নিকলী উপজেলা: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

(Robot: Automated text replacement (-'''''তথ্যসূত্র''''' +'''তথ্যসূত্র'''))
 
সম্পাদনা সারাংশ নেই
 
(একজন ব্যবহারকারী দ্বারা সম্পাদিত একটি মধ্যবর্তী সংশোধন দেখানো হচ্ছে না)
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
[[Category:Banglapedia]]
[[Category:Banglapedia]]
'''নিকলী উপজেলা''' (কিশোরগঞ্জ জেলা)  আয়তন: ২১৪.৪০ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৪°১৫´ থেকে ২৪°২৭´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯০°৫২´ থেকে ৯১°০৩´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে করিমগঞ্জ ও মিঠামইন উপজেলা, দক্ষিণে বাজিতপুর উপজেলা, পূর্বে মিঠামইন ও অষ্টগ্রাম উপজেলা, পশ্চিমে কটিয়াদি ও করিমগঞ্জ উপজেলা।
'''নিকলী উপজেলা''' ([[কিশোরগঞ্জ জেলা|কিশোরগঞ্জ জেলা]])  আয়তন: ২১৪.৩৯ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৪°১৫´ থেকে ২৪°২৭´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯০°৫২´ থেকে ৯১°০৩´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে করিমগঞ্জ ও মিঠামইন উপজেলা, দক্ষিণে বাজিতপুর উপজেলা, পূর্বে মিঠামইন ও অষ্টগ্রাম উপজেলা, পশ্চিমে কটিয়াদি ও করিমগঞ্জ উপজেলা।


''জনসংখ্যা'' ১২০১০৫; পুরুষ ৬১৪০৮, মহিলা ৫৮৬৯৭। মুসলিম ১১৩১৯৮, হিন্দু ৬৭৩৭, বৌদ্ধ ১৭ এবং অন্যান্য ১৫৩।
''জনসংখ্যা'' ১৩৩৭২৯; পুরুষ ৬৬৯৯৭, মহিলা ৬৬৭৩২। মুসলিম ১২৭১৯০, হিন্দু ৬৪৯৭, খ্রিস্টান ৪ এবং অন্যান্য ৩৮।


''জলাশয়'' প্রধান নদী: বাউলাই, ধনু, সিঙ্গুয়া ও ঘোড়াউতরা; তেগুলিয়া বিল, বড়বিল, বড়লিয়ারকন্দ বিল, নেওরা বিল উল্লেখযোগ্য।  
''জলাশয়'' প্রধান নদী: বাউলাই, ধনু, সিঙ্গুয়া ও ঘোড়াউতরা; তেগুলিয়া বিল, বড়বিল, বড়লিয়ারকন্দ বিল, নেওরা বিল উল্লেখযোগ্য।  
১৫ নং লাইন: ১৫ নং লাইন:
|-
|-
| শহর  || গ্রাম || শহর  || গ্রাম
| শহর  || গ্রাম || শহর  || গ্রাম
|-  
|-  
| - || ৭ || ৪৩  || ১২৫ || ১৭৯৫৭  || ১০২১৪৮  || ৫৬০  || ৩০.৯  || ২২.
| - || ৭ || ৪১ || ১২৫ || ১৮৯২৪ || ১১৪৮০৫ || ৬২৪ || ৩৩.|| ২৮.
 
|}
|}
{| class="table table-bordered table-hover"
{| class="table table-bordered table-hover"
|-
|-
| উপজেলা শহর
| colspan="9" | উপজেলা শহর
|-
|-
| আয়তন (বর্গ কিমি)  || মৌজা  || লোকসংখ্যা  || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি)  || শিক্ষার হার (%)
| আয়তন (বর্গ কিমি)  || মৌজা  || লোকসংখ্যা  || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি)  || শিক্ষার হার (%)
|-  
|-  
| .৬২  || ২ || ১৭৯৫৭  || ২৩৫৭  || ৩০.
| .০৮ || ২ || ১৮৯২৪ || ৩৭২৫ || ৩৩.
 
