মতলব দক্ষিণ উপজেলা

মতলব দক্ষিণ উপজেলা (চাঁদপুর জেলা)  আয়তন: ১২৯.৩২ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৩°১৫´ থেকে ২৩°২৬´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯০°৪০´ থেকে ৯০°৫০´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে মতলব উত্তর ও দাউদকান্দি উপজেলা, দক্ষিণে চাঁদপুর সদর ও হাজীগঞ্জ উপজেলা, পূর্বে কচুয়া (চাঁদপুর) উপজেলা, পশ্চিমে মতলব উত্তর উপজেলা।

জনসংখ্যা ২১০০৫০; পুরুষ ৯৭৭২৮, মহিলা ১১২৩২২। মুসলিম ১৮৮৯৮০, হিন্দু ২০৯৭৩, খ্রিস্টান ৪০ এবং অন্যান্য ৫৫।

জলাশয় প্রধান নদী: ধনাগোদা।

প্রশাসন মতলব থানা গঠিত হয় ১৯১৮ সালে এবং থানাকে মতলব উত্তর ও মতলব দক্ষিণ দুটি উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ২০০০ সালের ৩০ এপ্রিল।

উপজেলা
পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব(প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
শহর গ্রাম শহর গ্রাম
৭৭ ৯৭ ৫৯২৮৬ ১৫০৭৬৪ ১৬২৪ ৬৩.০ ৫৪.২
পৌরসভা
আয়তন (বর্গ কিমি) ওয়ার্ড মহল্লা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
৩০.৯২ ৩১ ৫৯২৮৬ ১৯১৭ ৬৩.০
ইউনিয়ন
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড আয়তন (একর) লোকসংখ্যা শিক্ষার হার (%)
পুরুষ মহিলা
উত্তর উপাদী ৬০ ৪০৬৫ ১০৬২৬ ১৩২৯১ ৫৪.৭
দক্ষিণ উপাদী ৮৬ ৩৭১৫ ১০০৯৬ ১২৩৮৮ ৫৯.৬
খাদেরগাঁও ৩৪ ৩৪৫৫ ৯২৫৪ ১১০৯০ ৫৪.০
উত্তর নায়েরগাঁও ৫৬ ৩২৩৪ ৯৪২০ ১০৪২৫ ৬০.১
দক্ষিণ নায়েরগাঁও ৮২ ৪০৪৭ ১২৬৬৬ ১৩৬৩৫ ৫২.২
নারায়ণপুর ৪৩ ৫৮০১ ১৭৬১৫ ২০২৫৮ ৪৯.২

সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।

প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ মুন্সেফদির নীলকুঠি, লাকশিবপুরের ডুবন্ত ডিঙ্গী, কাশিমপুরের বারদুয়ারা।

মুক্তিযুদ্ধ মতলব দক্ষিণ উপজেলায় পাকসেনাদের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের বেশ কয়েকটি যুদ্ধ সংঘটিত হয়। এসবের মধ্যে লালার হাটখোলা, বরদিয়া আড়ং বাজার ও নাগদার যুদ্ধ উল্লেখযোগ্য। লালার হাটখোলা যুদ্ধে ২৬ জন পাকসেনা নিহত হয়। উপজেলায় মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন হিসেবে ১টি ভাস্কর্য স্থাপিত হয়েছে।

বিস্তারিত দেখুন মতলব দক্ষিণ উপজেলা, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ৭।

ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদ ২৬৫, মন্দির ৩৬। উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান: মতলব বাজার মসজিদ, নারায়ণপুর বাজার মসজিদ, ধনার পাড় মসজিদ, উপাদী বৌদ্ধ মঠ।

শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৫৬.৭%; পুরুষ ৫৬.৯%, মহিলা ৫৬.৬%। কলেজ ৪, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ২৮, প্রাথমিক বিদ্যালয় ৮৮, মাদ্রাসা ১৬। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: মতলব ডিগ্রি কলেজ (১৯৬৪), বোয়ালিয়া উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৭), মতলবগঞ্জ জে.বি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়, মতলবগঞ্জ পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, আশ্বিনপুর উচ্চ বিদ্যালয়, বোয়ালিয়াপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, নারায়ণপুর উচ্চ বিদ্যালয়, হযরত শাহ জালাল উচ্চ বিদ্যালয়, পয়ালী কে.বি.এম উচ্চ বিদ্যালয়, মুন্সীরহাট উচ্চ বিদ্যালয়, কাচিয়ারা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, নওগাঁও উচ্চ বিদ্যালয়, কাশিমপুর পুরান উচ্চ বিদ্যালয়, কালিকাপুর উচ্চ বিদ্যালয়, লামচরি উচ্চ বিদ্যালয়, বহরী উচ্চ বিদ্যালয়, মতলব আদর্শ স্কুল।

সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান লাইব্রেরি ২, নাট্যদল ৩, সিনেমা হল ২, ক্লাব ১৬৫।

জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৪৮.০৭%, অকৃষি শ্রমিক ২.০২%, শিল্প ০.৮৪%, ব্যবসা ১৫.৮৫%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ২.১৯%, চাকরি ১১.২৩%, নির্মাণ ১.৯১%, ধর্মীয় সেবা ০.৩২%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ৩.৭৮% এবং অন্যান্য ১৩.৭৯%।

কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৬৭.৮৬%, ভূমিহীন ৩২.১৪%। শহরে ৫৩.২৮% এবং গ্রামে ৭৩.৬৫% পরিবারের কৃষিজমি রয়েছে।

প্রধান কৃষি ফসল ধান, গম, আলু, পাট, আখ, সরিষা, তিল।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি তিসি।

প্রধান ফল-ফলাদি আম, জাম, কাঁঠাল, পেয়ারা, নারিকেল, পেঁপে, জামরুল, আমড়া, কামরাঙ্গা।

মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার মৎস্য ১৯৪০, গবাদিপশু ১১, হাঁস-মুরগি ১৬।

যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ৮৭ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ১৪ কিমি, কাঁচারাস্তা ১৯২ কিমি; নৌপথ ১০ কিমি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পাল্কি, গরুর গাড়ি।

কুটিরশিল্প স্বর্ণশিল্প, লৌহশিল্প, মৃৎশিল্প।

হাটবাজার ও মেলা হাটবাজার ১৮। নারায়ণপুর হাট, নায়েরগাঁও হাট, মুন্সির হাট, মতলবগঞ্জ বাজার, মাস্টার বাজার ও আড়ংবাজার উল্লেখযোগ্য।

প্রধান রপ্তানিদ্রব্য আলু, পাট, মাছ।

বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ৪৯.৫% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।

পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৮৭.৮%, ট্যাপ ৬.০% এবং অন্যান্য ৬.২%।

স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ৬৩.৬% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৩২.২% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। তবে ৪.২% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।

স্বাস্থ্যকেন্দ্র হাসপাতাল ১, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, ক্লিনিক ৭।

এনজিও ব্র্যাক, আশা, প্রশিকা, নিজেরা করি।  [মাসুম পাটোয়ারী]

তথ্যসূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; মতলব দক্ষিণ উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।