রায়বাহাদুর, রাজা শ্যামাশংকর: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
NasirkhanBot (আলোচনা | অবদান) অ (Added Ennglish article link) |
সম্পাদনা সারাংশ নেই |
||
৪ নং লাইন: | ৪ নং লাইন: | ||
বিভিন্ন কারণে রাজা শ্যামাশংকর একজন ব্যতিক্রমী জমিদার হিসেবে নিজের অবস্থান করে নিয়েছিলেন। জনস্বার্থে তিনি তাঁর এস্টেটে অনেকগুলো সেবামূলক ও উন্নয়নমূলক কাজ করেন। তাছাড়াও কৃষির উন্নতিতে বিভিন্ন প্রকার নতুন নতুন উদ্ভাবনী কাজে তিনি প্রচুর অর্থ ব্যয় করে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলেন। ছাত্রাবস্থায় মেধাবী হিসেবে পরিচিত শ্যামাশংকর পরবর্তী জীবনে থিওসোফিক্যাল সোসাইটির জার্নালে লেখালেখি করেছেন। | বিভিন্ন কারণে রাজা শ্যামাশংকর একজন ব্যতিক্রমী জমিদার হিসেবে নিজের অবস্থান করে নিয়েছিলেন। জনস্বার্থে তিনি তাঁর এস্টেটে অনেকগুলো সেবামূলক ও উন্নয়নমূলক কাজ করেন। তাছাড়াও কৃষির উন্নতিতে বিভিন্ন প্রকার নতুন নতুন উদ্ভাবনী কাজে তিনি প্রচুর অর্থ ব্যয় করে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলেন। ছাত্রাবস্থায় মেধাবী হিসেবে পরিচিত শ্যামাশংকর পরবর্তী জীবনে থিওসোফিক্যাল সোসাইটির জার্নালে লেখালেখি করেছেন। | ||
ইন্ডিয়ান এ্যাসোসিয়েশনের প্রতিষ্ঠালগ্নে শ্যামা শংকরের ঘনিষ্ট সম্পৃক্ততা ছিল এবং পূর্ব বাংলার জমিদারদের মধ্যে তিনি ছিলেন অন্যতম যিনি ‘রাজা বাহাদুর’ উপাধি পেয়েছিলেন। বেশ কয়েকটি মৌলিক ইস্যুকে কেন্দ্র করে শ্যামাশংকর কর্তৃক নতুন ধরণের ফসল উৎপাদন, কৃষি উৎপাদন পদ্ধতির উন্নয়ন প্রভৃতি উদ্যোগ পূর্ব বাংলার বড় বড় জমিদারদের সাধারণ সমর্থন অর্জনে সক্ষম হয় সম্ভবত এই কারণে যে, তাঁরা ব্যক্তিগতভাবে হয়ত এ ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জন করতে সক্ষম হতে পারতেন না। তেওতা জমিদার পরিবারের নিজস্ব এস্টেটের মধ্যেই শ্যামাশংকর কৃষির উন্নয়নে তাঁর উদ্ভাবনী চিন্তা কাজে লাগানোর চেষ্টা করেছেন। দিনাজপুরের জয়গঞ্জে (খানসামায়) শ্যামাশংকর রীয়া অাঁশ ফলনের চেষ্টা করেছেন। কিন্তু যথাযথ পদ্ধতির অভাবে তাঁর এ উদ্যোগ ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয় এবং এস্টেটকে এর জন্য প্রায় ২০ হাজার টাকার ক্ষতি স্বীকার করতে হয়। তাছাড়াও তাঁর উদ্যোগে ১৮৮৫ সালে তেওতার জমিদারির সার্কেলে চাষাবাদের জন্য ইউরোপীয় ধাঁচের লোহার লাঙ্গল ব্যবহারের চেষ্টা চালানো হয়। | [[Image:RajaShyamaShankarRay.jpg|thumb|right|রাজা শ্যামাশংকর রায়বাহাদুর]] | ||
