বাঘা উপজেলা: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

সম্পাদনা সারাংশ নেই
সম্পাদনা সারাংশ নেই
 
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
[[Category:বাংলাপিডিয়া]]
[[Category:বাংলাপিডিয়া]]
'''বাঘা উপজেলা''' ([[রাজশাহী জেলা|রাজশাহী জেলা]])  আয়তন: ১৮৪.২৫ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৪°০৭´ থেকে ২৪°১৯´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৮°৪৪´ থেকে ৮৮°৫৫´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে চারঘাট ও বাগাতিপাড়া উপজেলা, দক্ষিণে দৌলতপুর উপজেলা (কুষ্টিয়া), পূর্বে লালপুর ও বাগাতিপাড়া উপজেলা, পশ্চিমে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ এবং পদ্মা (গঙ্গা) নদী।
'''বাঘা উপজেলা''' ([[রাজশাহী জেলা|রাজশাহী জেলা]])  আয়তন: ১৮৫.১৬ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৪°০৭´ থেকে ২৪°১৯´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৮°৪৪´ থেকে ৮৮°৫৫´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে চারঘাট ও বাগাতিপাড়া উপজেলা, দক্ষিণে দৌলতপুর উপজেলা (কুষ্টিয়া), পূর্বে লালপুর ও বাগাতিপাড়া উপজেলা, পশ্চিমে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ এবং পদ্মা (গঙ্গা) নদী।


''জনসংখ্যা'' ১৬৯৫২৭; পুরুষ ৮৭৮৮৫, মহিলা ৮১৬৪২। মুসলিম ১৬০২৮৩, হিন্দু ৯১৮০, বৌদ্ধ ৩৭ এবং অন্যান্য ২৭।
''জনসংখ্যা'' ১৮৪১৮৩; পুরুষ ৯২০১০, মহিলা ৯২১৭৩। মুসলিম ১৭৪৪২৩, হিন্দু ৯৫৯০, খ্রিস্টান ৪৯ এবং অন্যান্য ১২১।


''জলাশয়'' প্রধান নদী: পদ্মা, বড়াল।
''জলাশয়'' প্রধান নদী: পদ্মা, বড়াল।
১৬ নং লাইন: ১৬ নং লাইন:
| শহর  || গ্রাম || শহর  || গ্রাম
| শহর  || গ্রাম || শহর  || গ্রাম
|-
|-
| ১  || ৬ || ৯৮  || ৯৩  || ২২০৩৮  || ১৪৭৪৮৯  || ৯২০  || ৪৮.২২  || ৪০.৮৬
| || ৬ || ৮২ || ৭৮ || ৪৪১৭৩ || ১৪০০১০ || ৯৯৫ || ৫৪.|| ৪৮.
|}
|}
{| class="table table-bordered table-hover"
{| class="table table-bordered table-hover"
|-
|-
| colspan="9" | পৌরসভা
| colspan="9" | আড়ানী পৌরসভা
|-
|-
| আয়তন (বর্গ কিমি)  || ওয়ার্ড  || মহল্লা  || লোকসংখ্যা  || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি)  || শিক্ষার হার (%)
| আয়তন (বর্গ কিমি)  || ওয়ার্ড  || মহল্লা  || লোকসংখ্যা  || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি)  || শিক্ষার হার (%)
|-
|-
| ১০.৯৯ || || ২৫ || ২২০৩৮ || ২০০৫ || ৪৮.২২
| - || ৯ || ২২ || ১৬৫৫০ || - || ৫২.
|}
{| class="table table-bordered table-hover"
|-
| colspan="9" | বাঘা পৌরসভা
|-
| আয়তন (বর্গ কিমি)  || ওয়ার্ড || মহল্লা || লোকসংখ্যা || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) || শিক্ষার হার (%)
|-
| ১০.৯৯ (২০০১) || ৯ || ২৮ || ২৭৬২৩ || ২০০৫ (২০০১) || ৫৫.
|}
|}
{| class="table table-bordered table-hover"
{| class="table table-bordered table-hover"
৩৪ নং লাইন: ৪২ নং লাইন:
| পুরুষ  || মহিলা
| পুরুষ  || মহিলা
|-  
|-  
| আড়ানী ১৩ || ৫৫৮৬  || ১২৩৩২ || ১১৩১২  || ৪৬.০৩
| আড়ানী ১৩ || ২৭৬১ || ৫১৭৮ || ৫২০৪ || ৫০.
|-
|-
| গড়গড়ি ৫৫ || ১০৬৫৯  || ১৩৬৩৩ || ১২৯৫৮  || ৩৪.৯২
| গড়গড়ি ৫৫ || ১০৮৪৯ || ১৩৯৭৩ || ১৩৮৩০ || ৪৩.
|-
|-
| পাকুড়িয়া৭৯  || ৭৪৯৩  || ১৪৯২১ || ১৩৮৩৭  || ৩৬.১৫
| পাকুড়িয়া ৭৯ || ৭৩৫৮ || ১৩৭৫০ || ১৪০৯৭ || ৫১.
|-
|-
| বাউসা ২৩ || ৭৫৫৮ || ১৩১৫৯ || ১২২৩০  || ৪৬.১৪
| বাউসা ২৩ || ৭৫৫৮ || ১৪১৮৬ || ১৪২১১ || ৫০.
|-
|-
| বাজুবাঘা ১৫ || ৬০৬৮  || ৭০২২ || ৬৬৫৬  || ৪২.৮৫
| বাজুবাঘা ১৫ || ৩৫২১ || ৬৮২৮ || ৭০৫৫ || ৪৪.
|-
|-
| মনিগ্রাম ৬৩ || ৮১৬৬  || ১৫৩৬১ || ১৪০৬৮  || ৪০.৭৯
| মনিগ্রাম ৬৩ || ৭৯৭১ || ১৫৯১৯ || ১৫৭৭৯ || ৪৭.
|}
|}