|}
{| class="table table-bordered table-hover"
|-  
|-  
| ইউনিয়ন  
| colspan="9" | ইউনিয়ন  
 
|-  
|-  
| ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড  || আয়তন(একর)  || লোকসংখ্যা  || শিক্ষার হার(%)  
| rowspan="2" | ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড  || rowspan="2" | আয়তন (একর)  || colspan="2" | লোকসংখ্যা  || rowspan="2" | শিক্ষার হার (%)  
 
|-  
|-  
| <nowiki> ||  || </nowiki>পুরুষ  || মহিলা ||
| পুরুষ  || মহিলা
 
|-  
|-  
| কারপাশা ৫৭ || ৪৪৯৮  || ৬৯৭৪ || ৬৭০৯  || ১৩.৪৩
| কারপাশা ৫৭ || ৪৬৬৬ || ৭৪৩৪ || ৭৬১৫ || ২৯.
 
|-
|-  
| গুরাই ৩৮ || ৯৩১২ || ৮০৭৮ || ৮১৭২ || ২৬.
| গুরাই ৩৮ || ১০৭১০  || ১০৮৩০ || ১০২৪৪  || ১৮.২৭
|-
 
| জারইতলা ৪৭ || ৫৪৩৩ || ১০৫৪৭ || ১০৯৬৩ || ২৫.
|-  
|-
| জারইতলা ৪৭ || ৬০৯৯  || ৯৫৮১ || ৯৩২৬  || ১৭.৬০
| ছাতিরচর ২৩ || ৫০৮৮ || ৪৪৮৫ || ৪২৭০ || ২৬.
 
|-
|-  
| দামপাড়া ২৭ || ৭২৫৮ || ৯৪৮৯ || ৯৪৯৪ || ৩৪.
| ছাতিরচর ৩৮ || ১৪৮৭  || ৩৮২০ || ৩৪৭২  || ১৯.০৬
|-
 
| নিকলী ৭৬  || ৬৭৮৮ || ১৫৯১৪ || ১৫৯২৯ || ৩১.
|-  
|-
| দামপাড়া ০৯ || ৭০৬৫  || ৯৪৫৮ || ৮৮৪২  || ৩২.১৬
| সিংপুর ৮৫ || ১৪৪৭৪ || ১১০৫০ || ১০২৮৯ || ২৫.
 
|-  
| নিকলী ৭৬  || ৭৫৬৮  || ১৫০৪৭ || ১৪৫৬৯  || ২৮.০৯
 
|-  
| সিংপুর ৮৫ || ১২১৩৮  || ৯৫১৮ || ৮৭০৭  || ২১.৮০
|}
|}
''সূত্র'' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।
''সূত্র'' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।
 
''প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ'' গুরাই জামে মসজিদ (১৬৮০ খ্রি), সাপুর মসজিদ (১৭০০ খ্রি), কুর্শা শাহী মসজিদ (১৭০৭)।
 
''মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাবলি'' ১৯৭১ সালের জুলাই মাসের মাঝামাঝি সময়ে পাকসেনারা এ উপজেলার শ্বশানঘাটে প্রায় অর্ধশত নিরীহ লোককে হত্যা করে। ৬ সেপ্টেম্বর গুরাই গ্রামে পাকসেনারা ২৫ জন নিরীহ লোককে হত্যা করে। ১৯ অক্টোবর পাকসেনাদের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের লড়াইয়ে বেশ কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। ২০ অক্টোবর নিকলী শত্রুমুক্ত হয়।


''মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন'' বধ্যভূমি ১: শ্মশানখোলার পেছনে নিকলী বাজার সংলগ্ন ভিটা।
''প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ'' গুরাই জামে মসজিদ (১৬৮০ খ্রি), সাপুর মসজিদ (১৭০০ খ্রি), কুর্শা শাহী মসজিদ (১৭০৭)।


''ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান'' মসজিদ ৮৮, মন্দির ১৭, মাযার ১২, আখড়া ৫।
[[Image:NikliUpazila.jpg|thumb|400px|right]]
''মুক্তিযুদ্ধ'' ১৯৭১ সালের জুলাই মাসের মাঝামাঝি সময়ে পাকসেনারা এ উপজেলার শ্বশানঘাটে প্রায় অর্ধশত নিরীহ লোককে হত্যা করে। ৬ সেপ্টেম্বর গুরাই (গুরই) গ্রামে পাকসেনারা ২৫ জন নিরীহ লোককে হত্যা করে। উপজেলার মুক্তিযোদ্ধারা মূলত গুরই, মিলচিয়া ও বাজিতপুরে অবস্থান নিয়ে উপজেলার ও এতদসংলগ্ন এলাকাসমূহে অপারেশন পরিচালনা করত। ১৯ অক্টোবর পাকসেনাদের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের লড়াইয়ে বেশ কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। ২০ অক্টোবর নিকলী শত্রুমুক্ত হয়। উপজেলার শ্মশানখোলার পেছনে নিকলী বাজার সংলগ্ন ভিটায় একটি বধ্যভূমির সন্ধান পাওয়া গেছে।


[[Image:নিকলী উপজেলা_html_88407781.png]]
''বিস্তারিত দেখুন''  নিকলী উপজেলা, ''বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ'', বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ৫।


[[Image:NikliUpazila.jpg]]
''ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান''  মসজিদ ৮৮, মন্দির ১৭, মাযার ১২, আখড়া ৫।


শিক্ষার হার'', ''শিক্ষা প্রতিষ্ঠান  গড় হার ২১.৯%; পুরুষ ২৮.%, মহিলা ১৯.%। কলেজ ১, প্রাথমিক বিদ্যালয় ৫৭, কিন্ডার গার্টেন ৪, মাদ্রাসা ৯। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: মুক্তিযোদ্ধা আদর্শ কলেজ (১৯৯৫), নিকলী গোরাচাঁদ পাইলট বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৩৮)।  
''শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান'' গড় হার ২৮.৯%; পুরুষ ৩০.%, মহিলা ২৭.%। কলেজ ১, প্রাথমিক বিদ্যালয় ৫৭, কিন্ডার গার্টেন ৪, মাদ্রাসা ৯। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: মুক্তিযোদ্ধা আদর্শ কলেজ (১৯৯৫), নিকলী গোরাচাঁদ পাইলট বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৩৮)।  


''সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান'' লাইব্রেরি ৭, ক্লাব ২৪, নাট্যদল ২, খেলার মাঠ ৭।  
''সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান'' লাইব্রেরি ৭, ক্লাব ২৪, নাট্যদল ২, খেলার মাঠ ৭।  
৮৫ নং লাইন: ৭১ নং লাইন:
''বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি'' তিসি, ছোলা, পাট।
''বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি'' তিসি, ছোলা, পাট।


প্রধান ফল''-''ফলাদি  আম, কাঁঠাল, জাম, কলা, নারিকেল, কুল।
''প্রধান ফল-ফলাদি''  আম, কাঁঠাল, জাম, কলা, নারিকেল, কুল।
 
''মৎস্য, হাঁস-মুরগির খামার  মৎস্য ৪৩১, মৎস্য প্রজনন কেন্দ্র ১, হাঁস-মুরগি ৭৪।


মৎস্য'', ''হাঁস''-''মুরগির খামার  মৎস্য ৪৩১, মৎস্য প্রজনন কেন্দ্র ১, হাঁস-মুরগি ৭৪।
''যোগাযোগ বিশেষত্ব'' পাকারাস্তা ২৯ কিমি, আধা-পাকারাস্তা কিমি, কাঁচারাস্তা ১৮৬ কিমি।


''যোগাযোগ বিশেষত্ব'' পাকারাস্তা ২২ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ১৫ কিমি, কাঁচারাস্তা ২০০ কিমি; নৌপথ ১৭ নটিক্যাল মাইল।
''বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন'' পাল্কি।


''বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন'' পাল্কি।
''বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন'' পাল্কি।
৯৫ নং লাইন: ৮৩ নং লাইন:
''শিল্প ও কলকারখানা'' রাইসমিল, স’মিল, আইস ফ্যাক্টরি, বিস্কুট ও রুটি ফ্যাক্টরি।
''শিল্প ও কলকারখানা'' রাইসমিল, স’মিল, আইস ফ্যাক্টরি, বিস্কুট ও রুটি ফ্যাক্টরি।


