করিমগঞ্জ উপজেলা: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

(Robot: Automated text replacement (-\|\s''জনসংখ্যা''\s\|\| +| জনসংখ্যা ||))
 
সম্পাদনা সারাংশ নেই
 
(একজন ব্যবহারকারী দ্বারা সম্পাদিত একটি মধ্যবর্তী সংশোধন দেখানো হচ্ছে না)
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
[[Category:বাংলাপিডিয়া]]
[[Category:বাংলাপিডিয়া]]
'''করিমগঞ্জ উপজেলা''' (কিশোরগঞ্জ জেলা)  আয়তন: ২০০.৫২ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৪°২২´ থেকে ২৪°৩২´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯০°৪৮´ থেকে ৯১°০১´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে তাড়াইল ও ইটনা উপজেলা, দক্ষিণে নিকলি, কটিয়াদি ও কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলা, পূর্বে নিকলি ও মিটামইন উপজেলা, পশ্চিমে কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলা।
'''করিমগঞ্জ উপজেলা''' ([[কিশোরগঞ্জ জেলা]])  আয়তন: ২০০.৫০ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৪°২২´ থেকে ২৪°৩২´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯০°৪৮´ থেকে ৯১°০১´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে তাড়াইল ও ইটনা উপজেলা, দক্ষিণে নিকলি, কটিয়াদি ও কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলা, পূর্বে নিকলি ও মিটামইন উপজেলা, পশ্চিমে কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলা।


''জনসংখ্যা'' ২৫৮২৬৬; পুরুষ ১২৯১৩৪, মহিলা ১২৯১৩২। মুসলিম ২৫২৫৫৯, হিন্দু ৫৫১৯, বৌদ্ধ ১০ এবং অন্যান্য ১৭৮।
''জনসংখ্যা'' ২৮৭৮০৭; পুরুষ ১৪১৫৩১, মহিলা ১৪৬২৭৬। মুসলিম ২৮২৩৬৪, হিন্দু ৫১৭০, বৌদ্ধ ৪, খ্রিস্টান ৫ এবং অন্যান্য ২৬৪।


''জলাশয়'' প্রধান নদী: নরসুন্দা, বাঠাইল, সিঙ্গুয়া ও ধনু। বালিয়া, নাওলি, বড়, কোলাই, আলখারা ও উখলা বিল উল্লেখযোগ্য।
''জলাশয়'' প্রধান নদী: নরসুন্দা, বাঠাইল, সিঙ্গুয়া ও ধনু। বালিয়া, নাওলি, বড়, কোলাই, আলখারা ও উখলা বিল উল্লেখযোগ্য।
১৫ নং লাইন: ১৫ নং লাইন:
|-
|-
| শহর  || গ্রাম || শহর  || গ্রাম
| শহর  || গ্রাম || শহর  || গ্রাম
|-
|-
| ১ || ১২  || ৮৫  || ১৯৬  || ১৭২৬০  || ২৪১০০৬  || ১২৮৮  || ৪৮.৯  || ৩৪.
| ১ || ১১ || ৮১ || ১৮৬ || ২৬৮৪৪ || ২৬০৯৬৩ || ১৪৩৫ || ৫১.|| ৩৭.
 
|}
|}
{| class="table table-bordered table-hover"
{| class="table table-bordered table-hover"
|-
|-
| উপজেলা শহর
| colspan="9" | পৌরসভা
|-
|-
| আয়তন (বর্গ কিমি)  || মৌজা || লোকসংখ্যা  || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি)  || শিক্ষার হার (%)
| আয়তন (বর্গ কিমি)  || ওয়ার্ড  || মহল্লা || লোকসংখ্যা  || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি)  || শিক্ষার হার (%)
|-
|-
| .২১  || ৩  || ১৭২৬০  || ২৭৭৯  || ৪৮.
| .৮২ || ৯ || ১৭ || ২৬৮৪৪ || ৩৪৩৩ || ৫১.
 