''সূত্র'' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।
''সূত্র'' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।


[[Image:BaghaUpazila.jpg|thumb|400px|right]]
[[Image:BaghaUpazila.jpg|thumb|400px|right]]
''প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ'' দশ গম্বুজ বিশিষ্ট বাঘা শাহী মসজিদ ও দীঘি (১৫২৩), মীরগঞ্জের নীলকুঠি (বর্তমানে রেশম শিল্পের কারখানা), দিলাল বোখারীর (রহ.) মাযার (আলাইপুর)।
''প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ'' দশ গম্বুজ বিশিষ্ট বাঘা শাহী মসজিদ ও দীঘি (১৫২৩), মীরগঞ্জের নীলকুঠি (বর্তমানে রেশম শিল্পের কারখানা), দিলাল বোখারীর (রহ.) মাযার (আলাইপুর)।


ঐতিহাসিক ঘটনাবলি  ষোড়শ শতাব্দীতে লস্কর খাঁন জায়গিরদারের সদর দফতর ছিল বাঘার আলাইপুর গ্রামে। হযরত শাহদৌলা (রঃ) বাঘায় বসতি স্থাপন করে ইসলাম প্রচার করেন এবং একটি মাদ্রাসা স্থাপন করেন। ১৯৭১ সালে পাকসেনারা পর্যায়ক্রমে আড়ানী, বাঘা, নারায়ণপুর, পাকুড়িয়া, চকরাজাপুর, আলাইপুর প্রভৃতি স্থানে অস্থায়ী ক্যাম্প স্থাপন করে। উক্ত স্থানগুলোতে মুক্তিযোদ্ধা ও পাকিস্তানি সৈন্যদের মধ্যে কয়েকটি লড়াই সংঘটিত হয়। লালপুরে মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বপূর্ণ প্রতিরোধে পাকিস্তানি সৈন্যরা পাবনা, আড়ানী, নাটোর, নন্দনগাছি প্রভৃতি স্থানে পালিয়ে জীবন বাঁচানোর চেষ্টা করলে গ্রামবাসিরা তাদের অনেককে হত্যা করে। বাঘা উপজেলার চার শতাধিক মুক্তিযোদ্ধা সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন এবং ৭ জন শহীদ হন।
''ঐতিহাসিক ঘটনা''  ষোড়শ শতাব্দীতে লস্কর খাঁন জায়গিরদারের সদর দফতর ছিল বাঘার আলাইপুর গ্রামে। হযরত শাহদৌলা (রা.) বাঘায় বসতি স্থাপন করে ইসলাম প্রচার করেন এবং একটি মাদ্রাসা স্থাপন করেন।
 
