বরকল উপজেলা: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

(Robot: Automated text replacement (-'''''তথ্যসূত্র''''' +'''তথ্যসূত্র'''))
 
সম্পাদনা সারাংশ নেই
 
(একজন ব্যবহারকারী দ্বারা সম্পাদিত একটি মধ্যবর্তী সংশোধন দেখানো হচ্ছে না)
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
[[Category:বাংলাপিডিয়া]]
[[Category:বাংলাপিডিয়া]]
'''বরকল উপজেলা''' (রাঙ্গামাটি জেলা)  আয়তন: ৭৬০.৮৮ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২২°৩৯´ থেকে ২৩°১৪´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯২°১১´ থেকে ৯২°২৯´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে বাঘাইছড়ি ও লংগদু উপজেলা, দক্ষিণে জুরাছড়ি উপজেলা, পূর্বে মিজোরাম (ভারত), পশ্চিমে লংগদু ও রাঙ্গামাটি সদর উপজেলা।
'''বরকল উপজেলা''' ([[রাঙ্গামাটি জেলা|রাঙ্গামাটি জেলা]])  আয়তন: ৭৬০.৮৯ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২২°৩৯´ থেকে ২৩°১৪´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯২°১১´ থেকে ৯২°২৯´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে বাঘাইছড়ি ও লংগদু উপজেলা, দক্ষিণে জুরাছড়ি উপজেলা, পূর্বে মিজোরাম (ভারত), পশ্চিমে লংগদু ও রাঙ্গামাটি সদর উপজেলা।


''জনসংখ্যা'' ৩৯৭৮১; পুরুষ ২১৮৯২, মহিলা ১৭৮৮৯। মুসলিম ৮৫৫৪, হিন্দু ৫৯১, বৌদ্ধ ৩০০, খ্রিস্টান ৩০৩২০ এবং অন্যান্য ১৬।
''জনসংখ্যা'' ৪৭৫২৩; পুরুষ ২৫৬১৪, মহিলা ২১৯০৯। মুসলিম ১১০২৩, হিন্দু ৫০৮, বৌদ্ধ ৩৫৬৬৮, খ্রিস্টান ৩১৮ এবং অন্যান্য ৬।


''জলাশয়'' কর্ণফূলি নদী; কাপ্তাই হ্রদ উল্লেখযোগ্য।
''জলাশয়'' কর্ণফূলি নদী; কাপ্তাই হ্রদ উল্লেখযোগ্য।
১৫ নং লাইন: ১৫ নং লাইন:
|-
|-
| শহর  || গ্রাম || শহর  || গ্রাম
| শহর  || গ্রাম || শহর  || গ্রাম
|-
|-
| - || ৫ || ২৮ || ১৬৪  || ১৬৬৬  || ৩৮১১৫  || ৫২  || ৬৪.২৭  || ৩৪.৭৬
| - || ৫ || ২৮ || ১৮০ || ১৯৩২ || ৪৫৫৯১ || ৬২ || ৭২.|| ৪৩.
 
|}
|}
{| class="table table-bordered table-hover"
{| class="table table-bordered table-hover"
|-
|-
| উপজেলা শহর
| colspan="9" | উপজেলা শহর
|-
|-
| আয়তন (বর্গ কিমি)  || মৌজা  || লোকসংখ্যা  || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি)  || শিক্ষার হার (%)
| আয়তন (বর্গ কিমি)  || মৌজা  || লোকসংখ্যা  || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি)  || শিক্ষার হার (%)
|-
|-
| ১২.৯৫ || ১ || ১৬৬৬  || ১২৯  || ৬৪.
| ১২.৯৫ || ১ || ১৯৩২ || ১৪৯ || ৭২.
 
|}
|}
{| class="table table-bordered table-hover"
{| class="table table-bordered table-hover"
|-
|-
| ইউনিয়ন
| colspan="9" | ইউনিয়ন
|-  
|-  
| rowspan="2" | ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড  || rowspan="2" | আয়তন (একর)  || colspan="2" | লোকসংখ্যা  || rowspan="2" | শিক্ষার হার (%)
| rowspan="2" | ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড  || rowspan="2" | আয়তন (একর)  || colspan="2" | লোকসংখ্যা  || rowspan="2" | শিক্ষার হার (%)
৩৯ নং লাইন: ৩৪ নং লাইন:
| পুরুষ  || মহিলা
| পুরুষ  || মহিলা
|-  
|-  
| আইবাছড়া  ১৫ || ৩৪৪২০ || ৩৪৯৫ || ৩০২৩  || ৩৩.৫১
| আইবাছড়া  ১৫ || ৩৪৪২০ || ৪২৬৯ || ৩৮৯১ || ৩২.
 