|}
|}
{| class="table table-bordered table-hover"
{| class="table table-bordered table-hover"
|-
|-
৪১ নং লাইন: ৩৪ নং লাইন:
| পুরুষ  || মহিলা
| পুরুষ  || মহিলা
|-  
|-  
| করিমগঞ্জ ৬৯  || ১৫৩৫  || ৮৭১১ || ৮৫৪৯  || ৪৪.২০
| কাদির জঙ্গল ৬০ || ৫৫৮০ || ১৬০২৫ || ১৭৬৯৯ || ৪৩.
 
|-
|-
| কাদির জঙ্গল ৬০  || ৫৫৮০  || ১৬০৩১ || ১৬৪৮৯  || ৩৪.১৪
| কীর্তন ৭১ || ১৭৩১ || ৪৬২৫ || ৪৯৪৬ || ৩৫.
 
|-
|-
| কীর্তন  || ১৪০৯  || ৪৭৯০ || ৪৯২৭  || ৩৮.৬৩
| গুজাদিয়া ৩৪ || ৬৫৪২ || ১৭৯৫৭ || ১৮৮১১ || ৩৯.
 
|-
|-
| গুজাদিয়া ৩৪  || ৬৫৪২  || ১৭৪৪৩ || ১৭৮৬৯  || ৩৮.০৩
| গুনধর ২৫ || ৬৫৫৮ || ১৫১৪৯ || ১৪৯০২ || ৩২.
 
|-
|-
| গুনধর ২৫  || ৬৫৫৮  || ১১৩৩৬ || ১০৯৫৫  || ২৮.৩৮
| জয়কা ৫১ || ৬৪০৭ || ১৮৭৫৫ || ১৮৩৩৯ || ৩৬.
 
|-
|-
| জয়কা ৫১  || ৬৪০৭  || ১৫৫২৮ || ১৫০৫৪  || ৩৩.০৪
| জাফরাবাদ ৪৩ || ২৩৯০ || ৭০২৬ || ৭৫১১ || ৩৮.
 
|-
|-
| জাফরাবাদ ৪৩  || ২৩৯০  || ৬৭৮১  || ৬৯৭৬  || ৩৪.২০
| দেহুণ্ডা ১৭ || ২৩৯৭ || ১০১৪৯ || ১০৭৪৭ || ৩৪.
 
|-
| দেহুন্ডা ১৭ || ২৩৯৭ || ৯৬১৩ || ৯৯৭৪  || ৩৫.৪৭
 
|-
|-
| নিয়ামতপুর ৭৭ || ২৭৯২  || ১১২১০ || ১০৯৪৪  || ৩৯.৩৫
| নিয়ামতপুর ৭৭ || ৩২০২ || ১২৩২৬ || ১২৪৩২ || ৩৮.
 
|-
|-
| নোয়াবাদ ৮৬ || ২৮৪১ || ১০৫২৫ || ১০৯৬২  || ২৯.৫৩
| নোয়াবাদ ৮৬ || ২৮৪১ || ১১৭৩৬ || ১২২৮০ || ৩৮.
 
|-
|-
| বড়ঘরিয়া ০৮ || ২৮৬১  || ৯৩৮৯ || ৯৫৪৫  || ৩৯.০৫
| বড়ঘরিয়া ১৩ || ২৫০৬ || ৬৬৫০ || ৭০৫৬ || ৩৬.
 
|-
|-
| সুতারপাড়া ৯৪ || ৭০৫১  || ৭৭৭৭ || ৬৮৮৮  || ২৮.৭৩
| সুতারপাড়া ৯৪ || ৭৪৫১ || ৮০২৬ || ৭৮১৬ || ২৮.
|}  
|}  
''সূত্র'' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।
''সূত্র'' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।