''মুক্তিযুদ্ধ''  ১৯৭১ সালে পাকসেনারা পর্যায়ক্রমে আড়ানী, বাঘা, নারায়ণপুর, পাকুড়িয়া, চকরাজাপুর, আলাইপুর প্রভৃতি স্থানে অস্থায়ী ক্যাম্প স্থাপন করে। উক্ত স্থানগুলোতে মুক্তিযোদ্ধা ও পাকিস্তানি সৈন্যদের মধ্যে কয়েকটি লড়াই সংঘটিত হয়। লালপুরে মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বপূর্ণ প্রতিরোধে পাকিস্তানি সৈন্যরা পাবনা, আড়ানী, নাটোর, নন্দনগাছি প্রভৃতি স্থানে পালিয়ে জীবন বাঁচানোর চেষ্টা করলে গ্রামবাসীরা তাদের অনেককে হত্যা করে। বাঘা উপজেলার চার শতাধিক মুক্তিযোদ্ধা সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন এবং ৭ জন শহীদ হন।
 
''বিস্তারিত দেখুন''  বাঘা উপজেলা, ''বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ'', বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ৬।


''ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান'' মসজিদ ৩৪৩, মন্দির ৩৬, মাযার ৫, তীর্থস্থান ২। উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান: শাহদৌলার (রঃ) মাযার, খ্যাপা বাবার মন্দির।
''ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান'' মসজিদ ৩৪৩, মন্দির ৩৬, মাযার ৫, তীর্থস্থান ২। উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান: শাহদৌলার (রঃ) মাযার, খ্যাপা বাবার মন্দির।


''শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান'' গড় হার ৪১.৮৩%; পুরুষ ৪৫.৬৬%, মহিলা ৩৭.৭৩%। কলেজ ১৯, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৪৯, প্রাথমিক বিদ্যালয় ৪২, মাদ্রাসা ২৫। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: শাহদৌলা ডিগ্রি কলেজ, আব্দুল গণি কলেজ, মীরগঞ্জ কলেজ, আলহাজ্ব এরশাদ আলী মহিলা কলেজ, আড়ানী কলেজ, আড়ানী মনমোহিনী উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৬৫), বাঘা উচ্চ বিদ্যালয়।
''শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান'' গড় হার ৪৯.%; পুরুষ ৫১.%, মহিলা ৪৭.%। কলেজ ১৯, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৪৯, প্রাথমিক বিদ্যালয় ৪২, মাদ্রাসা ২৫। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: শাহদৌলা ডিগ্রি কলেজ, আব্দুল গণি কলেজ, মীরগঞ্জ কলেজ, আলহাজ্ব এরশাদ আলী মহিলা কলেজ, আড়ানী কলেজ, আড়ানী মনমোহিনী উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৬৫), বাঘা উচ্চ বিদ্যালয়।


''পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী'' মাসিক: মুক্তকথা; সাময়িকপত্র: মৃত্তিকা, স্মরণী; অনিয়মিত: বাঘাবার্তা।
''পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী'' মাসিক: মুক্তকথা; সাময়িকপত্র: মৃত্তিকা, স্মরণী; অনিয়মিত: বাঘাবার্তা।
৭৪ নং লাইন: ৮৬ নং লাইন:
''মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার'' মৎস্য ১১০, গবাদিপশু ১৮, হাঁস-মুরগি ১০৬।
''মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার'' মৎস্য ১১০, গবাদিপশু ১৮, হাঁস-মুরগি ১০৬।


