কক্সবাজার জেলা: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
সম্পাদনা সারাংশ নেই |
(সংশোধন) |
||
(একই ব্যবহারকারী দ্বারা সম্পাদিত একটি মধ্যবর্তী সংশোধন দেখানো হচ্ছে না) | |||
১ নং লাইন: | ১ নং লাইন: | ||
[[Category:বাংলাপিডিয়া]] | [[Category:বাংলাপিডিয়া]] | ||
'''কক্সবাজার জেলা''' ([[চট্টগ্রাম বিভাগ|চট্টগ্রাম বিভাগ]]) আয়তন: | '''কক্সবাজার জেলা''' ([[চট্টগ্রাম বিভাগ|চট্টগ্রাম বিভাগ]]) আয়তন: ২৩৮২.৩৮ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২০°৪৩´ থেকে ২১°৫৬´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯১°৫০´ থেকে ৯২°২৩´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে চট্টগ্রাম জেলা, দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর, পূর্বে বান্দরবান জেলা, মায়ানমারের আরাকান রাজ্য ও নাফ নদী, পশ্চিমে বঙ্গোপসাগর। কক্সবাজারে পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত অবস্থিত। এটি চট্টগ্রাম বিভাগের মোট ১১টি জেলার মধ্যে সপ্তম এবং বাংলাদেশের ৬৪ জেলার মধ্যে ২৬তম। জেলার প্রায় অর্ধেক এলাকা জুড়ে পার্বত্য অঞ্চল এবং অর্ধেক সমুদ্র উপকূলীয় দ্বীপাঞ্চল। প্রধান দ্বীপসমূহ: মহেশখালী, কুতুবদিয়া, মাতার বাড়ি, সোনাদিয়া, শাহ পরীর দ্বীপ এবং সেন্ট মার্টিনস বা জিনজিরা দ্বীপ। শাহ পরীর দ্বীপ কিছুদিন আগে মূল ভূখন্ডের সাথে যুক্ত হয়ে গেছে। উপকূলীয় জেলা হওয়ার কারণে দ্বীপ ও চর অঞ্চল সৃষ্টি ও ভাঙনের ফলে জেলার আয়তন হ্রাস-বৃদ্ধি হয়। | ||
''জনসংখ্যা'' | ''জনসংখ্যা'' ২১৬৯৬৬৮; পুরুষ ১১০৮৯০১, মহিলা ১০৬০৭৬৭। মুসলিম ২০৩৬৯৪৮, হিন্দু ৯২৪০৮, বৌদ্ধ ৩৭৮০৫, খ্রিস্টান ১৪৫৬ এবং অন্যান্য ১০৫১। | ||
''জলবায়ু'' কক্সবাজার ক্রান্তীয় জলবায়ুর অন্তর্ভুক্ত। কক্সবাজারে সামুদ্রিক ঝড়, জলোচ্ছ্বাস, হারিকেন, সাইক্লোন প্রতিনিয়ত আঘাত হানে। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩২.৫°সে, সর্বনিম্ন ১৪.৮°সে; বার্ষিক বৃষ্টিপাত ৩৩৩৩ মিমি (এপ্রিল ০৪-মার্চ ০৫)। | ''জলবায়ু'' কক্সবাজার ক্রান্তীয় জলবায়ুর অন্তর্ভুক্ত। কক্সবাজারে সামুদ্রিক ঝড়, জলোচ্ছ্বাস, হারিকেন, সাইক্লোন প্রতিনিয়ত আঘাত হানে। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩২.৫°সে, সর্বনিম্ন ১৪.৮°সে; বার্ষিক বৃষ্টিপাত ৩৩৩৩ মিমি (এপ্রিল ০৪-মার্চ ০৫)। | ||
১১ নং লাইন: | ১১ নং লাইন: | ||
''পার্বত্যাঞ্চল'' হিমালয় পর্বতমালার দক্ষিণ দিকে সম্প্রসারিত আরাকান পর্বতমালা জেলার পূর্বভাগের উপর দিয়ে গেছে। ফলে এ জেলায় পার্বত্যাঞ্চল বেশি। | ''পার্বত্যাঞ্চল'' হিমালয় পর্বতমালার দক্ষিণ দিকে সম্প্রসারিত আরাকান পর্বতমালা জেলার পূর্বভাগের উপর দিয়ে গেছে। ফলে এ জেলায় পার্বত্যাঞ্চল বেশি। | ||
