সুজানগর উপজেলা: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
NasirkhanBot (আলোচনা | অবদান) অ (Robot: Automated text replacement (-'''''তথ্যসূত্র''''' +'''তথ্যসূত্র''')) |
সম্পাদনা সারাংশ নেই |
||
(একজন ব্যবহারকারী দ্বারা সম্পাদিত একটি মধ্যবর্তী সংশোধন দেখানো হচ্ছে না) | |||
১ নং লাইন: | ১ নং লাইন: | ||
[[Category:বাংলাপিডিয়া]] | [[Category:বাংলাপিডিয়া]] | ||
'''সুজানগর উপজেলা''' ([[পাবনা জেলা|পাবনা জেলা]]) আয়তন: | '''সুজানগর উপজেলা''' ([[পাবনা জেলা|পাবনা জেলা]]) আয়তন: ৩৩৮.৬৫ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৩°৪৮´ থেকে ২৪°০০´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯°২৩´ থেকে ৮৯°৩৮´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে সাঁথিয়া উপজেলা, দক্ষিণে রাজবাড়ী সদর ও পাংশা উপজেলা, পূর্বে বেড়া উপজেলা, পশ্চিমে পাংশা ও পাবনা সদর উপজেলা। | ||
''জনসংখ্যা'' | ''জনসংখ্যা'' ২৭৮০৯৬; পুরুষ ১৩৮৫৫৯, মহিলা ১৩৯৫৩৭। মুসলিম ২৬৮২৫৬, হিন্দু ৯৮১৩, খ্রিস্টান ১৫ এবং অন্যান্য ১২। | ||
''জলাশয়'' প্রধান নদী: পদ্মা ও আত্রাই। গজনার বিল, মহিষখোলের বিল ও জিদের বিল উল্লেখযোগ্য। | ''জলাশয়'' প্রধান নদী: পদ্মা ও আত্রাই। গজনার বিল, মহিষখোলের বিল ও জিদের বিল উল্লেখযোগ্য। | ||
১০ নং লাইন: | ১০ নং লাইন: | ||
{| class="table table-bordered table-hover" | {| class="table table-bordered table-hover" | ||
|- | |- | ||
| colspan="9" | উপজেলা | |||
|- | |- | ||
| rowspan="2" | পৌরসভা || rowspan="2" | ইউনিয়ন || rowspan="2" | মৌজা || rowspan="2" | গ্রাম || rowspan="2" | জনসংখ্যা || colspan="2" | ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) || colspan="2" | শিক্ষার হার (%) | |||
|- | |- | ||
| শহর || গ্রাম || শহর || গ্রাম | | শহর || গ্রাম || শহর || গ্রাম | ||
|- | |- | ||
| ১ | | ১ || ১০ || ১৭১ || ১৮২ || ২৫৪৬১ || ২৫২৬৩৫ || ৮২১ || ৪৪.৬ || ৪১.৬ | ||
|} | |} | ||
{| class="table table-bordered table-hover" | {| class="table table-bordered table-hover" | ||
|- | |- | ||
|পৌরসভা | | colspan="9" | পৌরসভা | ||
|- | |- | ||
| আয়তন (বর্গ কিমি) || ওয়ার্ড || মহল্লা || লোকসংখ্যা || ঘনত্ব(প্রতি বর্গ কিমি) || শিক্ষার হার(%) | | আয়তন (বর্গ কিমি) || ওয়ার্ড || মহল্লা || লোকসংখ্যা || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) || শিক্ষার হার(%) | ||
|- | |- | ||
| | | ১১.০৮ || ৯ || ২৪ || ২৫৪৬১ || ২২৯৮ || ৪৪.৬ | ||
| | |||
| | |||
|} | |} | ||
{| class="table table-bordered table-hover" | {| class="table table-bordered table-hover" | ||
|- | |- | ||
| ইউনিয়ন | | colspan="9" | ইউনিয়ন | ||
|- | |- | ||
| rowspan="2" | ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড || rowspan="2" | আয়তন (একর) || colspan="2" | লোকসংখ্যা || rowspan="2" | শিক্ষার হার (%) | | rowspan="2" | ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড || rowspan="2" | আয়তন (একর) || colspan="2" | লোকসংখ্যা || rowspan="2" | শিক্ষার হার (%) | ||
৫৩ নং লাইন: | ৩৪ নং লাইন: | ||
| পুরুষ || মহিলা | | পুরুষ || মহিলা | ||