''কুটিরশিল্প'' স্বর্ণশিল্প, লৌহশল্প, মৃৎশিল্প, বুননশিল্প, বাঁশ, বেত ও কাঠের কাজ, সেলাই কাজ।
''কুটিরশিল্প'' স্বর্ণশিল্প, লৌহশল্প, মৃৎশিল্প, বুননশিল্প, বাঁশ, বেত ও কাঠের কাজ, সেলাই কাজ।
 
''হাটবাজার ও মেলা'' হাটবাজার ১৫, মেলা ১৫। নিকলী পুরাতন বাজার, নিকলী নতুন বাজার, দাসপাড়া বাজার ও মজলিশপুর বাজার এবং গুরাই মসজিদ সংলগ্ন মেলা ও ষাইটধার পৌষ সংক্রান্তির মেলা উল্লেখযোগ্য।
 
''প্রধান রপ্তানিদ্রব্য''   ধান, সরিষা, চীনাবাদাম, শাকসবজি।


''বিদ্যুৎ ব্যবহার'' এ উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ১২.৯৫% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।
''হাটবাজার ও মেলা'' হাটবাজার ১৫, মেলা ১৫। নিকলী পুরাতন বাজার, নিকলী নতুন বাজার, দাসপাড়া বাজার ও মজলিশপুর বাজার এবং গুরাই মসজিদ সংলগ্ন মেলা ও ষাইটধার পৌষ সংক্রান্তির মেলা উল্লেখযোগ্য।


''পানীয়জলের উৎস'' নলকূপ ৯৫.৮০%, পুকুর ০.৬২%, ট্যাপ ০.৩২% এবং অন্যান্য ৩.২৬%। এ উপজেলার অগভীর নলকূপের পানিতে মাত্রাতিরিক্ত আর্সেনিকের উপস্থিতি প্রমাণিত হয়েছে।
''প্রধান রপ্তানিদ্রব্য'' ধান, সরিষা, চীনাবাদাম, শাকসবজি।


''স্যানিটেশন ব্যবস্থা'' এ উপজেলার ১০.৪৯% (গ্রামে ৮.৯০% ও শহরে ১৯.৩৫%) পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৭৮.৩৭% (গ্রামে ৭৯.৬৬% ও শহরে ৭১.২০%) পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ১১.১৪% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।
''বিদ্যুৎ ব্যবহার'' এ উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ৫১.% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।


''স্বাস্থ্যকেন্দ্র'' উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, হাসপাতাল ,  পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র ৩, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র , কমিউনিটি ক্লিনিক ১৫, প্যাথলজি সেন্টার ১৮।
''পানীয়জলের উৎস'' নলকূপ ৯৭.৩%, ট্যাপ ০.% এবং অন্যান্য .৬%। এ উপজেলার অগভীর নলকূপের পানিতে মাত্রাতিরিক্ত আর্সেনিকের উপস্থিতি প্রমাণিত হয়েছে।


''প্রাকৃতিক দুর্যোগ'' ১৯৮৮ সালের বন্যায় এ উপজেলার ঘরবাড়ি, গবাদিপশু, ফসল ও অন্যান্য সম্পদের ব্যাপক ক্ষতি হয়।
''স্যানিটেশন ব্যবস্থা'' এ উপজেলার ৩১.৩% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৬২.৩% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ৬.৪% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।


''এনজিও'' ব্র্যাক, প্রশিকা, স্বনির্ভর বাংলাদেশ।  [মো. আবদুস সালাম]'' ''
''স্বাস্থ্যকেন্দ্র'' উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, হাসপাতাল ১,  পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র ৩, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ২, কমিউনিটি ক্লিনিক ১৫, প্যাথলজি সেন্টার ১৮।


'''তথ্যসূত্র'''   আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; নিকলী উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।
''প্রাকৃতিক দুর্যোগ'' ১৯৮৮ সালের বন্যায় এ উপজেলার ঘরবাড়ি, গবাদিপশু, ফসল ও অন্যান্য সম্পদের ব্যাপক ক্ষতি হয়।


