বায়োহ্যাজার্ড: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

("'''বায়োহ্যাজার্ড''' (Biohazard) বা বায়োলজিকাল হ্যাজার্ড হলো এমন..." দিয়ে পাতা তৈরি)
 
সম্পাদনা সারাংশ নেই
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
'''বায়োহ্যাজার্ড''' (Biohazard) বা বায়োলজিকাল হ্যাজার্ড হলো এমন সকল জৈবিক পদার্থ (অণুজীব, স্পোর, টক্সিন, পরজীবি) যা মানুষ অথবা অন্যান্য প্রাণীর ক্ষতিসাধন করে বা তাদের স্বাস্থ্যের জন্য হুমকিস্বরূপ। বায়োহ্যাজার্ড প্রাকৃতিক, কৃত্রিম, বা জীবপ্রযুক্তি উদ্ভূত হতে পারে। এছাড়াও বায়োহ্যাজার্ডের মধ্যে হাসপাতালের রোগীদের থেকে প্রাপ্ত বিভিন্ন জৈব নমুনা যেমনÑ সার্জারি বা অটোপসি থেকে প্রাপ্ত দেহের কোষ-কলা বা অঙ্গ, অথবা দেহ থেকে নিসৃত বিভিন্ন তরলে থাকা অণুজীব, টক্সিন বা এলার্জেন, ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত। বায়োহ্যাজার্ড প্রত্যক্ষ সংস্পর্শে বা রক্তের দ্বারা এবং অন্যান্য দেহতরল বা বাহক দ্বারা, উভয়ভাবেই স্বাস্থ্যের উপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে। এটি পরোক্ষভাবে যেমনÑ দূষিত কোনো পৃষ্ঠতলের থেকে, দূষিত খাদ্য-পানীয়ের মাধ্যমে অথবা, বায়ুবাহিত কণার মাধ্যমে ছড়াতে পারে। এটি পরোক্ষভাবে আমাদের সমাজ এবং পরিবেশের উপর গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলে। বায়োহ্যাজার্ডকে জৈবপদার্থের ধরনের উপর ভিত্তি করে ৩টি শ্রেণিতে ভাগ করা যায়: ১) সংক্রামক পদার্থ (ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস, ফাংগাস ইত্যাদি), ২) উদ্ভিদ এবং উদ্ভিদজাত পদার্থ (এলার্জেন, যন্ত্রণাদায়ক ও বিষাক্ত পদার্থ), এবং ৩) জুনোসিস ঘটাতে সক্ষম প্রাণীসমূহ। স্বাস্থ্যঝুঁকির উপর ভিত্তি করে এদের আবার ৪টি রিস্ক গ্রুপে (RG) ১ থেকে ৪ এ ভাগ করা যায়। যেখানে RG1 সর্বনিম্ন ঝুঁকিসম্পন্ন এবং RG4 মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ বায়োহ্যাজার্ড হিসেবে নির্দেশিত। আইএসও (ISO)-এর নিয়মের ভিত্তিতে, বায়োহ্যাজার্ডের সংকেত সাধারণত সবুজ, হলুদ, কমলা, বা লাল ব্যাকগ্রাউন্ডের উপর কালো দাগ দারা নির্দেশিত, যা যথাক্রমে নিরাপদ, সতর্কতা (আঘাত/ক্ষয় হতে পারে, তবে মৃত্যুঝুঁকি নেই), হুমকি (মৃত্যুঝুঁকি রয়েছে) এবং বিপদের (মৃত্যু নিশ্চিত) বার্তা বহন করে। কিছু নির্দিষ্ট টঘ সংখ্যার মাধ্যমে বায়োহ্যাজার্ড পদার্থসমূহকে এদের পরিবহনে সম্ভাব্য ঝুঁকির উপর ভিত্তি করে ক্যাটাগরি অ এবং ই তে ভাগ করা যায়। বায়োহ্যাজার্ড বর্জ্য সংক্রামক পদার্থবিশিষ্ট যেকোন বর্জ্য হতে পারে, যা সাধারণত স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র, গবেষণা ও ডায়াগনস্টিক কেন্দ্র এবং ভেটেরিনারি ক্লিনিক থেকে উদ্ভূত হয়। এসকল বর্জ্যের মধ্যে রয়েছে কঠিন (অঙ্গ, কোষকলা, প্লাস্টিক সামগ্রী, পিপিই), তরল (রক্ত, মূত্র, অন্যান্য দেহতরল), ধারালো (সূই, স্ক্যাপেল, ভাঙ্গা কাচ) পদার্থসমূহ এবং কালচারড জীবসমূহ। এসকল বায়োহ্যাজার্ড বর্জ্যসমূহই সম্ভাব্য বায়োহ্যাজার্ড ও স্বাস্থ্যঝুঁকির অন্যতম উৎস, ফলে এদের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং ব্যক্তিগত পরিসরে, ল্যাবরেটরিতে এবং পরিবেশে বায়োহ্যাজার্ডের বিস্তার রোধ করতে বিভিন্ন ঝুঁকি নিয়ন্ত্রণের পন্থা ও উপযুক্ত উপায়, পদ্ধতি এবং নিরাপত্তা সামগ্রীর ব্যবহার করা প্রয়োজন।  [মো. রাকিবুল ইসলাম]
