায় ব্রিটিশ ভারত বিভক্ত হয়ে ১৯৪৭ সালের ১৪ আগস্ট পাকিস্তান এবং ১৫ আগস্ট ভারত নামে দুটি স্বাধীন রাষ্ট্রের উদ্ভব ঘটে। | ||
১১ নং লাইন: | ৯ নং লাইন: | ||
১৯৪৯ সালে সিরিল র্যাডক্লিফ ল’ লর্ড এবং ল্যাঙ্কাশায়ার কাউন্টির বারনেথ (Warneth) এর আজীবন ব্যারণ পিয়ের র্যাডক্লিফ হন। আইনপেশার পাশাপাশি র্যাডক্লিফ বিভিন্ন সরকারী তদন্ত কমিটির প্রধানের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৪৮ সালে তিনি ব্রিটিশ ফিল্ম ইনস্টিটিউট এর তদন্ত কমিটির চেয়ারম্যান হন। তাঁর সুপারিশের ভিত্তিতে বিশ্বযুদ্ধের পরে ব্রিটিশ ফিল্ম ইনস্টিটিউটকে পুনর্গঠন করা হয়। এছাড়া তিনি ১৯৫৭ সাল থেকে সরকারের আর্থিক এবং ঋণ পদ্ধতি সম্পর্কিত তদন্ত কমিটির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন। | ১৯৪৯ সালে সিরিল র্যাডক্লিফ ল’ লর্ড এবং ল্যাঙ্কাশায়ার কাউন্টির বারনেথ (Warneth) এর আজীবন ব্যারণ পিয়ের র্যাডক্লিফ হন। আইনপেশার পাশাপাশি র্যাডক্লিফ বিভিন্ন সরকারী তদন্ত কমিটির প্রধানের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৪৮ সালে তিনি ব্রিটিশ ফিল্ম ইনস্টিটিউট এর তদন্ত কমিটির চেয়ারম্যান হন। তাঁর সুপারিশের ভিত্তিতে বিশ্বযুদ্ধের পরে ব্রিটিশ ফিল্ম ইনস্টিটিউটকে পুনর্গঠন করা হয়। এছাড়া তিনি ১৯৫৭ সাল থেকে সরকারের আর্থিক এবং ঋণ পদ্ধতি সম্পর্কিত তদন্ত কমিটির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন। | ||
সিরিল র্যাডক্লিফ ১৯৪৪ সালে Knight Commander of the Order of the British Empire (KBE) এবং ১৯৪৮ সালে Knight Grand Cross of the Order of the British Empire (GBE) উপাধি লাভ করেন। ১৯৪৯ সালে র্যাডক্লিফ প্রিভি কাউন্সিলের সদস্য হন। তিনি ১৯৬২ সালে বংশানুক্রমিক পিয়ের নিযুক্ত হন। ২০০৬ সালে তাঁর নামে লিঙ্কনস ইন এর চ্যান্সেরি ব্যারিস্টার এর চেম্বারের নামকরণ করা হয় র্যাডক্লিফ চেম্বার। সিরিল জন র্যাডক্লিফ ১৯৭৭ সালের ১ এপ্রিল লন্ডনে মারা যান । [এ.টি.এম যায়েদ হোসেন] | সিরিল র্যাডক্লিফ ১৯৪৪ সালে Knight Commander of the Order of the British Empire (KBE) এবং ১৯৪৮ সালে Knight Grand Cross of the Order of the British Empire (GBE) উপাধি লাভ করেন। ১৯৪৯ সালে র্যাডক্লিফ প্রিভি কাউন্সিলের সদস্য হন। তিনি ১৯৬২ সালে বংশানুক্রমিক পিয়ের নিযুক্ত হন। ২০০৬ সালে তাঁর নামে লিঙ্কনস ইন এর চ্যান্সেরি ব্যারিস্টার এর চেম্বারের নামকরণ করা হয় র্যাডক্লিফ চেম্বার। সিরিল জন র্যাডক্লিফ ১৯৭৭ সালের ১ এপ্রিল লন্ডনে মারা যান । [এ.টি.এম যায়েদ হোসেন] | ||
[[en:Radcliffe, Cyril John]] | [[en:Radcliffe, Cyril John]] |
০৬:০৮, ১০ মার্চ ২০১৫ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ
র্যাডক্লিফ, সিরিল জন (১৮৯৯-১৯৭৭) আইনজীবী এবং ভারতের সীমানা নির্ধারণে গঠিত র্যাডক্লিফ কমিশনের প্রধান। তিনি ছিলেন র্যাডক্লিফের প্রথম ভাইকাউন্ট। তাঁর জন্ম ১৮৯৯ সালের ৩০ মার্চ ইংল্যান্ডের ডেনবিশায়ারের ল্যানিচ্যান এ। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় তিনি বাধ্যতামূলকভাবে ব্রিটিশ সৈন্যবাহিনীতে যোগ দেন। কিন্তু ক্ষীণদৃষ্টির কারণে তাঁকে ফ্রন্ট থেকে সরিয়ে দেয়া হয়। এর পরে তিনি সৈনিকদের শ্রম দপ্তরে যোগ দেন।
যুদ্ধের পরে র্যাডক্লিফ অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। সেখানে তিনি অল সোলস কলেজ এ ফেলোশীপের জন্য মনোনীত হন। তিনি আইন শাস্ত্র এবং আইনী বিষয়াদি সম্পর্কে অধ্যয়ন করেন। সিরিল র্যাডক্লিফ ১৯২৪ সালে একজন আইনজীবী হিসেবে বার এ যোগ দেন এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পর্যন্ত আইন পেশায় নিয়োজিত ছিলেন। বিশ্বযুদ্ধ শুরু হলে র্যাডক্লিফ ব্রিটিশ সরকারের তথ্য মন্ত্রণালয়ে যোগ দেন। ১৯৪১ সালে তিনি এ মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক হন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে তিনি পুনরায় আইন পেশায় ফিরে যান। ব্রিটিশ সরকার ১৯৪৭ সালে ভারত শাসন আইনের অধীনে র্যাডক্লিফকে ভারতে দুটি সীমানা নির্ধারণকারী কমিশনের চেয়ারম্যান নিযুক্ত করে। কমিশন দুটি হলো ‘বেঙ্গল বাউন্ডারি কমিশন’ এবং ‘পাঞ্জাব বাউন্ডারি কমিশন’। ১৯৪৭ সালের ৩ জুন র্যাডক্লিফ কমিশনের চেয়ারম্যান নিযুক্ত হন এবং ৮ জুলাই ভারত আসেন।
তিনি ভারত বিভাগ, নতুন দুটি রাষ্ট্র ভারত ও পাকিস্তানের মানচিত্র এবং আন্তর্জাতিক সীমা নির্দেশ করে তাঁর রিপোর্ট পেশ করেন। তাঁর পরিকল্পনা ভারতের ইতিহাসে র্যাডক্লিফ রোয়েদাদ হিসেবে পরিচিত। তাঁর প্রস্তাবনায় ব্রিটিশ ভারত বিভক্ত হয়ে ১৯৪৭ সালের ১৪ আগস্ট পাকিস্তান এবং ১৫ আগস্ট ভারত নামে দুটি স্বাধীন রাষ্ট্রের উদ্ভব ঘটে।
১৯৪৯ সালে সিরিল র্যাডক্লিফ ল’ লর্ড এবং ল্যাঙ্কাশায়ার কাউন্টির বারনেথ (Warneth) এর আজীবন ব্যারণ পিয়ের র্যাডক্লিফ হন। আইনপেশার পাশাপাশি র্যাডক্লিফ বিভিন্ন সরকারী তদন্ত কমিটির প্রধানের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৪৮ সালে তিনি ব্রিটিশ ফিল্ম ইনস্টিটিউট এর তদন্ত কমিটির চেয়ারম্যান হন। তাঁর সুপারিশের ভিত্তিতে বিশ্বযুদ্ধের পরে ব্রিটিশ ফিল্ম ইনস্টিটিউটকে পুনর্গঠন করা হয়। এছাড়া তিনি ১৯৫৭ সাল থেকে সরকারের আর্থিক এবং ঋণ পদ্ধতি সম্পর্কিত তদন্ত কমিটির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন।
সিরিল র্যাডক্লিফ ১৯৪৪ সালে Knight Commander of the Order of the British Empire (KBE) এবং ১৯৪৮ সালে Knight Grand Cross of the Order of the British Empire (GBE) উপাধি লাভ করেন। ১৯৪৯ সালে র্যাডক্লিফ প্রিভি কাউন্সিলের সদস্য হন। তিনি ১৯৬২ সালে বংশানুক্রমিক পিয়ের নিযুক্ত হন। ২০০৬ সালে তাঁর নামে লিঙ্কনস ইন এর চ্যান্সেরি ব্যারিস্টার এর চেম্বারের নামকরণ করা হয় র্যাডক্লিফ চেম্বার। সিরিল জন র্যাডক্লিফ ১৯৭৭ সালের ১ এপ্রিল লন্ডনে মারা যান । [এ.টি.এম যায়েদ হোসেন]