''যোগাযোগ বিশেষত্ব'' পাকারাস্তা ৩০ কিমি, কাঁচারাস্তা ৬২৪ কিমি; রেলপথ ৪.৫ কিমি।
''যোগাযোগ বিশেষত্ব'' পাকারাস্তা ১৬৮ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ৩৫, কাঁচারাস্তা ২৬২ কিমি; রেলপথ ৫ কিমি।


''বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন'' পাল্কি, গরু ও ঘোড়ার গাড়ি।
''বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন'' পাল্কি, গরু ও ঘোড়ার গাড়ি।
৮৬ নং লাইন: ৯৮ নং লাইন:
''প্রধান রপ্তানিদ্রব্য''  ধান, গম, পাট, আম, কাঁঠাল, হলুদ, রেশমগুটি, আখ, খেজুর গুড়।
''প্রধান রপ্তানিদ্রব্য''  ধান, গম, পাট, আম, কাঁঠাল, হলুদ, রেশমগুটি, আখ, খেজুর গুড়।


''বিদ্যুৎ ব্যবহার'' এ উপজেলার সবক’টি ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ২৫.৪৫% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।
''বিদ্যুৎ ব্যবহার'' এ উপজেলার সবক’টি ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ৫২.% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।


''পানীয়জলের উৎস'' নলকূপ ৯৬.২৯%, ট্যাপ ০.৩১%, পুকুর ০.১৬% এবং অন্যান্য .২৪%। এ উপজেলার অগভীর নলকূপের  পানিতে আর্সেনিকের উপস্থিতি প্রমাণিত হয়েছে।
''পানীয়জলের উৎস'' নলকূপ ৯৭.%, ট্যাপ ০.% এবং অন্যান্য .%। এ উপজেলার অগভীর নলকূপের  পানিতে আর্সেনিকের উপস্থিতি প্রমাণিত হয়েছে।


''স্যানিটেশন ব্যবস্থা'' এ উপজেলার ২৩.২৬% (গ্রামে ২১.৩১% এবং শহরে ৩৬.১%) পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৪৭.১৪% (গ্রামে ৪৭.৮৩% এবং শহরে ৪২.৬৫%) পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ২৯.৫৯% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।
''স্যানিটেশন ব্যবস্থা'' এ উপজেলার ৩৫.১% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৫৫.% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। .% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।


''স্বাস্থ্যকেন্দ্র''  উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্র ১, পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ৬,  ক্লিনিক ৩।
''স্বাস্থ্যকেন্দ্র''  উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্র ১, পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ৬,  ক্লিনিক ৩।
৯৮ নং লাইন: ১১০ নং লাইন:
''এনজিও'' ব্র্যাক, আশা, কারিতাস, ঠেঙ্গামারা মহিলা সবুজ সংঘ।  [এ.কে.এম কায়সারুজ্জামান]
''এনজিও'' ব্র্যাক, আশা, কারিতাস, ঠেঙ্গামারা মহিলা সবুজ সংঘ।  [এ.কে.এম কায়সারুজ্জামান]


'''তথ্যসূত্র'''  আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; বাঘা উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।
'''তথ্যসূত্র'''  আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; বাঘা উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।


[[en:Bagha Upazila]]
[[en:Bagha Upazila]]

১৬:০৯, ১ অক্টোবর ২০২৩ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ

বাঘা উপজেলা (রাজশাহী জেলা)  আয়তন: ১৮৫.১৬ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৪°০৭´ থেকে ২৪°১৯´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৮°৪৪´ থেকে ৮৮°৫৫´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে চারঘাট ও বাগাতিপাড়া উপজেলা, দক্ষিণে দৌলতপুর উপজেলা (কুষ্টিয়া), পূর্বে লালপুর ও বাগাতিপাড়া উপজেলা, পশ্চিমে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ এবং পদ্মা (গঙ্গা) নদী।