<!-- imported from file: নিকলী উপজেলা.html-->
''এনজিও''  ব্র্যাক, প্রশিকা, স্বনির্ভর বাংলাদেশ।  [মো. আবদুস সালাম]


[[en:Nikli Upazila]]
'''তথ্যসূত্র'''   আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; নিকলী উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।


[[en:Nikli Upazila]]


[[en:Nikli Upazila]]
[[en:Nikli Upazila]]

১৮:৪৮, ২ অক্টোবর ২০২৩ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ

নিকলী উপজেলা (কিশোরগঞ্জ জেলা)  আয়তন: ২১৪.৩৯ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৪°১৫´ থেকে ২৪°২৭´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯০°৫২´ থেকে ৯১°০৩´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে করিমগঞ্জ ও মিঠামইন উপজেলা, দক্ষিণে বাজিতপুর উপজেলা, পূর্বে মিঠামইন ও অষ্টগ্রাম উপজেলা, পশ্চিমে কটিয়াদি ও করিমগঞ্জ উপজেলা।

জনসংখ্যা ১৩৩৭২৯; পুরুষ ৬৬৯৯৭, মহিলা ৬৬৭৩২। মুসলিম ১২৭১৯০, হিন্দু ৬৪৯৭, খ্রিস্টান ৪ এবং অন্যান্য ৩৮।

জলাশয় প্রধান নদী: বাউলাই, ধনু, সিঙ্গুয়া ও ঘোড়াউতরা; তেগুলিয়া বিল, বড়বিল, বড়লিয়ারকন্দ বিল, নেওরা বিল উল্লেখযোগ্য।

প্রশাসন নিকলী থানা গঠিত হয় ১৯৮১ সালে এবং থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ২৪ মার্চ ১৯৮৩ সালে।

উপজেলা
পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব(প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
শহর গ্রাম শহর গ্রাম
- ৪১ ১২৫ ১৮৯২৪ ১১৪৮০৫ ৬২৪ ৩৩.৫ ২৮.১
উপজেলা শহর
আয়তন (বর্গ কিমি) মৌজা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
৫.০৮ ১৮৯২৪ ৩৭২৫ ৩৩.৫
ইউনিয়ন
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড আয়তন (একর) লোকসংখ্যা শিক্ষার হার (%)
পুরুষ মহিলা
কারপাশা ৫৭ ৪৬৬৬ ৭৪৩৪ ৭৬১৫ ২৯.৪
গুরাই ৩৮ ৯৩১২ ৮০৭৮ ৮১৭২ ২৬.৪
জারইতলা ৪৭ ৫৪৩৩ ১০৫৪৭ ১০৯৬৩ ২৫.৬
ছাতিরচর ২৩ ৫০৮৮ ৪৪৮৫ ৪২৭০ ২৬.৩
দামপাড়া ২৭ ৭২৫৮ ৯৪৮৯ ৯৪৯৪ ৩৪.০
নিকলী ৭৬ ৬৭৮৮ ১৫৯১৪ ১৫৯২৯ ৩১.৭
সিংপুর ৮৫ ১৪৪৭৪ ১১০৫০ ১০২৮৯ ২৫.৮

সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।

প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ গুরাই জামে মসজিদ (১৬৮০ খ্রি), সাপুর মসজিদ (১৭০০ খ্রি), কুর্শা শাহী মসজিদ (১৭০৭)।

মুক্তিযুদ্ধ ১৯৭১ সালের জুলাই মাসের মাঝামাঝি সময়ে পাকসেনারা এ উপজেলার শ্বশানঘাটে প্রায় অর্ধশত নিরীহ লোককে হত্যা করে। ৬ সেপ্টেম্বর গুরাই (গুরই) গ্রামে পাকসেনারা ২৫ জন নিরীহ লোককে হত্যা করে। উপজেলার মুক্তিযোদ্ধারা মূলত গুরই, মিলচিয়া ও বাজিতপুরে অবস্থান নিয়ে উপজেলার ও এতদসংলগ্ন এলাকাসমূহে অপারেশন পরিচালনা করত। ১৯ অক্টোবর পাকসেনাদের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের লড়াইয়ে বেশ কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। ২০ অক্টোবর নিকলী শত্রুমুক্ত হয়। উপজেলার শ্মশানখোলার পেছনে নিকলী বাজার সংলগ্ন ভিটায় একটি বধ্যভূমির সন্ধান পাওয়া গেছে।