ইন্ডিয়ান এ্যাসোসিয়েশনের প্রতিষ্ঠালগ্নে শ্যামা শংকরের ঘনিষ্ট সম্পৃক্ততা ছিল এবং পূর্ব বাংলার জমিদারদের মধ্যে তিনি ছিলেন অন্যতম যিনি ‘রাজা বাহাদুর’ উপাধি পেয়েছিলেন। বেশ কয়েকটি মৌলিক ইস্যুকে কেন্দ্র করে শ্যামাশংকর কর্তৃক নতুন ধরণের ফসল উৎপাদন, কৃষি উৎপাদন পদ্ধতির উন্নয়ন প্রভৃতি উদ্যোগ পূর্ব বাংলার বড় বড় জমিদারদের সাধারণ সমর্থন অর্জনে সক্ষম হয় সম্ভবত এই কারণে যে, তাঁরা ব্যক্তিগতভাবে হয়ত এ ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জন করতে সক্ষম হতে পারতেন না। তেওতা জমিদার পরিবারের নিজস্ব এস্টেটের মধ্যেই শ্যামাশংকর কৃষির উন্নয়নে তাঁর উদ্ভাবনী চিন্তা কাজে লাগানোর চেষ্টা করেছেন। দিনাজপুরের জয়গঞ্জে (খানসামায়) শ্যামাশংকর রীয়া অাঁশ ফলনের চেষ্টা করেছেন। কিন্তু যথাযথ পদ্ধতির অভাবে তাঁর এ উদ্যোগ ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয় এবং এস্টেটকে এর জন্য প্রায় ২০ হাজার টাকার ক্ষতি স্বীকার করতে হয়। তাছাড়াও তাঁর উদ্যোগে ১৮৮৫ সালে তেওতার জমিদারির সার্কেলে চাষাবাদের জন্য ইউরোপীয় ধাঁচের লোহার লাঙ্গল ব্যবহারের চেষ্টা চালানো হয়। কিন্তু এ লাঙ্গল ষাড়ের জন্য যেমন ছিল অত্যধিক ভারী তেমনি রায়তদের জন্যও তা ব্যয়বহুল বলে প্রমাণিত হয়। | |||
কিন্তু এ লাঙ্গল ষাড়ের জন্য যেমন ছিল অত্যধিক ভারী তেমনি রায়তদের জন্যও তা ব্যয়বহুল বলে প্রমাণিত হয়। | |||
শ্যামাশংকর নতুন জাতের অাঁখ এবং আলু চাষেরও চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু তৎকালীন জেলা মেজিস্ট্রেট এবং ঢাকা গেজেটের লেখকদের মতামত ছিল ‘চাষীরা এক্ষেত্রেও তাঁর নতুন উদ্ভাবনী চিন্তাকে অনীহার সাথে পরিত্যাগ করেছে’। এসবের পাশাপাশি তেওতার জমিদারগণ বিশেষ করে শ্যামাশংকর এবং [[চৌধুরী, পার্বতী শংকর রায়|রায় পার্বতীশংকর চৌধুরী]] (যিনি এ ব্যবস্থাকে ধর্মগোলায় আরও কার্যকরভাবে প্রয়োগ করেন) দুর্ভিক্ষ ও দুর্যোগের সময় কৃষকদের যথাসম্ভব সাহায্য ও সহযোগিতা প্রদান করেন। | শ্যামাশংকর নতুন জাতের অাঁখ এবং আলু চাষেরও চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু তৎকালীন জেলা মেজিস্ট্রেট এবং ঢাকা গেজেটের লেখকদের মতামত ছিল ‘চাষীরা এক্ষেত্রেও তাঁর নতুন উদ্ভাবনী চিন্তাকে অনীহার সাথে পরিত্যাগ করেছে’। এসবের পাশাপাশি তেওতার জমিদারগণ বিশেষ করে শ্যামাশংকর এবং [[চৌধুরী, পার্বতী শংকর রায়|রায় পার্বতীশংকর চৌধুরী]] (যিনি এ ব্যবস্থাকে ধর্মগোলায় আরও কার্যকরভাবে প্রয়োগ করেন) দুর্ভিক্ষ ও দুর্যোগের সময় কৃষকদের যথাসম্ভব সাহায্য ও সহযোগিতা প্রদান করেন। |
০৭:৩৩, ৯ মার্চ ২০১৫ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ
রায়বাহাদুর, রাজা শ্যামাশংকর (১৮৩৭-১৮৯৩) পূর্ব বাংলার জমিদার। পশ্চিম মানিকগঞ্জের তেওতার জমিদার পরিবারে ১৮৩৭ সালে শ্যামাশংকরের জন্ম। বাবা তারিনী শংকর চৌধুরীর জ্যেষ্ঠ পুত্র শ্যামাশংকর ঢাকায় তাঁর লেখাপড়া সম্পন্ন করেন।