জনসংখ্যা ১৮৪১৮৩; পুরুষ ৯২০১০, মহিলা ৯২১৭৩। মুসলিম ১৭৪৪২৩, হিন্দু ৯৫৯০, খ্রিস্টান ৪৯ এবং অন্যান্য ১২১।

জলাশয় প্রধান নদী: পদ্মা, বড়াল।

প্রশাসন বাঘা থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮৩ সালের ২৬ মার্চ।

উপজেলা
পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
শহর গ্রাম শহর গ্রাম
৮২ ৭৮ ৪৪১৭৩ ১৪০০১০ ৯৯৫ ৫৪.৬ ৪৮.১
আড়ানী পৌরসভা
আয়তন (বর্গ কিমি) ওয়ার্ড মহল্লা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
- ২২ ১৬৫৫০ - ৫২.১
বাঘা পৌরসভা
আয়তন (বর্গ কিমি) ওয়ার্ড মহল্লা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
১০.৯৯ (২০০১) ২৮ ২৭৬২৩ ২০০৫ (২০০১) ৫৫.২
ইউনিয়ন
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড আয়তন (একর) লোকসংখ্যা শিক্ষার হার (%)
পুরুষ মহিলা
আড়ানী ১৩ ২৭৬১ ৫১৭৮ ৫২০৪ ৫০.৫
গড়গড়ি ৫৫ ১০৮৪৯ ১৩৯৭৩ ১৩৮৩০ ৪৩.৯
পাকুড়িয়া ৭৯ ৭৩৫৮ ১৩৭৫০ ১৪০৯৭ ৫১.২
বাউসা ২৩ ৭৫৫৮ ১৪১৮৬ ১৪২১১ ৫০.৮
বাজুবাঘা ১৫ ৩৫২১ ৬৮২৮ ৭০৫৫ ৪৪.৯
মনিগ্রাম ৬৩ ৭৯৭১ ১৫৯১৯ ১৫৭৭৯ ৪৭.০

সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।

প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ দশ গম্বুজ বিশিষ্ট বাঘা শাহী মসজিদ ও দীঘি (১৫২৩), মীরগঞ্জের নীলকুঠি (বর্তমানে রেশম শিল্পের কারখানা), দিলাল বোখারীর (রহ.) মাযার (আলাইপুর)।

ঐতিহাসিক ঘটনা ষোড়শ শতাব্দীতে লস্কর খাঁন জায়গিরদারের সদর দফতর ছিল বাঘার আলাইপুর গ্রামে। হযরত শাহদৌলা (রা.) বাঘায় বসতি স্থাপন করে ইসলাম প্রচার করেন এবং একটি মাদ্রাসা স্থাপন করেন।

মুক্তিযুদ্ধ ১৯৭১ সালে পাকসেনারা পর্যায়ক্রমে আড়ানী, বাঘা, নারায়ণপুর, পাকুড়িয়া, চকরাজাপুর, আলাইপুর প্রভৃতি স্থানে অস্থায়ী ক্যাম্প স্থাপন করে। উক্ত স্থানগুলোতে মুক্তিযোদ্ধা ও পাকিস্তানি সৈন্যদের মধ্যে কয়েকটি লড়াই সংঘটিত হয়। লালপুরে মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বপূর্ণ প্রতিরোধে পাকিস্তানি সৈন্যরা পাবনা, আড়ানী, নাটোর, নন্দনগাছি প্রভৃতি স্থানে পালিয়ে জীবন বাঁচানোর চেষ্টা করলে গ্রামবাসীরা তাদের অনেককে হত্যা করে। বাঘা উপজেলার চার শতাধিক মুক্তিযোদ্ধা সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন এবং ৭ জন শহীদ হন।

বিস্তারিত দেখুন বাঘা উপজেলা, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ৬।

ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদ ৩৪৩, মন্দির ৩৬, মাযার ৫, তীর্থস্থান ২। উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান: শাহদৌলার (রঃ) মাযার, খ্যাপা বাবার মন্দির।

শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৪৯.৬%; পুরুষ ৫১.৯%, মহিলা ৪৭.৪%। কলেজ ১৯, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৪৯, প্রাথমিক বিদ্যালয় ৪২, মাদ্রাসা ২৫। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: শাহদৌলা ডিগ্রি কলেজ, আব্দুল গণি কলেজ, মীরগঞ্জ কলেজ, আলহাজ্ব এরশাদ আলী মহিলা কলেজ, আড়ানী কলেজ, আড়ানী মনমোহিনী উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৬৫), বাঘা উচ্চ বিদ্যালয়।

পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী মাসিক: মুক্তকথা; সাময়িকপত্র: মৃত্তিকা, স্মরণী; অনিয়মিত: বাঘাবার্তা।

সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান লাইব্রেরি ৬, ক্লাব ২৫, প্রেসক্লাব ১, মহিলা সমিতি ১২, সিনেমা হল ১, খেলার মাঠ ২২।

জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৬৩.৫৭%, অকৃষি শ্রমিক ৫.৪৭%, শিল্প ১.১৪%, ব্যবসা ১৭%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ২.০৫%, চাকরি ৩.৩৬%, নির্মাণ ০.৫৩%, ধর্মীয় সেবা ০.১৩%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.১১% এবং অন্যান্য ৬.৬৪%।

কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৫৭.৫২%, ভূমিহীন ৪২.৪৮%। শহরে ৪৬.৯৭% এবং  গ্রামে ৫৯.১৩% পরিবারের কৃষিজমি রয়েছে।

প্রধান কৃষি ফসল ধান, গম, পাট, আখ, মাষকলাই, তুত, চীনাবাদাম, হলুদ, শাকসবজি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি মিষ্টিআলু, তিল, তিসি, আউশ ধান, অড়হর।

প্রধান ফল-ফলাদি আম, কাঁঠাল, লিচু, পেয়ারা, খেজুর।

মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার মৎস্য ১১০, গবাদিপশু ১৮, হাঁস-মুরগি ১০৬।

যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ১৬৮ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ৩৫, কাঁচারাস্তা ২৬২ কিমি; রেলপথ ৫ কিমি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পাল্কি, গরু ও ঘোড়ার গাড়ি।

শিল্প ও কলকারখানা ধানকল ১৫, বরফকল ২, করাতকল ৫, ওয়েল্ডিং কারখানা ২০।

কুটিরশিল্প স্বর্ণশিল্প ৩৫, মৃৎশিল্প ১০৫, দারুশিল্প ৩২৫, রেশমশিল্প ১, বাঁশের কাজ ২৫০, চর্মকার ৬৭।

হাটবাজার ও মেলা হাটবাজার ২৬, মেলা ২। বাঘা হাট, মীরগঞ্জ হাট, চন্ডিপুর হাট, নারায়ণপুর হাট, আড়ানী হাট, মনিগ্রাম হাট, রুস্তমপুর হাট এবং বাঘার ঈদের মেলা উল্লেখযোগ্য।

প্রধান রপ্তানিদ্রব্য ধান, গম, পাট, আম, কাঁঠাল, হলুদ, রেশমগুটি, আখ, খেজুর গুড়।

বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ৫২.৫% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।

পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৯৭.৭%, ট্যাপ ০.৭% এবং অন্যান্য ১.৬%। এ উপজেলার অগভীর নলকূপের পানিতে আর্সেনিকের উপস্থিতি প্রমাণিত হয়েছে।

স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ৩৫.১% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৫৫.৫% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ৯.৪% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।

স্বাস্থ্যকেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্র ১, পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ৬,  ক্লিনিক ৩।

প্রাকৃতিক দুর্যোগ ২০০৯ সালে পাকুড়িয়া ইউনিয়নের প্রায় ৪ কিমি এলাকা এবং ৬৭৭.২৬ হেক্টর কৃষিজমি পদ্মা নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে যায়।

এনজিও ব্র্যাক, আশা, কারিতাস, ঠেঙ্গামারা মহিলা সবুজ সংঘ।  [এ.কে.এম কায়সারুজ্জামান]

তথ্যসূত্র  আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; বাঘা উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।