''প্রশাসন'' ১৮৫৪ সালে কক্সবাজার থানা গঠিত হয় এবং ওই বছরই কক্সবাজার, চকোরিয়া, মহেশখালী ও টেকনাফ থানা সমন্বয়ে কক্সবাজার মহকুমা গঠিত হয়। পরে টেকনাফ থেকে উখিয়াকে, মহেশখালী থেকে কুতুবদিয়াকে এবং কক্সবাজার থেকে রামুকে পৃথক করে এই মহকুমার অধীনে তিনটি নতুন থানা গঠিত হয়। ১৯৫৯ সালে কক্সবাজার জেলাকে টাউন কমিটিতে রূপান্তর করা হয়। ১৯৭২ সালে টাউন কমিটি বিলুপ্ত করে পৌরসভায় রূপান্তর করা হয়। প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণ কর্মসূচির আওতায় প্রথম পর্যায়ে থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় এবং দ্বিতীয় পর্যায়ে ১৯৮৪ সালের ১ মার্চ কক্সবাজার মহকুমাকে জেলায় উন্নীত করা হয়। জেলার ৭টি উপজেলার মধ্যে চকোরিয়া সর্ববৃহৎ (৫০৩.৮৩ বর্গ কিমি)। এটি জেলার মোট আয়তনের ২৫.৮২% এলাকা জুড়ে অবস্থিত। জেলার সবচেয়ে ছোট উপজেলা হলো পেকুয়া (১৩৯.৬১ বর্গ কিমি)। | |||
{| class="table table-bordered table-hover" | {| class="table table-bordered table-hover" | ||
২০ নং লাইন: | ২২ নং লাইন: | ||
| শহর || গ্রাম | | শহর || গ্রাম | ||
|- | |- | ||
| | | ২৩৮২.৩৮ || ৮ || ৪ || ৬৬ || ১৭০ || ৯২৭ || ৪৪২৯৬৬ || ১৭২৬৭০২ || ৯১১ || ৩৯.৩ | ||
|} | |} | ||
{| class="table table-bordered table-hover" | {| class="table table-bordered table-hover" | ||
৩০ নং লাইন: | ৩২ নং লাইন: | ||
|- | |- | ||
| উখিয়া | | উখিয়া || ২৬১.৮০ || - || ৫ || ১৩ || ৫৪ || ২,০৭,৩৭৯ || ৭৯২ || ৩৬.৩ | ||
|- | |||
|- | | কক্সবাজার সদর || ১১৮.৮০ || ১ || ৫ || ৮ || ৮২ || ৩৩৮৭৬০ || ২৮৫২ || ৪৪.৬ | ||
| কক্সবাজার সদর | |- | ||
| কুতুবদিয়া || ২১৫.৭৯ || - || ৬ || ৯ || ৫৫ || ১২৫২৭৯ || ৫৮১ || ৩৪.০ | |||
|- | |- | ||
| কুতুবদিয়া | | চকোরিয়া || ৫০৩.৮৩ || ১ || ১৮ || ৪৮ || ২১২ || ৪,৭৪,৪৬৫ || ৯৪২ || ৪৭.৬ | ||
|- | |||
|- | | টেকনাফ || ৩৮৮.৬৬ || ১ || ৬ || ১২ || ১৪৬ || ২,৬৪,৩৮৯ || ৬৮০ || ২৬.৭ | ||
| চকোরিয়া | |- | ||
| পেকুয়া || ১৩৯.৬১ || - || ৭ || ১২ || ১২৫ || ১৭১৫৩৮ || ১২২৯ || ৩৫.৩ | |||
|- | |- | ||
| টেকনাফ | | মহেশখালী || ৩৬২.১৮ || ১ || ৮ || ২৯ || ১৫১ || ৩,২১,২১৮ || ৮৮৭ || ৩০.৮ | ||
|- | |||
|- | | রামু || ৩৯১.৭১ || - || ১১ || ৩৯ || ১০২ || ২,৬৬,৬৪০ || ৬৮১ || ৩৬.৬ | ||
| পেকুয়া | |||
|- | |||
| মহেশখালী | |||
|- | |||
| রামু | |||
|} | |} | ||
''সূত্র'' আদমশুমারি রিপোর্ট | ''সূত্র'' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো। | ||
[[Image:CoxsBazarDistrict.jpg|thumb|400px|right]] | [[Image:CoxsBazarDistrict.jpg|thumb|400px|right]] | ||
''ঐতিহাসিক ঘটনাবলি'' খ্রিস্টীয় অষ্টম শতাব্দীতে বাণিজ্য ও ধর্মপ্রচারের উদ্দেশ্যে আরব বণিক ও ধর্মপ্রচারকগণ প্রাচীন সমুদ্রবন্দর চট্টগ্রাম ও আকিয়াবে আগমণ করে। ফলে উক্ত সমুদ্রবন্দর দুটির মধ্যবর্তী সমুদ্র উপকূল ও দ্বীপাঞ্চল কক্সবাজারের সঙ্গে আরব বনিকদের যোগাযোগ ঘটে। খ্রিস্টীয় নবম শতকে কক্সবাজারসহ বৃহত্তর চট্টগ্রাম হরিকেলের রাজা কান্তিদেবের শাসনাধীন ছিল। ৯৫৩ সালে আরাকানের রাজা সুলত ইঙ্গ চন্দ্র (৯৩০-৯৭৫) চট্টগ্রাম জয় করেন এবং তখন থেকে সুদীর্ঘকাল কক্সবাজার আরাকান রাজ্যের অধীনে ছিল। ১৬৬৬ সালে মুগলদের চট্টগ্রাম অধিকারের পূর্ব পর্যন্ত কক্সবাজার আরাকানীদের দখলে ছিল। চট্টগ্রাম বিজয়ী মুগল সেনাপতি বুজুর্গ উমেদ খান কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ তীরস্থ মগ দুর্গ দখল করলে আরাকানীরা পলায়ন করে রামু দুর্গে অবস্থান নেয়। পরে আরাকানীদের বিতাড়িত করে মুগলরা রামু দুর্গ দখল করে নেয়। আরাকানী মগ ও পর্তুগীজ জলদস্যুদের অত্যাচার ও লুণ্ঠনের ভয়ে তখন কক্সবাজার এলাকায় তেমন জনবসতি ছিল না। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি কর্তৃক চট্টগ্রামের কর্তৃত্ব লাভের পর বহু মুসলমান জমিদার তাদের প্রজাদের নিয়ে বঙ্গোপসাগরের দ্বীপসমূহে বসতি স্থাপন করেন। এই অঞ্চলে জনবসতি বৃদ্ধির জন্য কোম্পানি খাজনা ছাড়া বা নামমাত্র খাজনায় কৃষকদের ভূমিদানের নীতি গ্রহণ করে। ফলে বৃহত্তর চট্টগ্রাম জেলার বিভিন্ন অংশ থেকে এবং আরাকানের বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রচুর লোক কক্সবাজার অঞ্চলে বসবাসের জন্য আসতে থাকে। ১৭৮৪ সালে বার্মার রাজা বোধপায়া (১৭৮২-১৮১৯) আরাকান দখল করে আরাকানীদের উপর নৃশংস অত্যাচার চালান। বর্মীদের অত্যাচার থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য আরাকানীরা দলে দলে কক্সবাজার অঞ্চলে আশ্রয় নেয়। জঙ্গলাকীর্ণ এলাকাকে আবাদযোগ্য করে তোলার উদ্দেশ্যে কোম্পানি | ''ঐতিহাসিক ঘটনাবলি'' খ্রিস্টীয় অষ্টম শতাব্দীতে বাণিজ্য ও ধর্মপ্রচারের উদ্দেশ্যে আরব বণিক ও ধর্মপ্রচারকগণ প্রাচীন সমুদ্রবন্দর চট্টগ্রাম ও আকিয়াবে আগমণ করে। ফলে উক্ত সমুদ্রবন্দর দুটির মধ্যবর্তী সমুদ্র উপকূল ও দ্বীপাঞ্চল কক্সবাজারের সঙ্গে আরব বনিকদের যোগাযোগ ঘটে। খ্রিস্টীয় নবম শতকে কক্সবাজারসহ বৃহত্তর চট্টগ্রাম হরিকেলের রাজা কান্তিদেবের শাসনাধীন ছিল। ৯৫৩ সালে আরাকানের রাজা সুলত ইঙ্গ চন্দ্র (৯৩০-৯৭৫) চট্টগ্রাম জয় করেন এবং তখন থেকে সুদীর্ঘকাল কক্সবাজার আরাকান রাজ্যের অধীনে ছিল। ১৬৬৬ সালে মুগলদের চট্টগ্রাম অধিকারের পূর্ব পর্যন্ত কক্সবাজার আরাকানীদের দখলে ছিল। চট্টগ্রাম বিজয়ী মুগল সেনাপতি বুজুর্গ উমেদ খান কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ তীরস্থ মগ দুর্গ দখল করলে আরাকানীরা পলায়ন করে রামু দুর্গে অবস্থান নেয়। পরে আরাকানীদের বিতাড়িত করে মুগলরা রামু দুর্গ দখল করে নেয়। আরাকানী মগ ও পর্তুগীজ জলদস্যুদের অত্যাচার ও লুণ্ঠনের ভয়ে তখন কক্সবাজার এলাকায় তেমন জনবসতি ছিল না। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি কর্তৃক চট্টগ্রামের কর্তৃত্ব লাভের পর বহু মুসলমান জমিদার তাদের প্রজাদের নিয়ে বঙ্গোপসাগরের দ্বীপসমূহে বসতি স্থাপন করেন। এই অঞ্চলে জনবসতি বৃদ্ধির জন্য কোম্পানি খাজনা ছাড়া বা নামমাত্র খাজনায় কৃষকদের ভূমিদানের নীতি গ্রহণ করে। ফলে বৃহত্তর চট্টগ্রাম জেলার বিভিন্ন অংশ থেকে এবং আরাকানের বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রচুর লোক কক্সবাজার অঞ্চলে বসবাসের জন্য আসতে থাকে। ১৭৮৪ সালে বার্মার রাজা বোধপায়া (১৭৮২-১৮১৯) আরাকান দখল করে আরাকানীদের উপর নৃশংস অত্যাচার চালান। বর্মীদের অত্যাচার থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য আরাকানীরা দলে দলে কক্সবাজার