'''বায়োহ্যাজার্ড''' (Biohazard) বা বায়োলজিকাল হ্যাজার্ড হলো এমন সকল জৈবিক পদার্থ (অণুজীব, স্পোর, টক্সিন, পরজীবি) যা মানুষ অথবা অন্যান্য প্রাণীর ক্ষতিসাধন করে বা তাদের স্বাস্থ্যের জন্য হুমকিস্বরূপ। বায়োহ্যাজার্ড প্রাকৃতিক, কৃত্রিম, বা জীবপ্রযুক্তি উদ্ভূত হতে পারে। এছাড়াও বায়োহ্যাজার্ডের মধ্যে হাসপাতালের রোগীদের থেকে প্রাপ্ত বিভিন্ন জৈব নমুনা যেমনÑ সার্জারি বা অটোপসি থেকে প্রাপ্ত দেহের কোষ-কলা বা অঙ্গ, অথবা দেহ থেকে নিসৃত বিভিন্ন তরলে থাকা অণুজীব, টক্সিন বা এলার্জেন, ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত। বায়োহ্যাজার্ড প্রত্যক্ষ সংস্পর্শে বা রক্তের দ্বারা এবং অন্যান্য দেহতরল বা বাহক দ্বারা, উভয়ভাবেই স্বাস্থ্যের উপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে। এটি পরোক্ষভাবে যেমন- দূষিত কোনো পৃষ্ঠতলের থেকে, দূষিত খাদ্য-পানীয়ের মাধ্যমে অথবা, বায়ুবাহিত কণার মাধ্যমে ছড়াতে পারে। এটি পরোক্ষভাবে আমাদের সমাজ এবং পরিবেশের উপর গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলে। বায়োহ্যাজার্ডকে জৈবপদার্থের ধরনের উপর ভিত্তি করে ৩টি শ্রেণিতে ভাগ করা যায়: ১) সংক্রামক পদার্থ (ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস, ফাংগাস ইত্যাদি), ২) উদ্ভিদ এবং উদ্ভিদজাত পদার্থ (এলার্জেন, যন্ত্রণাদায়ক ও বিষাক্ত পদার্থ), এবং ৩) জুনোসিস ঘটাতে সক্ষম প্রাণীসমূহ। স্বাস্থ্যঝুঁকির উপর ভিত্তি করে এদের আবার ৪টি রিস্ক গ্রুপে (RG) ১ থেকে ৪ এ ভাগ করা যায়। যেখানে RG1 সর্বনিম্ন ঝুঁকিসম্পন্ন এবং RG4 মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ বায়োহ্যাজার্ড হিসেবে নির্দেশিত। আইএসও (ISO)-এর নিয়মের ভিত্তিতে, বায়োহ্যাজার্ডের সংকেত সাধারণত সবুজ, হলুদ, কমলা, বা লাল ব্যাকগ্রাউন্ডের উপর কালো দাগ দারা নির্দেশিত, যা যথাক্রমে নিরাপদ, সতর্কতা (আঘাত/ক্ষয় হতে পারে, তবে মৃত্যুঝুঁকি নেই), হুমকি (মৃত্যুঝুঁকি রয়েছে) এবং বিপদের (মৃত্যু নিশ্চিত) বার্তা বহন করে। কিছু নির্দিষ্ট টঘ সংখ্যার মাধ্যমে বায়োহ্যাজার্ড পদার্থসমূহকে এদের পরিবহনে সম্ভাব্য ঝুঁকির উপর ভিত্তি করে ক্যাটাগরি অ এবং ই তে ভাগ করা যায়। বায়োহ্যাজার্ড বর্জ্য সংক্রামক পদার্থবিশিষ্ট যেকোন বর্জ্য হতে পারে, যা সাধারণত স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র, গবেষণা ও ডায়াগনস্টিক কেন্দ্র এবং ভেটেরিনারি ক্লিনিক থেকে উদ্ভূত হয়। এসকল বর্জ্যের মধ্যে রয়েছে কঠিন (অঙ্গ, কোষকলা, প্লাস্টিক সামগ্রী, পিপিই), তরল (রক্ত, মূত্র, অন্যান্য দেহতরল), ধারালো (সূই, স্ক্যাপেল, ভাঙ্গা কাচ) পদার্থসমূহ এবং কালচারড জীবসমূহ। এসকল বায়োহ্যাজার্ড বর্জ্যসমূহই সম্ভাব্য বায়োহ্যাজার্ড ও স্বাস্থ্যঝুঁকির অন্যতম উৎস, ফলে এদের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং ব্যক্তিগত পরিসরে, ল্যাবরেটরিতে এবং পরিবেশে বায়োহ্যাজার্ডের বিস্তার রোধ করতে বিভিন্ন ঝুঁকি নিয়ন্ত্রণের পন্থা ও উপযুক্ত উপায়, পদ্ধতি এবং নিরাপত্তা সামগ্রীর ব্যবহার করা প্রয়োজন।  [মো. রাকিবুল ইসলাম]