বিভিন্ন কারণে রাজা শ্যামাশংকর একজন ব্যতিক্রমী জমিদার হিসেবে নিজের অবস্থান করে নিয়েছিলেন। জনস্বার্থে তিনি তাঁর এস্টেটে অনেকগুলো সেবামূলক ও উন্নয়নমূলক কাজ করেন। তাছাড়াও কৃষির উন্নতিতে বিভিন্ন প্রকার নতুন নতুন উদ্ভাবনী কাজে তিনি প্রচুর অর্থ ব্যয় করে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলেন। ছাত্রাবস্থায় মেধাবী হিসেবে পরিচিত শ্যামাশংকর পরবর্তী জীবনে থিওসোফিক্যাল সোসাইটির জার্নালে লেখালেখি করেছেন।
ইন্ডিয়ান এ্যাসোসিয়েশনের প্রতিষ্ঠালগ্নে শ্যামা শংকরের ঘনিষ্ট সম্পৃক্ততা ছিল এবং পূর্ব বাংলার জমিদারদের মধ্যে তিনি ছিলেন অন্যতম যিনি ‘রাজা বাহাদুর’ উপাধি পেয়েছিলেন। বেশ কয়েকটি মৌলিক ইস্যুকে কেন্দ্র করে শ্যামাশংকর কর্তৃক নতুন ধরণের ফসল উৎপাদন, কৃষি উৎপাদন পদ্ধতির উন্নয়ন প্রভৃতি উদ্যোগ পূর্ব বাংলার বড় বড় জমিদারদের সাধারণ সমর্থন অর্জনে সক্ষম হয় সম্ভবত এই কারণে যে, তাঁরা ব্যক্তিগতভাবে হয়ত এ ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জন করতে সক্ষম হতে পারতেন না। তেওতা জমিদার পরিবারের নিজস্ব এস্টেটের মধ্যেই শ্যামাশংকর কৃষির উন্নয়নে তাঁর উদ্ভাবনী চিন্তা কাজে লাগানোর চেষ্টা করেছেন। দিনাজপুরের জয়গঞ্জে (খানসামায়) শ্যামাশংকর রীয়া অাঁশ ফলনের চেষ্টা করেছেন। কিন্তু যথাযথ পদ্ধতির অভাবে তাঁর এ উদ্যোগ ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয় এবং এস্টেটকে এর জন্য প্রায় ২০ হাজার টাকার ক্ষতি স্বীকার করতে হয়। তাছাড়াও তাঁর উদ্যোগে ১৮৮৫ সালে তেওতার জমিদারির সার্কেলে চাষাবাদের জন্য ইউরোপীয় ধাঁচের লোহার লাঙ্গল ব্যবহারের চেষ্টা চালানো হয়। কিন্তু এ লাঙ্গল ষাড়ের জন্য যেমন ছিল অত্যধিক ভারী তেমনি রায়তদের জন্যও তা ব্যয়বহুল বলে প্রমাণিত হয়।
শ্যামাশংকর নতুন জাতের অাঁখ এবং আলু চাষেরও চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু তৎকালীন জেলা মেজিস্ট্রেট এবং ঢাকা গেজেটের লেখকদের মতামত ছিল ‘চাষীরা এক্ষেত্রেও তাঁর নতুন উদ্ভাবনী চিন্তাকে অনীহার সাথে পরিত্যাগ করেছে’। এসবের পাশাপাশি তেওতার জমিদারগণ বিশেষ করে শ্যামাশংকর এবং রায় পার্বতীশংকর চৌধুরী (যিনি এ ব্যবস্থাকে ধর্মগোলায় আরও কার্যকরভাবে প্রয়োগ করেন) দুর্ভিক্ষ ও দুর্যোগের সময় কৃষকদের যথাসম্ভব সাহায্য ও সহযোগিতা প্রদান করেন।
ইন্ডিয়ান এসোসিয়েশনের প্রথম ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্যদের নামের তালিকার শীর্ষে ছিল রাজা শ্যামাশংকর রায় চৌধুরীর নাম (এসোসিয়েশনের ১৮৭৬-৭৭ সালের বার্ষিক প্রতিবেদনে যেভাবে প্রকাশিত)। তিনি থিওসোফিক্যাল সোসাইটির সহ-সভাপতিও ছিলেন। ভাইসরয় লর্ড এডওয়ার্ড রবার্ট বুলওয়ার লিটনের সময় দিল্লীর দরবারে ১ জানুয়ারি ১৮৭৭ সালে তিনি সন্মানসূচক ‘রাজা’ উপাধি লাভ করেন। [আর রায়]