অঞ্চলে আশ্রয় নেয়। জঙ্গলাকীর্ণ এলাকাকে আবাদযোগ্য করে তোলার উদ্দেশ্যে কোম্পানি উদ্বাস্তুদের আশ্রয় দেয়। ১৭৯৯ সালে আরাকানী উদ্বাস্তুদের পুনর্বাসনের জন্য ক্যাপ্টেন হিরাম কক্সকে দায়িত্ব প্রদান করা হয়। তিনি প্রতিটি উদ্বাস্তু পরিবারকে ১ হেক্টর জমি বন্দোবস্ত দেন এবং ছয় মাসের রসদ বাবদ ২৬ মন করে খাদ্যশস্য ঋণ প্রদান করেন। কিন্তু আরাকানী উদ্বাস্তুদের পুনর্বাসনের কাজ শেষ করার আগেই হিরাম কক্স মৃত্যুবরণ করেন (১৭৯৯)। ক্যাপ্টেন কক্সের স্মৃতি রক্ষার্থেই তার নামে একটি বাজার প্রতিষ্ঠা করা হয়। সে থেকেই কক্সবাজার নামের উৎপত্তি। | ||
'' | ''মুক্তিযুদ্ধ'' ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকবাহিনী চকোরিয়ায় ১৩জন লোককে হত্যা করে এবং বিভিন্ন স্থানে বাড়িঘর ও দোকানপাট জ্বালিয়ে দেয়। এসময় পাকবাহিনী টেকনাফ ডাকবাংলোতে ক্যাম্প স্থাপন করে এবং রামু, উখিয়া ও টেকনাফ থেকে প্রায় ২৫০জন নিরীহ লোককে ক্যাম্পে নিয়ে হত্যা করে। কক্সবাজার জেলার টেকনাফ উপজেলায় ১টি বধ্যভূমি এবং কক্সবাজার সদর, কুতুবদিয়া এবং চকোরিয়া উপজেলায় ১টি করে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভ রয়েছে। | ||
''ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান'' মসজিদ ১৬২৬, মন্দির ২১২, বৌদ্ধ কেয়াং ও প্যাগোডা ১৬২, গির্জা ৮, মাযার ১২। | ''ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান'' মসজিদ ১৬২৬, মন্দির ২১২, বৌদ্ধ কেয়াং ও প্যাগোডা ১৬২, গির্জা ৮, মাযার ১২। | ||
''শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান'' গড় হার | ''শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান'' গড় হার ৩৯.৩%; পুরুষ ৪০.৩%, মহিলা ৩৮.২%। কলেজ ২০, পালি কলেজ ২, আইন কলেজ ১, কারিগরি কলেজ ১, ভকেশনাল ট্রেনিং ইন্সটিটিউট ১, পি.টি.আই ১, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১৪১, প্রাথমিক বিদ্যালয় ৫৬১, কমিউনিটি প্রাথমিক বিদ্যালয় ৩৯, এনজিও প্রাথমিক বিদ্যালয় ২৩, মাদ্রাসা ২৪০। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহ: কক্সবাজার সরকারি কলেজ (১৯৬২), চকোরিয়া কলেজ (১৯৬৮), মহেশখালী কলেজ (১৯৮৫), কক্সবাজার সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৭৪), রামু খিজারী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৯), চকোরিয়া সরকারি হাইস্কুল (১৯১৯), ঈদগা আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় (১৯২৮), কুতুবদিয়া হাইস্কুল (১৯৩৮), কক্সবাজার সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৬০), মানিকপুর বার্মিজ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (১৮২৮), হারবাং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (১৮৮৪), টেকনাফ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (১৮৯০), পেকুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (১৯১৮), মাইজপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (১৯৩০), মহেশখালী সরকারি ভার্ণাকুলার স্কুল (১৯২৩), সাহারবিল আনওয়ারুল উলুম সিনিয়র মাদ্রাসা (১৯১৮)। | ||
''জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস'' কৃষি ৪৯.৮৪%, অকৃষি শ্রমিক ৭.৯২%, শিল্প ১.০৪%, ব্যবসা ১৭.৩৯%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ২.৫৬%, নির্মাণ ১.১৯%, ধর্মীয় সেবা ০.২৭%, চাকরি ৫.৯৬%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ১.৮৪% এবং অন্যান্য ১১.৯৯%। | ''জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস'' কৃষি ৪৯.৮৪%, অকৃষি শ্রমিক ৭.৯২%, শিল্প ১.০৪%, ব্যবসা ১৭.৩৯%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ২.৫৬%, নির্মাণ ১.১৯%, ধর্মীয় সেবা ০.২৭%, চাকরি ৫.৯৬%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ১.৮৪% এবং অন্যান্য ১১.৯৯%। | ||
৭৮ নং লাইন: | ৭২ নং লাইন: | ||
''আরও দেখুন'' সংশ্লিষ্ট উপজেলা। | ''আরও দেখুন'' সংশ্লিষ্ট উপজেলা। | ||
'''তথ্যসূত্র''' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; কক্সবাজার জেলা মাঠ পর্যায়ের প্রতিবেদন ২০০৭; কক্সবাজার জেলার উপজেলাসমূহের মাঠ পর্যায়ের প্রতিবেদন ২০০৭। | '''তথ্যসূত্র''' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; কক্সবাজার জেলা মাঠ পর্যায়ের প্রতিবেদন ২০০৭; কক্সবাজার জেলার উপজেলাসমূহের মাঠ পর্যায়ের প্রতিবেদন ২০০৭। | ||
[[en:Cox’s Bazar District]] | [[en:Cox’s Bazar District]] |
১৭:৩০, ২৮ মে ২০২৩ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ
কক্সবাজার জেলা (চট্টগ্রাম বিভাগ) আয়তন: ২৩৮২.৩৮ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২০°৪৩´ থেকে ২১°৫৬´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯১°৫০´ থেকে ৯২°২৩´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে চট্টগ্রাম জেলা, দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর, পূর্বে বান্দরবান জেলা, মায়ানমারের আরাকান রাজ্য ও নাফ নদী, পশ্চিমে বঙ্গোপসাগর। কক্সবাজারে পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত অবস্থিত। এটি চট্টগ্রাম বিভাগের মোট ১১টি জেলার মধ্যে সপ্তম এবং বাংলাদেশের ৬৪ জেলার মধ্যে ২৬তম। জেলার প্রায় অর্ধেক এলাকা জুড়ে পার্বত্য অঞ্চল এবং অর্ধেক সমুদ্র উপকূলীয় দ্বীপাঞ্চল। প্রধান দ্বীপসমূহ: মহেশখালী, কুতুবদিয়া, মাতার বাড়ি, সোনাদিয়া, শাহ পরীর দ্বীপ এবং সেন্ট মার্টিনস বা জিনজিরা দ্বীপ। শাহ পরীর দ্বীপ কিছুদিন আগে মূল ভূখন্ডের সাথে যুক্ত হয়ে গেছে। উপকূলীয় জেলা হওয়ার কারণে দ্বীপ ও চর অঞ্চল সৃষ্টি ও ভাঙনের ফলে জেলার আয়তন হ্রাস-বৃদ্ধি হয়।
জনসংখ্যা ২১৬৯৬৬৮; পুরুষ ১১০৮৯০১, মহিলা ১০৬০৭৬৭। মুসলিম ২০৩৬৯৪৮, হিন্দু ৯২৪০৮, বৌদ্ধ ৩৭৮০৫, খ্রিস্টান ১৪৫৬ এবং অন্যান্য ১০৫১।
জলবায়ু কক্সবাজার ক্রান্তীয় জলবায়ুর অন্তর্ভুক্ত। কক্সবাজারে সামুদ্রিক ঝড়, জলোচ্ছ্বাস, হারিকেন, সাইক্লোন প্রতিনিয়ত আঘাত হানে। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩২.৫°সে, সর্বনিম্ন ১৪.৮°সে; বার্ষিক বৃষ্টিপাত ৩৩৩৩ মিমি (এপ্রিল ০৪-মার্চ ০৫)।