|-
|-
| বড় হরিণা ৩১ || ৩৯৬৮০ || ২৪৭৩ || ২০৬১  || ২৬.৯৪
| বড় হরিণা ৩১ || ৩৯৬৮০ || ২৫৪৪ || ২৩৯৫ || ৩৫.
 
|-
|-
| বরকল ৪৭ || ৩৩৯২০ || ৩১০৭ || ২৪৩৬  || ৪২.৫২
| বরকল ৪৭ || ৩৩৯২০ || ৩৬৬১ || ২৮৮১ || ৫৬.
 
|-
|-
| ভূষণছড়া ৬৩ || ৪৯২৮০ || ৭৪২০ || ৫৮৩৫  || ৩২.৫০
| ভূষণছড়া ৬৩ || ৪৯২৮০ || ৮৯৩৯ || ৭২১৫ || ৪৫.
 
|-
|-
| শুভলং৭৯  || ৩০৭২০ || ৫৩৯৭ || ৪৫৩৪  || ৪২.৭৫
| শুভলং ৭৯ || ৩০৭২০ || ৬২০১ || ৫৫২৭ || ৪৮.
|}
|}
''সূত্র'' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।
''সূত্র'' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।


ঐতিহাসিক ঘটনাবলি ব্রিটিশ শাসনের প্রথমদিকে এ অঞ্চলে কুকিদের দৌরাত্ম্য বৃদ্ধি পায়। এদের নিয়ন্ত্রনের জন্য ১৮৬০ সালে ব্রিটিশ সরকার পৃথক জেলা প্রশাসন গঠন করে। ১৮৭২ সালে ত্রিপুরা, কাছাড় ও পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে লুসাই বা মিজোরাম অঞ্চলে অভিযান চালিয়ে কুকিদের আস্তানা ধ্বংস করা হয়। ১৮৯১ ও ১৮৯৩ সালে কুকিদের নির্মুল অভিযান পরিচালিত হয়।
[[Image:BarkalUpazila.jpg|thumb|400px|right]]
''ঐতিহাসিক ঘটনাবলি''  ব্রিটিশ শাসনের প্রথমদিকে এ অঞ্চলে কুকিদের দৌরাত্ম্য বৃদ্ধি পায়। এদের নিয়ন্ত্রনের জন্য ১৮৬০ সালে ব্রিটিশ সরকার পৃথক জেলা প্রশাসন গঠন করে। ১৮৭২ সালে ত্রিপুরা, কাছাড় ও পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে লুসাই বা মিজোরাম অঞ্চলে অভিযান চালিয়ে কুকিদের আস্তানা ধ্বংস করা হয়। ১৮৯১ ও ১৮৯৩ সালে কুকিদের নির্মুল অভিযান পরিচালিত হয়।


''মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন'' স্মৃতিস্তম্ভ ১।
''মুক্তিযুদ্ধ'' মুক্তিযুদ্ধের শুরুর দিকে পাকিস্তানি সৈন্যরা সুবলং, বরকল সদর, জালিয়াপাড়া ও উপজেলার অন্যান্য স্থানে বিশেষ করে বেশ কয়েকটি টিলায় তাদের ক্যাম্প স্থাপন করে। মুক্তিযোদ্ধারা তেমন বড় কোনো প্রতিরোধ তৈরি করতে না পারলেও ছোটখাটো কয়েকটি অপারেশন পরিচালনা করে। তবে পাকসেনাদের সঙ্গে প্রথম বড় যুদ্ধ ছিল নভেম্বর মাসে জালিয়াপাড়ায় তাদের ঘাঁটির উপর যৌথবাহিনীর আক্রমণ। এই যুদ্ধে শত্রু বাহিনীর ৩৫ জন নিহত হয়। ১৪ ডিসেম্বর বরকল উপজেলা হানাদার মুক্ত হয়।


''ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান'' মসজিদ ৭, মন্দির ৭, বৌদ্ধ মন্দির ২৯, গির্জা ৩।
''বিস্তারিত দেখুন'' বরকল উপজেলা, ''বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ'', বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ৬।


''শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান'' গড় হার ৩৬.১%; পুরুষ ৪৭.১%, মহিলা ২২.৫%। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: বরকল উচ্চ বিদ্যালয়, বিলছড়া উচ্চ বিদ্যালয়, ভাইমিটাই প্রাথমিক বিদ্যালয়, লাইজুগ্রাম প্রাথমিক বিদ্যালয়, ধনুবাগ প্রাথমিক বিদ্যালয়।
''ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান'' মসজিদ ৭, মন্দির ৭, বৌদ্ধ মন্দির ২৯, গির্জা ৩।


[[Image:BarkalUpazila.jpg|thumb|400px|right|বরকল উপজেলা]]
''শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান''  গড় হার ৪৪.৫%; পুরুষ  ৫৪.২%, মহিলা ৩৩.০%। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: বরকল উচ্চ বিদ্যালয়, বিলছড়া উচ্চ বিদ্যালয়, ভাইমিটাই প্রাথমিক বিদ্যালয়, লাইজুগ্রাম প্রাথমিক বিদ্যালয়, ধনুবাগ প্রাথমিক বিদ্যালয়।


বিশেষ আকর্ষণ  শুভলং ঝর্ণা।
''বিশেষ আকর্ষণ''  শুভলং ঝর্ণা।


''জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস'' কৃষি ৮৩.৪৬%, অকৃষি শ্রমিক ২.১৯%, ব্যবসা ৫.৮৭%, চাকরি ২.৫৪%, নির্মাণ ০.০৮%, ধর্মীয় সেবা ০.০৭%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.০৩% এবং অন্যান্য ৫.৭৬%।
''জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস'' কৃষি ৮৩.৪৬%, অকৃষি শ্রমিক ২.১৯%, ব্যবসা ৫.৮৭%, চাকরি ২.৫৪%, নির্মাণ ০.০৮%, ধর্মীয় সেবা ০.০৭%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.০৩% এবং অন্যান্য ৫.৭৬%।
৭১ নং লাইন: ৬৩ নং লাইন:
''কৃষিভূমির মালিকানা'' ভূমিমালিক ৬৬.৩১%, ভূমিহীন ৩৩.৬৯%। শহরে ৪৮.৮৫% এবং গ্রামে ৬৬.৮৬% পরিবারের  কৃষিজমি রয়েছে।
''কৃষিভূমির মালিকানা'' ভূমিমালিক ৬৬.৩১%, ভূমিহীন ৩৩.৬৯%। শহরে ৪৮.৮৫% এবং গ্রামে ৬৬.৮৬% পরিবারের  কৃষিজমি রয়েছে।


যোগাযোগ বিশেষত্ব আধা-পাকারাস্তা ৫ কিমি, কাঁচারাস্তা ৪৩৬ কিমি।
''যোগাযোগ বিশেষত্ব''  আধা-পাকারাস্তা ৫ কিমি, কাঁচারাস্তা ৪৩৬ কিমি; নৌপথ ৫০ কিমি।  


''প্রধান কৃষি ফসল'' ধান, তুলা, তিল, আদা, হলুদ, শাকসবজি।
''প্রধান কৃষি ফসল'' ধান, তুলা, তিল, আদা, হলুদ, শাকসবজি।


''প্রধান ফল-ফলাদিব'' কাঁঠাল, কলা, আনারস, তরমুজ।
''প্রধান ফল-ফলাদি'' কাঁঠাল, কলা, আনারস, তরমুজ।


শিল্প ও কারখানা  স্টীল মিল।
''শিল্প ও কারখানা''  স্টীল মিল।


''কুটিরশিল্প'' লৌহশিল্প, তাঁতশিল্প, বাঁশ ও বেত শিল্প, কাঠের কাজ।
''কুটিরশিল্প'' লৌহশিল্প, তাঁতশিল্প, বাঁশ ও বেত শিল্প, কাঠের কাজ।
৮৩ নং লাইন: ৭৫ নং লাইন:
''মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার'' এ উপজেলায় মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার রয়েছে।
''মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার'' এ উপজেলায় মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার রয়েছে।