বিস্তারিত দেখুন নিকলী উপজেলা, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ৫।

ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদ ৮৮, মন্দির ১৭, মাযার ১২, আখড়া ৫।

শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ২৮.৯%; পুরুষ ৩০.৭%, মহিলা ২৭.০%। কলেজ ১, প্রাথমিক বিদ্যালয় ৫৭, কিন্ডার গার্টেন ৪, মাদ্রাসা ৯। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: মুক্তিযোদ্ধা আদর্শ কলেজ (১৯৯৫), নিকলী গোরাচাঁদ পাইলট বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৩৮)।

সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান লাইব্রেরি ৭, ক্লাব ২৪, নাট্যদল ২, খেলার মাঠ ৭।

জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৭২.০৬%, অকৃষি শ্রমিক ৩.৮৩%, শিল্প ০.৩৯%, ব্যবসা ১০.৭৬%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ১.১০%, চাকরি ২.৭৪%, নির্মাণ ০.৭৫%, ধর্মীয় সেবা ০.১৯%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.২১% এবং অন্যান্য ৭.৯৭%।

কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৫০.২২%, ভূমিহীন ৪৯.৭৮%। শহরে ৪২.২৭% এবং গ্রামে ৫১.৬৫% পরিবারের কৃষিজমি রয়েছে।

প্রধান কৃষি ফসল ধান, গম, ভূট্টা, আলু, সরিষা, চীনাবাদাম, শাকসবজি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি তিসি, ছোলা, পাট।

প্রধান ফল-ফলাদি  আম, কাঁঠাল, জাম, কলা, নারিকেল, কুল।

মৎস্য, হাঁস-মুরগির খামার  মৎস্য ৪৩১, মৎস্য প্রজনন কেন্দ্র ১, হাঁস-মুরগি ৭৪।

যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ২৯ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ১ কিমি, কাঁচারাস্তা ১৮৬ কিমি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পাল্কি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পাল্কি।

শিল্প ও কলকারখানা রাইসমিল, স’মিল, আইস ফ্যাক্টরি, বিস্কুট ও রুটি ফ্যাক্টরি।

কুটিরশিল্প স্বর্ণশিল্প, লৌহশল্প, মৃৎশিল্প, বুননশিল্প, বাঁশ, বেত ও কাঠের কাজ, সেলাই কাজ।

হাটবাজার ও মেলা হাটবাজার ১৫, মেলা ১৫। নিকলী পুরাতন বাজার, নিকলী নতুন বাজার, দাসপাড়া বাজার ও মজলিশপুর বাজার এবং গুরাই মসজিদ সংলগ্ন মেলা ও ষাইটধার পৌষ সংক্রান্তির মেলা উল্লেখযোগ্য।

প্রধান রপ্তানিদ্রব্য ধান, সরিষা, চীনাবাদাম, শাকসবজি।

বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ৫১.৭% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।

পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৯৭.৩%, ট্যাপ ০.১% এবং অন্যান্য ২.৬%। এ উপজেলার অগভীর নলকূপের পানিতে মাত্রাতিরিক্ত আর্সেনিকের উপস্থিতি প্রমাণিত হয়েছে।

স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ৩১.৩% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৬২.৩% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ৬.৪% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।

স্বাস্থ্যকেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, হাসপাতাল ১,  পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র ৩, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ২, কমিউনিটি ক্লিনিক ১৫, প্যাথলজি সেন্টার ১৮।

প্রাকৃতিক দুর্যোগ ১৯৮৮ সালের বন্যায় এ উপজেলার ঘরবাড়ি, গবাদিপশু, ফসল ও অন্যান্য সম্পদের ব্যাপক ক্ষতি হয়।

এনজিও ব্র্যাক, প্রশিকা, স্বনির্ভর বাংলাদেশ।  [মো. আবদুস সালাম]

তথ্যসূত্র   আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; নিকলী উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।