|- | |- | ||
| আহম্মেদপুর ১৭ | | আহম্মেদপুর ১৭ || ৮৬৮৮ || ১৮৬৭৩ || ১৯০৬৯ || ৪৯.৯ | ||
|- | |- | ||
| তাঁতীবন্দ ৯৫ | | তাঁতীবন্দ ৯৫ || ৫৬৯০ || ১০০৪৬ || ১০২৫৪ || ৪১.০ | ||
|- | |- | ||
| দুলাই ১৯ | | দুলাই ১৯ || ৭৮৬৩ || ১৩২৬৪ || ১৩২৯৫ || ৪৬.৪ | ||
|- | |- | ||
| নাজিরগঞ্জ ৪৭ | | নাজিরগঞ্জ ৪৭ || ১১০১৬ || ১১৫১৮ || ১১৫২২ || ৪১.৫ | ||
|- | |- | ||
| মানিকহাট ৩৮ | | মানিকহাট ৩৮ || ৭৫৬৬ || ১৫০৮১ || ১৫৪৫৭ || ৪৩.৪ | ||
|- | |- | ||
| রাণীনগর ৫৭ | | রাণীনগর ৫৭ || ৯৩৪৫ || ৯১৪১ || ৯২৭৪ || ৪২.৮ | ||
|- | |- | ||
| সাগরকান্দি ৬৬ | | সাগরকান্দি ৬৬ || ১২৪২৪ || ১৬৭৬২ || ১৭১৯৪ || ৩৪.৮ | ||
|- | |- | ||
| সাতবাড়ীয়া ৭৬ | | সাতবাড়ীয়া ৭৬ || ৬৮৩২ || ১২৮৫৩ || ১৩০৫৭ || ৩৯.২ | ||
|- | |- | ||
| সুজানগর ৮৫ | | ইযধুহধ (সুজানগর) ৮৫ || ৪৮৮৪ || ৯৪৬৯ || ৯১৫০ || ৩৪.৬ | ||
|- | |- | ||
| হাটখালী ২৮ | | হাটখালী ২৮ || ৬৬৩৭ || ৮৯৪৪ || ৮৬১২ || ৩৭.৫ | ||
|} | |} | ||
''সূত্র'' আদমশুমারি রিপোর্ট | ''সূত্র'' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো। | ||
[[Image:SujanagarUpazila.jpg|thumb|right|400px]] | |||
''প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ'' তাঁতীবন্দের জমিদারবাড়ি, দুলাই চৌধুরী (জমিদার) বাড়ি, হেমরাজপুর শিবমন্দির ও দুর্গামন্দির। | ''প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ'' তাঁতীবন্দের জমিদারবাড়ি, দুলাই চৌধুরী (জমিদার) বাড়ি, হেমরাজপুর শিবমন্দির ও দুর্গামন্দির। | ||
ঐতিহাসিক | ''ঐতিহাসিক ঘটনা'' ১৮৫৭ সালে সিপাহী বিদ্রোহকালে তাঁতীবন্দের জমিদার বিজয় গোবিন্দ চৌধুরী ব্রিটিশ শাসকদের অনুকূলে পদ্মা ও যমুনার তীরে প্রহরা নিয়োজিত করেন এবং সন্দেহভাজনদের পারাপার বন্ধ করে বিদ্রোহ দমনে সহায়তা করেন। এতে লর্ড মেয়ো সন্তুষ্ট হয়ে তাঁতীবন্দ সফর করেন। ১৮৭২ সালে সুজানগরে প্রজা বিদ্রোহ সংগঠিত হয়। ১৯২৬ সালে এখানে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা হয়। ১৯৬৯ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি সুজানগর হাইস্কুল মাঠে পুলিশের গুলিতে জামাদার আবুূল হোসেন নিহত হন। | ||
'' | ''মুক্তিযুদ্ধ'' ১৯৭১ সালের ৬ সেপ্টেম্বর সাগরকান্দি গ্রামে পাকবাহিনী ও মুক্তিযোদ্ধাদের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এছাড়া ভবানীপুর, নিশ্চিন্তপুর, ও সাতবাড়ীয়ায় পাকবাহিনী ও মুক্তিযোদ্ধাদের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। ১৪ ডিসেম্বর পাকসেনাদের গুলিতে ৩ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। এছাড়া এ উপজেলায় মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল আউয়াল, আবদুল বারেক ও ছাদেক শহীদ হন। ১৫ ডিসেম্বর সুজানগর পাকসেনা মুক্ত হয়। উপজেলার ৩টি স্থানে (ভবানীপুর, নিশিন্তপুর ও সাতবাড়ীয়া) বধ্যভূমির সন্ধান পাওয়া গেছে। | ||
''বিস্তারিত দেখুন'' সুজানগর উপজেলা, ''বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ'', বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ১০। | |||
ধর্মীয় | ''ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান'' মসজিদ ৩০৪, মন্দির ৫৮, মাযার ১। উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান: সুজানগর জামে মসজিদ, সাতবাড়ীয়া জামে মসজিদ, দুলাই চৌধুরী বাড়ি জামে মসজিদ, হযরত শাহ মাহতাব উদ্দিনের (রাঃ) মাযার (সাগরকান্দি), সিদ্ধেশ্বরী কালী মন্দির। | ||
''শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান'' গড় হার | ''শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান'' গড় হার ৪১.৯%; পুরুষ ৪৩.৮%, মহিলা ৪০.১%। কলেজ ৭, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৩৩, প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৩৬, কেজি স্কুল ৭, মাদ্রাসা ৬। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: সাতবাড়ীয়া মহাবিদ্যালয় (১৯৬৬), খলিলপুর উচ্চ বিদ্যালয় (১৯০১), দুলাই উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৬৭), দুর্গাপুর সরাকরি উচ্চ বিদ্যালয়, রানীনগর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, উলাট সিদ্দিকিয়া ফাজিল মাদ্রাসা (১৯১৫)। | ||
পত্র-পত্রিকা ও | ''পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকি'' সাপ্তাহিক: পল্লী বার্তা। | ||
''সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান'' লাইব্রেরি ২৫, মহিলা সংগঠন ৭, মহিলা সমিতি ৭, খেলার মাঠ ১৬, স্টেডিয়াম ১, সিনেমা হল ১। | ''সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান'' লাইব্রেরি ২৫, মহিলা সংগঠন ৭, মহিলা সমিতি ৭, খেলার মাঠ ১৬, স্টেডিয়াম ১, সিনেমা হল ১। | ||
১১০ নং লাইন: | ৮৩ নং লাইন: | ||
বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি কাউন, তামাক, ভুট্টা। | বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি কাউন, তামাক, ভুট্টা। | ||
''প্রধান ফল- | ''প্রধান ফল-ফলাদি'' আম, কাঁঠাল, লিচু, পেঁপে। | ||
''মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার'' মৎস্য ২৯, গবাদিপশু ১২৮, হাঁস-মুরগি ১৮, হ্যাচারি ২২। | ''মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার'' মৎস্য ২৯, গবাদিপশু ১২৮, হাঁস-মুরগি ১৮, হ্যাচারি ২২। | ||
''যোগাযোগ বিশেষত্ব'' পাকারাস্তা | ''যোগাযোগ বিশেষত্ব'' পাকারাস্তা ২৬০ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ১০ কিমি, কাঁচারাস্তা ৩০৮ কিমি; নৌপথ ২৫ কিমি। | ||
''বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন'' পাল্কি, গরুর গাড়ি, ঘোড়ার গাড়ি। | ''বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন'' পাল্কি, গরুর গাড়ি, ঘোড়ার গাড়ি। | ||
১২০ নং লাইন: | ৯৩ নং লাইন: | ||
''শিল্প ও কলকারখানা'' চালকল, আটাকল, বরফকল, টেক্সটাইল মিল, ওয়েল্ডিং কারখানা। | ''শিল্প ও কলকারখানা'' চালকল, আটাকল, বরফকল, টেক্সটাইল মিল, ওয়েল্ডিং কারখানা। | ||
''কুটিরশিল্প'' তাঁতশিল্প, স্বর্ণশিল্প, লৌহশিল্প, বাঁশশিল্প, বেতের কাজ, কাঠের কাজ। | ''কুটিরশিল্প'' তাঁতশিল্প, স্বর্ণশিল্প, লৌহশিল্প, বাঁশশিল্প, বেতের কাজ, কাঠের কাজ। | ||
''হাটবাজার ও মেলা'' হাটবাজার ৩২, মেলা ৪। সুজানগর বাজার, নিশ্চিন্তপুর বাজার, রায়পুর বাজার, শ্যামপুর হাট, সাতবাড়ীয়া হাট, রাণীনগর হাট এবং সুজানগর দুর্গাপূজা মেলা ও জয়কালী বাড়ি মেলা উল্লেখযোগ্য। | ''হাটবাজার ও মেলা'' হাটবাজার ৩২, মেলা ৪। সুজানগর বাজার, নিশ্চিন্তপুর বাজার, রায়পুর বাজার, শ্যামপুর হাট, সাতবাড়ীয়া হাট, রাণীনগর হাট এবং সুজানগর দুর্গাপূজা মেলা ও জয়কালী বাড়ি মেলা উল্লেখযোগ্য। | ||
