শরণখোলা উপজেলা: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
NasirkhanBot (আলোচনা | অবদান) অ (Robot: Automated text replacement (-'''''তথ্যসূত্র''''' +'''তথ্যসূত্র''')) |
সম্পাদনা সারাংশ নেই |
||
(একজন ব্যবহারকারী দ্বারা সম্পাদিত একটি মধ্যবর্তী সংশোধন দেখানো হচ্ছে না) | |||
১ নং লাইন: | ১ নং লাইন: | ||
[[Category:বাংলাপিডিয়া]] | [[Category:বাংলাপিডিয়া]] | ||
'''শরণখোলা উপজেলা''' (বাগেরহাট জেলা) আয়তন: ৭৫৬. | '''শরণখোলা উপজেলা''' ([[বাগেরহাট জেলা|বাগেরহাট জেলা]]) আয়তন: ৭৫৬.৬০ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২২°১৩´ থেকে ২২°২৪´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯°৪৬´ থেকে ৮৯°৫৪´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে মোড়েলগঞ্জ উপজেলা, দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর, পূর্বে মঠবাড়ীয়া ও পাথরঘাটা উপজেলা, পশ্চিমে মংলা উপজেলা। | ||
''জনসংখ্যা'' | ''জনসংখ্যা'' ১১৯০৮৪; পুরুষ ৬২৪০০, মহিলা ৫৬৬৮৪। মুসলিম ১০৯৮৩৬, হিন্দু ৯২৩২, বৌদ্ধ ৪ এবং খ্রিস্টান ১২। | ||
''জলাশয়'' প্রধান নদী: বলেশ্বরী, হরিণঘাটা, ভোলা, বেতমার গাঙ। | ''জলাশয়'' প্রধান নদী: বলেশ্বরী, হরিণঘাটা, ভোলা, বেতমার গাঙ। | ||
১০ নং লাইন: | ১০ নং লাইন: | ||
{| class="table table-bordered table-hover" | {| class="table table-bordered table-hover" | ||
|- | |- | ||
| colspan="9" | উপজেলা | |||
|- | |- | ||
| rowspan="2" | পৌরসভা || rowspan="2" | ইউনিয়ন || rowspan="2" | মৌজা || rowspan="2" | গ্রাম || rowspan="2" | জনসংখ্যা || colspan="2" | ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) || colspan="2" | শিক্ষার হার (%) | |||
|- | |- | ||
| শহর || গ্রাম || শহর || গ্রাম | | শহর || গ্রাম || শহর || গ্রাম | ||
|- | |- | ||
| - | | - || ৪ || ১২ || ৪৫ || ২৬৯৭১ || ৯২১১৩ || ১৫৭ || ৬৪.৭ || ৫৭.২ | ||
|} | |} | ||
{| class="table table-bordered table-hover" | {| class="table table-bordered table-hover" | ||
|- | |- | ||
| উপজেলা শহর | | colspan="9" | উপজেলা শহর | ||
|- | |- | ||
| আয়তন (বর্গ কিমি) || মৌজা || লোকসংখ্যা || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) || শিক্ষার হার (%) | | আয়তন (বর্গ কিমি) || মৌজা || লোকসংখ্যা || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) || শিক্ষার হার (%) | ||
|- | |- | ||
| | | ২৮.৬৮ || ২ || ২৬৯৭১ || ৯৪০ || ৬৪.৭ | ||
|} | |} | ||
{| class="table table-bordered table-hover" | {| class="table table-bordered table-hover" | ||
|- | |- | ||
| ইউনিয়ন | | colspan="9" | ইউনিয়ন | ||
|- | |- | ||
| rowspan="2" | ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড || rowspan="2" | আয়তন (একর) || colspan="2" | লোকসংখ্যা || rowspan="2" | শিক্ষার হার (%) | | rowspan="2" | ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড || rowspan="2" | আয়তন (একর) || colspan="2" | লোকসংখ্যা || rowspan="2" | শিক্ষার হার (%) | ||
৪১ নং লাইন: | ৩৪ নং লাইন: | ||
| পুরুষ || মহিলা | | পুরুষ || মহিলা | ||
|- | |- | ||
| খোন্তাকাটা ৩৮ | | খোন্তাকাটা ৩৮ || ৯৬৩৮ || ১৫৫২৬ || ১৬৪২৪ || ৬৩.৮ | ||
|- | |- | ||
| ধানসাগর ১৯ | | ধানসাগর ১৯ || ৮৬৪৬ || ১০১০৮ || ১০৭১৩ || ৫৯.৯ | ||
|- | |- | ||
| রায়েন্দা ৫৭ | | রায়েন্দা ৫৭ || ৯৮৫৪ || ১৫৮৯৪ || ১৬৭১০ || ৬০.২ | ||