''প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ'' ঈসা খানের জঙ্গলবাড়ি দুর্গের দরবার গৃহ (ষোড়শ শতাব্দী), ঈসা খান শাহী মসজিদ (ষোড়শ শতাব্দী), ঈসা খানের বাসভবন ও সীমানা প্রাচীর।
''প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ'' ঈসা খানের জঙ্গলবাড়ি দুর্গের দরবার গৃহ (ষোড়শ শতাব্দী), ঈসা খান শাহী মসজিদ (ষোড়শ শতাব্দী), ঈসা খানের বাসভবন ও সীমানা প্রাচীর।
[[Image:KarimganjUpazila.jpg|thumb|400px|right]]
''ঐতিহাসিক ঘটনা''  ষোড়শ শতাব্দীতে বাংলার বার ভূঁঞাদের অন্যতম ঈসা খান অতর্কিতে আক্রমণ চালিয়ে এ উপজেলার জঙ্গলবাড়ি দখল করে নেন। তখন জঙ্গলবাড়ির কোঁচ রাজা লক্ষণ হাজ পালিয়ে তাঁর জীবন রক্ষা করেন। জঙ্গলবাড়িতেই ঈসা খান তার পারিবারিক নিবাস স্থাপন করেন।


''ঐতিহাসিক ঘটনাবলি'' ষোড়শ শতাব্দীতে বাংলার বার ভূঁঞাদের অন্যতম ঈসা খান অতর্কিতে আক্রমণ চালিয়ে এ উপজেলার জঙ্গলবাড়ি দখল করে নেন। তখন জঙ্গলবাড়ির কোঁচ রাজা লক্ষণ হাজ পালিয়ে তাঁর জীবন রক্ষা করেন। জঙ্গলবাড়িতেই ঈসা খান তার পারিবারিক নিবাস স্থাপন করেন। ১৯৭১ সালে এ উপজেলার কাজলা, আয়লা, সাকুয়া, বালিয়াবাড়ি প্রভৃতি স্থানে পাকসেনাদের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের লড়াই সংঘটিত হয়। ১৬ ডিসেম্বর করিমগঞ্জ উপজেলা শত্রুমুক্ত হয়।
''মুক্তিযুদ্ধ'' ১৯৭১ সালে এ উপজেলার কাজলা, আয়লা, সাকুয়া, বালিয়াবাড়ি প্রভৃতি স্থানে পাকসেনাদের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের লড়াই সংঘটিত হয়। মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়ে উপজেলার মোট ১২ জন মুক্তিযোদ্ধা শাহাদাৎ বরণ করেন। ১৬ ডিসেম্বর করিমগঞ্জ উপজেলা শত্রুমুক্ত হয়।


[[Image:KarimganjUpazila.jpg|thumb|400px|right]]
''বিস্তারিত দেখুন''  করিমগঞ্জ উপজেলা, ''বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ'', বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ২।


''ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান'' মসজিদ ২৮৬, মাযার ৫, মন্দির ৮, আখড়া ২।
''ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান''   মসজিদ ২৮৬, মাযার ৫, মন্দির ৮, আখড়া ২।


''শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান'' গড় হার ৩৫.%; পুরুষ ৩৯.%, মহিলা ৩২.%। কলেজ ৩, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১৭, প্রাথমিক বিদ্যালয় ১১৬, স্যাটেলাইট স্কুল ৪, মাদ্রাসা ১৫। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: জঙ্গলবাড়ি ইংলিশ স্কুল (১৮৬২)।
''শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান'' গড় হার ৩৮.%; পুরুষ ৩৯.%, মহিলা ৩৭.%। কলেজ ৩, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১৭, প্রাথমিক বিদ্যালয় ১১৬, স্যাটেলাইট স্কুল ৪, মাদ্রাসা ১৫। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: জঙ্গলবাড়ি ইংলিশ স্কুল (১৮৬২)।


''পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী'' অবলুপ্ত সাময়িকী: সূচনা (১৯৮১), স্বাধীন বার্তা (১৯৯৮), ঈসা খান (১৯৮৮-১৯৯১), সাহসের পদাবলী (১৯৯২)।
''পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী'' অবলুপ্ত সাময়িকী: সূচনা (১৯৮১), স্বাধীন বার্তা (১৯৯৮), ঈসা খান (১৯৮৮-১৯৯১), সাহসের পদাবলী (১৯৯২)।
১০৪ নং লাইন: ৮৬ নং লাইন:
''মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার'' মৎস্য ২৫, গবাদিপশু ৩৭, হাঁস-মুরগি ৪৬৭, হ্যাচারি ১।
''মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার'' মৎস্য ২৫, গবাদিপশু ৩৭, হাঁস-মুরগি ৪৬৭, হ্যাচারি ১।