[[en:Biohazard]]
[[en:Biohazard]]

০৬:৪৬, ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ

বায়োহ্যাজার্ড (Biohazard) বা বায়োলজিকাল হ্যাজার্ড হলো এমন সকল জৈবিক পদার্থ (অণুজীব, স্পোর, টক্সিন, পরজীবি) যা মানুষ অথবা অন্যান্য প্রাণীর ক্ষতিসাধন করে বা তাদের স্বাস্থ্যের জন্য হুমকিস্বরূপ। বায়োহ্যাজার্ড প্রাকৃতিক, কৃত্রিম, বা জীবপ্রযুক্তি উদ্ভূত হতে পারে। এছাড়াও বায়োহ্যাজার্ডের মধ্যে হাসপাতালের রোগীদের থেকে প্রাপ্ত বিভিন্ন জৈব নমুনা যেমনÑ সার্জারি বা অটোপসি থেকে প্রাপ্ত দেহের কোষ-কলা বা অঙ্গ, অথবা দেহ থেকে নিসৃত বিভিন্ন তরলে থাকা অণুজীব, টক্সিন বা এলার্জেন, ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত। বায়োহ্যাজার্ড প্রত্যক্ষ সংস্পর্শে বা রক্তের দ্বারা এবং অন্যান্য দেহতরল বা বাহক দ্বারা, উভয়ভাবেই স্বাস্থ্যের উপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে। এটি পরোক্ষভাবে যেমন- দূষিত কোনো পৃষ্ঠতলের থেকে, দূষিত খাদ্য-পানীয়ের মাধ্যমে অথবা, বায়ুবাহিত কণার মাধ্যমে ছড়াতে পারে। এটি পরোক্ষভাবে আমাদের সমাজ এবং পরিবেশের উপর গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলে। বায়োহ্যাজার্ডকে জৈবপদার্থের ধরনের উপর ভিত্তি করে ৩টি শ্রেণিতে ভাগ করা যায়: ১) সংক্রামক পদার্থ (ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস, ফাংগাস ইত্যাদি), ২) উদ্ভিদ এবং উদ্ভিদজাত পদার্থ (এলার্জেন, যন্ত্রণাদায়ক ও বিষাক্ত পদার্থ), এবং ৩) জুনোসিস ঘটাতে সক্ষম প্রাণীসমূহ। স্বাস্থ্যঝুঁকির উপর ভিত্তি করে এদের আবার ৪টি রিস্ক গ্রুপে (RG) ১ থেকে ৪ এ ভাগ করা যায়। যেখানে RG1 সর্বনিম্ন ঝুঁকিসম্পন্ন এবং RG4 মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ বায়োহ্যাজার্ড হিসেবে নির্দেশিত। আইএসও (ISO)-এর নিয়মের ভিত্তিতে, বায়োহ্যাজার্ডের সংকেত সাধারণত সবুজ, হলুদ, কমলা, বা লাল ব্যাকগ্রাউন্ডের উপর কালো দাগ দারা নির্দেশিত, যা যথাক্রমে নিরাপদ, সতর্কতা (আঘাত/ক্ষয় হতে পারে, তবে মৃত্যুঝুঁকি নেই), হুমকি (মৃত্যুঝুঁকি রয়েছে) এবং বিপদের (মৃত্যু নিশ্চিত) বার্তা বহন করে। কিছু নির্দিষ্ট টঘ সংখ্যার মাধ্যমে বায়োহ্যাজার্ড পদার্থসমূহকে এদের পরিবহনে সম্ভাব্য ঝুঁকির উপর ভিত্তি করে ক্যাটাগরি অ এবং ই তে ভাগ করা যায়। বায়োহ্যাজার্ড বর্জ্য সংক্রামক পদার্থবিশিষ্ট যেকোন বর্জ্য হতে পারে, যা সাধারণত স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র, গবেষণা ও ডায়াগনস্টিক কেন্দ্র এবং ভেটেরিনারি ক্লিনিক থেকে উদ্ভূত হয়। এসকল বর্জ্যের মধ্যে রয়েছে কঠিন (অঙ্গ, কোষকলা, প্লাস্টিক সামগ্রী, পিপিই), তরল (রক্ত, মূত্র, অন্যান্য দেহতরল), ধারালো (সূই, স্ক্যাপেল, ভাঙ্গা কাচ) পদার্থসমূহ এবং কালচারড জীবসমূহ। এসকল বায়োহ্যাজার্ড বর্জ্যসমূহই সম্ভাব্য বায়োহ্যাজার্ড ও স্বাস্থ্যঝুঁকির অন্যতম উৎস, ফলে এদের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং ব্যক্তিগত পরিসরে, ল্যাবরেটরিতে এবং পরিবেশে বায়োহ্যাজার্ডের বিস্তার রোধ করতে বিভিন্ন ঝুঁকি নিয়ন্ত্রণের পন্থা ও উপযুক্ত উপায়, পদ্ধতি এবং নিরাপত্তা সামগ্রীর ব্যবহার করা প্রয়োজন। [মো. রাকিবুল ইসলাম]