হাটবাজার  শুভলং বাজার, ছোট হরিণা বাজার ও বরকল বাজার।
''হাটবাজার''  শুভলং বাজার, ছোট হরিণা বাজার ও বরকল বাজার।
 
''প্রধান রপ্তানিদ্রব্য''   কলা, কাঠ, বাঁশ, তুলা ও তিল।


''বিদ্যুৎ ব্যবহার'' এ উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ৪.১৫% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।
''প্রধান রপ্তানিদ্রব্য''  কলা, কাঠ, বাঁশ, তুলা ও তিল।


''পানীয়জলের উৎস'' নলকূপ ১৬.৪৩%, ট্যাপ ১৭.৫৯%, পুকুর ১০.৯৩% এবং অন্যান্য ৭১.৩৩%।
''বিদ্যুৎ ব্যবহার'' এ উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ২৭.% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।


''স্যানিটেশন ব্যবস্থা'' এ উপজেলার ৫.৩৭% (শহরে ২৯.৪৯% এবং গ্রামে ৪.৬১%) পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৮৫.৩৭% (শহরে ৬৪.০৬% এবং গ্রামে ৮৬.০৪%) পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। .২৬% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।
''পানীয়জলের উৎস'' নলকূপ ৯.%, ট্যাপ ০.% এবং অন্যান্য ৮৯.৩%।
''স্যানিটেশন ব্যবস্থা''  এ উপজেলার ১৭.% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৭৮.% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। .% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।


''স্বাস্থ্যকেন্দ্র'' হাসপাতাল ১, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১।
''স্বাস্থ্যকেন্দ্র'' হাসপাতাল ১, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১।
৯৭ নং লাইন: ৮৯ নং লাইন:
''এনজিও'' জুনোপহর।  [আতিকুর রহমান]
''এনজিও'' জুনোপহর।  [আতিকুর রহমান]


'''তথ্যসূত্র'''   আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; বরকল উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।
'''তথ্যসূত্র'''   আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; বরকল উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।
 
[[en:Barkal Upazila]]
 
[[en:Barkal Upazila]]
 
[[en:Barkal Upazila]]


[[en:Barkal Upazila]]
[[en:Barkal Upazila]]

০৬:৪২, ৬ অক্টোবর ২০২৩ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ

বরকল উপজেলা (রাঙ্গামাটি জেলা)  আয়তন: ৭৬০.৮৯ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২২°৩৯´ থেকে ২৩°১৪´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯২°১১´ থেকে ৯২°২৯´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে বাঘাইছড়ি ও লংগদু উপজেলা, দক্ষিণে জুরাছড়ি উপজেলা, পূর্বে মিজোরাম (ভারত), পশ্চিমে লংগদু ও রাঙ্গামাটি সদর উপজেলা।

জনসংখ্যা ৪৭৫২৩; পুরুষ ২৫৬১৪, মহিলা ২১৯০৯। মুসলিম ১১০২৩, হিন্দু ৫০৮, বৌদ্ধ ৩৫৬৬৮, খ্রিস্টান ৩১৮ এবং অন্যান্য ৬।

জলাশয় কর্ণফূলি নদী; কাপ্তাই হ্রদ উল্লেখযোগ্য।

প্রশাসন থানা গঠিত হয় ১৯২৩ সালে এবং থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮৫ সালে।

উপজেলা
পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব(প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
শহর গ্রাম শহর গ্রাম
- ২৮ ১৮০ ১৯৩২ ৪৫৫৯১ ৬২ ৭২.৬ ৪৩.২
উপজেলা শহর
আয়তন (বর্গ কিমি) মৌজা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
১২.৯৫ ১৯৩২ ১৪৯ ৭২.৬
ইউনিয়ন
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড আয়তন (একর) লোকসংখ্যা শিক্ষার হার (%)
পুরুষ মহিলা
আইবাছড়া ১৫ ৩৪৪২০ ৪২৬৯ ৩৮৯১ ৩২.৫
বড় হরিণা ৩১ ৩৯৬৮০ ২৫৪৪ ২৩৯৫ ৩৫.৮
বরকল ৪৭ ৩৩৯২০ ৩৬৬১ ২৮৮১ ৫৬.১
ভূষণছড়া ৬৩ ৪৯২৮০ ৮৯৩৯ ৭২১৫ ৪৫.১
শুভলং ৭৯ ৩০৭২০ ৬২০১ ৫৫২৭ ৪৮.৬

সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।

ঐতিহাসিক ঘটনাবলি ব্রিটিশ শাসনের প্রথমদিকে এ অঞ্চলে কুকিদের দৌরাত্ম্য বৃদ্ধি পায়। এদের নিয়ন্ত্রনের জন্য ১৮৬০ সালে ব্রিটিশ সরকার পৃথক জেলা প্রশাসন গঠন করে। ১৮৭২ সালে ত্রিপুরা, কাছাড় ও পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে লুসাই বা মিজোরাম অঞ্চলে অভিযান চালিয়ে কুকিদের আস্তানা ধ্বংস করা হয়। ১৮৯১ ও ১৮৯৩ সালে কুকিদের নির্মুল অভিযান পরিচালিত হয়।

মুক্তিযুদ্ধ মুক্তিযুদ্ধের শুরুর দিকে পাকিস্তানি সৈন্যরা সুবলং, বরকল সদর, জালিয়াপাড়া ও উপজেলার অন্যান্য স্থানে বিশেষ করে বেশ কয়েকটি টিলায় তাদের ক্যাম্প স্থাপন করে। মুক্তিযোদ্ধারা তেমন বড় কোনো প্রতিরোধ তৈরি করতে না পারলেও ছোটখাটো কয়েকটি অপারেশন পরিচালনা করে। তবে পাকসেনাদের সঙ্গে প্রথম বড় যুদ্ধ ছিল নভেম্বর মাসে জালিয়াপাড়ায় তাদের ঘাঁটির উপর যৌথবাহিনীর আক্রমণ। এই যুদ্ধে শত্রু বাহিনীর ৩৫ জন নিহত হয়। ১৪ ডিসেম্বর বরকল উপজেলা হানাদার মুক্ত হয়।

বিস্তারিত দেখুন বরকল উপজেলা, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ৬।

ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদ ৭, মন্দির ৭, বৌদ্ধ মন্দির ২৯, গির্জা ৩।

শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৪৪.৫%; পুরুষ ৫৪.২%, মহিলা ৩৩.০%। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: বরকল উচ্চ বিদ্যালয়, বিলছড়া উচ্চ বিদ্যালয়, ভাইমিটাই প্রাথমিক বিদ্যালয়, লাইজুগ্রাম প্রাথমিক বিদ্যালয়, ধনুবাগ প্রাথমিক বিদ্যালয়।

বিশেষ আকর্ষণ  শুভলং ঝর্ণা।

জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৮৩.৪৬%, অকৃষি শ্রমিক ২.১৯%, ব্যবসা ৫.৮৭%, চাকরি ২.৫৪%, নির্মাণ ০.০৮%, ধর্মীয় সেবা ০.০৭%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.০৩% এবং অন্যান্য ৫.৭৬%।

কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৬৬.৩১%, ভূমিহীন ৩৩.৬৯%। শহরে ৪৮.৮৫% এবং গ্রামে ৬৬.৮৬% পরিবারের  কৃষিজমি রয়েছে।

যোগাযোগ বিশেষত্ব আধা-পাকারাস্তা ৫ কিমি, কাঁচারাস্তা ৪৩৬ কিমি; নৌপথ ৫০ কিমি।

প্রধান কৃষি ফসল ধান, তুলা, তিল, আদা, হলুদ, শাকসবজি।

প্রধান ফল-ফলাদি কাঁঠাল, কলা, আনারস, তরমুজ।

শিল্প ও কারখানা  স্টীল মিল।

কুটিরশিল্প লৌহশিল্প, তাঁতশিল্প, বাঁশ ও বেত শিল্প, কাঠের কাজ।

মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার এ উপজেলায় মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার রয়েছে।

হাটবাজার  শুভলং বাজার, ছোট হরিণা বাজার ও বরকল বাজার।

প্রধান রপ্তানিদ্রব্য  কলা, কাঠ, বাঁশ, তুলা ও তিল।

বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ২৭.৭% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।

পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৯.৯%, ট্যাপ ০.৮% এবং অন্যান্য ৮৯.৩%।

স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ১৭.৭% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৭৮.০% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ৪.৩% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।

স্বাস্থ্যকেন্দ্র হাসপাতাল ১, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১।

এনজিও জুনোপহর।  [আতিকুর রহমান]

তথ্যসূত্র   আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; বরকল উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।