জলাশয় প্রধান নদী: মাতামুহুরী, বাকখালী, নাফ এবং মহেশখালী চ্যানেল, কুতুবদিয়া চ্যানেল উল্লেখযোগ্য।
বনভূমি আয়তন ৯৪০.৫৮ বর্গ কিমি। প্রধান বনভূমি ফুলছড়ি রেঞ্জ, ভূমরিয়াঘোনা রেঞ্জ, মেহেরঘোনা রেঞ্জ, বাকখালি রেঞ্জ।
পার্বত্যাঞ্চল হিমালয় পর্বতমালার দক্ষিণ দিকে সম্প্রসারিত আরাকান পর্বতমালা জেলার পূর্বভাগের উপর দিয়ে গেছে। ফলে এ জেলায় পার্বত্যাঞ্চল বেশি।
প্রশাসন ১৮৫৪ সালে কক্সবাজার থানা গঠিত হয় এবং ওই বছরই কক্সবাজার, চকোরিয়া, মহেশখালী ও টেকনাফ থানা সমন্বয়ে কক্সবাজার মহকুমা গঠিত হয়। পরে টেকনাফ থেকে উখিয়াকে, মহেশখালী থেকে কুতুবদিয়াকে এবং কক্সবাজার থেকে রামুকে পৃথক করে এই মহকুমার অধীনে তিনটি নতুন থানা গঠিত হয়। ১৯৫৯ সালে কক্সবাজার জেলাকে টাউন কমিটিতে রূপান্তর করা হয়। ১৯৭২ সালে টাউন কমিটি বিলুপ্ত করে পৌরসভায় রূপান্তর করা হয়। প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণ কর্মসূচির আওতায় প্রথম পর্যায়ে থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় এবং দ্বিতীয় পর্যায়ে ১৯৮৪ সালের ১ মার্চ কক্সবাজার মহকুমাকে জেলায় উন্নীত করা হয়। জেলার ৭টি উপজেলার মধ্যে চকোরিয়া সর্ববৃহৎ (৫০৩.৮৩ বর্গ কিমি)। এটি জেলার মোট আয়তনের ২৫.৮২% এলাকা জুড়ে অবস্থিত। জেলার সবচেয়ে ছোট উপজেলা হলো পেকুয়া (১৩৯.৬১ বর্গ কিমি)।
জেলা | |||||||||
আয়তন (বর্গ কিমি) | উপজেলা | পৌরসভা | ইউনিয়ন | মৌজা | গ্রাম | জনসংখ্যা | ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) | শিক্ষার হার (%) | |
শহর | গ্রাম | ||||||||
২৩৮২.৩৮ | ৮ | ৪ | ৬৬ | ১৭০ | ৯২৭ | ৪৪২৯৬৬ | ১৭২৬৭০২ | ৯১১ | ৩৯.৩ |
জেলার অন্যান্য তথ্য | |||||||||
উপজেলা নাম | আয়তন (বর্গ কিমি) | পৌরসভা | ইউনিয়ন | মৌজা | গ্রাম | জনসংখ্যা | ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) | শিক্ষার হার (%) | |
উখিয়া | ২৬১.৮০ | - | ৫ | ১৩ | ৫৪ | ২,০৭,৩৭৯ | ৭৯২ | ৩৬.৩ | |
কক্সবাজার সদর | ১১৮.৮০ | ১ | ৫ | ৮ | ৮২ | ৩৩৮৭৬০ | ২৮৫২ | ৪৪.৬ | |
কুতুবদিয়া | ২১৫.৭৯ | - | ৬ | ৯ | ৫৫ | ১২৫২৭৯ | ৫৮১ | ৩৪.০ | |
চকোরিয়া | ৫০৩.৮৩ | ১ | ১৮ | ৪৮ | ২১২ | ৪,৭৪,৪৬৫ | ৯৪২ | ৪৭.৬ | |
টেকনাফ | ৩৮৮.৬৬ | ১ | ৬ | ১২ | ১৪৬ | ২,৬৪,৩৮৯ | ৬৮০ | ২৬.৭ | |
পেকুয়া | ১৩৯.৬১ | - | ৭ | ১২ | ১২৫ | ১৭১৫৩৮ | ১২২৯ | ৩৫.৩ | |
মহেশখালী | ৩৬২.১৮ | ১ | ৮ | ২৯ | ১৫১ | ৩,২১,২১৮ | ৮৮৭ | ৩০.৮ | |
রামু | ৩৯১.৭১ | - | ১১ | ৩৯ | ১০২ | ২,৬৬,৬৪০ | ৬৮১ | ৩৬.৬ |
সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।
ঐতিহাসিক ঘটনাবলি খ্রিস্টীয় অষ্টম শতাব্দীতে বাণিজ্য ও ধর্মপ্রচারের উদ্দেশ্যে আরব বণিক ও ধর্মপ্রচারকগণ প্রাচীন সমুদ্রবন্দর চট্টগ্রাম ও আকিয়াবে আগমণ করে। ফলে উক্ত সমুদ্রবন্দর দুটির মধ্যবর্তী সমুদ্র উপকূল ও দ্বীপাঞ্চল কক্সবাজারের সঙ্গে আরব বনিকদের যোগাযোগ ঘটে। খ্রিস্টীয় নবম শতকে কক্সবাজারসহ বৃহত্তর চট্টগ্রাম হরিকেলের রাজা কান্তিদেবের শাসনাধীন ছিল। ৯৫৩ সালে আরাকানের রাজা সুলত ইঙ্গ চন্দ্র (৯৩০-৯৭৫) চট্টগ্রাম জয় করেন এবং তখন থেকে সুদীর্ঘকাল কক্সবাজার