''যোগাযোগ বিশেষত্ব'' পাকারাস্তা ৩৬.৮০ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ১.৮৫ কিমি, কাঁচারাস্তা ৫১০.৫৫ কিমি।
''যোগাযোগ বিশেষত্ব'' পাকা রাস্তা ১৭২.কিমি, আধাপাকা রাস্তা ২৭.কিমি, কাঁচা রাস্তা ৯৫২.৪ কিমি; নৌপথ ৪৫ কিমি।


''বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন'' পালকি, গরুর গাড়ি।
''বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন'' পালকি, গরুর গাড়ি।
১১৬ নং লাইন: ৯৮ নং লাইন:
''প্রধান রপ্তানিদ্রব্য''   ধান, পাট, শাকসবজি, পিঁয়াজ, রসুন, মরিচ, সরিষা, কলা, বাঁশ ও বেতের মোড়া।
''প্রধান রপ্তানিদ্রব্য''   ধান, পাট, শাকসবজি, পিঁয়াজ, রসুন, মরিচ, সরিষা, কলা, বাঁশ ও বেতের মোড়া।


''বিদ্যুৎ ব্যবহার'' এ উপজেলার সবক’টি ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ১৫.৪০% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।
''বিদ্যুৎ ব্যবহার''   এ উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ৪৭.% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।


''পানীয়জলের উৎস'' নলকূপ ৯৫.৮৪%, পুকুর ০.৫%, ট্যাপ ০.১৩% এবং অন্যান্য ৩.৫৩%।
''পানীয়জলের উৎস''   নলকূপ ৯৬.%, ট্যাপ ০.% এবং অন্যান্য ৩.%।  


''স্যানিটেশন ব্যবস্থা'' এ উপজেলার ২৩.৫৬% (গ্রামে ২১.৫২% ও শহরে ৫২.৪৪%) পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৫৮.৮৯% (গ্রামে ৬০.৫৭% ও শহরে ৩৫.১৪%) পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ১৭.৫৫% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।
''স্যানিটেশন ব্যবস্থা'' এ উপজেলার ৬৩.% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৩০.% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। .% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুুবিধা নেই।


''স্বাস্থ্যকেন্দ্র'' উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ১, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র ৭, কমিউনিটি ক্লিনিক ৩৩।
''স্বাস্থ্যকেন্দ্র'' উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ১, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র ৭, কমিউনিটি ক্লিনিক ৩৩।
১২৮ নং লাইন: ১১০ নং লাইন:
''এনজিও'' ১৯। ব্র্যাক, অন্বেষা।  [মোঃ রেজাউল হাবীব রেজা]
''এনজিও'' ১৯। ব্র্যাক, অন্বেষা।  [মোঃ রেজাউল হাবীব রেজা]


তথ্য''সূত্র'' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; করিমগঞ্জ উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।
'''তথ্যসূত্র''' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; করিমগঞ্জ উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।


[[en:Karimganj Upazila]]
[[en:Karimganj Upazila]]

১৮:১৮, ২ অক্টোবর ২০২৩ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ

করিমগঞ্জ উপজেলা (কিশোরগঞ্জ জেলা)  আয়তন: ২০০.৫০ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৪°২২´ থেকে ২৪°৩২´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯০°৪৮´ থেকে ৯১°০১´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে তাড়াইল ও ইটনা উপজেলা, দক্ষিণে নিকলি, কটিয়াদি ও কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলা, পূর্বে নিকলি ও মিটামইন উপজেলা, পশ্চিমে কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলা।

জনসংখ্যা ২৮৭৮০৭; পুরুষ ১৪১৫৩১, মহিলা ১৪৬২৭৬। মুসলিম ২৮২৩৬৪, হিন্দু ৫১৭০, বৌদ্ধ ৪, খ্রিস্টান ৫ এবং অন্যান্য ২৬৪।