|- | |- | ||
| সাউথখালী ৭৬ | | সাউথখালী ৭৬ || ৯০৩৬ || ১২২৪০ || ১২৭৪০ || ৫২.২ | ||
|- | |- | ||
| শরণখোলা রেঞ্জ ৯৭ | | শরণখোলা রেঞ্জ ৯৭ || ১৪৬৯২৫ || ৮৬৩২ || ৯৭ || ৫৩.১ | ||
|} | |} | ||
''সূত্র'' আদমশুমারি রিপোর্ট | ''সূত্র'' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো। | ||
[[Image:SarankholaUpazila.jpg|thumb|right|400px]] | |||
''প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ'' আমড়াগাছিয়া গ্রামের সিংবাড়ির মোহিনী কুটির। | ''প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ'' আমড়াগাছিয়া গ্রামের সিংবাড়ির মোহিনী কুটির। | ||
ঐতিহাসিক | ''ঐতিহাসিক ঘটনা'' ১৯৬৫ সালে লবণাক্ততার হাত থেকে জমি রক্ষা করার জন্য নদী বরাবর বেড়িবাঁধ ও খালগুলির মুখ বেঁধে দেওয়া হলে পানি সরবরাহের অভাবে এই অঞ্চলে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে ব্যাপক ফসল নষ্ট হয়। সরকারের কাছে আবেদন নিবেদন করে প্রতিকার না হওয়ায় এক পর্যায়ে স্থানীয় কৃষকরা জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য বিদ্রোহ করে এবং ১৯৬৯ সালের ১০ মার্চ একযোগে রায়েন্দা, তাফালবাড়ি, খোন্তাকাটা, কুমারখালি খালের বাঁধ কেটে ফেলে। | ||
''মুক্তিযুদ্ধ'' ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন ত্যাঁড়াবাঁকা খালের মধ্যে শতাধিক লোককে ব্রাশ ফায়ারে হত্যা করা হয়। মুক্তিযোদ্ধারা রায়েন্দা বাজারসহ বিভিন্ন স্থানে পাকবাহিনীর সাথে সম্মুখ লড়াইয়ে লিপ্ত হয়। ১৯৭১ সালের ২১ অক্টোবর বগীতে পাকবাহিনীর সাথে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রচন্ড সংর্ঘষ হয়। | |||
''বিস্তারিত দেখুন'' শরণখোলা উপজেলা, ''বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ'', বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ৯। | |||
''ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান'' মসজিদ ২১৯, মন্দির ৭২। উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান: হাজী সুন্দর মোল্লা দফাদার বাড়ি জামে মসজিদ (১৮৮২), উত্তর খোন্তাকাটা নলেমিয়া জামে মসজিদ (১৮৯৮), ধানসাগর মোল্লাবাড়ি জামে মসজিদ (১৯০৫), ধানসাগর রাধাগোবিন্দ মন্দির, আমড়াগাছিয়া কালী মন্দির, রায়েন্দা শীতলা কালী মন্দির। | |||
''শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান'' গড় হার | ''শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান'' গড় হার ৫৮.৯%; পুরুষ ৫৭.৩%, মহিলা ৬০.৬%। কলেজ ২, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১৭, প্রাথমিক বিদ্যালয় ১০৫, কিন্ডার গার্টেন ১, মাদ্রাসা ১৩। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: শরণখোলা ডিগ্রি কলেজ (১৯৭৮), রায়েন্দা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৪৭), তাফালবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৬৯), আমড়াগাছিয়া বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯৫০), খোন্তাকাটা বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯৬৫), আরকেডিএস বালিকা বিদ্যালয় (১৯৬৮)। | ||
''পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী'' সাপ্তাহিক: বনাঞ্চল, রয়েল বেঙ্গল; দৈনিক: শরণখোলা; বিলুপ্ত: শরণখোলা দর্পণ। | ''পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী'' সাপ্তাহিক: বনাঞ্চল, রয়েল বেঙ্গল; দৈনিক: শরণখোলা; বিলুপ্ত: শরণখোলা দর্পণ। | ||
৮১ নং লাইন: | ৭১ নং লাইন: | ||
বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি নারিকেল, সুপারি। | বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি নারিকেল, সুপারি। | ||
''প্রধান ফল- | ''প্রধান ফল-ফলাদি'' কলা, লিচু, আম, লেবু। | ||
''মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার'' মৎস্য ১৩৫০। | ''মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার'' মৎস্য ১৩৫০। | ||
''যোগাযোগ বিশেষত্ব'' পাকারাস্তা | ''যোগাযোগ বিশেষত্ব'' পাকারাস্তা ৪০ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ২৯ কিমি, কাঁচারাস্তা ৩০০ কিমি; নৌপথ ৯২ কিমি। | ||
''বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন'' পাল্কি, ঘোড়া ও গরুর গাড়ি। | ''বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন'' পাল্কি, ঘোড়া ও গরুর গাড়ি। | ||
৯৩ নং লাইন: | ৮৩ নং লাইন: | ||
''কুটিরশিল্প'' বাঁশের কাজ, বেতের কাজ। | ''কুটিরশিল্প'' বাঁশের কাজ, বেতের কাজ। | ||
''হাটবাজার ও মেলা'' হাটবাজার ২১, মেলা ৪। রায়েন্দা হাট, তাফালবাড়ি হাট, নলবুনিয়া হাট, বগী হাট, পহলানবাড়ি হাট, বাংলা বাজার হাট, খোন্তাকাটা হাট এবং অষ্টমীর মেলা, কুলুবাড়ির নীল মেলা, নীল বাসন্তী মেলা ও রায়েন্দা বটতলা বৈশাখী মেলা | ''হাটবাজার ও মেলা'' হাটবাজার ২১, মেলা ৪। রায়েন্দা হাট, তাফালবাড়ি হাট, নলবুনিয়া হাট, বগী হাট, পহলানবাড়ি হাট, বাংলা বাজার হাট, খোন্তাকাটা হাট এবং অষ্টমীর মেলা, কুলুবাড়ির নীল মেলা, নীল বাসন্তী মেলা ও রায়েন্দা বটতলা বৈশাখী মেলা উল্লেখযোগ্য। | ||
''বিদ্যুৎ ব্যবহার'' এ উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে | ''বিদ্যুৎ ব্যবহার'' এ উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ২৩.৫% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে। | ||
প্রাকৃতিক | ''প্রাকৃতিক সম্পদ'' এ উপজেলার সুন্দরবন এলাকায় গ্যাস ও খনিজ তেলের অনুসন্ধানের কাজ চলছে। | ||
''পানীয়জলের উৎস'' নলকূপ | ''পানীয়জলের উৎস'' নলকূপ ৩৩.৬%, ট্যাপ ১৬.১% এবং অন্যান্য ৫০.৩%। এ উপজেলার অগভীর নলকূপের পানিতে আর্সেনিকের উপস্থিতি প্রমাণিত হয়েছে। | ||
''স্যানিটেশন ব্যবস্থা'' এ উপজেলার | ''স্যানিটেশন ব্যবস্থা'' এ উপজেলার ৮৮.৫% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ১০.৫% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ১.০% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই। | ||
''স্বাস্থ্যকেন্দ্র'' উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, স্বাস্থ্যকেন্দ্র ২, পরিবার পরিল্পনা ৪। | ''স্বাস্থ্যকেন্দ্র'' উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, স্বাস্থ্যকেন্দ্র ২, পরিবার পরিল্পনা ৪। | ||
১০৯ নং লাইন: | ৯৯ নং লাইন: | ||
''এনজিও'' ব্র্যাক, অগ্রদূত। [মো. মোশফেকুর রহমান] | ''এনজিও'' ব্র্যাক, অগ্রদূত। [মো. মোশফেকুর রহমান] | ||
'''তথ্যসূত্র''' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; শরণখোলা উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭। | '''তথ্যসূত্র''' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; শরণখোলা উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭। | ||
[[en:Sarankhola Upazila]] | [[en:Sarankhola Upazila]] |
১৭:১৩, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ
শরণখোলা উপজেলা (বাগেরহাট জেলা) আয়তন: ৭৫৬.৬০ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২২°১৩´ থেকে ২২°২৪´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯°৪৬´ থেকে ৮৯°৫৪´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে মোড়েলগঞ্জ উপজেলা, দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর, পূর্বে মঠবাড়ীয়া ও পাথরঘাটা উপজেলা, পশ্চিমে মংলা উপজেলা।
জনসংখ্যা ১১৯০৮৪; পুরুষ ৬২৪০০, মহিলা ৫৬৬৮৪। মুসলিম ১০৯৮৩৬, হিন্দু ৯২৩২, বৌদ্ধ ৪ এবং খ্রিস্টান ১২।
জলাশয় প্রধান নদী: বলেশ্বরী, হরিণঘাটা, ভোলা, বেতমার গাঙ।
প্রশাসন শরণখোলা থানা গঠিত হয় ১৯০৭ সালে এবং থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮২ সালে। এ উপজেলার বৃহত্তম অংশ জুড়ে রয়েছে সুন্দরবন।
উপজেলা | ||||||||
পৌরসভা | ইউনিয়ন | মৌজা | গ্রাম | জনসংখ্যা | ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) | শিক্ষার হার (%) | ||
শহর | গ্রাম | শহর | গ্রাম | |||||
- | ৪ | ১২ | ৪৫ | ২৬৯৭১ | ৯২১১৩ | ১৫৭ | ৬৪.৭ | ৫৭.২ |
উপজেলা শহর | ||||||||
আয়তন (বর্গ কিমি) | মৌজা | লোকসংখ্যা | ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) | শিক্ষার হার (%) | ||||
২৮.৬৮ | ২ | ২৬৯৭১ | ৯৪০ | ৬৪.৭ |
ইউনিয়ন | ||||||||
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড | আয়তন (একর) | লোকসংখ্যা | শিক্ষার হার (%) | |||||
পুরুষ | মহিলা | |||||||
খোন্তাকাটা ৩৮ | ৯৬৩৮ | ১৫৫২৬ | ১৬৪২৪ | ৬৩.৮ | ||||
ধানসাগর ১৯ | ৮৬৪৬ | ১০১০৮ | ১০৭১৩ | ৫৯.৯ | ||||
রায়েন্দা ৫৭ | ৯৮৫৪ | ১৫৮৯৪ | ১৬৭১০ | ৬০.২ | ||||
সাউথখালী ৭৬ | ৯০৩৬ | ১২২৪০ | ১২৭৪০ | ৫২.২ | ||||
শরণখোলা রেঞ্জ ৯৭ | ১৪৬৯২৫ | ৮৬৩২ | ৯৭ | ৫৩.১ |
সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।
প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ আমড়াগাছিয়া গ্রামের সিংবাড়ির মোহিনী কুটির।
ঐতিহাসিক ঘটনা ১৯৬৫ সালে লবণাক্ততার হাত থেকে জমি রক্ষা করার জন্য নদী বরাবর বেড়িবাঁধ ও খালগুলির মুখ বেঁধে দেওয়া হলে পানি সরবরাহের অভাবে এই অঞ্চলে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে ব্যাপক ফসল নষ্ট হয়। সরকারের কাছে আবেদন নিবেদন করে প্রতিকার না হওয়ায় এক পর্যায়ে স্থানীয় কৃষকরা জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য বিদ্রোহ করে এবং ১৯৬৯ সালের ১০ মার্চ একযোগে রায়েন্দা, তাফালবাড়ি, খোন্তাকাটা, কুমারখালি খালের বাঁধ কেটে ফেলে।
মুক্তিযুদ্ধ ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন ত্যাঁড়াবাঁকা খালের মধ্যে শতাধিক লোককে ব্রাশ ফায়ারে হত্যা করা হয়। মুক্তিযোদ্ধারা রায়েন্দা বাজারসহ বিভিন্ন স্থানে পাকবাহিনীর সাথে সম্মুখ লড়াইয়ে লিপ্ত হয়। ১৯৭১ সালের ২১ অক্টোবর বগীতে পাকবাহিনীর সাথে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রচন্ড সংর্ঘষ হয়।
বিস্তারিত দেখুন শরণখোলা উপজেলা, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ৯।
ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদ ২১৯, মন্দির ৭২। উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান: হাজী সুন্দর মোল্লা দফাদার বাড়ি জামে মসজিদ (১৮৮২), উত্তর খোন্তাকাটা নলেমিয়া জামে মসজিদ (১৮৯৮), ধানসাগর মোল্লাবাড়ি জামে মসজিদ (১৯০৫), ধানসাগর রাধাগোবিন্দ মন্দির, আমড়াগাছিয়া কালী মন্দির, রায়েন্দা শীতলা কালী মন্দির।
শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৫৮.৯%; পুরুষ ৫৭.৩%, মহিলা ৬০.৬%। কলেজ ২, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১৭, প্রাথমিক বিদ্যালয় ১০৫, কিন্ডার গার্টেন ১, মাদ্রাসা ১৩। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: শরণখোলা ডিগ্রি কলেজ (১৯৭৮), রায়েন্দা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৪৭), তাফালবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৬৯), আমড়াগাছিয়া বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯৫০), খোন্তাকাটা বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯৬৫), আরকেডিএস বালিকা বিদ্যালয় (১৯৬৮)।
পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী সাপ্তাহিক: বনাঞ্চল, রয়েল বেঙ্গল; দৈনিক: শরণখোলা; বিলুপ্ত: শরণখোলা দর্পণ।
সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান লাইব্রেরি ৩, প্রেসক্লাব ১, সাংস্কৃতিক সংগঠন ১২, সিনেমা হল ২। উল্লেখযোগ্য সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান: শরণখোলা পাবলিক লাইবেª্রর (১৯৮৫), দিশারী গণনাট্য সংস্থা (২০০৬)।
জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৫১.৮৫%, অকৃষি শ্রমিক ৯.৫৯%, শিল্প ০.৭%, ব্যবসা ১৬.২৪%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ২.৯%, চাকরি ৬.৫৬%, নির্মাণ ১.৬৮%, ধর্মীয় সেবা ০.৪২%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.৬১% এবং অন্যান্য ৯.৪৫%।
কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৪৮.৭৪%, ভূমিহীন ৫১.২৬%। শহরে ৪৪.৩৫% এবং গ্রামে ৫০.০৩% পরিবারের কৃষিজমি রয়েছে।
প্রধান কৃষি ফসল ধান, ডাল।
বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি নারিকেল, সুপারি।
প্রধান ফল-ফলাদি কলা, লিচু, আম, লেবু।
মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার মৎস্য ১৩৫০।
যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ৪০ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ২৯ কিমি, কাঁচারাস্তা ৩০০ কিমি; নৌপথ ৯২ কিমি।
বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পাল্কি, ঘোড়া ও গরুর গাড়ি।
শিল্প ও কলকারখানা ধানকল, বরফকল, করাতকল, বিস্কুট কারখানা, ইটভাটা।
কুটিরশিল্প বাঁশের কাজ, বেতের কাজ।
হাটবাজার ও মেলা হাটবাজার ২১, মেলা ৪। রায়েন্দা হাট, তাফালবাড়ি হাট, নলবুনিয়া হাট, বগী হাট, পহলানবাড়ি হাট, বাংলা বাজার হাট, খোন্তাকাটা হাট এবং অষ্টমীর মেলা, কুলুবাড়ির নীল মেলা, নীল বাসন্তী মেলা ও রায়েন্দা বটতলা বৈশাখী মেলা উল্লেখযোগ্য।
বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ২৩.৫% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।
প্রাকৃতিক সম্পদ এ উপজেলার সুন্দরবন এলাকায় গ্যাস ও খনিজ তেলের অনুসন্ধানের কাজ চলছে।
পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৩৩.৬%, ট্যাপ ১৬.১% এবং অন্যান্য ৫০.৩%। এ উপজেলার অগভীর নলকূপের পানিতে আর্সেনিকের উপস্থিতি প্রমাণিত হয়েছে।
স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ৮৮.৫% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ১০.৫% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ১.০% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।
স্বাস্থ্যকেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, স্বাস্থ্যকেন্দ্র ২, পরিবার পরিল্পনা ৪।
প্রাকৃতিক দুর্যোগ ২০০৭ সালের ১৫ নভেম্বর ঘূর্ণিঝড় সিডরে এ উপজেলায় অনেক লোকের প্রাণহানিসহ ঘরবাড়ি, ফসল ও গবাদিপশুর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়।
এনজিও ব্র্যাক, অগ্রদূত। [মো. মোশফেকুর রহমান]
তথ্যসূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; শরণখোলা উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।