''প্রধান রপ্তানিদ্রব্য'' | ''প্রধান রপ্তানিদ্রব্য'' পিঁয়াজ, রসুন, চীনাবাদাম, শাড়ি, লুঙ্গি, গামছা। | ||
''বিদ্যুৎ ব্যবহার'' এ উপজেলার সবক’টি ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে | ''বিদ্যুৎ ব্যবহার'' এ উপজেলার সবক’টি ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ৫৮.১% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে। | ||
প্রাকৃতিক | ''প্রাকৃতিক সম্পদ'' আহম্মেদপুর ইউনিয়নের মোবারকপুর গ্রামে তেলের সন্ধান পাওয়া গেছে। | ||
''পানীয়জলের উৎস'' নলকূপ | ''পানীয়জলের উৎস'' নলকূপ ৯৬.২%, ট্যাপ ০.৬% এবং অন্যান্য ৩.২%। | ||
''স্যানিটেশন ব্যবস্থা'' এ উপজেলার | ''স্যানিটেশন ব্যবস্থা'' এ উপজেলার ৬১.৫% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৩৩.৯% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ৪.৬% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই। | ||
''স্বাস্থ্যকেন্দ্র'' উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ১০, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ৩, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র ৫, ক্লিনিক ১, কমিউনিটি ক্লিনিক ২৬। | ''স্বাস্থ্যকেন্দ্র'' উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ১০, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ৩, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র ৫, ক্লিনিক ১, কমিউনিটি ক্লিনিক ২৬। | ||
''এনজিও'' ব্র্যাক, আশা, সিসিডিবি। [মো. | ''এনজিও'' ব্র্যাক, আশা, সিসিডিবি। [মো. হাবিবুল্লাহ্] | ||
'''তথ্যসূত্র''' | '''তথ্যসূত্র''' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; সুজানগর উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭। | ||
[[en:Sujanagar Upazila]] | [[en:Sujanagar Upazila]] |
১৬:০৩, ১ অক্টোবর ২০২৩ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ
সুজানগর উপজেলা (পাবনা জেলা) আয়তন: ৩৩৮.৬৫ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৩°৪৮´ থেকে ২৪°০০´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯°২৩´ থেকে ৮৯°৩৮´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে সাঁথিয়া উপজেলা, দক্ষিণে রাজবাড়ী সদর ও পাংশা উপজেলা, পূর্বে বেড়া উপজেলা, পশ্চিমে পাংশা ও পাবনা সদর উপজেলা।
জনসংখ্যা ২৭৮০৯৬; পুরুষ ১৩৮৫৫৯, মহিলা ১৩৯৫৩৭। মুসলিম ২৬৮২৫৬, হিন্দু ৯৮১৩, খ্রিস্টান ১৫ এবং অন্যান্য ১২।
জলাশয় প্রধান নদী: পদ্মা ও আত্রাই। গজনার বিল, মহিষখোলের বিল ও জিদের বিল উল্লেখযোগ্য।
প্রশাসন সুজানগর থানা গঠিত হয় ১৮৭২ সালে এবং থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮৩ সালে।
উপজেলা | ||||||||
পৌরসভা | ইউনিয়ন | মৌজা | গ্রাম | জনসংখ্যা | ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) | শিক্ষার হার (%) | ||
শহর | গ্রাম | শহর | গ্রাম | |||||
১ | ১০ | ১৭১ | ১৮২ | ২৫৪৬১ | ২৫২৬৩৫ | ৮২১ | ৪৪.৬ | ৪১.৬ |
পৌরসভা | ||||||||
আয়তন (বর্গ কিমি) | ওয়ার্ড | মহল্লা | লোকসংখ্যা | ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) | শিক্ষার হার(%) | |||
১১.০৮ | ৯ | ২৪ | ২৫৪৬১ | ২২৯৮ | ৪৪.৬ |