জলাশয় প্রধান নদী: নরসুন্দা, বাঠাইল, সিঙ্গুয়া ও ধনু। বালিয়া, নাওলি, বড়, কোলাই, আলখারা ও উখলা বিল উল্লেখযোগ্য।

প্রশাসন করিমগঞ্জ থানা গঠিত হয় ১৯০৯ সালে এবং থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮৩ সালে।

উপজেলা
পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব(প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
শহর গ্রাম শহর গ্রাম
১১ ৮১ ১৮৬ ২৬৮৪৪ ২৬০৯৬৩ ১৪৩৫ ৫১.৪ ৩৭.২
পৌরসভা
আয়তন (বর্গ কিমি) ওয়ার্ড মহল্লা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
৭.৮২ ১৭ ২৬৮৪৪ ৩৪৩৩ ৫১.৪
ইউনিয়ন
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড আয়তন (একর) লোকসংখ্যা শিক্ষার হার (%)
পুরুষ মহিলা
কাদির জঙ্গল ৬০ ৫৫৮০ ১৬০২৫ ১৭৬৯৯ ৪৩.৬
কীর্তন ৭১ ১৭৩১ ৪৬২৫ ৪৯৪৬ ৩৫.৪
গুজাদিয়া ৩৪ ৬৫৪২ ১৭৯৫৭ ১৮৮১১ ৩৯.২
গুনধর ২৫ ৬৫৫৮ ১৫১৪৯ ১৪৯০২ ৩২.৩
জয়কা ৫১ ৬৪০৭ ১৮৭৫৫ ১৮৩৩৯ ৩৬.৪
জাফরাবাদ ৪৩ ২৩৯০ ৭০২৬ ৭৫১১ ৩৮.৮
দেহুণ্ডা ১৭ ২৩৯৭ ১০১৪৯ ১০৭৪৭ ৩৪.৮
নিয়ামতপুর ৭৭ ৩২০২ ১২৩২৬ ১২৪৩২ ৩৮.৮
নোয়াবাদ ৮৬ ২৮৪১ ১১৭৩৬ ১২২৮০ ৩৮.৫
বড়ঘরিয়া ১৩ ২৫০৬ ৬৬৫০ ৭০৫৬ ৩৬.২
সুতারপাড়া ৯৪ ৭৪৫১ ৮০২৬ ৭৮১৬ ২৮.৯

সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।

প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ ঈসা খানের জঙ্গলবাড়ি দুর্গের দরবার গৃহ (ষোড়শ শতাব্দী), ঈসা খান শাহী মসজিদ (ষোড়শ শতাব্দী), ঈসা খানের বাসভবন ও সীমানা প্রাচীর।

ঐতিহাসিক ঘটনা ষোড়শ শতাব্দীতে বাংলার বার ভূঁঞাদের অন্যতম ঈসা খান অতর্কিতে আক্রমণ চালিয়ে এ উপজেলার জঙ্গলবাড়ি দখল করে নেন। তখন জঙ্গলবাড়ির কোঁচ রাজা লক্ষণ হাজ পালিয়ে তাঁর জীবন রক্ষা করেন। জঙ্গলবাড়িতেই ঈসা খান তার পারিবারিক নিবাস স্থাপন করেন।

মুক্তিযুদ্ধ ১৯৭১ সালে এ উপজেলার কাজলা, আয়লা, সাকুয়া, বালিয়াবাড়ি প্রভৃতি স্থানে পাকসেনাদের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের লড়াই সংঘটিত হয়। মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়ে উপজেলার মোট ১২ জন মুক্তিযোদ্ধা শাহাদাৎ বরণ করেন। ১৬ ডিসেম্বর করিমগঞ্জ উপজেলা শত্রুমুক্ত হয়।

বিস্তারিত দেখুন করিমগঞ্জ উপজেলা, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ২।

ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদ ২৮৬, মাযার ৫, মন্দির ৮, আখড়া ২।

শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৩৮.৬%; পুরুষ ৩৯.৬%, মহিলা ৩৭.৬%। কলেজ ৩, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১৭, প্রাথমিক বিদ্যালয় ১১৬, স্যাটেলাইট স্কুল ৪, মাদ্রাসা ১৫। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: জঙ্গলবাড়ি ইংলিশ স্কুল (১৮৬২)।

পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী অবলুপ্ত সাময়িকী: সূচনা (১৯৮১), স্বাধীন বার্তা (১৯৯৮), ঈসা খান (১৯৮৮-১৯৯১), সাহসের পদাবলী (১৯৯২)।

সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান ক্লাব ৩৯, সিনেমা হল ১, নাট্যমঞ্চ ১, নাট্যদল ১০, শিল্পকলা পরিষদ ১, খেলার মাঠ ১৯, মহিলা সংগঠন ১, শিশুপার্ক ১।

জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৬১.০৩%, অকৃষি শ্রমিক ৩.৩২%, শিল্প ১.০৩%, ব্যবসা ১৭.২৩%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ৪.৪০%, চাকরি ৩.৪৯%, নির্মাণ ১.৩১%, ধর্মীয় সেবা ০.২৭%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.২৫% এবং অন্যান্য ৭.৬৭%।

কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৫১.৮০%, ভূমিহীন ৪৮.২০%। শহরে ৩৮.৬৭% এবং গ্রামে ৫২.৭৫% পরিবারের কৃষিজমি রয়েছে।

প্রধান কৃষি ফসল ধান, পাট, গম, সরিষা, বাদাম, রসুন, টমেটো, পিঁয়াজ, মরিচ, শাকসবজি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি তিল, আখ, মটর, আমন ধান।

প্রধান ফল-ফলাদিব আম, জাম, কাঁঠাল, কলা, বরই, পেঁপে, লিচু, জলপাই।

মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার মৎস্য ২৫, গবাদিপশু ৩৭, হাঁস-মুরগি ৪৬৭, হ্যাচারি ১।

যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকা রাস্তা ১৭২.৫ কিমি, আধাপাকা রাস্তা ২৭.৫ কিমি, কাঁচা রাস্তা ৯৫২.৪ কিমি; নৌপথ ৪৫ কিমি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পালকি, গরুর গাড়ি।

শিল্প ও কলকারখানা চালকল, আটারকল, করাতকল, বরফকল, তেলকল, বিস্কুট ও রুটি ফ্যাক্টরি, মোমবাতির ফ্যাক্টরি ও বিবিধ ওয়ার্কসপ।

কুটিরশিল্প তাঁতশিল্প, লৌহশিল্প, বাঁশশিল্প, বেতশিল্প, স্বর্ণশিল্প, মৃৎশিল্প, বুনন শিল্প, কাঠের কাজ, সেলাই কাজ।

হাটবাজার ও মেলা হাটবাজার ৩৮, মেলা ১০। করিমগঞ্জ বাজার, বাবুর হাট, মরিচাখালী হাট ও মুড়িকান্দি হাট উল্লেখযোগ্য।

প্রধান রপ্তানিদ্রব্য   ধান, পাট, শাকসবজি, পিঁয়াজ, রসুন, মরিচ, সরিষা, কলা, বাঁশ ও বেতের মোড়া।

বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ৪৭.৯% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।

পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৯৬.৭%, ট্যাপ ০.১% এবং অন্যান্য ৩.২%।

স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ৬৩.১% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৩০.২% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ৬.৭% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুুবিধা নেই।

স্বাস্থ্যকেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ১, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র ৭, কমিউনিটি ক্লিনিক ৩৩।

প্রাকৃতিক দুর্যোগ ১৯৭৪, ১৯৯৮ ও ২০০৪ সালের বন্যায় এ উপজেলার ঘরবাড়ি, গবাদিপশু, ফসল ও অন্যান্য সম্পদের ব্যাপক ক্ষতি হয়।

এনজিও ১৯। ব্র্যাক, অন্বেষা।  [মোঃ রেজাউল হাবীব রেজা]

তথ্যসূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; করিমগঞ্জ উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।