আরাকান রাজ্যের অধীনে ছিল। ১৬৬৬ সালে মুগলদের চট্টগ্রাম অধিকারের পূর্ব পর্যন্ত কক্সবাজার আরাকানীদের দখলে ছিল। চট্টগ্রাম বিজয়ী মুগল সেনাপতি বুজুর্গ উমেদ খান কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ তীরস্থ মগ দুর্গ দখল করলে আরাকানীরা পলায়ন করে রামু দুর্গে অবস্থান নেয়। পরে আরাকানীদের বিতাড়িত করে মুগলরা রামু দুর্গ দখল করে নেয়। আরাকানী মগ ও পর্তুগীজ জলদস্যুদের অত্যাচার ও লুণ্ঠনের ভয়ে তখন কক্সবাজার এলাকায় তেমন জনবসতি ছিল না। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি কর্তৃক চট্টগ্রামের কর্তৃত্ব লাভের পর বহু মুসলমান জমিদার তাদের প্রজাদের নিয়ে বঙ্গোপসাগরের দ্বীপসমূহে বসতি স্থাপন করেন। এই অঞ্চলে জনবসতি বৃদ্ধির জন্য কোম্পানি খাজনা ছাড়া বা নামমাত্র খাজনায় কৃষকদের ভূমিদানের নীতি গ্রহণ করে। ফলে বৃহত্তর চট্টগ্রাম জেলার বিভিন্ন অংশ থেকে এবং আরাকানের বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রচুর লোক কক্সবাজার অঞ্চলে বসবাসের জন্য আসতে থাকে। ১৭৮৪ সালে বার্মার রাজা বোধপায়া (১৭৮২-১৮১৯) আরাকান দখল করে আরাকানীদের উপর নৃশংস অত্যাচার চালান। বর্মীদের অত্যাচার থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য আরাকানীরা দলে দলে কক্সবাজার অঞ্চলে আশ্রয় নেয়। জঙ্গলাকীর্ণ এলাকাকে আবাদযোগ্য করে তোলার উদ্দেশ্যে কোম্পানি উদ্বাস্তুদের আশ্রয় দেয়। ১৭৯৯ সালে আরাকানী উদ্বাস্তুদের পুনর্বাসনের জন্য ক্যাপ্টেন হিরাম কক্সকে দায়িত্ব প্রদান করা হয়। তিনি প্রতিটি উদ্বাস্তু পরিবারকে ১ হেক্টর জমি বন্দোবস্ত দেন এবং ছয় মাসের রসদ বাবদ ২৬ মন করে খাদ্যশস্য ঋণ প্রদান করেন। কিন্তু আরাকানী উদ্বাস্তুদের পুনর্বাসনের কাজ শেষ করার আগেই হিরাম কক্স মৃত্যুবরণ করেন (১৭৯৯)। ক্যাপ্টেন কক্সের স্মৃতি রক্ষার্থেই তার নামে একটি বাজার প্রতিষ্ঠা করা হয়। সে থেকেই কক্সবাজার নামের উৎপত্তি।
মুক্তিযুদ্ধ ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকবাহিনী চকোরিয়ায় ১৩জন লোককে হত্যা করে এবং বিভিন্ন স্থানে বাড়িঘর ও দোকানপাট জ্বালিয়ে দেয়। এসময় পাকবাহিনী টেকনাফ ডাকবাংলোতে ক্যাম্প স্থাপন করে এবং রামু, উখিয়া ও টেকনাফ থেকে প্রায় ২৫০জন নিরীহ লোককে ক্যাম্পে নিয়ে হত্যা করে। কক্সবাজার জেলার টেকনাফ উপজেলায় ১টি বধ্যভূমি এবং কক্সবাজার সদর, কুতুবদিয়া এবং চকোরিয়া উপজেলায় ১টি করে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভ রয়েছে।
ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদ ১৬২৬, মন্দির ২১২, বৌদ্ধ কেয়াং ও প্যাগোডা ১৬২, গির্জা ৮, মাযার ১২।
শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৩৯.৩%; পুরুষ ৪০.৩%, মহিলা ৩৮.২%। কলেজ ২০, পালি কলেজ ২, আইন কলেজ ১, কারিগরি কলেজ ১, ভকেশনাল ট্রেনিং ইন্সটিটিউট ১, পি.টি.আই ১, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১৪১, প্রাথমিক বিদ্যালয় ৫৬১, কমিউনিটি প্রাথমিক বিদ্যালয় ৩৯, এনজিও প্রাথমিক বিদ্যালয় ২৩, মাদ্রাসা ২৪০। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহ: কক্সবাজার সরকারি কলেজ (১৯৬২), চকোরিয়া কলেজ (১৯৬৮), মহেশখালী কলেজ (১৯৮৫), কক্সবাজার সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৭৪), রামু খিজারী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৯), চকোরিয়া সরকারি হাইস্কুল (১৯১৯), ঈদগা আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় (১৯২৮), কুতুবদিয়া হাইস্কুল (১৯৩৮), কক্সবাজার সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৬০), মানিকপুর বার্মিজ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (১৮২৮), হারবাং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (১৮৮৪), টেকনাফ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (১৮৯০), পেকুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (১৯১৮), মাইজপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (১৯৩০), মহেশখালী সরকারি ভার্ণাকুলার স্কুল (১৯২৩), সাহারবিল আনওয়ারুল উলুম সিনিয়র মাদ্রাসা (১৯১৮)।
জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৪৯.৮৪%, অকৃষি শ্রমিক ৭.৯২%, শিল্প ১.০৪%, ব্যবসা ১৭.৩৯%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ২.৫৬%, নির্মাণ ১.১৯%, ধর্মীয় সেবা ০.২৭%, চাকরি ৫.৯৬%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ১.৮৪% এবং অন্যান্য ১১.৯৯%।
পত্রিকা ও সাময়িকী দৈনিক: সৈকত, কক্সবাজার, আজকের দেশ-বিদেশ, দৈনন্দিন, মায়ের দেশ, সাপ্তাহিক: স্বদেশ বাণী, কুতুবদিয়া, চকোরী, স্বদেশকণ্ঠ। পাক্ষিক: মেহেদী; অবলুপ্ত দৈনিক: হিমছড়ি, বাঁকখালী, সাপ্তাহিক: কক্সবাজার, কক্সবাজার বার্তা, সাগরবাণী, সাগরকণ্ঠ, নাফকণ্ঠ।
লোকসংস্কৃতি নববর্ষ উপলক্ষে রাখাইনদের আচার্টক (পানি খেলা) উৎসব, মাঘ মাসের শেষ রাত্রি মেলা, সূর্যকোলা মেলা, বৌদ্ধদের মাঘী পূর্ণিমা, বৈশাখী পূর্ণিমা, আশাকার কাঠায় স্বর্গপুরি অনুষ্ঠান ইত্যাদি। জনপ্রিয় খেলার অন্যতম বলি খেলা।
পর্যটন কেন্দ্র ও দর্শনীয় স্থান কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত, হিমছড়ির ঝর্ণা, ইনানী সমুদ্র সৈকত, সোনাদিয়া দ্বীপ, কুতুবদিয়া বাতিঘর (কুতুবদিয়া), সেন্ট মার্টিনস দ্বীপ, বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক (ডুলা হাজরা), মাথিনের কূপ (টেকনাফ), মৈনাক পর্বত ও আদিনাথ মন্দির (মহেশখালী দ্বীপ), কুতুব আউলিয়ার মাযার (কুতুবদিয়া), রামকোট হিন্দু মন্দির, রামকোট বৌদ্ধ কেয়াং, কানারাজার সুড়ঙ্গ, বীর কমলার দিঘী (টেকনাফ), অগ্বমেধা বৌদ্ধ কেয়াং, থোয়াইংগা চৌধুরীর ক্যাং (রামু), ন্যাথং পাহাড়ে অবস্থিত সর্ববৃহৎ বৌদ্ধ মূর্তি (টেকনাফ) এবং ঝিলংজাতে অবস্থিত সাবমেরিন ক্যাবল ল্যান্ডিং স্টেশন।
খনিজ সম্পদ প্রাকৃতিক গ্যাস, গন্ধক, জিরকন, ইলমেনাইট, ব্রুটাইল, ম্যাগনাটাইট, মোনাজাইট, কয়নাইট। [মোহাম্মদ মহিব উল্লাহ সিদ্দিকী]
আরও দেখুন সংশ্লিষ্ট উপজেলা।
তথ্যসূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; কক্সবাজার জেলা মাঠ পর্যায়ের প্রতিবেদন ২০০৭; কক্সবাজার জেলার উপজেলাসমূহের মাঠ পর্যায়ের প্রতিবেদন ২০০৭।