ইউনিয়ন | ||||||||
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড | আয়তন (একর) | লোকসংখ্যা | শিক্ষার হার (%) | |||||
পুরুষ | মহিলা | |||||||
আহম্মেদপুর ১৭ | ৮৬৮৮ | ১৮৬৭৩ | ১৯০৬৯ | ৪৯.৯ | ||||
তাঁতীবন্দ ৯৫ | ৫৬৯০ | ১০০৪৬ | ১০২৫৪ | ৪১.০ | ||||
দুলাই ১৯ | ৭৮৬৩ | ১৩২৬৪ | ১৩২৯৫ | ৪৬.৪ | ||||
নাজিরগঞ্জ ৪৭ | ১১০১৬ | ১১৫১৮ | ১১৫২২ | ৪১.৫ | ||||
মানিকহাট ৩৮ | ৭৫৬৬ | ১৫০৮১ | ১৫৪৫৭ | ৪৩.৪ | ||||
রাণীনগর ৫৭ | ৯৩৪৫ | ৯১৪১ | ৯২৭৪ | ৪২.৮ | ||||
সাগরকান্দি ৬৬ | ১২৪২৪ | ১৬৭৬২ | ১৭১৯৪ | ৩৪.৮ | ||||
সাতবাড়ীয়া ৭৬ | ৬৮৩২ | ১২৮৫৩ | ১৩০৫৭ | ৩৯.২ | ||||
ইযধুহধ (সুজানগর) ৮৫ | ৪৮৮৪ | ৯৪৬৯ | ৯১৫০ | ৩৪.৬ | ||||
হাটখালী ২৮ | ৬৬৩৭ | ৮৯৪৪ | ৮৬১২ | ৩৭.৫ |
সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।
প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ তাঁতীবন্দের জমিদারবাড়ি, দুলাই চৌধুরী (জমিদার) বাড়ি, হেমরাজপুর শিবমন্দির ও দুর্গামন্দির।
ঐতিহাসিক ঘটনা ১৮৫৭ সালে সিপাহী বিদ্রোহকালে তাঁতীবন্দের জমিদার বিজয় গোবিন্দ চৌধুরী ব্রিটিশ শাসকদের অনুকূলে পদ্মা ও যমুনার তীরে প্রহরা নিয়োজিত করেন এবং সন্দেহভাজনদের পারাপার বন্ধ করে বিদ্রোহ দমনে সহায়তা করেন। এতে লর্ড মেয়ো সন্তুষ্ট হয়ে তাঁতীবন্দ সফর করেন। ১৮৭২ সালে সুজানগরে প্রজা বিদ্রোহ সংগঠিত হয়। ১৯২৬ সালে এখানে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা হয়। ১৯৬৯ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি সুজানগর হাইস্কুল মাঠে পুলিশের গুলিতে জামাদার আবুূল হোসেন নিহত হন।
মুক্তিযুদ্ধ ১৯৭১ সালের ৬ সেপ্টেম্বর সাগরকান্দি গ্রামে পাকবাহিনী ও মুক্তিযোদ্ধাদের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এছাড়া ভবানীপুর, নিশ্চিন্তপুর, ও সাতবাড়ীয়ায় পাকবাহিনী ও মুক্তিযোদ্ধাদের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। ১৪ ডিসেম্বর পাকসেনাদের গুলিতে ৩ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। এছাড়া এ উপজেলায় মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল আউয়াল, আবদুল বারেক ও ছাদেক শহীদ হন। ১৫ ডিসেম্বর সুজানগর পাকসেনা মুক্ত হয়। উপজেলার ৩টি স্থানে (ভবানীপুর, নিশিন্তপুর ও সাতবাড়ীয়া) বধ্যভূমির সন্ধান পাওয়া গেছে।
বিস্তারিত দেখুন সুজানগর উপজেলা, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ১০।
ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদ ৩০৪, মন্দির ৫৮, মাযার ১। উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান: সুজানগর জামে মসজিদ, সাতবাড়ীয়া জামে মসজিদ, দুলাই চৌধুরী বাড়ি জামে মসজিদ, হযরত শাহ মাহতাব উদ্দিনের (রাঃ) মাযার (সাগরকান্দি), সিদ্ধেশ্বরী কালী মন্দির।
শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৪১.৯%; পুরুষ ৪৩.৮%, মহিলা ৪০.১%। কলেজ ৭, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৩৩, প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৩৬, কেজি স্কুল ৭, মাদ্রাসা ৬। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: সাতবাড়ীয়া মহাবিদ্যালয় (১৯৬৬), খলিলপুর উচ্চ বিদ্যালয় (১৯০১), দুলাই উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৬৭), দুর্গাপুর সরাকরি উচ্চ বিদ্যালয়, রানীনগর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, উলাট সিদ্দিকিয়া ফাজিল মাদ্রাসা (১৯১৫)।
পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকি সাপ্তাহিক: পল্লী বার্তা।
সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান লাইব্রেরি ২৫, মহিলা সংগঠন ৭, মহিলা সমিতি ৭, খেলার মাঠ ১৬, স্টেডিয়াম ১, সিনেমা হল ১।
দর্শনীয় স্থান গাজনার বিল, আজিম চৌধুরী জমিদার বাড়ি, নাজিরগঞ্জ ফেরীঘাট, শাহ মাহতাব উদ্দিনের (রঃ) মাযার (সাগরকান্দি), সুজানগর উপজেলা পরিষদ কার্যালয়।
জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৬১.১৭%, অকৃষি শ্রমিক ২.৮৯%, শিল্প ৫.৯৫%, ব্যবসা ১২.৭৩%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ২.৭১%, চাকরি ৫.৭২%, নির্মাণ ০.৯৫%, ধর্মীয় সেবা ০.১৭%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.৪১% এবং অন্যান্য ৭.৩০%।
কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৫৩.৫০%, ভূমিহীন ৪৬.৫০%। শহরে ৪৪.৮৫% এবং গ্রামে ৫৪.৫৯% পরিবারের কৃষিজমি রয়েছে।
প্রধান কৃষি ফসল ধান, গম, পাট, আখ, চীনাবাদাম, পিঁয়াজ, রসুন, শাকসবজি।
বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি কাউন, তামাক, ভুট্টা।
প্রধান ফল-ফলাদি আম, কাঁঠাল, লিচু, পেঁপে।
মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার মৎস্য ২৯, গবাদিপশু ১২৮, হাঁস-মুরগি ১৮, হ্যাচারি ২২।
যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ২৬০ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ১০ কিমি, কাঁচারাস্তা ৩০৮ কিমি; নৌপথ ২৫ কিমি।
বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পাল্কি, গরুর গাড়ি, ঘোড়ার গাড়ি।
শিল্প ও কলকারখানা চালকল, আটাকল, বরফকল, টেক্সটাইল মিল, ওয়েল্ডিং কারখানা।
কুটিরশিল্প তাঁতশিল্প, স্বর্ণশিল্প, লৌহশিল্প, বাঁশশিল্প, বেতের কাজ, কাঠের কাজ।
হাটবাজার ও মেলা হাটবাজার ৩২, মেলা ৪। সুজানগর বাজার, নিশ্চিন্তপুর বাজার, রায়পুর বাজার, শ্যামপুর হাট, সাতবাড়ীয়া হাট, রাণীনগর হাট এবং সুজানগর দুর্গাপূজা মেলা ও জয়কালী বাড়ি মেলা উল্লেখযোগ্য।
প্রধান রপ্তানিদ্রব্য পিঁয়াজ, রসুন, চীনাবাদাম, শাড়ি, লুঙ্গি, গামছা।
বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ৫৮.১% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।
প্রাকৃতিক সম্পদ আহম্মেদপুর ইউনিয়নের মোবারকপুর গ্রামে তেলের সন্ধান পাওয়া গেছে।
পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৯৬.২%, ট্যাপ ০.৬% এবং অন্যান্য ৩.২%।
স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ৬১.৫% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৩৩.৯% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ৪.৬% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।
স্বাস্থ্যকেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ১০, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ৩, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র ৫, ক্লিনিক ১, কমিউনিটি ক্লিনিক ২৬।
এনজিও ব্র্যাক, আশা, সিসিডিবি। [মো. হাবিবুল্লাহ্]
তথ্যসূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; সুজানগর উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।